আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কল্পগল্পঃ ট্রেসলেস রেভুল্যাশন !

আমার চোখে ঠোটে গালে তুমি লেগে আছো !!

এক

-কি মনে হচ্ছে ?
-বুঝতে পারছি না !
-আপনার মনে হয় সারভাইভ করবে ?
-আরও কয়েক মিনিট অপেক্ষা করে দেখি !
-দেখুন ব্রেন টা কিভাবে গ্রো করছে ? দেখুন দেখুন !
-হুম ! এই তো কাজ হচ্ছে মনে হচ্ছে ! আমরা সফল হতে চলেছি !
-আমরা না ! ড. টমাস মিরিনসো ক্সাইলেন সফল হতে চলেছেন !


দুই
২০৫০ সাল

দুপুরের খাওয়া শেষ প্রেসিডেন্ট একটু বিশ্রাম নেন । আজকে অনেক দিন পরে একটু অবসর পাওয়া গেছে ! মনে মনে ঠিক করে নিলেন আজকে সারা বিকাল তিনি তার মেয়ের সাথে কাটাবেন ! কাজের চাপে মেয়েকে একদম সময় দেওয়া হয় না ! আজকে সময়টা তিনি মেয়ের সাথেই কাটাবেন ! তিনি মেয়েকে ডাকতে যাবেন এমন সময় তার নিজেস্ব সহকারী হন্তদন্দ হয়ে ঘরে ঢুকলো ! চেহারা দেখেই মনে হচ্ছে সাংঘাতিক কিছু হয়েছে !
-কি ব্যাপার ?
-স্যর, রাশিয়া আমাদের ওয়াশিংটন বরাবর নিউক্লিয়ার মিশাইল থ্রো করেছে !
প্রেসিডেন্ডের মনে হল তিনি ভুল শুনলেন !
-কি বললে তুমি ?


তিন
আমার বিস্তৃত হাসি দেখে তন্বীর মুখটা বিরক্তিতে ভরে গেল ! এমন একটা ভাব যেন আমি হেসে বড় অন্যায় করে ফেলেছি !
আরে বাবা একজন মানুষের সাথে পরিচয় হয়েছি একটু হাসবো না ?
আদনান সাহেব আমার দিকে তাকিয়ে আবারও বলল
-আপনাকে কি বলে যে ধন্যবাদ দিবো বুঝতে পারছি না !
আমি আর একটু হাসি বিস্তৃত করে বললাম
-আরে কোন ধন্যবাদ দেওয়ার দরকার নেই ! তন্বী তো আমার বন্ধু তাই না ?
-জি জি ! তা তো অবশ্যই ! আচ্ছা ! আমি আর বেশিক্ষন থাকতে পারবো না ! আপনারা পড়াশুনা করুন !
-কোন সমস্যা নেই !
-তন্বী আপনার কথা প্রায়ই বলে ! আপনি না থাকলে ওর গ্রেড নাকি একদম জিরোতে চলে যেত । জানেনই তো এখন গ্রেড পয়েন্ট টা কত জরুরী ! একটা ভাল জীবন, একটা ভাল লাইফ স্টাইল, ভাল সুযোফ সুবিধার জন্য একটা ভাল গ্রেড দরকার !
-জি ! তা তো অবশ্যই !

আমি তন্বীর দিকে তাকিয়ে দেখছিলাম আমি আদনান সাহেবের সাথে যতই কথা বলছিলাম তন্বী ততই বিরক্ত হয়ে উঠছিল ! আরে এই মেয়েটা কি ? একটু কথাও বলতে দিবে না দেখছি !
আদনান সাহেবের মনে হয় আরও কিছু বলার ইচ্ছা ছিল কিন্তু দেখলাম তন্বী তাক কথা বলার সুযোগ দিলো না ! বলল
-তোমার না অফিসে দেরী হয়ে যাচ্ছে ?
-ও হ্যা ! যাচ্ছে তো !
-তাহলে এখানে কেন দাড়িয়ে আছো ? জানো না এখন টাইম টেবিলটা কত স্ট্রীক !
-ও হ্যা হ্যা ! আচ্ছা অপু সাহেব ! আপনার পড়াশুনা করুন ! আমি যাই !
আমি কথা না বলে আবার সেই বিস্তৃত হাসি দিলাম !

