আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একটি বা দুটি রামছাগল এই মুহূর্তে 'নির্বাচিত পোস্ট' সিলেক্ট কর্তেছে...

আমি আমার "বাস্তব" কর্মব্যস্ত জীবনের ফাকে একটু বিনোদনের আশায় সুধু মাত্র ফান/মজা/টাইম পাশ/বন্ধুত্ব/দুষ্টামি করার জন্যেই আমার " "ভার্চুয়াল লাইফ" ব্যাবহার করি। আমার কোনো কমেন্টে বা পোস্টে কেউ যদি আঘাত পান, তাহলে সরাসরি জানাবেন, আমি“প্রকাশ্য সরি” বলে দিব। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি না পেরুনো একটি বা দুটি রামছাগল এই মুহূর্তে 'নির্বাচিত পোস্ট' সিলেক্ট কর্তেছে। প্রিয় ব্লগার, আরামে দাঁড়ান অথবা নড়েচড়ে বসুন। আর 'বাচ্চালোগ তালিয়া বাজাও'! মহান ব্লগার ফিউশন ফাইভ এর একটি পোস্টের শিরোনাম থেকে আমি উক্ত ডায়ালগ’টা চুরি করলাম।

প্রিয় সহ ব্লগারগন, নির্বাচিত পাতা নিয়ে আমাদের যা হয় তা হল আপনে ব্লগ থেকে ব্লগে ঘুরছেন, এর পোস্ট ওর পোস্ট পড়ছেন। কিছু পোস্ট আপনার খুব ভাল লাগছে, কিছু পোস্ট মোটামুটি ভাল লাগছে, কিছু ভাল লাগে নি। এবার গেলেন নির্বাচিত পাতায়, গিয়ে দেখলেন আপনার পড়া অনেক ভাল ভাল পোস্ট এখানে নাই উলটা ফালতু পোস্টগুলা নির্বাচিত পাতায় দিছে। মেজাজ পুরাই খারাপ হয়ে যাবে, এরকম নিচের ছবির মত। রাগ কইরেন না, মাথা ঠান্ডা রাখেন, আর মনে মনে ইকটু ভাবেন, আপনার কাছে ভাল লাগা পোস্ট কি আমার কাছে ভাল লাগবে?বা অধিকাংশ ব্লগারের কাছে কি ভাল লাগবে? সবার পছন্দ অপছন্দ কি এক হবে? আপনার প্রিয় ফল কাঠাল হলেই কি আমাদের সবাইর প্রিয় ফল কাঠাল হতে হবে? আমি সরাসরি বলি এই সকল প্রশ্নের উত্তর এক কথায় “না”।

কারন সবার পছন্দ এক হবার কোনো কারন নাই এবং এটা সম্ভব না। তাই নির্বাচিত পাতার সব পোস্ট আপনার ভাললাগার কোনো কারন নেই। এবং এটাই স্বাভাবিক। কি? আমাকে নির্বাচক মনে হচ্ছে? আমি নির্বাচকদের পক্ষ নিয়ে কথা বলছি? নারে ভাই, আমি নির্বাচক নই, এমন কি আমার চৌদ্দগুস্টির কেউ নির্বাচক না। আর বাজারের তেলের দাম ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাই আমার মত হত দরিদ্র মানুষ কাউকে তৈল দেবার সামর্থও রাখে না।

আমি সুধু আমার ভাবনাটাই প্রকাশ করলাম। কিন্তু কথা থাকে, যেহেতু নির্বাচিত পাতা ও সাধারন পাতা নামের দুইটা ভাগ করেছে, সেহুতু নির্বাচিত পাতায় সুধু ভাল মানের পোস্ট নির্বাচিত করাই ভাল। এবং এটা ম্যাক্সিমাম বা সংখ্যা গরিষ্ঠ ব্লগারের ভাল লাগার দিকে মন দিতে হবে। নির্বাচিত পাতা বলতে আমাদের থুক্কু আমার মনে ভেসে উঠে সব ভাল ভাল পোস্টের সমাহার। বুঝতে পারেন নাই? তাহলে বুঝিয়ে বলি, ধরুন বাজারে গিয়ে আপনি দেখলেন একই দোকানে দুই স্তরে আপেল সাজানো।

