আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ম্যান্ডেলা নন মুজিবই প্রথম



জানি শিরোনাম দেখেই বলবে, আবারো ফিপফপ! মানলাম। কিন্তু ডিগবাজিতে এরশাদকে অতিক্রম না করা পর্যন্ত আমাকে ডিগবাজ বলা নিষেধ। চিন্তা নেই, এরশাদের সাথে বাজি ধরেছি, জিতলেই জানাবো। কথায় বলে, ‘উচিত কথায় ভাসুর বেজার, তপ্ত ভাতে বেড়াল বেজার। ’
বিষয়টি হলো, ১৯৭৪-এর ওআইসি সম্মেলনে যোগ দিয়ে ‘বুচার অব বেঙ্গলদের’ সাথে করমর্দন এবং কোলাকুলির ঘটনা প্রতিষ্ঠিত ইতিহাস হওয়ায় এর একটি ভালো ব্যাখ্যা করা যেতে পারে।

বলছি, ম্যান্ডেলা নন, মুজিবই যুদ্ধাপরাধীদের ক্ষমার দৃষ্টান্তে প্রথম। সাধারণ ক্ষমা ঘাঁটতে গিয়ে প্রথমবারের মতো বিষয়টি আমাকে ভাবিয়ে তুলেছে। ভাবছি, এত ব্যতিক্রম হলো কেন? আমার বিশ্বাস, সাধারণ ক্ষমায় মুজিব যা বলেছেন, কেউই তা অনুসরণ করেননি, বিশেষ করে তার কন্যা। সাধারণ ক্ষমার বিরুদ্ধে যাওয়ায় মুজিব কতটা ক্ষিপ্ত হতেন, সেটাও বিবেচ্য। মুসলমান-ইহুদিতে যুদ্ধ স্বাভাবিক কিন্তু সাধারণ ক্ষমা না করলে যুদ্ধ হতো তাদের সথে যারা এক ধর্ম, বর্ণ, ভাষা, সংস্কৃতির মানুষ ছাড়াও বিশেষ করে একসাথে স্বাধীন পাকিস্তানের আন্দোলনে।

যুদ্ধাপরাধ কেন্দ্র করে একে অপরের বুকে গুলি চালানো শুরু করলে শেষ পর্যন্ত হয়তো একজন বাংলাদেশীও থাকত না। বিষয়টির বিশদ ব্যাখ্যা জরুরি।

সাধারণ মা ও যুদ্ধাপরাধ
১৯৭৩ সালের ৩০ নভেম্বরের সাধারণ ক্ষমার মর্মার্থ হলো, মুক্তিযুদ্ধে বিরোধিতার জন্য প্রতিশোধ নেবেন না মুজিব, তবে ভুল স্বীকার করে সবাই দেশ গড়ার কাজে নিয়োজিত হবে বলে আশা। তিনি বলেছিলেন, স্বাধীনতার সুফল সবাই ভোগ করুক। ফলে মুক্তি পেলেন খান এ সবুর, খাজা খায়েরউদ্দিন, গভর্নর মালেক, শর্ষীণার পীর, ওয়াহিদুজ্জামান, মাওলানা আবু জাফর, এ কে এম ইউসুফ, আব্বাস আলী খান, শাহ আজিজদের মতো ঘোর পাকিস্তানপন্থীরা।

বলেছিলেন, দীর্ঘ সময় বন্দী থেকে আশা করি তোমরা তোমাদের ভুল বুঝতে পেরেছো। অনেকেরই আজীবন জেল হয়েছিল। ৩৫ হাজার ৪৭১টি মামলার মধ্যে ৭৫২টি নিষ্পত্তি হয়। মুক্তি পেলেন ৩৪ হাজার ৬০০ এর বেশি। জেলে থেকেই পরিচিত এবং বন্ধুরা নেতার সাথে যোগাযোগ রাখতেন।

শাহ আজিজের পরিবারকে গোপনে নাকি মাসিক তিন হাজার টাকা করে পাঠাতেন। যা ফ্যাক্ট- ১. প্রমাণ সত্ত্বেও খাজা খায়েরউদ্দিনের মতো খুনিদের মুক্তির মাধ্যমে ম্যান্ডেলার আগেই এগিয়ে মুজিব। ২. কাউকে না জানিয়ে দিল্লিতে ১৯৫ জন শীর্ষ ‘বুচার অব বেঙ্গলসহ’ এক লাখ যুদ্ধবন্দীকে মুক্তিদানের মতো বিতর্কিত বিষয়টির নিষ্পত্তি। ৩. ইন্দিরার ঘোর আপত্তি সত্ত্বেও ১৯৭৪ সালে ওআইসি সম্মেলনে গিয়ে ‘বুচার অব বেঙ্গলদের’ সাথে সাধারণ ক্ষমাকে ইতিবাচক অর্থে কাজে লাগানোর কৌশল। একজন স্বাধীন দেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে এই অধিকার তার ছিল, যেমন ছিল ’৭১-পূর্ব এবং পরবর্তী অবস্থা বিবেচনা করে বিপদের শঙ্কিত হওয়ার সমান অধিকার।