আদনান সাহেব চলে যাওয়ার পরে তন্বী আমার দিকে বিরক্তি নিয়ে তাকিয়ে বলল
-কি ব্যাপার ? এতো ফাউ প্যাঁচালের দরকার কি ?
-আরে আশ্চার্য ! তোমার বয়ফ্রেন্ড ! একটু কথা বলবো না ?
তন্বী আবারও একটু বিরক্তি নিয়ে বলল
-ও আমার বয়ফ্রেন্ড না ! ফিওনসে !
-ও হ্যা ! তাই তো ! ও তোমার তোমার বয়ফ্রেন্ড হতে পারবে না ! তোমার বয়ফ্রেন্ড তো আমি !
এই কথা বলেই আমি জোড়ে হেসে উঠলাম ! তন্বী আরও একটু বিরক্ত হয়ে উঠলো !
বিরক্ত নিয়েই বলল
-তুমি কি একটু সিরিয়াস হবে না ? দেখো বিয়ের দিন এগিয়ে আসতেছে ! গ্রেজুয়েশন শেষ হতে আর মাত্র মাস খানেক বাকি আর তারপরেই আদনানের সাথে আমার বিয়ে হয়ে যাবে ! তখন ? তখনই কি এই রকম ভাবে দাঁত কেলিয়ে হাসতে পারবে ?
-ও ! বেইবি ! রিল্যাক্স ! কোন চিন্তা কর না !

আমি যদিও ওকে রিলাক্স হতে বললাম তবে ও খুব একটা রিলাক্স হল বলে মনে হল না ! কিছু একটা করতে না পরলে আসলেই আদনানের সাথে তন্বীর বিয়ে হয়ে যাবে ! আমি চেয়ে চেয়ে দেখবো ! কদিন পরে আমাকে বিয়ে করতে হবে টমিক্সের পছন্দ মত মেয়েকে !

মাঝে মাঝে এমন রাগ লাগে এই মুল কন্ট্রোলার টমিক্সের উপরে ! বেটা দুনিয়ার সব কিছু তুই নিয়ন্ত্রন করিস এতে তোর মন ভরে না ? আমি কাকে বিয়ে করবো সেইটাও তোর ঠিক করে দেওয়া লাগবে ?
থাপড়ায়া কান গরম করে দেওয়া উচিৎ !
কান কিভাবে গরম করবো ? বেটার তো কানই নাই !

যাক কান না থাকলে কি হবে, বেটার কিছু একটা গরম আমি ঠিকই করে দিবো ! বেটা ঘুঘুর ফাঁদ দেখেছে ঘুঘু দেখে নাই !


২২ শতকের শেষ সময়ে এসেই টমিক্স পুরো পৃথিবীকে চালায় ! ২০৫০ সালে তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধে পৃথিবীর প্রায় সব গুলো দেশ একে অন্যের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে পড়ে ! ফলাফল স্বরূপ প্রচুর লোক মারা যায়, বলতে গেলে প্রায় সব মানুষই মারা যায় ! পৃথিবীর লোক সংখ্যা ৭০০ বিলিয়ন থেকে মাত্র ৭০ হাজারে নেমে আসে !
যুদ্ধ চলে প্রায় ১১ বছর ধরে ! যুদ্ধ যখন শেষ হয় তকখন পৃথিবীর আর কিছুই বাকি ছিল না ! একটা বিল্ডিংও মাথা উচু করে দাড়িয়ে ছিল না ! ২০৬১ সালের আবার সব নতুন করে সব কিছু শুরু হয় ! নিউক্লিয়ার আর পরমানু অস্ত্রের ব্যবহারের ফলে পৃথিবীর প্রায় সব জায়গায়ই বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ে ! কিছু নিরাপদ জায়গা বেছে মানুষ বসবাস শরু করে ! এবং আশ্চার্য ভাবে লক্ষ্য করা গেল মাত্র কয়েক বছরেই নতুন পৃথিবীটা জ্ঞান বিজ্ঞানের নতুন এক পথে অগ্রসর হয়ে পড়লো ! বিগত শতাব্দী গুলোতে মানুষ যা করতে পারে নি এই শতকে মাত্র ৪০ বছরে সব কিছু একেবারে আধুনিক হয়ে গেল ! পৃথিবীর মাঝ খানে এক নতুন কম্পিউটার স্থাপন করা হল যার নাম টমিক্স ! খাদ্য উৎপাদ থেকে শুরু করে বন্টন সহ সব ধরনের কাজ কর্ম নিয়ন্ত্রিত হতে লাগলো টমিক্স দ্বারা !

