আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাপ্পার গানে বাংলাদেশ

স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে তিনটি গান তৈরি করতে হবে। তিনটিই বড় আয়োজন। প্রথমটি লাখো কণ্ঠে জাতীয় সংগীতের থিম সং, দ্বিতীয়টি একটি মুঠোফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের আর তৃতীয়টি ‘ধনধান্য পুষ্পভরা’। প্রথম দুটির সুর ও সংগীতায়োজন আর তৃতীয়টির একেবারে নতুন সংগীতায়োজন। তিনটি কাজ নিয়েই পুরো দেড় মাস দারুণ ব্যস্ত সময় পার করেছেন বাপ্পা মজুমদার।

অবশেষে তিনটি কাজই দারুণ প্রশংসিত হয়েছে। গানগুলো নিয়ে কথা হলো তাঁর সঙ্গে।

‘ধনধান্য পুষ্পভরা আমাদের এই বসুন্ধরা...’
দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের এই গানটির মিউজিক ভিডিও এখন প্রায় সবকটি টিভি চ্যানেলেই প্রচারিত হচ্ছে। মিউজিক ভিডিওতে আছেন সাবিনা ইয়াসমীন, পিলু খান, নকীব খান, ফাহমিদা নবী, সামিনা চৌধুরী, পার্থ বড়ুয়া, বাপ্পা মজুমদার, ফুয়াদ আল মুক্তাদীর, চাঁদনী, এলিটা, কোনাল, জোহাদ, জয়, পারভেজ ও শূন্য ব্যান্ড।
গানটি নতুন করে সংগীতায়োজন করেছেন বাপ্পা মজুমদার।

মিউজিক ভিডিও পরিচালনা করেছেন তানভীর খান।
মাত্র কদিন আগেই আরেকটি কাজ করেছেন বাপ্পা মজুমদার।
‘বাঙালির জয়! জয় বাংলার ধ্বনিতে একাত্তর!...’
স্বাধীনতা দিবসে লাখো কণ্ঠে গাওয়া হলো জাতীয় সংগীত। তার আগে দেশের মানুষকে একাত্ম আর উজ্জীবিত করতে তৈরি হলো গানটি। আয়োজকদের ভাষায়, থিম সং।

গানের কথা লিখেছেন সৈয়দ শামসুল হক। সুর ও সংগীত পরিচালনা করছেন বাপ্পা মজুমদার। আর গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন সাবিনা ইয়াসমীন, সুবীর নন্দী, এন্ড্রু কিশোর, কুমার বিশ্বজিৎ, সামিনা চৌধুরী, মমতাজ, বাপ্পা মজুমদার, কনা, এলিটা ও কোনাল। এরপর গানটির মিউজিক ভিডিও তৈরি করেন শংকর সাঁওজাল।
এই দুটি ছাড়া আরও একটি গান তৈরি করেন বাপ্পা।

শিরোনাম ‘১৬ কোটি প্রাণ একটাই গান’। এই গানটি একটি মুঠোফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান রবির জন্য। গানের কথা লিখেছেন রাকিব চৌধুরী। সুর ও সংগীত পরিচালনার পাশাপাশি গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন বাপ্পা মজুমদার। সঙ্গে ছিলেন শূন্য ব্যান্ডের এমিলসহ আরও কয়েকজন।

মিউজিক ভিডিওটির শুটিং হয়েছে পুরান ঢাকায় আর পরিচালনা করেছেন মেজবাউর রহমান।
এই কাজগুলো নিয়ে কথা হলো বাপ্পার সঙ্গে। শনিবার সন্ধ্যায়, মগবাজারে তাঁর স্টুডিওতে।
শুরুতেই বাপ্পা বললেন, ‘পুরো দেড় মাস আমি যেন কোথায় হারিয়ে গিয়েছিলাম। তিনটাই অনেক বড় কাজ।

দিতেও হবে কাছাকাছি সময়ে। প্রতিটি গান আলাদা। একটির সঙ্গে অন্যটির কোনো যোগাযোগ নেই। এই দিকটা মাথায় রেখে আমাকে সুর ও সংগীতায়োজনের পরিকল্পনা করতে হয়েছে। এই পুরোটা সময় আমি আর কোনো গান সুর করিনি।