খাজা খায়েরউদ্দিন বা টিক্কা খানের মতো খুনি, ধর্ষক, অগ্নিসংযোগকারীদের মুক্তি দেয়ার পরও সাধারণ ক্ষমার বিধানে একটিমাত্র ব্যতিক্রম রাখা কি তার রাজনৈতিক কৌশল ছিল না? প্রতিটি রাজনীতিবিদেরই নিজস্ব ছক থাকে। আর এটাকেই অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে ডান এবং বাম সুবিধাবাদীরা।
বিষয়টির গঠনমূলক ব্যাখ্যা কিভাবে সম্ভব? যেমনÑ এদের নিয়েই ধর্মের ভিত্তিতে পাকিস্তান আন্দোলন, অন্যথায় জিন্নাহর প্রস্তাব অনুযায়ী কনফেডারেশন স্টেটই দেশবিভাগের বিকল্প ছিল। এরপর একসাথে কখনো রাজপথে, কখনো জেলে, ভাষা আন্দোলন থেকে ছয় দফা এবং লাহোর গোলটেবিলের উদ্দেশ্য একটাই, স্বায়ত্তশাসন। ঐতিহাসিকভাবে সাদা-কালোরা কখনোই একসাথে জাতীয় আন্দোলনে যায়নি কিন্তু ভাষা আন্দোলনে রাজপথে এবং জেলে, মুজিব ও গোলাম আযমদের একটাই দাবি, রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই।

এরপর ছয় দফা আন্দোলনেও পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন চাই। অতীতে যে কারণে পাকিস্তান, একইভাবে স্বায়ত্তশাসনেরও দাবি। সমস্যার শুরু, নেহরুর পাতা গর্তে পা, যা আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, হিরোশিমায় বোমা ফেলানোর পেন্টাগন ষড়যন্ত্রের মতো আজো রহস্যজনক। ছয় শর্তে ছয় দফায় পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন ছিল, স্বাধীনতা নয়। সুতরাং এখানে মোটেও পক্ষবিপক্ষ ছিল না।

তবে নিজামীদের থেকে মুজিবের আদর্শ বিচ্ছিন্ন হওয়ার প্রধান কারণ, স্বায়ত্তশাসন বদলে গেল ‘পাকিস্তান ভাঙো’ আন্দোলনে, যে বিতর্ক এখন ট্রাইব্যুনাল পর্যন্ত গড়িয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের নামে আসলেই কী ঘটতে যাচ্ছিল, এ নিয়ে প্রচণ্ড দ্বিমত ছিল আরেক পক্ষের। তখন ইন্দিরা গান্ধীর উদ্দেশ্য নিয়ে মাও-নিক্সনেরও অভিযোগ, তার উসকানিতেই যুদ্ধ।
২৩৫ বছর আগে নারীবাদী লেখিকা মেরি ওলস্টানক্র্যাফট বলেছেন, ‘মানুষ পরিবেশ এবং পরিস্থিতির শিকার’। আমাদের জন্য উদাহরণ, জিন্নাহ এবং হাসিনা।

হাসিনার কথা পরে লিখছি। ১৯১৬ সালে কংগ্রেস এবং মুসলিমের মধ্যে ‘লèৌ প্যাক্ট’ সইয়ের জন্য গোপালকৃষ্ণ গোখলে জিন্নাহর নাম দিলেন ‘হিন্দু-মুসলিম বন্ধনের দূত’। অখণ্ড ভারত রেখে ব্রিটিশ তাড়ানোর কাজে উভয় দলের শিখণ্ডিদের সাথে রাজপথে তখন তরুণ ব্যারিস্টার জিন্নাহ একজন সেকুলার স্টার। আবার এই জিন্নাহই দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে ভারত ভাগ না করে একচুল ছাড় দিতে রাজি নন কেন? কারণ ১৯৪৬ সালে দিল্লির ক্যাবিনেট মিটিংয়ে তারই দেয়া কনফেডারেশন স্টেট প্রস্তাবটি নেহরু উড়িয়ে দিলেই দেশ বিভাগের শুরু। বাধ্য হয়ে প্রত্য সংগ্রামের ডাক দিলেন ৩৬০ ডিগ্রি বদলে যাওয়া প্তি জিন্নাহ।

