আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তরুণ বিজ্ঞানীর খোঁজে-বিজ্ঞান মেলা-২০১৩, বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্পগবেষণাগার (বিসিএসআইআর), বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় , স্থান- বিসিএসআইআর, ধানমন্ডি, ঢাকা-১২০৫, অংশগ্রহনে- মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের ছাত্র-ছাত্রীরা।

১৫ কোটি মানুষের ৩০ কোটি হাতকে শক্তিতে রূপান্তরিত করণে প্রয়োজন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উৎকর্ষ ও সঠিক ব্যবহার। প্রকৃতি প্রদত্ত সম্পদকে কাজে লাগাতে প্রয়োজন টেকনোলজি। এ লক্ষে এদেশের জনগণকে সম্পদে পরিণত করণে ব্যবহার করতে হবে তথ্য, বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির। গত দু’শ বছর পৃথিবীর মানুষের জীবনযাত্রার বৈপ্লবিক রূপান্তরে প্রধান ভূমিকা নিয়েছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিদ্যা। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিদ্যা আজ যে কোন দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির প্রাধান চালিকাশক্তি রূপে গণ্য হয়ে থাকে।

বাংলাদেশের মত ছোট্ট জনবহুল এবং উন্নয়নশীল দেশের পক্ষে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা এবং এগিয়ে যাওয়ার জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে উন্নয়নের কোন বিকল্প নেই। কিন্তু দূর্ভাগ্যক্রমে তৃতীয় বিশ্বের দেশ হিসেবে বাংলাদেশ এক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে আছে । অথচ এ দেশের সন্তানরা বিশ্বের উন্নত দেশে বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে চলছে। আমাদের জাতীয় মেধা অবহেলা করার মত নয়। গবেষণার প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধা এবং দেশপ্রেমের ঘাটতির কারণে আমরা অনেকটা পিছিয়ে রয়েছি।

আমাদের ছাত্র-ছাত্রীদের অনেকেরই সৃজনশীল প্রতিভা রয়েছে যা দেশ ও জাতির তথা মানবজাতির উন্নয়রনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে। কিন্তু উপযুক্ত পরিবেশে আর পরিচর্যার আভাবে তা বিকিশিত হতে পারে না। তাই সময় এসেছে নতুন করে চিন্তা করার। বর্তমান সরকারের অঙ্গীকার ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার লক্ষ্যে নিবেদিত প্রাণ হয়ে গবেষণায় আত্মনিয়োগ করলেই দেশ জাতি তথা সরকারের কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জন সহজ হবে। বিশ্বের অর্থনৈতিক ও সামরিক পরাশক্তিগুলোর আজকের এ অবস্থানের পেছনে রয়েছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিদ্যার প্রভূত উন্নয়ন।

বিশ্বায়নের এযুগে উন্নয়নের স্রোত ধারায় টিকে থাকতে হলে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিদ্যার উন্নয়নের কোন বিকল্প নেই। কোন জাতির বস্তুগত ও নির্বস্তুক উন্নয়ন নির্ভর করে আবিষ্কার ও উদ্ভাবনে। বিজ্ঞান প্রযুক্তি উন্নয়ন এবং অগ্রগতি একে অপরের পরিপূরক। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর নব নব প্রযুক্তির সাথে নিজেকে তাল মিলিয়ে চলতে হলে অবশ্যই বিজ্ঞানচর্চা ও প্রযুুক্তি ব্যবহার সম্পর্কে অত্যন্ত সুস্পষ্ট সাবলীল তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক ধারণা থাকা প্রয়োজন। শিক্ষার আধিপত্যই সার্বজনীন অর্থাৎ শেখার কোন বিকল্প নেই, আর বিজ্ঞান শিক্ষা তো অত্যাবশ্যক।

সেই সাথে মেধা-শক্তি ও মননশীলতা দিয়ে যারা জ্ঞানকে বিকশিত করতে পারে তারাই সাফল্যের দোড়-গোড়াঁয় পৌছাতে পারে। উন্নত দেশগুলোর তুলনায় আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। তবে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের সম্পদের যথেষ্ঠ সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর) স্কুল -কলেজের কোমলমতি ছ্ত্রাছাত্রীদের সৃজনশীল কাজে উৎসাহ উদ্দীপনা এবং সহযোগিতার অভিপ্রায়ে সমগ্র বাংলাদেশ তথা জাতীয় পর্যায়ে আয়োজন করে বিজ্ঞান মেলা। বিসিএসআইআর তার আন্তরিক প্রচেষ্টায় ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার লক্ষ্যে এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষা ও ব্যবহার সম্প্রসারণ করার ক্ষুদ্র প্রয়াস হিসেবে প্রতি বছর আয়োজন করে ‘তরুণ বিজ্ঞানীর খোঁজে’ বিজ্ঞান মেলা। এ প্রতিষ্ঠানটি গবেষণার পাশাপাশি গবেষণা উন্নয়নে অনুদান, ফেলো নিয়োগ, বিভিন্ন বিজ্ঞানভিত্তিক প্রশিক্ষণ এবং বাংলাদেশের প্রত্যন্ত এলাকায় লাগসই প্রযুক্তির মাধ্যমে গ্রামবাংলার আপামর জনসাধারণকে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে।