মোটামুটি এই টুকুই আমি জানি ইতিহাস । পাবলিক লাইব্রেরিতে আজকাল আর কেউ যায় না আমি মাঝে মাধ্যে গিয়ে নতুন মানব সভ্যতার ইতিহাস নিয়ে পড়াশুনা করি ! খুব তথ্য কোথাও পাওয়া যায় না ! তবে আমার কেন জানি মনে হয় কেউ একজন খুব চরুরতার সাথে সেই সব তথ্য গুলো সরিয়ে ফেলেছে । নতুবা এতো শত বই কিন্তু ২০৫০ থেকে ২১০০ সাল পর্যন্ত ইতিহাস একেবারে দায়শারা ভাবে লেখা হয়েছে ।

কিছু একটা লুকিয়ে রাখা হয়েছে !
কি সে টা কে জানে !

যাক সেইটা এখন সমস্যা না ! সমস্যা হচ্ছে হাতে মাত্র মাস দুয়েক সময় আছে । এর ভিতর কিছু একটা করতে হবে ! নতুন তন্বী ফুরুৎ হয়ে যাবে ।
পুরানো দিনের ইতিহাস থেকে জানতে পেরেছি আগে ছেলে মেয়েরা নাকি নিজের ইচ্ছে মত বিয়ে করতে পারতো, কেবল দুজন দুজন কে পছন্দ করলেই হত ! কিংবা পরিবারের পছন্দ !
এখনকার দিনে সেটা কল্পনাই করা যায় না ! জন্মের পর থেকেই টমিক্স ঠিক করে দেয় ছেলে কিংবা মেয়ে কোন স্কুলে যাবে কি নিয়ে পড়া শুনা করবে ! তার সাথে ডিএনএ গঠন পর্যবেক্ষন করে ও ঠিক করে দেয় মেয়েটা বড় হয়ে কোন ছেলের সাথে বিয়ে করবে !
এইটা কিছু হইলো !
আদনান সাহেব ঠিক এই ভাবেই তন্বীর ভাবী বর !

অবশ্য আমার জন্যও ঠিক করা আছে । মেয়েটার সাথে আমার বেশ কয়েকবার দেখাও হয়েছে । পাশের শহরে থাকে ।

নাম ইমি ! মাঝে মাঝেই আসে এখানে ! খারাপ না মেয়েটো !
কিন্তু মেয়েটা কে আমি ভালবাসি না ! তন্বীকে ভালবাসি ! আর আমি কাকে আমার জীবন সঙ্গী হিসাবে বেছে নিবো এটা একটা মাথা মোটা কম্পিউটার কিছুতেই ঠিক করে দিবে না ! বেটাকে থাপড়িয়ে পাগল বানিয়ে দিবো !


চার

প্রোফসর মালিক জামান আমার দিকে অনেক্ষন একভাবে তাকিয়ে রয়েছেন । আমি ভদ্রলোকে খুব ভাল করে চিনি এই কথা বলা যাবে না ! তবে উনার কয়েকটা ক্লাস করেছি ! বেশ ভাল পড়ায় ! আজকে হঠাৎ আমাকে কেন ডাক দিয়ে নিজের কেবিনে বসালেন ঠিক বুঝতে পারছি না ! আমার মত ক্ষুদ্র মানুষকে এমন একজন মানুষ কেন ডাক দিবে আমি ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না !

অনেকক্ষন চুপ করে থেকে হঠাৎ তিনি বললেন
-তুমি কি জানো তোমাকে আমি বেশ কয়েক দিন থেকে লক্ষ্য করছি !
আমি একটু চমকালাম !
আমাকে কেন লক্ষ্য করবে এই ভদ্রলোক ! আমি তো ঠিক বুঝতে পারছি না !
আমাকে চুপ করে থাকতে দেখে জামান মালিক বলল
-আমার কেন জানি মনে হচ্ছে তুমি কদিনের ভিতরেই কিছু একটা অন্যায় করতে যাচ্ছ ?
এইবার আমি সত্যি সত্যিই বেশ চমকালাম ! লোকটার চোখের দিকে তাকিয়ে দেখি আমার দিকে সে তীক্ষ চোখে তাকিয়ে আছে !
আসলে লোকটা কি করতে চয় ঠিক বুঝতে পারছি !

