আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কূটনীতি চাঙ্গা করতে চতুর্মুখী প্রচেষ্টায়

বৈশ্বিক সম্পর্ক উন্নয়নে চতুর্মুখী প্রচেষ্টা শুরু করেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন নতুন মেয়াদের সরকার। আগের মেয়াদে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে সৃষ্ট শিথিলতা কাটিয়ে ওঠার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। স্পর্শকাতর ইস্যুগুলো বাইরে রেখে বাণিজ্যিক বিষয়গুলো সামনে রেখে চলছে এ সম্পর্কোন্নয়নের প্রক্রিয়া। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বাইরে জোর দেওয়া হয়েছে বহুপক্ষীয় জোট ও সংস্থাগুলোর প্রক্রিয়ায়।

জানা যায়, সরকারের কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদারের জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী ও প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের নেতৃত্বে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এরই মধ্যে জোর প্রচেষ্টা গ্রহণ করেছেন। দেশগুলোর সঙ্গে বিদ্যমান সমস্যা চিহ্নিত করার প্রক্রিয়াও শেষ হয়েছে। মিশনগুলোকে ঢাকা থেকে বিশেষ নির্দেশনা দিয়ে খোঁজা হয়েছে বাণিজ্যিক নানান সম্ভাবনা। কূটনৈতিক সূত্র জানায়, রাজনৈতিক ইস্যুগুলোয় মন্ত্রীর বাইরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে দেখছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী। উপদেষ্টা তিন দিনের ভারত সফর করে ফিরেছেন। সেখানে নির্বাচনের আগে কংগ্রেস সরকারের সঙ্গে অমীমাংসিত ইস্যুগুলো নিয়ে আলোচনা করেছেন। একই ধরনের আরেকটি সফরে আগামী সপ্তাহে যাবেন পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক। মহাজোট সরকারের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক প্রায় পুরোটা সময়ই ছিল শীতল। এবার ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠনের পর সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে ওয়াশিংটনের সঙ্গে সম্পর্ক 'চাঙ্গা' করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। ওয়াশিংটন ও ঢাকার মধ্যে চালানো জোরাল কূটনীতির মধ্য দিয়ে খুব শীঘ্রই দুই দেশের মধ্যে আগামী দু-এক মাসে কয়েকটি বৈঠকের ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ৬-৭ এপ্রিল ঢাকায় টিকফা নিয়ে প্রথম বৈঠক, এরপর ১৬ এপ্রিল তৃতীয় বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তা সংলাপ এবং জুনে তৃতীয় বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র অংশীদারি সংলাপ। এ ছাড়া এরই মধ্যে ঢাকা সফর করছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের উপ-সহকারী সেক্রেটারি অতুল কেশাপ। ওয়াশিংটন সফর করেছেন পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রের খবর, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে 'ভোটার উপস্থিতি কম' এখনো যুক্তরাষ্ট্রের কাছে একটি আলোচনার বিষয়। তবে গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষায় বাংলাদেশকে অগ্রণী দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র; সে হিসেবেই বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারি চালিয়ে যেতে চায় ওয়াশিংটন। মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে জনশক্তিবিষয়ক সমস্যাগুলোর সমাধানেও নেওয়া হয়েছে বিশেষ পরিকল্পনা। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোকে বিশেষ গুরুত্বও দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগামী মাসে সৌদি আরবে সফরের আলোচনাও হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে বিশেষ দূত হিসেবে কাজও শুরু করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তিনি ঢাকার মধ্যপ্রাচ্যের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। কোথায় কীভাবে কাজ করবেন তা নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনাও করেছেন। প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রীও মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ সফর করতে যাচ্ছেন। এরই মধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাতের একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করছে। অন্যদিকে, যুদ্ধাপরাধ ইস্যুতে মুসলিম বিশ্বের দেশগুলোর সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন আরব লীগের মহাসচিব ড. নাবিল এল আরাবি। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে সাক্ষাতে ড. নাবিল বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন ও যুদ্ধাপরাধের বিচারের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহস ও দৃঢ়তার প্রশংসা করেছেন। বলেছেন, তিনি খুব নিবিড়ভাবে এ প্রক্রিয়াটি পর্যবেক্ষণ করছেন এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় এ বিচার প্রক্রিয়ায় আরব লীগের সমর্থন আছে। প্রায় একই সময়ে ঢাকা সফর করে গেছেন মুসলিম দেশগুলোর জোট ওআইসির মহাসচিব আমিন মাদানি। অন্যদিকে, নতুন মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর পশ্চিমা বিশ্বের পাশাপাশি নতুনভাবে পূর্বমুখী কূটনীতিতেও মনোযোগ দেওয়া হয়েছে। এ জন্য আসিয়ান রিজিওনাল ফোরাম (এআরএফ), এশিয়া কো-অপারেশন ডায়ালগ (এসিডি), এশিয়া ইউরোপ মিটিংয়ে (আসেম) বাংলাদেশের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ ছাড়া সার্ক, বিমসটেক, বিসিআইএম, ডি-৮সহ অন্য ফোরামগুলোকে আরও কার্যকরের বিষয়েও সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। বিমসটেক সম্মেলনের পর আঞ্চলিক জোটগুলোর ইচ্ছায় বর্তমান সরকার বাণিজ্যভিত্তিক মহাপরিকল্পনা করছে। এতে আগে থেকে যোগ থাকা ভারত, চীন, থাইল্যান্ড, মিয়ানমার, নেপাল, ভুটান ও শ্রীলঙ্কাকে প্রাথমিকভাবে অগ্রাধিকারের তালিকায় রাখা হচ্ছে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.