আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ক্রিমিয়ায় ঘুম নাই

২০০৮ সালের মে মাসে পোল্য়ান্ড ও সুইডেন, এই দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদ্বয় ইউরোপিয় ইউনিয়ন এর সভায় একটি প্রস্তাব পেশ করে। আদতে ছয়টা প্রাক্তন সোভিয়েত রাষ্ট্র, আরমেনিয়া, আজারবাইজান, বেলারুশ, গিয়র্গিয়া, মলদোভা ও ইউক্রেন এর সাথে বানিজ্য়িক, অর্থনঐতিক, অবাধযাতায়্ত ইত্য়াদি সংক্রান্ত একটি বহুমূখি অংশিদারিত্ব ছিল ঐ প্রস্তাবের উদ্দেশ্য়।
প্রস্তাবে অনেক মিঠা মিঠা কথা ছিল। মানবাধিকার, প্রগতি, টেকশই উন্নয়ন। কিন্তু এইধরনের সুন্দর সুন্দর কথায় ভরা প্রস্তাবে স্বঐরাচারি সরকারের দেশ বেলারুশ কিভাবে পাত্তা পায়, তার কোন সিজিল জওয়াব পাওয়া যায়না।

বেলারুশকে একলা ফালায়া বাকীদের সাথে মোহব্বত করলে বেলারুশ গোস্বআ কইরা রাশিয়ার দিলে পল্টি খাইতে পারে, নাকি পারেনা? এইসব চিন্তা ভাবনা আর পেরেশানি বিস্মিল্লা থেইকাই আছিল নাকি আছিল না, আর এই প্রস্তাবের পেছনে রাশিয়া একটা বড় অদৃশ্য় চলক ছিল কিনা, এইসব আমরা জানিনা।
নিজ নিজ অবস্থাভেদে একেক ইউনিয়ন সদস্য় এই প্রস্তাব সম্ভন্ধে এক এক রকম আইডিয়া করে। কালোসাগরতীরের দেশগুলির মধ্য়ে একাধিক গুরুপিং এর এন্তেজাম আগের থিকাই বলবত আছিল, এর মধ্য়ে আতকা এই প্রস্তাবে রোমানিয়া আর বুলগেরিয়া একটু থতমত খায়া যায়। ইউরোপের মুরুব্বী, মানে জার্মানি আর ফ্রান্স ইউনিয়নের অন্য় সদস্য়গরে এইসব বিষয়গুলো ভাল কইরা ভাইবা চিন্তা দেখতে বলে, কারন তারা মনে করে ইউক্রেন হইল আখাইকাগো দেশ, উইর খাইতে দিলে শুইতে চায় খাইসলত, এই প্রস্তাব রাখলে এইটারে আস্তা ইউনিয়্ন সদস্য়্পদের নিমন্ত্রন হিসাবে ভ্রম করবো, নিসন্দেহ।
আর রাশিয়াতো প্রথমেই মনে করবো ইউরোপিয়ানরা আইছে অগো পাড়আয় ফিল্ডিং মারতে।


কিয়েভ পড়ল মাইন্কা চিপায়। এই প্রস্তাবে তার আলাদা কইরা কি ফায়দা হবে, সেইটা তার মাথায় ঢুকতেছিলনা। এমনিতেই ইউরোপিয় ইউনিয়নের সাথে তার ভিসামুক্ত যাতায়ত আর শুল্কমুক্ত বানিজ্য় নিয়ে আলোচনা চালু আছে। এখন বাকী শুধু কলমা পইড়আ পুরো সদস্ব হওয়া। ইউনিয়নের সদস্বরা যেসব পররাষ্ট্রিক, কোউশলগত ও সামরিক (?) সুবিধাগুলো পায়, সেগুলোই যদি না পাওয়া গেল, তাহলে আলাদা কইরা ইসব বহুমূখি অংশিদারিত্বফারিত্ব নিয়া সে কি ফালাবে?
এইসব সিরিন্খলার মধ্য়ে ইউক্রেনি প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচ ২০ বিলিয়ন দাম হাঁকাইলো।

দেখি বেটারা কি কয়। ইউরোপিয়ানরা মিন মিন কইরা সাকুল্য়ে ৬১০ মিলিয়ন দর উঠাইলো, তার উপরয়াবার নানান কিসিমের দাবীদাওয়া। ওইদিকে মস্কো থিকা গুরুগম্ভীর আওয়াজ উঠলো সহজ শর্তে ১৫ বিলিয়ন। ইয়ানুকোভিচ এমনিতেই বলতে গেলে আধা-রাশিয়ান। সে আর ঝামেলায় না গিয়া ২০১৩ এর নভেম্বর বিস্মিল্লা বইলা ইউনিয়নের প্রস্তাবে না কইয়া দিল।

এই প্রত্য়াক্ষানের পেছনে রাজনোঈতিক কারন ছাড়আও ইয়ানুকোভিচের ব্য়াক্তিগত কারন ছিল। ইউরোপিয় ইউনিয়নের দাবী মানলে, কারারুদ্ধ বিরোধীদলীয় নেত্রী ইউলিয়া তিমোশেন্কোরে কারামুক্ত করা লাগে, ইয়ানুকোভিচরে জীবন গেলেও ঐ মহিলারে জেলখানার বাহির করবো না।
রাস্তায় নামলো ইউক্রেনের পাবলিক।
পয়লা পরথম আন্দোলন শান্তিপুরনই আছিল। কিন্তুক এর আকার প্রকারে ইয়ানুকোভিচ গেল ডরায়া।

১৪ই জানুয়ারী একটা আইন পাশ করলো সে। আইনের বিধানের মধ্য়ে অনুমতি ছাড়আ তাঁবু খাটানো যাইবোনা, মাইক লাগানো যাইবোনা, খামাখা মুখোশ বা হেলমেট পরা যাইবেনা, এধরনের আউল ফাউল বিধান ছিল। পাবলিক তো বোকা না, তারা ঠিকই বুঝতে পারছিল কেম্নে কি। তারা গেল আরো ক্ষেইপা। মিছিলে মিছিলে চারিদিক কাপায়া তারা কিয়েভ নগর ভবন দখলে নিল।

ইয়ানুকোভিচ সরকার তখন আর উপায় না দেইখা আন্দোলন নিয়্ন্ত্রন আইন তুইলা নিল।
কিন্তু ততক্ষনে দই জইমা গেছে।
আন্দোলনের দাবী আরো বুনিয়াদী চেন্জ মানে একেবার সাংবিধানিক ভাবে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা কমানোর দাবীর দিকে হেইলা গেছে।
১৮ই ফেব্রূয়ারী সারা কিয়েভে গন্ডগোল শরু হইয়া গেল। পুলিশ আর জনতার সনঘাতে ৮২ জন শহীদ হইল।

হাজারেরো অধিক আহত হইল। ১৯, ২০, ২১ ফেব্রুয়ারীতে পরিস্থিতির আরো খারাপের দিকে গেল। ২৩ ফেব্রুয়ারী ইয়ানুকোভিচ পালায়া রাশিয়া গেলগা। এইসব ডামামোডের মধ্য়ে পহেলা মার্চ, পুতিনের সরকার ইউক্রেনে রুশ সেনাবাহিনী মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নিল। ঠান্ডা যুদ্ধের পরে এই প্রথম রাশিয়া তার জামাজুমা খুইলা সিনা চেতায়া পশ্চিমের নাকের ডগায় আইসা খাড়আইল।


এখন দেখা যাক কার চোখের পলক আগে পরে।

সোর্স: http://www.sachalayatan.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।