জামান মালিক বলল
-তুমি ঐ মেয়েটাকে ভালবাসো তাই না ?
খাইছে ! এ লোকটা কে ?
টমিক্সের কেউ ?
না । তা তো মেন হচ্ছে না ! কারন এই লোক যদি টমিক্সের কেউ হত তাহলে আমাকে এতোক্ষনে গ্রাউন্ড সাবটারফেজে নেওয়া হত ! তারপর মেমরী রিপ্লেমেন্ট প্লান্টের ভিতর ঢুকিয়ে দিতো ! এখনও যেহেতু সেটা করা হয় তাই মনে হচ্ছে ভদ্রলোকের মতলব অন্য খানে !
আমি এবারও কোন কথা না বলে কেবল তাকিয়ে রইলাম !
জামান মালিক বলল
-আমি যতদুর জানি নিজের সিলেকটেক পার্সোনের বাইরে কাউকে ভালবাসা অন্যায় ! এর জন্য তোমাকে গ্রাউন্ড সাবটারফেজে যেতে হতে পারে এটা জানো ?
-জি জানি ?
-তো কি ইচ্ছা ?
-আপনার কথা আমি ঠিক বুঝতে পারছি না ! যদি একটু পরিস্কার করে বলতেন !
-বলবো ! তার আগে আমি নিশ্চিত হতে চাই যে তুমি নির্ভরযোগ্য এবং বিশ্বাসযোগ্য কি না !

জামান মালিক আরও কিছুক্ষন আমার দিকে তাকিয়ে রইলো ! কি বলতে মনে মনে ঠিক করে নিল ।
তারপর বলল
-তুমি কি ট্রেসলেস রেভুলেশনের কথা শুনেছ ?
আমি একটু ভুরু কুচকে তাকালাম লোকটার দিকে ! লোকটা আমাকে কি বলতে চায় ? বেটা কি বিদ্রোহী নাকি ? আমাকেও দলে ভেড়াতে চায় ?
আমি একটু নড়ে চড়ে বসলাম !
লোকটা আবার বলল
-আমি জানি তুমি জানো ! অনেকেই জানে ! কিন্তু কেউ এটা মুখে স্বীকার করে না !


ট্রেসলেস রেভুলেশনের কথা আসলেই অনেকেই জানে তবে স্বীকার করে না মুখে ! আমরা মানুষ হয়ে কেন একটা মেশিনের কথা মত চলবো এবং তার নির্ধারিত পথে আমাদের হাটতে হবে এই প্রশ্ন তুলে অনেকে টমিক্সে সাথে বিদ্রোহ ঘোষনা করেছে ।
কিন্তু সমস্যা হচ্ছে আমাদের প্রত্যেকের দেহে একটা করে ট্র্যাকিং ডিভাইস সেট করা আছে যেটা দিয়ে টমিক্স আমাদের উপর নজর রাখে ।

আমাদের যোগাযোগ রাখে ! আমাদের শরীরের দিএনএর সাথে সামাঞ্জস্য রেখে এই ডিভাইস কাজ করে ! এই বিদ্রোহী গুলো নিজেদের দেহ থেকে সেই ট্র্যাকিং ডিভাইস বের করে ফেলেছে !
এখন চাইলেও টমিক্ক্স তাদের কি ট্রেস করতে পারবে না ! কিন্তু সমস্যা হচ্ছে ডিভাইস বের করে ফেলার সাথে সাথে তারা এই পৃথিবীর কেউ না হিসাবে গন্য হবে ! এখানকার কোন প্রকার সুযোফ সুবিধা তারা আর পাবে না !
এখন তারা সবাই হয়ে গেছে ট্রেসলেস ! কিন্তু শরীর থেকে ট্র্যাকিং ডিভাইস বের করে ফেলা লেভেল ফোর অপরাধ ! যার একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদন্ড !

আমি উঠে পড়তে পড়তে বললাম
-সরি স্যার ! আপনি কি বলছেন আম বুঝতে পারছি না ! আরও ভাল করে বললে আমি এসব বুঝতে চাচ্ছি না !

প্রফেসর আমার কাছ থেকে ঠিক এমই একটা উত্তর আশা করেছিলেন যেন ! অদ্ভুদ ভাবে হাসলেন তিনি ! হাসি মুখ রেখেই বললেন
-অপু হাসান ! তোমাকে একটা কথা বলি ! তুমি যেটা করতে যাচ্ছ সেখাতে তোমার সাহায্য লাগবেই ! একা কিছুতেই তুমি পেরে উঠবে না !
-সেটা স্যার আমার সমস্যা ! আমি দেখবো !
আমি আর দাড়াবো না বলে ঠিক করলাম !
আমি যখন উঠে পড়তে যাবো তখন জামান মালিক বলল
-অপু এটা কিন্তু ক্যাম্পাসের কম্পিউটারের ডাটা চেঞ্জের বিষয় না ! মনে রেখো !