’৪৬-এর প্রত্য সংগ্রাম দিবসের রায়টে দুই বাংলায় কত মানুষ খুন হয়েছিল? এর ফলাফল আনল পাকিস্তানÑ যা বলতে চাইছি, পাকিস্তানিদের শোষণ, নিপীড়ন অব্যাহত থাকলে যথাসময়ে এরাও যে জিন্নাহর মতো বদলে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ত না, গ্যারান্টি কার? পাকিস্তান ভেঙে ভারতের শূন্যস্থান পূরণের বিরুদ্ধে গোলামদের ইউটার্নের যৌক্তিকতার বহু প্রমাণের মধ্যে কয়টা বলব? পদে পদে প্রমাণ, ২৪ বছরে পাকিস্তান যত লুটপাট করেছে, ৪৩ বছরে তার চেয়ে হয়তো বেশি করেছে ভারত। ‘ভারতীয় সেনাবাহিনীর মদদে বাংলাদেশ স্বাধীন করার অর্থ এবং তাৎপর্য বুঝে উঠতে আমার এক মুহূর্তও বিলম্ব হয়নি’ --মেজর এম এ জলিল।
১৯৭১-এ না হলে ভবিষ্যতে হতো না কিংবা ভারতকে পাশে না পেলে মুক্তিযুদ্ধই হতো না কিংবা ভারত ছাড়া আরো অর্থবহ যুদ্ধ হতো না, এমন বেদবাক্য কার? ৪৩ বছর পর এ নিয়ে বিতর্কের যথেষ্ট কারণ সৃষ্টি হয়েছে। ইরাক-আফগানে অকুপেশনের ফসল খাচ্ছে মার্কিনিরা। আমি কোনো মনোবিজ্ঞানী নই, কিন্তু সাধারণ মার গদ্য পড়ে যা বুঝি, দেশে ফিরে পচা ইঁদুরের গন্ধ পেয়ে মুজিবই নানান সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছিলেন।

‘মুক্তিযুদ্ধে সহায়তার জন্য ইন্দিরা তাকে সাঁড়াশি চাপে রেখেছিলেন’। তিনিও চাননি বল এক কোর্ট থেকে অন্য কোর্টে যাক। অকুপেশন এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিষয়ে উভয়েরই টানাপড়েন ছিল। তবে সাধারণ ক্ষমার বদলে তখন যদি পাইকারি হারে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে লিপ্ত হতেন, যতটুকুই করেছিলেন তা-ও পারতেন না। যদি কেউ মনে করে, মুজিব বেঁচে থাকলে বহুদলীয় গণতন্ত্র হতোই না, সারা জীবনই বাকশাল থাকত, মূর্খ তারা।

দেশ বিভাগের গতিধারা থেকে বহু শিক্ষণীয়।
এ ছাড়া তাজউদ্দীন মন্ত্রিসভায় সিআইএর এজেন্ট মোশতাককে তো তিনিই মন্ত্রিসভায় জায়গা দিলেন। ঠিক একইভাবে পোস্টপার্টাইড দক্ষিণ আফ্রিকায় বিপক্ষের লোকদের নিয়েই মন্ত্রিসভা। মুজিব হত্যাকাণ্ডের আলোকে বিখ্যাত সাংবাদিক লরেন্স লিপশুলজ ‘অসমাপ্ত বিপ্লব’ গ্রন্থে মুজিবনগর সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোশতাকের ষড়যন্ত্র বিষয়ে লিখেছেন, আমেরিকার কর্মকর্তাদের সাথে আটটি স্থানে গোপন বৈঠকে কিসিঞ্জারের প্রতিনিধিদের সথে অখণ্ড পাকিস্তানের পক্ষে সরাসরি আলোচনা হয়। মোশতাক ও পররাষ্ট্রসচিব মাহবুবুল আলমের সাথে আমেরিকার চুক্তি হয় যে, আসন্ন জাতিসঙ্ঘ মিটিংয়ে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিলে মোশতাক সেটা মেনে নিলেই মুক্তিসেনারা ফিরে যাবে ব্যারাকে।

’৭১-এর অক্টোবরে সেই মিটিংটি হওয়ার কথা থাকলেও ভারতীয় গোয়েন্দাদের কঠোর নজরদারিতে ষড়যন্ত্র ফাঁস হয়ে গেলে রীতিমতো হইচই। তার বদলে জাতিসঙ্ঘে যান বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি দল। তখন চৌধুরী টিমের বিরুদ্ধে জাতিসঙ্ঘে যারা উপস্থিত তারাই শাহ আজিজের নেতৃত্বে অখণ্ড পাকিস্তানের লবিতে আরেকটি শক্তিশালী দল। এ রকম আরো কয়েকজন যারা থিয়েটার রোডে থেকে গোপনে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করতেন কিন্তু পরবর্তী সময়ে তারা থাকে সরকারে। অর্থাৎ মুজিবের সাধারণ মার ১৭ বছর পর ম্যান্ডেলার মার মডেলে পদে পদে মুজিবের ছায়া।

সুতরাং শুরুতেই ভণ্ড কমিউনিস্ট আক্রমণের শিকার না হলে হয়তো সময়মতোই সব কিছু সামাল দিতেন মুজিব।

