আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রাষ্ট্রের ধর্ম কি ধর্মমত নিয়ন্ত্রন নাকি, ধর্মপালনে নিরাপত্তা দেয়া

ট্রুথ নট সেইড টুডে, কুড টার্ন টু আ লাই টুমোরো আজকে দা ইকোনমিস্ট একটা রিসার্চ রিপোর্ট পাব্লিশ করসে। ৩৯টা মুসলিম দেশে পাবলিক ফেইথের উপরে সার্ভে করে দেখসে- তারা শরিয়া আইন কতোটা পছন্দ করে। কিছু ইন্টারেস্টিং জিনিস আসছে। প্রায় ৮০% মিশরীয় মুসলিম শরিয়া আইন ও ধর্মনিরপেক্ষতা পছন্দ করে। আবার তাদের ৯০% চাচ্ছেন ইসলাম ত্যাগকারীর মৃত্যুদন্ড হোক।

মিশরে ধর্মান্তরিত হয়ে মুসলমান হওয়া যায়, কিন্তু ইসলাম ত্যাগ করে অন্য ধর্মে যাওয়া যাবে না এমন আইন আছে। ধর্মত্যাগকারীদের উপর এমন খড়গহস্ত হবার শিক্ষাটা কি ইসলামের? জানা নাই। একই রকম এন্টি-কনভারসন আইন ভারতের ৫টি রাজ্যে করা হয়েছে মূলত হিন্দুদের ধর্মান্তরিত হয়ে মুসলিম বা খ্রিষ্টান হওয়া ঠেকাতে। ধর্মের উপর রাষ্ট্রীয় বিধিনিষেধ বা কঠোর আইন দেখা গেছে চীনে, রাশিয়াতে। মস্কোতে অনেক মুসলিম থাকলেও ৪টি মসজিদের বাইরে নুতুন কোন মসজিদ বানাতে দেয়া হয় না।

সবাই গাদাগাদি করে ছোট্ট মসজিদে নামাজ পড়েন। ফ্রান্সে বোরখা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ধর্মপালনে সরকারী বিধিনিষেধ দেখা যায় মুসলিমপ্রধান দেশ ইন্দোনেশিয়াতে। সেখানে আইন মোতাবেক সবার ধর্ম থাকতে হবে, কেউ ধর্মহীন হওয়াটা(নাস্তিক) আইনত দন্ডনীয়। ধর্মপালনে যেকোন ধরনের সরকারী বিধিনিষেধ আসলে সামাজিক সহাবস্থান, শান্তি নষ্ট হয়।

এইখানে দেখার বিষয়, সামাজিক প্রতিহিংসার কারণে নিপিড়ীত অংশ জঙ্গিবাদের আশ্রয় নেয়, দেশান্তরিত হয়। আবার এইসব বিধিনিষেধ সাধারণত সংখ্যাগুরুরা সংখ্যালঘুদের উপর চাপিয়ে দিতে চায়। ফলে আইনগুলো খুবই জনপ্রিয় হয় (সংখ্যাগুরুদের ভোটে) কিন্তু তা শান্তি আনতে, সামাজিক শৃঙ্খলা রখা করতে চরমভাবে ব্যর্থ হয়। সম্প্রতি হেফাজতের যে ১৩ দফা দাবি এসেছে তাতে খ্রিষ্টান মিশনারী বন্ধের জন্য, কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষনার জন্য সরকারকে চাপ দেয়া হচ্ছে। নাস্তিকদের বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত করার ঘোষনা দেয়া হচ্ছে জোরেশোরে।

আমরা দেখলাম একজন নাস্তিক যে আবার ইসলামবিদ্বেষী অশ্লীল চটি লেখক- তাকে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে। হেফাজতের অনুষ্ঠানে খাবার দিতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসের রান্নাঘর ব্যবহার নিয়ে বাক-বিতন্ডায় একজনের মাথায় কোপানো হয়েছে। আবার দেখা যাচ্ছে সরকারী দল কৌশলে মদিনা সনদের কথা বলে সংখ্যাগুরু মুসলিম ভোটার হাতে রাখতে ব্যস্ত। অন্যদিকে বিরোধীদল হেফাজতকে সমর্থন দিলেও তাদের ১৩দফার ব্যাপারে মুখ খুলতে নারাজ। এরশাদ, যিনি সংবিধানে আল্লাহতে বিশ্বাস এনেছিলেন, হেফাজতকে পানি খাওয়াচ্ছেন- কিন্তু ইলেকশনের মেনিফেস্টোতে ১৩দফার নাম নিশানা নেই।

ইলেকশন ইয়ারে একটা ধরি মাছ না ছুই পানি অবস্থা। মুখোমুখি অবস্থানে দাড় করিয়ে দেয়া হয়েছে আহলে সুন্নাত ও হেফাজতকে চট্টগ্রামে। তাই, আরো হানাহানির আগেই আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে কোন পথে যাবো। নাগরিকের ধর্মপালনের উপর রাষ্ট্রীয় বিধিনিষেধ আনবো, নাকি সবার শান্তিপূর্ণ ধর্মপালনের ব্যবস্থা করবো। আরেক ধর্মের উপর আঘাত করাকে উস্কে দিব নাকি, শক্তহাতে দমন করে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করবো।

সূত্রঃ Click This Link -বাঙ্গাল ১মে ২০১৩ লেখাটি ফেইসবুক পেইজ বাঙ্গালে প্রকাশিত ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.