আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সাঙ্গাকারা আর জয়বর্ধনের জন্যে হলেও শ্রীলংকার এই বিশ্বকাপটা জেতা উচিৎ

সাঙ্গাকারা আর জয়বর্ধনে এমন দুইজন খেলোয়াড় যারা নির্দিষ্ট করা ৬ টা ম্যাচে শুধুমাত্র শ্রীলংকা জিততে পারলেই ব্রেডম্যানে আর টেন্ডুলকারের পাশে নাম লেখাতে পারতেন। কিন্তু গত ১০ বছরে ৫টা বিশ্বকাপ ফাইনালে উঠে দলকে একটা ফাইনালেও জেতাতে পারেন নি। আর আজ এসে গেল ষষ্ঠবারের মত সুযোগ দলকে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন করার। বিচার করে দেখুন কোন খেলোয়াড়,ক্রিকেটার হন বা ফুটবলার,তার দেশকে ৬বার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন করার সাক্ষী,তাও ১০ বছরের ভেতর তাহলে তিনি কেমন মানের খেলোয়াড়!

দেখা যাক,সেই ৬টা ম্যাচ,

১। ২০০৩ সালের বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল,(অস্ট্রেলিয়ার কাছে পরাজয়)
২।

২০০৭ সালের বিশ্বকাপ ফাইনাল,(অস্ট্রেলিয়ার কাছে পরাজয়)
৩। ২০০৯ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনাল,(পাকিস্তানের কাছে পরাজয়)
৪। ২০১১ সালের বিশ্বকাপ ফাইনাল,(ভারতের কাছে পরাজয়)
৫। ২০১২ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনাল(ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে পরাজয়) এবং
৬। আজকের ২০১৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনাল।

(ম্যাচ ভারতের সাথে,এখনও রেজাল্ট আসেনি)

আজ জিতে গেলে হবে কিনা জানা নেই তবে এদুজনের কাহিনীকে জিনেদিন জিদানের কাহিনীর সাথে তুলনা করা যায়।

২০০৩ সালের বিশ্বকাপে তরুণ সাঙ্গাকারা আর জয়বর্ধনে দলকে সেমিফাইনালে উঠাতে খুব একটা ভূমিকা পালন করতে পারেন নি তবে অস্ট্রলিয়ার সাথে হারা সেই ম্যাচেও বোঝার উপায় ছিলনা কি ঘটতে যাচ্ছে। ২০০৭ সালের বিশ্বকাপে অধিনায়ক জয়বর্ধনে আর সাঙ্গাকারার ব্যাটিং আর জয়বর্ধনের অধিনায়কত্বে লংকানরা ফাইনালে গেলেও ম্যাচটি জিততে পারেনি। এরপর ২০০৯ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালেও পাকিস্তানের সাথে হেরে রানার্সআপ হয় তারা। এটুর্নামেন্টে অবশ্য ফাইনালে নিয়ে যাওয়ার কৃতিত্ব দিলশানের আর অধিনায়কত্বের অসাধারণ ক্যারিশমা কুমার সাঙ্গাকারার।

২০১১ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালে আবার পরাজয়,এবার প্রতিপক্ষ ভারত। সাঙ্গাকারার ক্যাপ্টেন্সিতে ফাইনালে গিয়েও মুম্বাইয়ের সেই ফাইনালে হারে শ্রীলংকা। সে টুর্নামেন্ট অবশ্য টেন্ডুলকারের বিদায়ী টুর্নামেন্ট হওয়ায় ভারত সিরিয়াসভাবে খেলে। একই অবস্হা এবার শ্রীলংকার জন্যে আর এখানে শেষ টি-২০ টুর্নামেন্ট খেলতে আসা সাঙ্গাকারা আর জয়বর্ধনে।
এরপর লংকানদের সবচেয়ে বেদনা দেয় ২০১২ সালে ঘরের মাঠে আয়োজন করা টুর্নামেন্ট আর সেখানে ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে সহজ টার্গেটেও পরাজিত হয় শ্রীলংকা।