নেলসন ম্যান্ডেলা
ঐতিহাসিকভাবে ম্যান্ডেলা ও মুজিবের সাধারণ ক্ষমার মডেল প্রায় হুবহু। গৃহযুদ্ধ এড়াতে দু’জনই প্রেক্ষাপট অনুযায়ী যা প্রয়োজন করেছেন। এ জন্য দু’জনকেই জনতার কঠোর প্রতিবাদ সহ্য করতে হয়েছে। টিক্কা খানের মতো খুনিদের মুক্তি দিয়ে অন্যদের জন্য ব্যতিক্রমী বিধান রেখে মুজিব তখন নিজেই নিজের সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী।

রাস্তায় মুজিববিরোধী মিছিল থেকে মৃত্যু কামনা। তবে খাজা খায়েরউদ্দিন অথবা শাহ আজিজদের মতো যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তির রেফারেন্স থাকা সত্ত্বেও এই বিচার কতটা যৌক্তিক, রক্তপাত বন্ধে ট্রাইব্যুনালের বিচারকদের বিবেকপ্রসূত দায়িত্ব অপরিসীম হওয়ার কারণ, প্রতিটি রায়ের পরেই এত রক্তপাত গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা শান্তিতে থাকতে চাই, স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই। এখানেই মুজিব-ম্যান্ডেলার সাধারণ ক্ষমার বাস্তবতা। ম্যান্ডেলা যখন বাংলাদেশে, তখন বহুদলীয় গণতন্ত্র জমজমাট।

উন্নয়নে সবার অংশগ্রহণ জমজমাট যা বলতে চাইছি, ৩৬০ ডিগ্রি বদলে যাওয়ার কিছু উদাহরণ। যেমন: রাজনৈতিক আন্দোলন থেকে পার্লামেন্ট, নিজামী, গোলাম আযমদের সাথে আওয়ামী সভানেত্রীর খুব ভালো সম্পর্ক। নিজামীদের সাথে চা-চক্র, অর্থাৎ বহুদলীয় গণতন্ত্রের সুখাদ্য খেয়েছেন হাসিনাই বেশি এবং সেটাই ভালো। স্বাধীনতাবিরোধী খুনি এরশাদকে টেনে নামিয়ে তার সাথেই মহাজোট। অভ্যুত্থানের জন্য মাইনুল ফখরুলকে পুরস্কৃত করে দিনরাত জিয়াউর রহমানকে দোষারোপ।

এমনকি ২০০৭ সালে খেলাফতে মজলিসের সাথে ফতোয়ার চুক্তি, যার অন্যতম ‘ব্লাসফেমি’ আইন। বর্তমানে এই মনমানসিকতার উগ্রপন্থীদের বিরুদ্ধেই তো সন্ত্রাসের অভিযোগে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চপর্যায়ে বারবার মন পরিবর্তনের সাথে, ...পরিবেশ এবং পরিস্থিতির কারণে ’৭১-এর অভিযুক্তদেরও ৩৬০ ডিগ্রি বদলে যাওয়ার একটি প্যারালাল খুঁজে পাওয়া যায়। সরকার অভিযুক্তদের সাধারণ মার বিষয়টি অস্বীকার করতেই পারেন কিন্তু তাতে সাধারণ মারই মর্যাদা ক্ষুণ্ন হবে। মুজিব বেঁচে থাকলে এ ধরনের পরিস্থিতি সহ্য করতেন কি না বলা মুশকিল।

এ জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী ঘাদানিক। সাধারণ ক্ষমা অমান্য করতে সরকারকে বেশি বিভ্রান্ত করল এরাই। কিন্তু আমার স্কুল অব অ্যাক্টিভিজমে, যে বিষয়টি কখনোই আমার কাছে বোধগম্য নয় এবং জীবন থাকতে হবেও না, তা হলো, মুক্তিযুদ্ধের একজন ব্রিলিয়ান্ট সেক্টর কমান্ডার, মঞ্জুরের মতো একজন বীর উত্তম মেজর জেনারেলকে খুনের দায়ে অভিযুক্ত কাঠগড়ার আসামি এরশাদকে কোন যুক্তিতে বিশেষ দূত করা? এটাই কি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা? এটা যদি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী না হয়, কলঙ্ক না হয়... ’৭১-এর বিরোধীদের বিচারের যোগ্যতা কার? সাধারণ মা মেনে নিলে বিশ্বের কাছে কখনোই এত সমালোচিত হতো না বাংলাদেশ।
ধর্মভিত্তিক রাজনীতি ভালো না মন্দ সেই বিতর্কে যাচ্ছি না তবে বাস্তবতা হলো দেশ বিভাগ আর মুক্তিযুদ্ধ পরস্পরবিরোধী কামানের মতো, দুটোই এক কারিগরের তৈরি। পাকিস্তান অর্জন করতে গিয়ে হিন্দু-মুসলমানের গণহত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, হলোকাস্টের চেয়ে ভয়াবহ।

