আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ক্রিমিয়ায় সেনা শক্তি বাড়াচ্ছে রাশিয়া, পশ্চিমা হুমকি

রাশিয়ার সেনা পাঠানো নিয়ে ইউক্রেন পরিস্থিতি এখন থমথমে। রাশিয়া বলছে, ক্রিমিয়ায় বসবাসরত রুশ নাবিকদের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হাত থেকে বাঁচাতে ও রাশিয়ার স্বার্থ রক্ষায় সেখানে সেনা অবস্থান অপরিহার্য। অন্যদিকে এ পরিস্থিতি সামাল দিতে ইউক্রেনও বলেছে, তাদের সামরিক বাহিনী প্রস্তুত। তবে রাশিয়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে 'যুদ্ধ ঘোষণা' করেছে এমন অভিযোগ করে দেশটির অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী আরসেনি ইয়াতসেনয়ুক এও বলেন, সংকটকবলিত ইউক্রেন এখন 'দুর্যোগের দ্বারপ্রান্তে'।

রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সার্গেই ল্যাভরভ বলেন, তার দেশ আর কিছুই নয় কেবল তাদের নাগরিকদের মানবাধিকার রক্ষায় কাজ করতে চায়।

ক্রিমিয়া সীমান্তে সেনা মোতায়েন করে ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করেছে রাশিয়া এমন অভিযোগ করে ইউক্রেনও প্রস্তুত বলে জানিয়েছে। এদিকে, ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে শিল্পোন্নত দেশগুলোর সংগঠন জি-৭। তারা রাশিয়ার বিরুদ্ধে অবরোধ আরোপেরও হুমকি দিয়েছে।

অন্যদিকে, জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্রাঙ্ক-ওয়ালটার স্টেইনমেয়ার রাশিয়াকে জি-৮ থেকে বহিষ্কারের হুমকি দিয়েছেন। ইউক্রেনের সেনাবাহিনীকে যুদ্ধ সতর্কতায় রাখা হলেও তাদের বড় ধাক্কা দিয়েছেন দেশটির নৌবাহিনীর প্রধান ডেনিস ভেরেজোভস্কি।

নিয়োগের দুই দিনের মাথায় নৌবাহিনী প্রধান ক্রিমিয়ায় রাশিয়াপন্থি কর্তৃপক্ষের প্রতি আনুগত্য দেখিয়েছেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে তাকে তার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার। আলোচনার মাধ্যমে বিদ্যমান সংকটের সমাধান করতে ইউক্রেনের নবগঠিত সরকার আগ্রহী হলেও রাশিয়ার আগ্রাসনকে কেন্দ্র করে যে কোনো ধরনের যুদ্ধ পরিস্থিতি মোকাবিলায় দেশটির সামরিক বাহিনীকে পূর্ণ প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে তারা। এ ছাড়া রাশিয়ার সেনাবাহিনীকে পিছু হটতে বাধ্য করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি চাপ বাড়ানোর জন্য আবারও আবেদন করেছে দেশটির নবগঠিত সরকার।

ইউক্রেনের রণপ্রস্তুতি এবং পশ্চিমাদের হুমকি সত্ত্বেও ক্রিমিয়ায় সেনা প্রত্যাহার করেনি রাশিয়া। ক্রিমিয়ায় এখনো রণসাজে অবস্থান করছে রুশ সেনারা। রাজধানী সিমফারোপোলের কাছে একটি গ্রামে গতকাল রাশিয়ার সেনাদের টহল দিতে দেখা গেছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্বের চাপ উপেক্ষা করে ইউক্রেন অধিকৃত ক্রিমিয়া উপদ্বীপে সামরিক শক্তি বাড়িয়েই চলেছে রাশিয়া। খবরে বলা হয়েছে, ক্রিমিয়া উপদ্বীপে এরই মধ্যে কয়েক হাজার সেনার সমাবেশ ঘটানো হয়েছে।

তা সত্ত্বেও সেখানে আরও হাজার সেনা, সাঁজোয়া যান এবং উপদ্বীপটি ঘিরে জাহাজের উপস্থিতি ক্রমে বাড়ছে। ক্রিমিয়ায় ইউক্রেনের বড় দুটি সামরিক ঘাঁটি ও বিমানবন্দরের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর দখল নিয়েছেন রুশ সেনারা। ইউক্রেনের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা জানান, সমুদ্রের যে চ্যানেলটি রাশিয়া ও ক্রিমিয়াকে আলাদা করেছে তার আশপাশে সাঁজোয়া যান জড়ো করছে রাশিয়া। এ ছাড়া ক্রিমিয়া থেকে রাশিয়ায় ফেরি চলাচলকারী টার্মিনালের দখল নিয়েছেন রুশ সেনারা। কৃষ্ণসাগরে রাশিয়ার নৌঘাঁটি সেভাস্তোপোলের আশপাশে সে দেশের জাহাজের আনাগোনাও বেড়েছে।

ওই অঞ্চলের মুঠোফোনের সার্ভিসও কার্যত অচল করে রাখা হয়েছে। উল্লেখ্য, গণবিক্ষোভের মুখে রাশিয়াপন্থি প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচের পতনের পর দেশটিতে এ সংকটের সৃষ্টি হয়। বিবিসি, আলজাজিরা।

 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।