আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নারায়ণগঞ্জের কন্টেইনার টার্মিনাল নিয়ে ভারত সরকার ও কুমুদিনীর বিভ্রান্তি, লুকোচুরি!

আমি চাই শক্তিশালী স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ বাংলাদেশে দেশীয় বহু এনজিও বিদেশ হতে অর্থ সাহায্য নিয়ে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ, প্রাথমিক শিক্ষা ও কিছু চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যায় করে। এর জন্য তাদেরকে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে সময়ে সময়ে রিপোর্ট দিতে হয়। এই সকল এনজিও যখনই বিশেষ কিছু প্রকল্প যৌথ(বিদেশীদের সাথে) উদ্যোগে করতে যায় সেটা সমাজ কল্যাণতো বটেই স্বরাষ্ট্র, আইন, অর্থমন্ত্রণালয় সহ সংশ্লিষ্ট সরকারী দপ্তরের যথাযথ অনুমতি ও পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে তা হয়। হুট করে চাইল আর এনজিওরা নিজ নিজ অথবা বিদেশীদের স্বার্থে কোন কাজ করবে সেটা হয় না। কারণ দেশের সমাজ, রাষ্ট্রীয় ব্যাবস্থার সাথে সেটা সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হয়।

এমনকি ইপিজেড গুলোতেও প্রকাশ্য অনেক সরকারী পর্যবেক্ষণ, আইন কানুন দ্বারাই সেখানে উৎপাদন বিপনণ ইত্যাদি হয়। এখানে বাংলাদেশ সরকারের প্রণিত নিয়মই বিদেশী বিভিন্ন কোম্পানী গুলো অনুসরণ করে। নতুন কিছু করতে চাইলেই অবশ্যই সরকারের অনুমতিতো নিতেই হবে বরং সরকারকেও সেটা দেশ ও জনগণের কাছে বলতে হবে। কিন্তু যখন আলীগ সরকারে থাকে তখন কেবলই ভারতের বেলায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে রাখ ঢাক ও দেশের স্বার্থ বিকিয়ে সমঝোতা ও চুক্তি করা হয়। এমনই ভাবে নারায়ণগঞ্জে কন্টের টার্মিনালের বিষয়েও ঘোলাটে পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।

কুমুদিনী ট্রাষ্টের এভাবে এগিয়ে আসা তাও ভারতের আভ্যন্তরীন স্বার্থে তা অবশ্যই প্রশ্নের জন্ম দেয়। বাংলাদেশের সরকার ঠিক কি কারণে কুমুদিনীকে তার নারায়ণগঞ্জের জায়গায় ভারতে কন্টেইনার টার্মিনালের জন্য নির্বাচন করল এই বিষয়ে দেশবাসী ও সংসদ কিছুই জানে না। যদি বিনিয়োগের আর্থিক দিকটা বাদও দেই তাহলেও আমাদের দেশের বিশেষজ্ঞ সহ ঢাবি, বুয়েট সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অনেক ব্যাক্তিবর্গ আছে যারা এই বিষয়ে কারিগরি পরিকল্পনা সহ বাণিজ্যিক বিষয় গুলিও সমীক্ষা করে এর একটা ড্রাফট তুলে ধরতে পারে। কিন্তু কি বাংলাদেশ সরকার ও কুমুদিনী ট্রাষ্ট এই বিষয়ে দেশের জনগণ ও বিশেষজ্ঞদেরকে না জানিয়ে সরাসরি ভারত সহ অন্যান্য বিদেশী রাষ্ট্রের কোম্পানী গুলোর কাছে ধর্ণা দিল; দেশের উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার সব সময় বিদেশী বিনিয়োগ উৎসাহিত করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় এবং ট্রাস্ট কর্তৃক পরিচালিত সেবামূলক কার্যক্রম চলমান রাখা ও সম্প্রসারণের জন্য আয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে ট্রাস্ট তার নারায়ণগঞ্জের নিজস্ব জায়গায় একটি অভ্যন্তরীণ কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণের পরিকল্পনা করে।

এই প্রেক্ষিতে নিজস্ব অর্থায়নে Pre-Feasibility Study এর পর টার্মিনাল স্থাপনের বিষয়ে প্রয়োজনীয় সরকারি অনুমোদন গ্রহণ করা হয়েছে। যেহেতু অভ্যন্তরীণ কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণ একটি ব্যয়বহুল প্রকল্প সেহেতু Joint Venture এর মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের প্রয়োজনে যুক্তরাজ্য, ডেনমার্ক, হল্যান্ড, জাপান, মালয়েশিয়া, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করা হয়। উল্লেখ্য, ভারতীয় পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি Container Corporation of India Ltd. (CONCOR) ইতোমধ্যে বাংলাদশের বিভিন্ন সরকারি ও প্রস্তাবিত বেসরকারি টার্মিনাল পরিদর্শন করে। যুক্তরাজ্য, ডেনমার্ক ও ভারতের প্রতিষ্ঠান CONCOR, Joint Venture এর আগ্রহ প্রকাশ করে। http://www.dailynayadiganta.com/?p=197559 কুমুদিনী ট্রাষ্টের এই বক্তব্যে কোথাও বলেনি যে উল্লেখিত বিদেশী রাষ্ট্রের সরকার গুলোর সাথেও যোগাযোগ করা হয়েছে।