ব্যাপারটা এমন যে গত ১০ বছরে বিশ্বকাপ ফাইনালে গেলেই পরাজিত হচ্ছে শ্রীলংকা।


আজ কি শ্রীলংকা পারবে?যারা ভারতবিরোধীতার কারণে শ্রীলংকাকে সাপোর্ট দেবেন তারা জেনে নিন প্রতিদ্বন্দী দল হিসেবে শ্রীলংকা ও ভারত কেমন?ভারতীয় দলটা এযাবৎকালে শ্রীলংকার সবচেয়ে বেশী বারোটা বাজিয়েছে। বিশেষ করে ভিরাট কোহলি,ধনি আর গৌতম গম্ভীর শ্রীলংকার অনেকগুলো সম্ভাব্য জেতা ম্যাচে ভালো খেললে পরাজয় বরন করতে হয় শ্রীলংকাকে। ভারত টার্গেট চেজ করার জন্যে এই মুহুর্তে সেরা ব্যাটিং লাইন আপ,এমনকি অস্ট্রেলিয়ার চেয়েও বেশী। ওদের ব্যাটিংয়ের মূল শক্তি কোহলি আর ধনি।

কিন্তু বোলিংয়ের দিক থেকে শ্রীলংকার ধারে কাছেও নেই। তবে চলতি টুর্নামেন্টে শেষদিকের ওভারগুলোতে ভারত অনেক ট্যালেন্ট বোলিং করেছে আর এটা শ্রীলংকার জন্যে বিপদজনক হতে পারে। যদিও ভারতের বোলিংয়কে পিটিয়ে তক্তা বানানোর ইতিহাস শ্রীলংকার ব্যাটসম্যানদের জন্যে নতুন কিছু না। আর ভারতের বোলিংকে টার্গেট করে বড় একটা টার্গেট দিতে পারলে শ্রীলংকার জন্যে ম্যাচটা জেতা সহজ হবে। তবে একটা কাজ অবশ্যই করতে হবে আর তা হল কোহলি এবং ধনিকে কিছু করতে না দেওয়া।

আশা করব সাঙ্গাকারা আর জয়বর্ধনের শেষ টি-২০ টুর্নামেন্ট হিসেবে লংকানরা এদিকগুলোতে আলাদাভাবে নজর দেবে।






লংকানদের মধ্যে সাঙ্গাকারা খুবই জনপ্রিয়। স্টেডিয়ামে গিয়ে শ্রীলংকা থেকে আগত দর্শকদের নিজ চোখে দেখলেই ব্যাপারটা বোঝা যায়। ঢাকার চেয়ে বেশী শ্রীলংকান চট্টগ্রামে পাওয়া যায় আর চট্টগ্রামে লংকানদের ম্যাচ হলে তাদের উপস্হিতি একটু বেশীই থাকে। মিরপুর স্টেডিয়ামের গ্যালারিতেও লংকানরা থাকবে ভরপুর।

তারাও নিশ্চয় চাইবে শ্রীলংকা আজকের ম্যাচটি জিতুক। বাংলাদেশ টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিলেও আজকের ম্যাচটি নিয়ে দেশের মানুষের উত্তেজনা কম নেই যেহেতু ম্যাচটা ঢাকায় হচ্ছে। এমনিতেই বড় টুর্নামেন্ট বাংলাদেশে হলেই স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের মানুষের প্রতিটা ম্যাচে আগ্রহ,তা এমনকি নেদারল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার ম্যাচ হলেও যেভাবে মানুষ গিয়ে উত্তেজনায় ফাটে তা আইসিসির দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে ইতিমধ্যেই। আর আজকের ভারত-শ্রীলংকার হাই ভোল্টেজ ফাইনাল তো আরও উত্তেজনাকর!শুধু বৃষ্টি না আসলেই হয়। মনেপ্রাণে চাইবো কাপটা শ্রীলংকার খেলোয়াড়রা সাঙ্গাকারা ও জয়বর্ধনেকে উপহার দিক।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.