আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ক্ষমা করেদে মা মনিরা

গত কাল আমার প্যান্টের পকেট কেটে টাকা নিয়ে গেল সুপ্রভাত বাসে। আমার মেয়েরা প্রায় দেড়মাস হলো নানা বাড়ীতে। আজ বৃহস্পতীবার তাদের আনতে যাব এই পরিকল্পনা ছিল। কতদিন মেয়েদের দেখিনা। কিন্তু সব পরিকল্পনা মাঠে মারা গেল।

পকেটমারের ব্লেডের খোঁচায়। দু:সময় যেনো আমার পিছু ছারছেনা।

এর শুরু হয় ২০০৬ সালে। আমি যে এন.জি.ও তে চাকুরী করতাম তার পতনের মধ্য দিয়ে। এন.জি.ও টি সরকারী নিষেধজ্ঞার কবলে পড়ে।

ফলে বন্ধ হয়ে যায় রোজি রোজগারের ধান্দা। আমি অন্যত্র চাকুরী চেষ্টা করি। এর মধ্যে বাবা ইন্তেকাল করলেন। আমার অবস্থা দিনকে দিন কাহিল থেকে কাহিল হতে লাগল। আত্মীয় -স্বজন বন্ধু বান্ধব সবাই কেমন যেনো দুরে সরে যেতে লাগলো।

তাদের কথাবার্তা ব্যাবহারে বড়ই অচেনা মনে হতো তাদের। খুব বেশী প্রয়োজন না হলে কারো সাথে যোগাযোগ করতাম না। অনেকটা নিজের মাঝে নিজেকে নিয়ে বস্ত থাকা। এমনকি শশুর বাড়ী রসে হাড়ি সেখানেও তেমন যেতাম না। আমর শশুর বউ আর বাচ্চা কে নিয়ে যেতো।

তখণ আমি তাদের আনার জন্য যেতাম।

নিজের অবস্থা পরিবর্তনে সচেষ্ট হলাম। বাবার পুরোনো দোকানটিকে ঘষে মেঝে ব্যাবসা শুরু করলাম। পাসাপাসি কোনমতে একটি চাকুরী যোগার করলাম নিকস্থ একটি গার্মেন্টেস এর এম.আই.এস অফিসার হিসেবে। গার্মেন্টস এর শ্রমিক মালিক দন্দ্বক্লীষ্ট পরিবেশে সেখানেও এক বছরের বেশী চাকুরী করা গেল না।

অবশ্য সাথে সাথে আরো একটি প্রতিষ্ঠানে পেয়ে যাই ডাটা এন্ট্রীর কাজ। কিন্তু যার কপালে সুখ আল্লাহ লেখেনি সেকি তার স্বন্ধান সহযে পায়? এর মধ্যে জানা গেলো আমার পূর্বের নিষেধাজ্ঞা আরোপিত প্রতিষ্ঠান এ চাকুরী করা কালে আমার নামে একটি মামলা হয়েছে। সেরের উপর সোয়া সের। এমনেই কষ্টে সৃষ্টে দিন চলে এরপর আবার নতুন ভাবে মামলা ঝামেলা। ল্যা ঠ্যালা সামলা।

যাহোক জামিনে থেকে মামলায় হাজীরা দিচ্ছি এখনো। রায় কি হয় ? কবে হয় জানি না? হাতে টেনেটুনে মাসিক বেতনটা ছারা আর কোন সম্বল নেই। এভাবেই চলছে।


মেয়েগুলো আজ কতদিন হল দুরে আছে । মোবাইলে তাদের কথা শুনি।

তাদের কাছে পেতে ইচ্ছে করে। আদর করতে ইছ্চে করে। বেতনটা পেলেই তাদের কাছে যাবো কত পরিকল্পনা আমার। এর মধ্যে যদি এমন অকস্মাত নিয়তির খরগ এসে পরলে কোথায় যাই? মরার উপর খরার ঘা যেনো।

কেনো এমন হয় আমার সাথে বারে বারে।

এর আগে এই বাসে আমার মোবাইল নিয়ে গেল। তখন বড় বোন একটি মোবাইল দিল। সেটাও গত বছর বাসা থেকে জানালা খুলে বড় বাঁশের মাথায় জাল লাগিয়ে দুরের উচু জায়গাথেকে চার্জ দেয়া অবস্থায় চুরি হয়ে যায়। আসলে কপালে যদি না থাকে ঘি ঠক ঠকালে হবে কি?