নিচের ভাগের আপেলের কেজি ১০০ টাকা, উপরের ভাগের আপেলের কেজি ১১০ টাকা। আপনি সাধারন ভাবেই ভেবে নিবেন উপরের ভাগের আপেল ভাল হবে। কারন এর দাম বেশি ও এগুল বাছাই করা এবং এটা সার্বজনিন। অন্তত ম্যাক্সিমাম মানুষই এটাকে ভাল বলবে। কিন্তু তখনই আপনি নিচের ছবির চিতকুর পারবেন হবেন যখন দেখবেন সাধারন পাতায় ভাল ভাল পোস্ট আছে, অনেক কমেন্ট, অনেকেই ভাল লাগা দিয়েছে।

কিন্তু সেই পোস্ট নির্বাচিত পাতায় যায় নাই। উপরন্ত নির্বাচিত পাতায় আছে অনেক ফাউল পোস্ট যে গুলতে মাত্র ৫/৬টা হিট, ১/২ কমেন্টই পড়ে নাই, লাইক তো দুরের কথা। নির্বাচকদের প্রতি ক্ষুদ্র ব্লগারের কিছু কথা * একজন সুপরিচিত পুরাতন ব্লগারের লেখা, সুধু মাত্র এই কারনে তার পোস্ট নির্বাচন হবে এটা কোনো কারন হতে পারে না। * সুধু মাত্র আপনার পরিচিত ব্লগার, তাকে খুশি করতে তার পোস্ট নির্বাচিত করতে আপনে পারেন না। আবার তেমনি নিজেকে ফ্রেস, সুশীল, বা মহান হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে আপনি আপনার পরিচিত ব্লগারদের কোনো লেখাই নির্বাচিত করবেন না, এটাও মেনে নেওয়া যায় না।

আপনি ভাবতে পারেন এই মহান গিরি দেখিয়ে সাধারন ব্লগারদের কাছে আপনি ভাল থাকবেন, আসলে বিষয়’টা মিথ্যা, সবাই এই কপট সাধুতা বুঝতে পারে। *নতুনদের উৎসাহিত করবেন বলে তাদের পোস্টই সুধু নির্বাচিত করবেন, সেটা ঠিক না। নতুনদেরকে উৎসাহিত করতে তাদের লেখা সময় নিয়ে পড়ুন, মন্তব্য করুন, পরামর্শ দিন। এতে তাদের লেখার মান ভাল হবে। কিন্তু যদি সুধু নতুন বলেই তার লেখা নির্বাচিত করেন তাহলে সেটা তাকে হত্যা করার শামিল হবে, কারন উনি উনার “ভাল লেখার” যে টার্গেট থাকে, সেটা হারিয়ে ফেলবেন।

*যদি বিটিভি’র মত সরকারের পক্ষপাত মুলক পোস্টই সুধু নির্বাচন করেন, আর সরকারের সমালোচনা মুলক পোস্ট এড়িয়ে যাবেন, তাহলে সেটা ভন্ডামি হবে। *মাত্র একজন নির্বাচকের ভাল লাগতেই পোস্ট নির্বাচিত হওয়া উচিত নয়, বা একই গ্রুপের, একই মতাবাদের সব ব্লগার কে নির্বাচক করা উচিত না। কারন ৫ জন বা ১০ জন নির্বাচকের প্রিয় ফল “আপেল” আর প্রিয় খাবার “বার্গার” হলেই সব ব্লগারের "আপেল বা বার্গার" ভাল লাগতে নাও পারে। ভিবিন্ন মতবাদের, বিভিন্ন দলের ব্লগারদের দিয়ে পোস্ট নির্বাচিত করা হলে ভাল হয়। *নির্বাচক’রা যদি নিজেদের নতুন কোনো এজেন্ডা নিয়ে কাজ করেন, বা সিন্ডিকেট তৈরি করতে চান সেটা দৃষ্টিকটু দেখায়।

