আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অভিজাত পরিবারের ভয়ঙ্কর অপরাধীরা

রাজধানীর বনানীতে অস্ত্র-গুলি, মাদক ও পশুর চামড়াসহ গ্রেফতারকৃত গাড়ি ছিনতাই চক্রের ৪ সদস্যের বিরুদ্ধে পৃথক চারটি মামলা করা হয়েছে। ছিনতাই চক্রের সদস্যরা হলো রুখসানফা ইয়াসমিন, তার ছেলে জুনায়েদ, জুনায়েদের স্ত্রী পরিচয় দানকারী আফসারা রশিদ, বাড়ির দারোয়ান তুষার। তাদের বিরুদ্ধে দুটি অস্ত্র আইনে, একটি বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনে এবং অন্যটি দ্রুত বিচার আইনে বনানী থানায় মামলাগুলো হয়। গতকাল পুলিশ তাদের প্রত্যেকের ১০ দিন করে রিমান্ড আবেদন করলে আদালত এক থেকে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গ্রেফতারকৃত অভিজাত পরিবারের চার সদস্যের কাছ থেকে ভয়ঙ্কর অপরাধের তথ্য পাচ্ছে পুলিশ।

তারা কেবলমাত্র প্রতারণার মাধ্যমে গাড়ি ছিনিয়ে নেওয়া চক্রই নয়, নানা ধরনের অপরাধের সঙ্গেও সম্পৃক্ত। চক্রটি কোথাও কোনো অভিযানে গেলে ওইসব এলাকায় অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করে মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ করে দিত। ফলে সহজেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতেন।

সূত্র আরও জানায়, তারা কখনো নিজেদের গোয়েন্দা পুলিশ, কখনো র্যাব বা অন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে ধনাঢ্য পরিবারের সন্তানদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছে। গ্রেফতারকৃত জুনায়েদ তার মা রুখসানফা ও তার বান্ধবী আফসারাকে টোপ হিসেবে ব্যবহার করত।

এ ছাড়া জুনায়েদ স্মার্ট নারী ও পুরুষদের ব্যবহার করে ধনাঢ্য পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করত। পরে সুযোগ বুঝে ধনাঢ্য ওইসব পরিবারের সদস্যদের জিম্মি করে বিলাসবহুল গাড়ি বা মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিত। তাদের চাহিদা মতো অর্থ না পেলে নেমে আসত অবর্ণনীয় নির্যাতন।

পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার খন্দকার লুৎফুল কবির বলেন, তারা অভিজাত পরিবারের ভয়ঙ্কর অপরাধী। অভিনব পন্থায় তারা গাড়ি ছিনতাই করে থাকে।

চক্রটি নারীদের ব্যবহার বরে ধনাঢ্য পরিবারের সন্তানদের টার্গেট করে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধারকৃত সরঞ্জাম প্রমাণ করে এরা বড় ধরনের অপরাধী চক্র। তারা কোনো ধরনের অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত সে বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। ওই চক্রের সদস্যদের গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃতরা কোনো অপারেশনে গেলে ওই স্থানে কোনো প্রযুক্তি ব্যবহার করে মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ করে দিত কিনা তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আশরাফুল ইসলাম জানান, গ্রেফতারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে তারা সংঘবদ্ধ গাড়ি ছিনতাই চক্রের সদস্য ছাড়াও মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। এ চক্রের সঙ্গে বড় ধরনের অপরাধীদের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। রিমান্ডে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে।

উল্লেখ্য, রবিবার বনানী ১ নম্বর রোডের এফ ব্লকের ১০৫ নম্বর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে প্রতারক চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৫টি বিদেশি পিস্তল, ৭টি ম্যাগাজিন, ২৯ রাউন্ড গুলি ও গুলির খোসা, ল্যান্ড ক্রুজার ও প্রিমিও নামে দুটি চোরাই গাড়ি, পুলিশের ওয়াকিটকি, হ্যান্ডকাফ, ২৭টি বিভিন্ন ধরনের দেশি-বিদেশি ছোরা, ১টি এয়ারগান, ৪টি শক্তিশালী পেট্রলবোমা, দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য।

এ ছাড়া জব্দ করা হয় একটি বাঘের চামড়া, দুটি কালো ভাল্লুক, একটি কুমির ও একটি হরিণের চামড়াও।

 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.