এ জন্য ’৪০ সাল থেকে যত রক্তগঙ্গা পৃথিবীতে আর কোনো দেশ ভোগ করেনি। আমার বিশ্বাস, নেহরুর পাতা ফাঁদে পা না দিলে হয়তো স্বায়ত্তশাসনেই সীমাবদ্ধ থাকতেন মুজিব এবং ভারত ছাড়াই মুক্তিযুদ্ধ হতো। আমরাও ছোট উপনিবেশের হাত থেকে বড় উপনিবেশবাদীদের হাতে কখনোই পড়তাম না। আজ প্রশ্ন উঠেছে, দেশ বিভাগ কি ভুল ছিল? সাধারণ ক্ষমা নিয়ে রাজনীতি করলে সামনে অনেক কিছুই ভুল মনে হবে।
সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার সাথে সাথে মুজিববিরোধী বিাক্ষাভে ফেটে পড়েছিল শহীদ পরিবারগুলো।

আর এ পরিপ্রেেিতই ঘাদানিকের মতো তৃতীয় শ্রেণীর বামদের আত্মপ্রকাশ। পক্ষবিপক্ষ সৃষ্টি করে গৃহযুদ্ধ বাধানোর প্রথম কাজটা করল রায়বল্লভদের নতুন দুর্গ-ঘাদানিক। পরবর্তী সময়ে বিচারের সাথে যুক্ত হলো ক্ষমতা, শরিক হলেন হাসিনা। যার যা কৃতিত্ব, দিতেই হবে। মুজিবের ছিল না হলিউড, ওয়াশিংটন, ম্যানহাটনের বড় বড় নেতা, লবিস্ট, অ্যাক্টিভিস্ট।

ম্যান্ডেলার ছিল বিশপ ডেসমন্ড টুটু, নিউ ইয়র্কের মেয়র ডিনকিন্স, বক্সার মোহাম্মদ আলী, হলিউডের স্পাইকলির মতো স্বনামধন্য ব্যক্তিত্ব। নিউ ইয়র্কের মেয়র ডিনকিন্স অভূতপূর্ব প্যারেড দিলে সেখান থেকেই নোবেলের দাবি। ম্যান্ডেলার ভাগ্যে নোবেল, এদের কারণেই মুজিবের কপালে বিতর্কের দায়িত্ব আওয়ামী লীগ কি এড়াতে পারে?

৯ম পার্লামেন্টে কমিউনিস্ট আগ্রাসন ও বিচার
সোস্যালিজম আর কমিউনিজম দুটোই বিষ। সংবিধানে গণতন্ত্রের মধ্যে সমাজতন্ত্রের কাবাব বানিয়ে রোগীর সর্বনাশ। তবে সো কলড কমিউনিস্টদের খপ্পরে না পড়ে সাধারণ মার বিষয়টি আমলে নিলে, দুটো কাজ হতো, ১. মুজিবকে আর বিতর্কিত না করা, ২. দেশরা।

কিন্তু মুজিবের মতোই তারও ভাগ্যাকাশে সিদুঁরে মেঘ। সংসদ এবং বাইরে তাকেও ঘিরে ফেলেছে বামপন্থীরা। কমিউনিস্ট অভ্যুত্থানের ফসল ১৫ আগস্ট, এবার খালেদাকে মাইনাস করে নতুন ষড়যন্ত্র। অতীতে মুজিবকে হুমকির মতো টকশোতে বসে খালেদাকে গুলি করার হুমকি দিলেন বাদল। ঘরে ঘরে ঢুকে হত্যাযজ্ঞ চালাতে চান লতিফ সিদ্দিকী।

মন্ত্রী কামরুলের দাবি বিএনপি হলো সন্ত্রাসের দল। তোফায়েলের দৃঢ়বিশ্বাস, খালেদাকে পাকিস্তান পাঠিয়েই ছাড়বেন। প্রধানমন্ত্রী কী বলেন, না-ই বা বললাম। যা বলতে চাইছি, কমিউনিস্ট মানেই লাল পতাকা নয় বরং মুজিব কোটের তলে কিংবা বাইরে নানান প্রজাতির ভণ্ড বামপন্থী এরা, ইতিহাস বলে, বাঙালিদের ধ্বংসের জন্য বাইরের কারো লাগে না ভেতরের শত্র“ই যথেষ্ট।
ট্রাইব্যুনালকে কেন্দ্র করে যা হচ্ছে, মুজিব বেঁচে থাকলে কতটা ক্ষিপ্ত হতেন জানি না, তবে এই দফায় কমিউনিস্টদের ভাগ্য ভালো।