*যদি সুধুই গল্প/কবিতা/উপন্যাস/ইতিহাস পোস্টই নির্বাচিত করবেন আর অন্যান্য পোস্ট আস্তকুড়ে ফেলবেন তাহলে বুঝব আপনার বল্গিং জ্ঞান বলে কিছু নেই। সুধুই গল্প/কবিতা/উপন্যাস/ইতিহাস ছাড়াও সুন্দর সুন্দর ছবি পোস্ট দিয়েও ব্লগিং হয়। আবার আমার মত যারা গল্প কবিতা লিখতে না পারি তারাও নিজের “আত্তকথন” দিয়ে পোস্ট দিতে পারি, এলাকার বিভিন্ন সমস্যা বা ঘটনা তুলে ধরেও পোস্ট দেওয়া যায় এটাও পরিপুর্ন ব্লগিং এর নিয়ম। আমি ক্ষুদ্র ব্লগার তাই আমি আপনাকে কিছু না বলে এই বিষয়ে ফিউশন ফাইফ’ এর উপরের উল্লেখিত পোস্টের ৩০০ নম্বর কমেন্টের উত্তর হুবুহু তুলে ধরলাম। প্রকৃত ব্লগিং মানে হল নাগরিক সাংবাদিকতা।

রাজশাহীতে ঈদের চাঁদ দেখার খবরটি যিনি দিচ্ছেন, পুরান ঢাকায় দালান ধসে পড়ার খবর যিনি মুহূর্তে ব্লগে তুলে দিচ্ছেন, প্রকৃত ব্লগিং সেইটাই। এর বাইরে ব্লগিংয়ের ডালপালা আরো আছে, কিন্তু সাহিত্যের স্থান সেখানে নেই। দুনিয়ার কোথাও নেই। কিন্তু প্রধানত সামহোয়্যারইনকে ঘিরে বাংলাব্লগের ধরনটা দিনে দিনে এমনভাবে গড়ে ওঠেছে, যার প্রায় পুরোটাই সাহিত্যনির্ভর। সাহিত্যপ্রেমী বাঙালি অনলাইনে ছড়া-কবিতা-গল্প লেখালেখিকে একধরনের ব্লগিং ভাবছে।

কিন্তু সেটি ভুল, পুরোপুরি ভুল। তবে সাহিত্য নিয়ে ব্লগ যে একেবারে নেই, তা নয়। কিন্তু তার রূপ ভিন্ন, বাংলাব্লগে কবিতা-ছড়া-গল্প-উপন্যাস সহযোগে সাহিত্যচর্চার যে রূপটি দেখি সেরকম নয়। কেউ হয়তো দুনিয়া ঘুরে ঘুরে তার অভিজ্ঞতাগুলো ব্লগে লিখছেন, পশ্চিমে সেটাকেই 'সাহিত্য' হিসেবে দেখা হচ্ছে। আরো নিশ্চিত হতে চাইলে বিশ্বের সবচেয়ে নামি ব্লগ সার্চ ইঞ্জিন টেকনোরাতির টপলিস্টে চোখ রাখুন।

বিশাল সেই তালিকায় যেসব ব্লগ অন্তর্ভূক্ত, তার কোনোটি সংবাদভিত্তিক, কোনোটি প্রযুক্তিভিত্তিক, কোনোটি অন্য বিষয়ের। কিন্তু বিষয় হিসেবে সাহিত্য সেখানে নেই, নামগন্ধও নেই। .........আর যাই হোক, সাহিত্যের শাখা-প্রশাখা মাথায় রেখে ব্লগের জন্ম হয়নি। বরং প্রথাগত সবকিছুর বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর লক্ষ্য থেকেই ব্লগের জন্ম। আমি আমার মত প্রকাশ করলাম মাত্র, বাকিটা আপনারা ভেবে দেখবেন।

হ্যাপি ব্লগিং ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.