আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হেফাজতি বাংলাদেশে এই ধর্ষনের বিচার চাওয়া যাইতো কি?

হিন্দু না ওরা মুসলিম ঐ জিজ্ঞাসে কোনজন, কান্ডারি বলো ডুবিছে মানুষ সন্তান মোর মা'র ধর্ষন ও ধর্মান্তরের ঘটনাটির সাথে ধর্ম সম্প্রদায়কে না জড়িয়ে সমালোচনা করার অনুরোধ করেছিলাম গতকাল যাতে বিশেষ লাভ হয়েছে বলে মনে হচ্ছেনা। সুতরাং হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা দাবি কায়েম হয়ে বাংলাদেশে ইসলামি শাসন প্রতিষ্ঠিত হইলে কি হইতে পারতো তার একটি তুলনামুলক আলোচনা করার লোভ সংবরণ করতে পারলাম না। এই ধর্ষন ও ধর্মান্তরের বিচার আমরা আদৌ পাইতাম অথবা চাইতে পারতাম কিনা সেটা বিবেচনা করা যাক। বাংলাদেশের উলামা সমাজ সারাদেশের মুসলমানদের তুলনায় অনেক কট্টর হাদিসপন্থী। ইসলামের ইতিহাসে যে বিরাট বিরাট মাপের মুজতাহিদরা ছিলেন তাদের ধারেকাছে এদেশের এখনকার কোন উলামা নাই।

কাজী নজরুল ইসলাম এদের সাধারণ শ্রেণীকে 'আমপারা পড়া হামবড়া' হিশাবে অভিহিত করে গেছেন। বিদ্যানদের অবস্থাও সুবিধার না। এমনকি আল্লামা শফীর মতো প্রভাবশালী ও মান্যগন্য উলামাও হাদিসের অথরিটি বিচারে অন্ধ অনুসরণ এবং মুখস্ত বিদ্যার উপরে নির্ভরশীল। ওনারা কুরান সুন্নাহর শাসন চান, কিন্তু কুরান সুন্নাহ বলতে ওনারা যা বুঝেন তা এদশের খেটে খাওয়া সাধারণ মুসলমানের বুঝের চেয়ে যথেষ্ট ভিন্ন। তাদের হাজার হাজার হাদিস মুখস্ত করতে হয়, যার যতো বেশি হাদিস মুখস্ত সে ততো বড় পন্ডিত।

সিহাহ সিত্তাহ হিশাবে পরিচিত ৬টি গ্রন্থের হাদিস যে তারা বাছ বিচার ছারাই অনুসরণ করবে এটা নিঃসন্দেহে বলা যায়। কারন এরা নাস্তিকদের তওবা করে আস্তিক বা মুসলমান হতে বলেছে। তাদের কাছে ইসলাম ত্যাগ করা হচ্ছে মৃত্যুদন্ড পাওয়ার মতো অপরাধ, যার থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় তওবা করা। আবার উলটা কাউকে ইসলাম ধর্মে দিক্ষিত করতে পারলে সেটা অবশ্যই পূণ্য। আল্লামা শফির ইসলামী শাসনের বাংলাদেশে আমি এই ধর্ষককে অবশ্যই উকিল হিশাবে বাঁচায়া নিয়া আসতে পারবো।

আমাদের মহানবী ধর্মপ্রচারএর উদ্দেশ্যে বেশকিছু রাজনৈতিক বিবাহ করেছেন, ধর্মান্তর করেছেন। যুদ্ধের মাধ্যমে ধর্মান্তর করেছেন। সুতরাং, ধর্মান্তরের কেইস প্রথমেই বাতিল হয়ে যাবে। এটা কোন কেইসই না। আর ধর্মান্তর যদি সমস্যা ন হয়, তাইলে বিয়াও জায়েজ।

খ্রীষ্টান হইলে ধর্মান্তর না হইলেও চলতো, কিন্তু হিন্দু যেহেতু মুর্তিপুজক সুতরাং ধর্মান্তর না করে বিয়ে করা ঠিক হইতোনা, এর পক্ষে দলিল আছে। আর যেহেতু বউএর সাথে সেক্স করেছে, সুতরাং এইটা ধর্ষন কেমনে হয়? এই কেইস আসলে কাজী সাহেবের দরবারে উঠতো কিনা সে নিয়াই আমার সন্দেহ আছে। ১১ বছরের কারো সাথে সেক্স করাই ধর্ষন হিশাবে বিবেচ্য, এইটা সেকুলার আইন। ১৮ বছরের নিচে আপনে বিয়াই করতে পারবেন না, এইটা সেকুলার আইন। শরিয়তী বাঙলায় এটা কোন সমস্যা না, কারন দলিল দস্তাবেজ থেকে ৯ বছরের মেয়েকে বিবাহ করার বৈধতাও বের করে নেয়া যাবে।

জোর করে বিয়ে করার পক্ষেও দলিল পাওয়া যাবে। যেহেতু আল্লামা শফি ইমাম হাম্বলের রেফারেন্স দিয়া মানুষরে ইসলাম এবং মুসলমানিত্ব বুঝান তাই এই বিষয়ে আমার কোন সন্দেহ নাই। কারন ইমাম হাম্বল ছিলেন সেই ব্যক্তি যার বিষয়ে তাবারি'র বক্তব্যই আমার কাছে গ্রহণযোগ্য মনে হয়, হাম্বল সাহেব আদৌ কোন মুজতাহিদই ছিলেন না, সর্বোচ্চ একজন হাদিস সংরক্ষনকারী হতে পারেন। এবং এই সংরক্ষন ও বিশ্বাসে তিনি প্রায় কানা কিছিমের ছিলেন, ইজতিহাদের যোগ্যতা ছিলোনা বলে ইজতিহাদ বিরোধীতা করতেন। মতিকন্ঠের ভাষায় বলতে গেলে তিনি 'কুটি কুটি' হাদিস সংরক্ষন করেছেন এবং 'কুটি কুটি' হাদিসকে সত্য ও অবশ্য অনুসরণীয় মানতেন এবং মানতে বলে গেছেন।

এমনিতে ইসলামে ইবনে রুশদএর মতো আইন বিষারদও ছিলেন। তিনি অবশ্য এই ধর্ষককে ধর্ষক হিশাবেই বিচার করতে বলতেন। কারন তিনি দলিল হাজির করে দেখাতেন যে ইসলাম আসলে বিবাহের ক্ষেত্রে নারী স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে, জোর জবর্দস্তিতে না। আল্লামা শফিরা তাকে রেফারেন্স হিশাবে মানবেন না, কারন ইবনে রুশদ নাস্তিকদের ফাঁসির দাবিতে একমত হবেন না। ইবনে সিনা এবং আল ফারাবির বিরুদ্ধে আল গাজালী যে ব্লাশফেমির অভিযোগ আনছিলো, তার বিপরীতে ইবনে রুশদ যুক্তি দিছিলেন যে ইজতিহাদে ভুল হইলে কোন পাপ নাই, এমনকি তাতে শরিয়া বিরুদ্ধে স্বিদ্ধান্তে উপনিতে হইলেও।

অবশ্য আল্লামা শফির পূর্বসূরীরা তার বিরুদ্ধেও ব্লাশফেমির অভিযোগে আন্দোলন করে সফল হয়েছে। এই হইলো সমস্যা। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.