আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শোয়েব সেই আগের শোয়েবই আছেন

ঢাকায় স্টার স্পোর্টসের ধারাভাষ্যকারদের দলটা তারায় খচিত। কপিল দেব থেকে জন্টি রোডস, ওয়াসিম আকরাম, রবি শাস্ত্রী, সঞ্জয় মাঞ্জরেকার, ওয়াসিম আকরাম, সৌরভ গাঙ্গুলি, শেন ওয়ার্ন, শোয়েব আকতার—কে নেই তাতে! তবে এই তারকাদের দলে যিনি মিডিয়া ব্লকে সবচেয়ে বেশি দৃষ্টি আকর্ষণ করে চলেছেন, তিনি আর কেউ নন ওই শোয়েব আকতারই। এর-ওর সঙ্গে খুনসুটি, কখনো ধারাভাষ্যকক্ষের পেছনের বারান্দায় দাঁড়িয়ে সিগারেটে সুখটান, লিফট দিয়ে উঠতে-নামতে উর্দু-ইংরেজিতে নানারকম রসিকতা, তাঁর চঞ্চলতা বারবারই মনে করিয়ে দিচ্ছে তাঁর খেলোয়াড়ি জীবনটার কথা।
এমনিতে যথেষ্ট হালকা মেজাজে থাকলেও সংবাদমাধ্যম ও সাংবাদিকদের তিনি একটু এড়িয়ে চলেন বলেই মনে হয়েছে। এমনিতে খোশগল্পে আপত্তি নেই।

কিন্তু ক্রিকেটীয় প্রসঙ্গ এলেই তিনি কেন যেন একটু চুপসে যান। রক্ষাকবচ হিসেবে থাকে স্টার স্পোর্টসের সঙ্গে তাঁর চুক্তির ব্যাপারটা। কথা ঘুরিয়ে চলে যান অন্যদিকে, ‘ইয়ার, গল্প করছি করো না, এর মধ্যে আবার ক্রিকেট এল কেন?’ তখন বাধ্য হয়েই প্রশ্নকর্তাকে চলে যেতে হয় অন্য প্রসঙ্গে। বাংলাদেশের প্রসঙ্গ উঠলে তিনি প্রশংসায় হয়ে যান পঞ্চমুখ, ‘বাংলাদেশ আমি সব সময়ই উপভোগ করি। তোমরা অনেক উন্নতি করছ।

পাকিস্তানের কোনো ভবিষ্যত্ নেই। ’ উল্লেখ্য, উত্তরের পরের অংশটি অপ্রাসঙ্গিকভাবেই নিয়ে এসেছেন, এ কারণেই তো তিনি শোয়েব।
গতকাল বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের আগে তাঁকে দেখা গেল খুব খোশ মেজাজে। সাংবাদিকদের ক্যাফেটেরিয়ার এক কোনে নামাজের স্থানে দাঁড়িয়ে সেরে নিলেন নামাজের পর্বটি। নামাজ শেষ করেই একটি নির্দিষ্ট টেবিলের দিকে হেঁটে গেলেন।

পরিচিত এক বাংলাদেশি সাংবাদিকের ঘাড়ে মেরে দিলেন গদাম ঘুষি (অবশ্যই স্নেহের), পাকিস্তানি এক সাংবাদিকের সঙ্গে খুব সম্ভবত পাঞ্জাবি ভাষায় করলেন মজার কোনো রসিকতা। এরপর চারদিক কাঁপিয়ে হো হো করে হেসে উঠলেন।
শোয়েবের ‘স্নেহের ঘুষি’ খেয়ে বাংলাদেশি সেই সাংবাদিকের ত্রাহি-মধুসূদন অবস্থা। বললেন, ‘সাধে কি ওকে সবাই রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস ডাকে। ’
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শুরু থেকে অনেকবারই চেষ্টা চালানো হয়েছে প্রথম আলোর হয়ে শোয়েবের সাক্ষাত্কার নিতে।

শোয়েবের সঙ্গে অনেকবারই কথা হয়েছে। কিন্তু ওই যে ক্রিকেটীয় প্রসঙ্গে তিনি কোনো কথা বলতে রাজি নন, ‘দেখো, আমি স্টার স্পোর্টসের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ, যেকোনো সাংবাদিককেই ক্রিকেট প্রসঙ্গে কোনো কিছু বলা আমার চুক্তির নীতিমালাবিরোধী। ’
শেষে শোয়েবের প্রকাশিত আত্মজীবনী ‘শোয়েব আকতার, কন্ট্রোভার্সিয়ালি ইয়োরস’-এর একটি কপি নিয়ে শোয়েবের কাছে যাওয়া। উদ্দেশ্য, তাঁকে যদি ‘পটানো’ যায়। বইটির কপি নিয়ে ধারাভাষ্যকক্ষের সামনে দাঁড়াতেই দৃষ্টি আকর্ষণ করা গেল।

হাত নেড়ে কক্ষের ভেতরে ঢুকতে বললেন। ধারাভাষ্যকক্ষে শোয়েবের সঙ্গে বসা ওয়াসিম, সৌরভ ও কপিল দেব। শোয়েব বইটি হাতে নিয়ে ওয়াসিমকে কী যেন বললেন। সৌরভও একটু উঁকি-ঝুঁকি দিলেন। বইয়ে সই দিয়ে শোয়েব বললেন, ‘বইটা কেমন লেগেছে? পড়েছ, পুরোটা?’ হ্যাঁ-বাচক উত্তর দিয়েই সাক্ষাত্কারের ব্যাপারটি তোলা হলো আরও একবার।

এবারও শোয়েবের উত্তর নেতিবাচক। সাক্ষাত্কারের বদলে মিলল সেই দশাসই ‘স্নেহের ঘুষি’। বললেন, ‘তুম বহুত চাল্লু হ্যায় ইয়ার। আমার বই দেখিয়ে সাক্ষাত্কারের জন্য পটাতে এসেছ, না?’
যাক, সাক্ষাত্কার না পাওয়া যাক, ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে দ্রুততম গতির বোলারটির কাছ থেকে একটা ‘সনদ’ তো পাওয়া গেল। এটাই বা কম কী!



সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.