আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তারেকের বক্তব্য ‘রাষ্ট্রদ্রোহমূলক’: আ.লীগ

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্যকে ‘রাষ্ট্রদ্রোহমূলক’ বলে মনে করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এ জন্য তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে কূটনৈতিক প্রক্রিয়াও অব্যাহত রেখেছে দলটি।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলীয় অবস্থান ব্যাখ্যা করেন দলটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ।

তারেক রহমানকে দেশে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘যদি সত্ সাহস থাকে, দেশে ফিরে আসুন। দুর্নীতি, অর্থপাচার, লুণ্ঠনসহ আপনার বিরুদ্ধে জনগণের যে বহুমুখী অভিযোগ রয়েছে, তার মোকাবিলা করুন।

আদালতে আত্মসমর্পণ করুন। কালিমা লিপ্ত মুখকে সাদা করার চেষ্টা করুন। তারপর কথা বলুন। ’ তিনি বলেন, ‘দেশ থেকে পাচারকৃত চোরাই লুটের অর্থ দিয়ে আমোদ-ফুর্তি করা ছাড়া লন্ডনে তারেক রহমানের আর কোনো কাজ নেই। জনগণ হাওয়া ভবনের কর্ণধারকে হাওয়ার মতোই ভুলে গেছে।

তাই হাওয়া মিয়া মিথ্যাচার করে আলোচনায় আসতে চান। ’

গত মঙ্গলবার রাতে লন্ডনের ওয়েস্ট মিনস্টার সেন্ট্রাল হলে ব্রিটিশ-বাংলাদেশি সুশীল সমাজের সঙ্গে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে তারেক রহমান বলেন, ‘’৭২ সালে শেখ মুজিবুর রহমান অবৈধ প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। বর্তমানে যেমন তাঁর কন্যা শেখ হাসিনাও জোর করে অবৈধ প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। ’

তারেক রহমানের ওই বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়েছে, ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি দেশে ফিরে আসেন বঙ্গবন্ধু। এরপর ১১ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি হিসেবে তিনি প্রথম অফিস করেন।

ওই দিনই রাষ্ট্রপতির এক আদেশে  দেশে অস্থায়ী শাসনতন্ত্র জারি হয়। ১২ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন এবং বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী হন রাষ্ট্রপতি। সংবিধান প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত এই সরকারের অধীনেই বাংলাদেশ পরিচালিত হয়।

দলটির যুক্তি, ১৯৭০ সালের নির্বাচনে জনগণ শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর দল আওয়ামী লীগকে ম্যানডেট দিয়েছিল। বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতির আইনানুগ অভিভাবকত্ব পেয়েছিলেন।

তাহলে বঙ্গবন্ধু অবৈধ প্রধানমন্ত্রী হলেন কীভাবে? এ সময় তারেক রহমানকে ‘বঙ্গভবনের শতবর্ষের ইতিহাস’ বইটি পড়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে—বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অন্তর্বর্তীকালীন সংবিধান ২৬ মার্চ, ১৯৭১ থেকে কার্যকর হয়েছে বলে গণ্য হবে। সুতরাং ২৬ মার্চ থেকে ১০ এপ্রিল কোনো সাংবিধানিক শূন্যতা সৃষ্টি হয়নি। আর বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের কার্যকালে দেখা যায়, জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের অষ্টম রাষ্ট্রপতি ছিলেন।

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘৫ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশ না নিয়ে যে ভুল করেছে সেই আফসোস থেকেই এসব মিথ্যাচার করছেন।

সীমার বাইরে গিয়ে দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্যকে অস্বীকার বেগম জিয়া ও তারেক রহমানের জন্য সুখকর হবে না। একটি ঐতিহাসিক সত্য হলো—বঙ্গবন্ধু না থাকলে বাংলাদেশের সৃষ্টি হতো না। ’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বাধ্য হয়ে মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। পঁচাত্তরের হত্যাকাণ্ডেও জিয়া জড়িত। জিয়ার রাষ্ট্রপতি পদ যেভাবে অবৈধভাবে নিয়েছিল, সেনাপ্রধানের পদও অবৈধভাবে নেয়।

’ তাঁর যুক্তি, জিয়া যখন ৭ নভেম্বর পুনরায় সেনাপ্রধানের দায়িত্ব পালন শুরু করেন, তখন তিনি আইনত সেনাপ্রধান ছিলেন না। এর আগেই খালেদ মোশাররফ সেনাপ্রধানের দায়িত্ব খোদ রাষ্ট্রপতির নির্দেশে নিয়োজিত হয়েছিলেন। এ ছাড়া বাংলাদেশের আদালত জিয়ার পুরো শাসনকালকেই অবৈধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, উপদপ্তর সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, উপপ্রচার সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সুজিত রায় নন্দী, এস এম কামাল হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।



সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।