আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

“ মামা,আপ্নের প্যান্টের চেইন তো খুলা !’ একটা দুঃখমুলক পোষ্ট!!!

মানুষের জীবনে যে কত রকমের বিড়ম্বনাই থাকে ! ঠিক-ঠাক পোশাক-আষাক পড়িয়া ভদ্র ফুল বাবু সাজিয়া থাকিবার পথেও নানারকম বিড়ম্বনা ঘটিয়া থাকে। আমি আমার জীবনের কতিপয় দুঃখজনক ঘটনার কথা আপনাদিগকে বলিতেছি। সমস্ত দুর্ঘটনার খলনায়ক অবশ্য সে একই ব্যক্তি, তিনি হইতেছেন আমার প্যান্টের জিপার! ঘটনা আসলে শুরু সেই ছোটবেলা থেকেই। খুব ছোটবেলায় কয়েকবার প্যান্টের চেইন লাগাতে গিয়ে ওখানের নরম চামড়াতে আটকে গিয়ে অন্যের সাহায্য লইতে হইয়াছে! বড় হইবার পড়ে জিপার মহাশয় আমার লজ্জা নিবারণে কেমন অবদান রাখিয়াছেন তা নিয়ে আমি খুব একটা নিশ্চিত করিয়া বলিতে পারিবনা, তবে জিপার থাকিবার পরেও আমি তাহাকে আটকাইতে ভুলিয়া গিয়া বেশ কয়েকবার নিদারুন দুঃখজনক পরিস্থিতির স্বীকার হইয়াছি। অলস আর ভুলোমনা হিসেবে পরিচিতদের মাঝে আমার একটুখানি সুনাম আছে!( মানে বিষয়টা আমি এভাবেই দেখতে পছন্দ করি আর কি !)।

একবার গিয়াছি মিষ্টি কিনিতে, বেশ ভীড়, যতটা দ্রুত পারা যায় মিষ্টি লইয়া ভেগে যাইবার ধান্দায় আছি । এমন সময় পাশের ভালমুখো নিরীহ ভদ্রলোক আমাকে বলিলেন, “ জনাব কি একটু আমার সাথে আড়ালে আসিবেন, একটা কথা বলিতাম?’, আমি মোটামুটি বিরক্ত ও বিভ্রান্ত হইয়া তাহাকে নিয়া পাশে আসিলাম। তিনি আমার কানের কাছে মুখ আনিয়া খুব একটা গোপন কিছু একটা বলিতেছেন এমন স্বরে বলিলেন , “ ভ্রাত, আপনার প্যান্টের চেইনটা খোলা ’। আমি চমকাইয়া উঠিয়া দেখিলাম ঘটনা সত্য। দ্রুত জিপার বাবাজীকে বিধিমত আবদ্ধ করিয়া আমতা আমতা ধন্যবাদ দেওয়ার চেষ্টা করিলাম।

এই ঘটনাটি আরও করুণ, হলজীবনের ঘটনা। দুপুরবেলা বিরাট আয়োজন করিয়া নিদ্রা যাইতেছি, ও ফোন করিয়া নিচে নামিয়া চা খাইতে বলিল, অতঃপর তাহাকে বিধিমত পুরান ঢাকার তাহার বাসার মোড়ে নামাইয়া দিয়ে আসিলাম। ফিরিবার পথে রিকশা ঠিক করিতেছি। আমার দুর্ভাগ্য, জনৈক অর্বাচীন রিকশাওয়ালা আমার কপালে পড়িল। বিশ টাকার ভাড়া সে চল্লিশ টাকা দাবী করিয়া বসিল।

আমি এই অন্যায় আবদার কোনভাবেই মানিতে পারিলাম না, প্রতিবাদ স্বরূপ কয়েকটি কটু কথা বলিলাম। বিধাতা তো আর একা আমাকে না, তাহাকেও মুখ দিয়াছেন। সেও তাহার মুখ আমার প্রতি কটু কথা বর্ষণে কাজে লাগাইল- ফলাফল ধুন্ধুমার ঘটনা শুরু হইল। তুচ্ছ রিকশাওয়ালার সহিত রাস্তায় দাঁড়িয়ে ঝগড়াঝাটি মানানসই হইতেসে না ভাবিয়া ক্ষান্ত দিয়ে হাঁটা ধরিলাম। সে হাঁক দিয়া আবার আমাকে ডাকিল।

আমি তো এইবার রক্তচক্ষু নিয়া তার দিকে ফিরিলাম, মনে মনে ভাবিতেছি আবার বেয়াদবী করিলে তোর আর রক্ষা নাই! সে ব্যাটা হাঁক দিয়া কহিল, “ মামা,আপ্নের প্যান্টের চেইন তো খুলা !’ কস্কি মমিন?? মুহূর্তেই আমি জল হইয়া গেলাম! হাত দিয়া বুঝিলাম সর্বনাশ ঠিকই ঘটিয়াছে। হতচ্ছাড়া জিপারের কথা আমি আবারও ভুলিয়াছি, আবারো ধরনী দ্বিধা হইবার ঘটনা ঘটিয়াছে। পরের কথা আমি আর কি বলিব? আপনারাই বুঝে নেন... ফেরার পথে সুপারম্যান হইয়া না জন্মানোর জন্য কষ্ট লাগিতে লাগিল, বিশেষ কোন কারনে নয়- সুপারম্যান হইলে জাঙ্গিয়া প্যান্টের উপরেই পরিতাম, আমাকে এই জিপার লাগাতে ভুলে যাওয়ার দুঃখ মাথা পেতে নিতে হইত না। বলিতে গেলে তো আসলে আরও অনেক ঘটনার কথাই বলিতে হয়, এই পরিসরে তাহা আঁটিবে না, তাই এবারে ক্ষান্ত দিলাম। তবে শেষ করবার আগে জিপার নিয়ে কয়েকদিন আগে পড়া একটা কৌতুক শেয়ার করি- জনৈক প্রখ্যাত গে ব্যক্তি গিয়াছেন দর্জির কাছে প্যান্ট বানাইতে।

সব মাপজোক নেওয়ার পরে দর্জি মশায় গে ব্যক্তিটিকে জিজ্ঞেস করিলেন, “মহাশয়ের প্যান্টের জিপার কি শুধু সামনে একটাই নাকি সামনে পেছনে দুজায়গাতেই দেব??? ’ পুনশচঃ যারা পড়িতেছেন তাহাদের মনে যে আশঙ্কাটি বুদবুদ বাঁধিতেছে তাহা আমি এই বেলাতেই পরিস্কার করিয়া দেই, প্রতিবারেই আমি অন্তর্বাস পরিধান করিয়াছিলাম! ফলে চূড়ান্ত মাত্রার সর্বনাশ থেকে আমি কোন ক্রমে রক্ষা পাই! আপনেরা আমার প্রতি দোয়া রাখিয়েন...অনাগত দিন গুলাও যেন সম্মান রক্ষা করিয়া চলিতে পারি... ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।