মেলার মাধ্যমে কচি মনের সুপ্ত প্রতিভাগুলো বিশাল সমুদ্রে পরিণত হয়। তাদের এই সুদীপ্ত প্রতিভা ও মেধাকে একত্রিত করে বিজ্ঞানচর্চা ও উদ্ভাবনী শক্তিকে উজ্জীবিত করে এই বিজ্ঞান মেলা। ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত প্রকল্পগুলো থেকে সময়োপযোগী ও গুরুত্ব বিবেচনা করে আরো বেশি যথার্থ গবেষণার সার্বিক সহযোগিতা প্রদানও আমাদের কাম্য। আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ আর এই ভবিষ্যতের দিকে দৃষ্টি রেখেই স্কুল-কলেজগামী ছাত্রছাত্রীদের বিজ্ঞান ভিত্তিক জ্ঞান চর্চার ক্ষেত্র হিসেবে এ মেলা মেধাবীদের উৎসাহিত করবে এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষায় আগ্রহী ও সৃষ্টিশীল মানস গঠনে অনুপ্রাণিত করবে। এই ক্ষুদে বিজ্ঞানীরাই আগামী দিনের জাতির গর্বের সম্পদ ও দিক নির্দেশকের ভূমিকায় অবর্তীন হবে।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বিজ্ঞান এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান আমাদের আমন্ত্রণে আন্তরিক ভাবে সাড়া দিয়ে মেলার উদ্বোধন ও সমাপনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের মাঝে পুুরস্কার ও সার্টিফিকেট প্রদান করে ছাত্র-ছাত্রীদের উৎসাহিত করবেন । স্কুল-কলেজের কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উৎকর্ষতা নিয়ে ভাবনা, উদ্ভাবনী স্পৃহা, চৌকষ মেধা, আবিষ্কারের মোহ এবং তাঁদের মাঝে লুকায়িত মেধার বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে আয়োজন করা হয়েছে বিজ্ঞান মেলা-২০১৩। সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে ভবিষ্যতে তাদের চিন্তা-চেতনা ও উদ্ভাবনী প্রতিভা উন্নয়নের ধারাকে বেগবান করবে বলে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস। বিজ্ঞানমনস্ক জাতি গঠনে এবং সৃজনশীল প্রতিভা বিকাশে এ মেলা তাদের উৎসাহ উদ্দীপনাকে জাগ্রত করবে। ‘মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল’ এর লক্ষ্য অর্জন ও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার এই ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের মেধা, শ্রম, মানসিকতা, চিন্তা-চেতনা সর্বোপরি উদ্ভাবনী শক্তি উন্নত জাতি গঠনে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে।

বিসিএসআইআর আগামী দিনগুলোতে আরো বি¯তৃত পরিসরে এ মেলার ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখে মেধা বিকাশের দিগন্ত স¤প্রসারিত করবে। সৃজনশীল ও যুগোপযোগী প্রকল্পগুলোকে উৎপাদনমুখী কর্মধারায় আনয়নে সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা ও গবেষণা অনুদান অব্যাহত থাকবে এই বিশ্বাস কর্তৃপক্ষের। বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর) “তরুণ বিজ্ঞানীর খোঁজে” প্রতিপাদ্য বিষয়কে সামনে রেখে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের সৃষ্টিশীল কর্মকে উৎসাহ-উদ্দীপনা দিয়ে আবিষ্কারের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করার অভিপ্রায়ে জাতীয় পর্যায়ে আয়োজন করা হয়েছে এই বিজ্ঞান মেলা ২০১৩। মেলায় স্কুল ও কলেজগামী ছেলে-মেয়েদের প্রতিভাদীপ্ত উদ্ভাবন ও সুদূরপ্রসারি কল্পনার যোগসূত্রে উপস্থাপিত প্রকল্পসমূহ আমাদেও হৃদয়কে আন্দোলিত করবে। আমরা আশান্বিত যে, এ মেধাবী নতুন প্রজন্মই গড়বে সমৃদ্ধ সোনার বাংলা ও ডিজিটাল বাংলাদেশ।

মেলা আগামী ১০-১২ জানুয়ারী প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পযন্ত চলবে আপনারা সকলে আন্তরিক ভাবে আমন্ত্রিত। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।