আমার শিরদাড় দিয়ে একটা ঠান্ডা স্রোত বয়ে গেল !
লোকটা কি বলল ?
তার থেকে বড় প্রশ্ন লোকটা কিভাবে জানলো ?
কারও তো জানার কথা না ! তাহলে ?
যেখানে টমিক্স জানে না এই লোক কিভাবে জানে ?

মাস দুয়েক আগের কথা ! একটা ঝামেলার কারনে আমার একটা ল্যাব টেস্ট বেশ খারাপ হয় ! আমি জানতাম আমার রেজাল্ট কেমন হবে ! একটু চিন্তার বিষয় কারন গ্রেড খারাপ আসলে আমার সিটিজেন অপরোটুনিটি স্কোর কমে যাবে ! ফলে বেশ কিছু সুযোগ সুবিধা হাত ছাড়া হয়ে যাবে ! এই চিন্তায় অস্থির ছিলাম ! তাই ঠিক করলাম ক্যাম্পাসের রেজাল্টের ডাটা পাল্টে দেবো ! এটা করা অবশ্য খুব একটা সমস্যার কথা না ! সমস্যা টা হল আমার ভিতরে থাকা ট্র্যাকিং ডিভাইসটা ! আমি যেখানেই যাই না কেন এটা মেইন ডাটা বেজে রিডিং উঠবে ! আর আমার যেখানে থাকার কথা না সিগনালে যদি সেখানে ধরা পড়ে তাহলে সেখানে নিরাপত্তা কর্মীদের পৌছাতে খুব বেশি হলে দুমিনিট লাগবে !
কিন্তু আমি ঠিকই উতরে গেলাম !

জামান মালিক বলল
-দেখো, যারা একবার ট্র্যাকিং ডিভাইসটা বের করে ফেলে তারা সকল নাগরিক সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়ে আবার ট্র্যাকিং ডিভাইস শরীরের রেখে বিদ্রোহ করা সম্ভব না তুমি ভাল করে জানো ! এক মাত্র তুমি জানো ! তুমি কিভাবে নিজের শরীরের ভিতর ট্র্যাকিং ডিভাইসটা থাকা সত্ত্বেই কাজ টা করতে পেরেছিলে ? কিভাবে মেইন টমিক্সে ফাঁকি দিতে পেরেছিলে এই টা আমাদের দরকার ! আমাদের জানা দরকার !

আমি আবার বসে পড়লাম চেয়ারটাতে ! কি করবো ঠিক বুঝতে পারছি না ! আমার ব্যাপারে লোকটা বেশ ভাল খোজ খরব নিয়েছে বোঝা যাচ্ছে ! এখন আমি কি করবো ?
লোকটা যদি আমার নামে যে কোন স্টেশনে রিপোর্ট করে তাহলে আমাকে সোজা জেলে চলে যেতে হবে ! সেখানে যদিও আমার অপরাধ প্রমান করতে পারবে না কেউ তবে আমার উপর নজর বাড়বে ! তখন ?
তখন তো বেশ বিপদে পড়ে যাবো ?
আমার সাথে সাথে তন্বীও বিপদে পড়বে !

আমি বললাম
-আমি যদিও বলেই দেই তাতে তো খুব একটা লাভ হবে না ! টমিক্সকে কিছুতে হ্যাক করা সম্ভব না ! তার উপর টমিক্সের অবস্থান কোথায় কেউ জানে না ! জানলেও সেখানে পৌছানো সম্ভব না কিছুতেই !
প্রফেসর একটু হাসলো ! বলল
-আমি জানি টমিক্সকে হ্যাক করা সম্ভব না ! আমরা ওটাকে হ্যাক করবো না !
-তাহলে ?
-ধ্বংস করবো ।

আমি কেবল একরাশ বিশ্ময় ভরা চোখ নিয়ে প্রফেসরের দিকে তাকিয়ে রইলাম ! এটাও কি সম্ভব ?
কিন্তু প্রোফেসরের হাসি মাখা মুখের নিচে একটা দঢ় মনভাব দেখে মনে হল ভদ্রলোক সফল হলেও হতে পারে !



(আগামী পর্বে সমাপ্য, যদি আগামী পর্ব দেই আর কি )


গল্পের নাম চয়নে শান্তির দেবদূত

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।