আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বর্বরতার সাক্ষী জল্লাদখানা

ঃ কবীর শেখ ঃ www.banglatolet.com ডিজিটাল দুনিয়া সেই ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের এ দেশীয় সহযোগী রাজাকার ও আলবদর বাহিনীর সদস্যরা অসংখ্য বাঙালিকে নির্মমভাবে হত্যা করে। বিভিন্ন স্থান থেকে ধরে এনে হত্যার পর যেসব জায়গায় লাশগুলোকে ফেলে বা পুঁতে রাখত সেসব জায়গাই হলো বধ্যভূমি। বাংলাদেশে এ রকম অসংখ্য বধ্যভূমি রয়েছে। বধ্যভূমিগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি হলো ঢাকার মিরপুরের জল্লাদখানা বধ্যভূমি। ১৯৭১ সালে এ এলাকায় একটি পাম্প হাউস ছিল।

অগণিত বাঙালিকে জবাই বা শিরশ্ছেদ করে এই পাম্প হাউসের পানিভর্তি অন্ধকূপে ফেলে দেওয়া হতো। মুক্তিযুদ্ধ শেষ হওয়ার ২৮ বছর পর ১৯৯৯ সালে এই জল্লাদখানা বধ্যভূমিতে খননকাজ পরিচালনা করে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডের সহায়তায় এই বধ্যভূমি থেকে উদ্ধার করা হয় ৭০টি মাথার খুলি, ৫৩৯২টি অস্থিখণ্ড, মেয়েদের শাড়ি, ফ্রক, ওড়না, অলঙ্কার, জুতা, তসবিসহ শহীদদের ব্যবহার্য নানা জিনিসপত্র। উদ্ধার করা জিনিসপত্রগুলো স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার, আলবদরদের বর্বরতার এক জ্বলন্ত প্রমাণ। জল্লাদখানা বধ্যভূমিতে একটি জাদুঘর নির্মাণ করে কিছু নিদর্শন রাখা হয়েছে প্রদর্শনের জন্য।

পাম্প হাউসের অভিশপ্ত কূপটি বাঁধাই করে কাচ দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে নৃশংসতার চিহ্ন হিসেবে। আর এখানে 'জীবন অবিনশ্বর' নামে একটি স্মৃতিফলক নির্মাণ করা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের বর্বর হত্যাকাণ্ডের স্মরণে। ১৯৭১ সালে বিহারি অধ্যুষিত মিরপুরের অনেক জায়গাই হয়ে উঠেছিল বধ্যভূমি। মিরপুর জল্লাদখানা বধ্যভূমির মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে সর্বসাধারণের প্রদর্শনের জন্য রাখা হয় সেই অভিশপ্ত কূপটির পাশে এবং কূপটিকে সিমেন্ট বাঁধাই করে ভারী কাচ দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে বর্বরতার স্মারক চিহ্ন হিসেবে। মিরপুর ১০, ডি ব্লকে অবস্থিত এই জল্লাদখানায় এই শোকস্মৃতিকে ধরে রাখতে পাম্প হাউস চত্বরে নির্মিত 'জীবন অবিনশ্বর' নামের স্মারক ম্যুরাল-ভাস্কর্যটির দিকে তাকালে থমকে যেতে হয়! এর পরিকল্পনা ও নির্মাণে শিল্পী রফিকুন নবী ও মুনিরুজ্জামান।

গোটা চত্বরজুড়ে শান বাঁধানো ফলকে অঙ্কিত রয়েছে এ যাবত খুঁজে পাওয়া দেশের বিভিন্ন বধ্যভূমির তালিকা, বহু শহীদের নাম এবং বিংশ শতাব্দীতে ঘটে যাওয়া বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উল্লেখযোগ্য গণহত্যার তথ্য। এ ছাড়াও দেশের বিভিন্ন বধ্যভূমি থেকে সংগৃহীত মাটি এনে কাচের অাঁধারে সযত্নে সংরক্ষণ করা হয়েছে স্মৃতি হিসেবে। লাল জমিনে সাদা রঙে লেখা 'একাত্তরের গণহত্যা ও শহীদদের কথা বলবে শতকণ্ঠে জল্লাদখানা বধ্যভূমি স্মৃতিপীঠ' ও 'কান পেতে শুনি কি বলিতে চাইছে জল্লাদখানা বধ্যভূমি'। সউরসঃ বিডি-প্রতিদিন।  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৩ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.