মেয়েগুলোকে বলেছিলাম বাবা আসছি। কিন্তু সে কথা রাখা হলো না বুঝি।

অজাচিতরা চুরি করে নিয়েছে তোদের স্বপ্ন । ক্ষমা করেদে মা মনিরা।

কেন এমন হয় জানিনা।
আল্লাহই ভাল জানেন।
স্বপ্ন আর আশা গুলো চুরি হয়ে যায়।


কেন এমন হয় আমি জানিনা।

কেন বারে বারে মুরগী আমিই হই জানিনা।
জবাই আমিই হই জানি না।
আল্লাহই ভাল জানেন।
কেন এমন হয় আমি জানিনা।



কেন বারে বারে কষ্টগুলো ফিরে আসে জানিনা।
সাবার কাছে কেন হতে বেকুব মানব জানিনা।
আল্লাহই ভাল জানেন।
কেন এমন হয় আমি জানিনা।

কেন বারে বারে জীবন পথে কাঁটার খোঁচা জানিনা।


ঘরে বাইরে সর্বত্র যেনো কি একটা অমানীষা জাানিনা।
আল্লাহই ভাল জানেন।
কেন এমন হয় আমি জানিনা।

কেন বারে বারে হোচটখাই জানিনা।
রক্তক্ষরনের পর উঠে দাড়িয়ে কেন আবার পতন হয় জানিনা।


আল্লাহই ভাল জানেন ।
কেন এমন হয় আমি জানিনা।

কেন সবার কাছে অপদার্থ প্রমানিত হই জানিনা।
চারপাসে শুধু ঘুরছে কিসের যেনো অশনি সংকেত জানিনা।
আল্লাহই ভাল জানেন।


কেন এমন হয় আমি জানিনা।

কেন রুটি রোজগারের ধান্দায় বাগরা জানিনা।
একি কোন অভিশাপ নাকি পরিক্ষা নাকি শাষ্তি জানিনা।
আল্লাহই ভাল জানেন।
কেন এমন হয় আমি জানিনা।



কেন আমার কারনে সবাই থাকে অস্বস্তিতে জানিনা।
ভজঘট গোলমোলে পরিবেশর আমিই কেন মূল হোতা জানিনা।
আল্লাহই ভাল জানেন।
কেন এমন হয় আমি জানিনা।

কেন দু:সময়ে আপনজন বন্ধ বান্ধব ভূল বুঝে জানিনা।


কেন হারিয়ে যায় আস্থার জায়গা টুকু জানিনা।
আল্লহই ভাল জানেন।
কেন এমন হয় আমি জানিনা।

কেন পিতা সন্তানদের কাছে যেতে পারেনা জানিনা।
মাথায় হাতরেখে আদর করার ইছ্চে দমন করতে হয় জাানিনা।


আল্লাহই ভাল জানেন।
কেন এমন হয় আমি জানিনা।

জানিনা কেন ভাল ছেলে হতে পারলাম না ?
জানিনা কেন ভাল ভাই হতে পারলাম না?
জানিনা কেন ভাল স্বামী হতে পারলাম না?
জানিনা কেন ভাল বন্ধু হতে পারলাম না?
জানিনা কেন ভাল কর্মী হতে পারলাম না?
জানিনা কেন ভাল প্রতিবেশী হতে পারলাম না?
জানিনা কেন ভাল নাগরিক হতে পারলাম না?
জানিনা কেন ভাল একজন মানুষ হতে পারলাম না?

হাজারো কেন উত্তর আমি জানিানা
আল্লাহই ভাল জানেন। ।

সোর্স: http://prothom-aloblog.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.