অতীতে এদের বিরুদ্ধেই মুজিবের জিরো টলারেন্স, ‘কোথায় সিরাজ শিকদার’ মুজিবের বিখ্যাত উচ্চারণ। ৪০ বছর পর আবারো কমিউনিস্টদের কারণে গৃহযুদ্ধের অবস্থা। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হোক, সব ক’টির ফাঁসি হোক, আমিও চাই কিন্তু বিচার হবে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত এবং সন্দেহাতীত। কিন্তু যেভাবে ফাঁসি চেয়ে বিশ্বরেকর্ড করা হচ্ছে, বিচার নিরপে হবে কোন দুঃখে? বিচার প্রভাবিত করতে যা যা লাগে, বেশিই করছে সরকার এবং তার কমিউনিস্টরা যার সবচেয়ে বড় প্রমাণ স্কাইপ কেলেঙ্কারি। ট্রাইব্যুনালের একজন সিটিং বিচারক যখন বাইরের কারো সাথে চলমান মামলা নিয়ে আলোচনা করেন, আন্তর্জাতিক আইনে বেআইনিই নয় পুরোটাই মিস ট্রায়াল।

এই রেফারেন্স পশ্চিমের বহু বড় বড় মামলা থেকে নেয়া যেতে পারে। ব্যতিক্রমের কারণ, আওয়ামী মেনুফেস্টোতে যুদ্ধাপরাধীদের বিষয়টি হয়ে গেল শৌখিন লাল পতাকাওয়ালাদের ‘কমিউনিস্ট মেনুফেস্টো’। এটাকেই ক্যাশ করে মতিয়ারা প্রথমেই সাধারণ ক্ষমার বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামেন। দিনে সাম্যবাদ রাতে কূটনীতিপাড়া। এই দাগে বিষের প্রভাব এত বেশি যে, মানুষের সন্দেহ, সত্যিই এসব হাসিনার কাজ কি না!
স্বাধীনতার শুরুতেই পাকিস্তান আমলে নিষিদ্ধ বামদের আত্মপ্রকাশ ও অত্যাচার।

যেখানে সোস্যালিজম আর কমিউনিজম সেখানেই জাদুঘরে মানবাধিকার। আমরা তাদেরই বন্দুকের নলে। ’৭২ থেকে ’৭৫-এর নৈরাজ্য নিশ্চয়ই ভুলে যায়নি আওয়ামী লীগ। হাসিনা জানেন, অন্য কেউ নন বরং জাতীয় সরকার প্রশ্নে বনিবনা না হওয়ার উত্তেজনা থেকেই মুজিবের বিরুদ্ধে এক তাত্ত্বিক নেতা এবং যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার মস্তিষ্কে নিষিক্ত হয় মুজিব হত্যার প্রথম ভ্রƒণ। আমার ধারণা এই দাগে বৈদেশিক কমিউনিস্ট শক্তি পরিচালিত বামদের নীলনকশাটি আরো বড়।

এদেরই কুপ্রভাবে একটি কাজও সুস্থমতো করতে পারেননি হাসিনা, যার অন্যতম প্রমাণ পদ্মা সেতুর মৃত্যু এবং প্রতিটি রায়ের পরেই খুনোখুনি। লাশ ফেলা যেন পচা তরকারির চেয়ে সস্তা। এদের কারণেই বিচার কেন্দ্র করে ’৭১ পূর্ববর্তী অবস্থা। স্বামী-স্ত্রী যখন একে অপরের শত্রু, একমাত্র সমাধান ডিভোর্স। কিন্তু ১৬ কোটি মানুষের জন্য দু’টি কনফেডারেশন বাংলাদেশে কি সম্ভব? সেই অর্থে মুজিব, ম্যান্ডেলাই বাস্তব রাজনীতিবিদ।

আমরা পড়েছি অ্যামেচারদের খপ্পরে। যাদের ওয়ার্ড কমিশনার হওয়ার যোগ্যতা নেই, এক পয়সার অরজ্ঞান নিয়ে এমন অনেকেই পার্লামেন্টেরিয়ান। ভিসি যখন ছাত্রকে দেখলে স্যার স্যার বলে চেয়ার ছেড়ে দেন, ব্যাখ্যার প্রয়োজন আছে কি?
সর্বহারা, গণবাহিনী, জাসদ... মুজিববাদীদের দাবি সন্ত্রাস নির্মূল করতেই বাকশাল আর রীবাহিনী। পাইকারি জেল আর ক্রসফায়ারে হত্যার ইতিহাস মতিয়াদের জানা। মুখে গণতন্ত্র, কাজে বন্দুক, দেশটাকে ল ভ করার জন্য দায়ী চীন আর রুশপন্থীরা।

গৃহযুদ্ধের আগুনে পুড়িয়ে মারতে ‘গণমঞ্চ’ নামের আরেকটি দুষ্ট ব্লকের সৃষ্টি করল ভারত এবং চায়নাপন্থীরা। এরা বিশ্বাস করে মিলিটারিইজমে। কমিউনিস্ট পরিবেষ্টিত হাসিনা যখন সন্ত্রাসের কথা বলেন, সত্যিই হাসি পায়। শাহবাগে সন্ত্রাসী অভ্যুত্থানে সরাসরি পৃষ্ঠপোষকতা দিলো ভারত এবং সরকার, যা চাইলেও অস্বীকার করা যাবে না। এসবের মূলে ৪০ বছর পর এবার ডান-বামের জগাখিচুড়ি, সাধারণ মাকে যারা গলা টিপে হত্যা করল।