তিনটি গানের মধ্যে একটি গানকে আলাদা করে গুরুত্ব দিতে হবে। সেটি কোনটি? ‘অবশ্যই লাখো কণ্ঠে জাতীয় সংগীতের থিম সং। ’ বললেন বাপ্পা। তাঁর ভাষায়, ‘এটা আমার জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি। ’
বাপ্পার চোখমুখে তৃপ্তির হাসি।

বললেন, ‘ওই অনুভূতির কথা বলে বোঝাতে পারব না। সৈয়দ শামসুল হকের লেখা গানে আমি সুর দিয়েছি, আমার সুরে দেশের বরেণ্য সব শিল্পী কণ্ঠ দিয়েছেন, সবকিছুই আমার কাছে অবিশ্বাস্য মনে হয়েছে। আমাকে এমন একটা সুযোগ দেওয়ার জন্য সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর আর এশিয়াটিকের শংকর সাঁওজালকে ধন্যবাদ জানাই। ’
গানটির কথা হাতে পাওয়ার পর সুরের একটা কাঠামো তৈরি করতে বাপ্পার সময় লেগেছে দুই দিন। পুরো গানের সুর তৈরি হয়েছে পরের ১২ দিনে।

এরপর শিল্পীদের কণ্ঠ দেওয়ার পালা।
‘বাঙালির জয়!’ গানটির সুর দেওয়ার কথাগুলো বাপ্পা বললেন এভাবে, ‘গানের কথা হাতে পাওয়ার পর মাথায় নানা ধরনের সুর এসে ভিড় করে। কিন্তু যে কথা, তাতে তো এভাবে সুর করলে হবে না! গানের কথায় আছে দেশ, আছেন বঙ্গবন্ধু, তাঁর স্বপ্ন, আছে বাঙালির যুদ্ধজয়ের গল্প, আরও আছে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়। আবার মনে হলো, স্বাধীনতা দিবসে গানটি জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে গাওয়া হবে। তাহলে কুচকাওয়াজের ছন্দ রাখলে মন্দ হবে না।

এভাবেই ধীরে ধীরে পুরো গানটির সুর তৈরি হলো। ’
‘ধনধান্য পুষ্পভরা’ গানটি বাপ্পা তৈরি করেছেন একেবারেই নিজের উদ্যোগে। বললেন, ‘গত বছর বাংলাদেশের যে ভয়ংকর রকম রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হয়েছিল, তা দেখে আমি শিউরে উঠেছিলাম। আমি তো গানের মানুষ। ভেবেছিলাম, এমন একটা গান করব, যা বাংলাদেশের সব মানুষের মনে দেশাত্মবোধ জাগ্রত করবে।

সেই ভাবনা থেকেই তৈরি করেছি গানটি। ’
বাপ্পা নাকি নতুন ব্যান্ড গড়েছেন?
‘না না, ওসব ভুল ধারণা। দলছুট তো আছেই। নতুন ব্যান্ড করার প্রশ্নই আসে না। ’ বললেন বাপ্পা।

তিনি আরও বললেন, ‘কয়েকজন বাদ্যযন্ত্রশিল্পীকে নিয়ে আমি একটা নতুন লাইনআপ করেছি। আমাকে তো একক শিল্পী হিসেবে গান করতেই হয়। তখন আমার সঙ্গে ওরা থাকবে। দলছুট নিয়ে আগামী পয়লা বৈশাখেই গান করব। ’
এবার এল দলছুটের অ্যালবাম প্রসঙ্গ।

বাপ্পা বললেন, ‘এ বছরের শেষ দিকে দলছুটের অ্যালবামের কাজ শুরু করব। একেবারে নতুন ভাবনা নিয়ে অ্যালবামটির পরিকল্পনা করছি। থ্রিয়েট্রিক্যাল মিউজিক হবে। একেবারে নতুন সাউন্ড। নতুন গান।


সবশেষে দলছুটের অন্যতম উদ্যোক্তা প্রয়াত সঞ্জীব চৌধুরীকে স্মরণ করলেন বাপ্পা। বললেন, ‘সঞ্জীবদার অনুপস্থিতি একটা বিশাল ক্ষতি। দলছুট যত দিন থাকবে, সঞ্জীবদার অনুপস্থিতি টের পাবে। তিনি সম্পূর্ণ অন্য রকম একজন মানুষ ছিলেন। অসাধারণ মেধা ছিল তাঁর।

যত যা-ই বলি, আমি কখনো সঞ্জীব চৌধুরীর বিকল্প হতে পারব না। সঞ্জীবদাকে আমি মনে-প্রাণে ধারণ করি। ’

 

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।