যা হতে পারত
হোমওয়ার্ক করলে যা হতো। এত দিনে পদ্মা সেতুর ফসলও ঘরে তোলা যেত। গার্মেন্ট নামের শ্রেণী বৈষম্যের জাহান্নামতুল্য শিল্পের প্রতিস্থাপনে মধ্য শ্রেণীর শিল্পের দিকে এগোনো যেত। হাজার হাজার কোটি টাকার জ্বালানি তেলের দুর্নীতিশ্রেষ্ঠ ব্যবসায় বাদ দিয়ে জার্মানির মতো সোলার প্ল্যান্টে বিদ্যুৎ স্বয়ংসম্পূর্ণতার দিকে যাওয়া যেত। হলমার্ক, শেয়ারবাজারের মতো অবৈধ সন্তানগুলোকে ভ্রƒণেই গর্ভপাত করানো যেত।

সম্ভাবনাময় ৫০ বিলিয়ন ডলারের পর্যটন খাতকে প্রাধান্য দিয়ে আধুনিক কৃতদাসপ্রথা নিভিয়ে দেয়া যেত। সমুদ্র বিজয়ের সব ফসল তাঁবেদারদের পকেটে তুলে না দিয়ে বরং দেশের ভেতরেই দু-একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি করা যেত। সমস্যা হলো বামদের খপ্পরে পড়া হাসিনার সময় কোথায়! যা বলছি, বামদের কমিউনিস্ট মেনুফেস্টো গ্রহণ এবং মুজিবের সাধারণ ক্ষমা ঘ্যাচাং করার মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে বাংলাদেশকে কলঙ্কিত করা ছাড়া কাজ আর যা হলো, প্রয়োজনের তুলনায় অতি নগণ্য। অর্থাৎ গেরস্থের মুরগি তো ডিম পাড়বেই কিন্তু তাই বলে মুরগির প্রতিটি ডিম কি ঘরে ঘরে গিয়ে দেখাতে হবে? তাহলে গেরস্থের মুরগি পালার দরকারটা কী?
ফলে এক কাঁধে ট্রাইব্যুনাল, অন্য কাঁধে কমিউনিস্ট নিয়ে লেজেগোবরে গাড়ি আর চলছেই না। ডিজিটাল ট্রেনের এনালগ ইঞ্জিন অবাস্তব।

পাঁচ বছরে যে পরিমাণ শক্তি ও অর্থ ব্যয় করলেন, এক সহস্রাংশও করলে একটি মানুষকেও ক্রসফায়ারে মারতে হতো না। ইউনূসকে ধরে টানাটানি না করলে, দু’টি পদ্মা সেতু সম্ভব হতো। সাদা লক্ষ্মী পায়ে ঠেলে এখন রিজার্ভ ধরে টানাটানি। খেতে খেতে শেষ, এবার শেয়ারমার্কেট আর পদ্মা সেতুর সর্বভুকেরা রিজার্ভ খেয়ে শেষ না করে নড়বে না। আমাদের অনুজ দক্ষিণ আফ্রিকার মাথাপিছু আয় ১১ হাজার ডলারেরও বেশি।

১৪ শ’ শতাব্দীর কৃতদাস প্রথার মতো উল্টো আমরাই এখন বাংলাদেশ থেকে আফ্রিকাতে ২১ শ’ শতাব্দী ভার্সনের আধুনিক কৃতদাস পাঠাই, এরাই প্রবাসী শ্রমিক। যা বলছি, ট্রাইব্যুনালকে কেন্দ্র করে আফ্রিকায় গৃহযুদ্ধ হলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ৫৪ মিলিয়ন, যা বাংলাদেশের বেলায় ১৬৫ মিলিয়ন। সময় থাকতে ভাবুন ঠাণ্ডা মাথায়।

সমাজতন্ত্রের বিপদ
একটি ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট স্মরণে থাকা মঙ্গলজনক। সংবিধানে একই সাথে সমাজতন্ত্র ও গণতন্ত্র মানে প্রজাতন্ত্রের কাবাব।

শুরুতেই সমাজতন্ত্রের দিকে মুজিবের ঝোঁক পছন্দ করেনি পশ্চিমারা। কিউবার সথে বাণিজ্যে আমেরিকার ঘোর আপত্তি। ’৭৪-এর দুর্ভিরে সময়ে মধ্য সমুদ্রে তখন খাদ্য জাহাজ, নিক্সন প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হলো, কিউবার সাথে বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে (পাটজাতীয় পণ্যগুলো যাচ্ছিল কিউবায়)। সেটা না হওয়ায় ফিরিয়ে নিলো খাদ্য জাহাজ। পরের ইতিহাস জানলেও কোনো শিক্ষা নিইনি।

’৭১কে কেন্দ্র করে বদলেছে পুঁজিবাদীদের দৃষ্টিভঙ্গি। এবারো পশ্চিমের সাথে সম্পর্ক অবনতি করে কমিউনিস্টদের সাথে সম্পর্ক গড়ার প্রবণতা উদ্বেগজনক। পশ্চিমারা কোনো কিছুই খুলে বলে না বরং ঘুরিয়ে বলে। ‘আলেন্দে’ হত্যার আগে তার সবচেয়ে ভালো বন্ধু ছিল একটি এলিটগোষ্ঠী যাদের বেশির ভাগই ‘সিআইএ’। ’৭২-৭৫, ভালো এবং মন্দ মুজিবের জীবন থেকে দুটোই শিক্ষণীয়।

কমিউনিস্ট না সোস্যালিস্ট আমি নিজেও বিভ্রান্ত, মইনুদ্দিন খান বাদলরা এবার মোশতাকের ভূমিকায় কি না... অতীতের মতো হাসিনার ঘরেও আগুন দিলো। নোবেলপ্রাপ্ত লেখক নাইপল তার বিখ্যাত উপন্যাস, ‘বেন ইন দ্য রিভার’ গ্রন্থে লিখেছেন, ‘ঘটনার কাছাকাছি থাকলে দেখা যায় না’। হাসিনাও বামদের বাইরে কিছুই দেখছেন না। ৪০ বছর পর এমন কিছুই ঘটেনি, যে জন্য টিক্কা খানের মতো ‘বুচার অব বেঙ্গল’কে মুক্তি দিয়ে টমের বিচার কিংবা খাজা খায়েরউদ্দিনের মতো ধর্ষক এবং অগ্নিসংযোগকারীকে ছেড়ে দিয়ে হ্যারির ফাঁসি। (বিষয়টি আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণযোগ্য)।

আরেক কমিউনিস্ট লন্ডন প্রবাসী কলামিস্ট ক্রমাগত হাসিনাকে বিভ্রান্ত করে চলেছেন। ৮০ বছরের বৃদ্ধ যখন বয়সে ছোট কারো পায়ে ধরে আকুতি মিনতি জানিয়ে রাজনৈতিক খুতবা দেন বেহায়াপনাই নয়, লজ্জাজনকও। এভাবেই কমিউনিস্টদের খপ্পরে পড়ে অগ্ন্যুৎপাতের মুখে বাংলাদেশ।
তার পরও বিচার যদি করতেই হয় করুন, কিন্তু কখনোই সেটা এইপর্যায়ে নয় যখন লন্ডনের ‘আফতাব পার্ক’ কিংবা নিউ ইয়র্কের ‘জ্যাকসন হাইটসের’ রাস্তায় বিদেশীদের সামনে বিভক্ত বাংলাদেশীরা মুজিব-জিয়ার নামে চিৎকার করে স্লোগান দিতে দিতে ডাণ্ডাপেটা করবে আর পুলিশ এসে হাতকড়া পরাবে, তখন বিদেশীরা অবাক চোখে বলতে থাকবে: শেইম অন ইউ বাংলাদেশ! গো ব্যাক ইউর কান্ট্রি ইউ ডার্টি ম্যান (দ্রষ্টব্য : আফতাব পার্কে গণ্ডগোলের ভিডিও)।

উপসংহার
’৭২-এ মুজিবের সাথে মতা নিয়ে দ্বিমত হওয়ায় ‘কমিউনিস্টদের’ নৈরাজ্য এবং সাধারণ ক্ষমাকে কেন্দ্র করে ঘাদানি ধরনের ‘সোস্যালিস্টদের’ আত্মপ্রকাশই ১৫ আগস্টসহ সব অভ্যুত্থানের বীজ।

সুস্থ বাংলাদেশ চাইলে লাল-নীল-সবুজ সব ধরনের বাম বিষমুক্ত রাজনীতির বিকল্প নেই। এই দাগে ভয়ঙ্কর বেপরোয়া বামপন্থীরা, মুজিব এবং তার কন্যা বরাবরই এদের খপ্পরে পড়ে ভুগছেন এবং ভোগাচ্ছেন, যে মতা ভোটাররা কাউকেই দেয় না। প্রতিযোগিতা হওয়া উচিত দেশটাকে কে কত বেশি ভালোবেসে এগিয়ে নিতে পারে। তাই ম্যান্ডেলার মতো মুজিবের সাধারণ মাকেও সমান গুরুত্ব দিয়ে দেখার সময় ফুরিয়ে যাচ্ছে। ‘স্বাধীনতার জন্য যারা যুদ্ধ করে, আমেরিকার চোখে তারা টেরোরিস্ট’।

নোয়াম চমেস্কি।

সূত্র: , Click This Link

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।