কিন্তু যখন ভারতের পররাষ্ট্র দপ্তর এই বাণিজ্যিক বিজ্ঞপ্তি দেয় এই নিয়ে কুমুদিনী বলে; বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত উল্লিখিত প্রতিবেদন থেকে প্রতিভাত হয়, Container Corporation of India Ltd. এর পক্ষে ভারত সরকার এ বিষয়ে Techono-Commercial Feasibility Study এর জন্য আহবানকৃত দরপত্র কুমুদিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের নিজস্ব জায়গায় একটি কনটেইনার টার্মিনাল স্থাপন করা যায় কি না তার একটি সমীক্ষা মাত্র। দেখা যাচ্ছে যে নারায়ণগঞ্জের কন্টেইনার টার্মিনালের সমীক্ষার জন্য ভারতের কোন সংবাদপত্র গুলিতে দূরে থাকুক অন্যান্য রাষ্ট্রের পত্রপত্রিকাতেও এই বিষয়ে কুমুদিনী নিজস্ব ভাবে কোন বিজ্ঞপ্তি দেয়নি। কিন্তু বিজ্ঞপ্তিটা দিল ভারত সরকার নিজস্ব খরচে। অথচ কুমুদিনী কোন বিদেশী সরকারের সাথে যোগাযোগ করেনি। ভারত ছাড়া অন্য কোন রাষ্ট্রের সরকারও নিজ দেশে এইভাবে বিজ্ঞপ্তিটা দেয়নি।

কুমুদিনী বলছে Container Corporation of India Ltd. সংক্ষেপে Concor পাব্লিক লিমিটেড কোম্পানী। প্রকৃতপক্ষে এটা ভারত সরকারের রেল মন্ত্রণালয়েরই অধীনে; http://www.concorindia.com/index.asp Click This Link এখানে সরকারের এখতিয়ার ছাড়া বেসরকারী শেয়ার হোল্ডাররা এই ধরণের বিদেশে বিনিয়োগ ও সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। এই বিষয়ে ভারত সরকারের বক্তব্যও বিভ্রান্তিকর এবং ইদুর-বিড়াল খেলার মত। বাংলাদেশে নিযূক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার পঙ্কজ সরন বলেন; পঙ্কজ সরন বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জে বিদেশি বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশের একটি প্রতিষ্ঠান ভারতের একটি প্রতিষ্ঠানকে প্রস্তাব দিয়েছিল। ভারতের প্রতিষ্ঠানটি মনে করে, বিনিয়োগের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে তারা একটি সমীক্ষা চালাবে।

এ প্রস্তাবে বিনিয়োগের ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বিনিয়োগ প্রস্তাবটির ব্যাপারে ওই প্রতিষ্ঠান কিংবা ভারত সরকার কোনো সিদ্ধান্ত নিলে বাংলাদেশের আইনকানুন মেনেই তা করা হবে। এ বিষয়টিই আমি পররাষ্ট্রসচিবকে জানিয়েছি। ’ Click This Link উপরের বক্তব্যেও Concorযে ভারতীয় সরকার পরিচালিত পাব্লিক কোম্পানী তা কৌশলে এড়িয়ে গেছে হাইকমিশনার পঙ্কজ সরন। স্মরণীয় যে মার্কিন ইউনেকল, শেভরণ, কানকো-ফিলিপস যখন বাংলাদেশে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান করে তখন সেই চুক্তিটা সরাসরি হয় বাংলাদেশের সরকারের জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সাথে।

এই বিষয়ে মার্কিন সরকার স্রেফ সাক্ষী থাকে। কোন সমস্যা হলে দায়ভার বাংলাদেশ সরকার অথবা সেই মার্কিন কোম্পানীর। সারা বিশ্বে মার্কিন যেকোন কোম্পানীর জন্য বা তার পক্ষে ইউএস ষ্টেট ডিপার্টমেন্ট কোন বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপন দেয় না। যেমন টাটার প্রস্তাবিত বিনিয়োগ এবং এই দেশে এয়ারটেলের মোবাইল ফোন ব্যাবসা এর জন্য ভারতীয় পররাষ্ট্র দপ্তরকে নিজ দেশে কোন পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিতে হয়নি। যেহেতু CONCOR নিজেই ভারত সরকারের অধীনে তাই তাকে ভারতীয় পররাষ্ট্র দপ্তরের শরণাপন্ন হতে বাধ্য।

ভারতের পশ্চিম হতে তার সেভেন সিষ্টার্সে শুধুই বেসরকারী প্রতিষ্ঠান গুলোর স্বার্থ নয় বরং ভারতের রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রীয় স্বার্থ সরাসরি জড়িত। বাংলাদেশের ভিতর দিয়ে এই পথ সুগম করা ভারত সরকারের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ। এখন বাংলাদেশে কুমুদিনী ট্রাষ্ট দূরে থাকুক এই দেশের সরকারও দেশবাসী ও সংসদকে না জানিয়ে ভারতের জন্য এইভাবে কন্টেইনার টার্মিনাল বিষয়ে কোন উদ্যোগ নিতে পারে না। কিন্তু দেখা যাচ্ছে কি ভারত সরকার কি বাংলাদেশ সরকার কেউ কোন প্রস্তাব দেয়নি অথচ কুমুদিনী নিজেই আগ বাড়িয়ে ২০১১ সালে কনকরকে কন্টেইনার টার্মিনাল প্রতিষ্ঠার বিষয়ে প্রস্তাব দিয়ে বসে আছে। আমরা দেশবাসীতো দূর বাংলাদেশের সরকার ও সংসদ কিছুই জানে না।

এখানে; তবে ওই সমীক্ষার ব্যাপারে গণমাধ্যমের প্রতিবেদন প্রকাশের আগে বাংলাদেশ বিষয়টি সম্পর্কে অবগত ছিল না। এ অবস্থায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়টি সম্পর্কে ভারতের কাছে জানতে চায়। গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রসচিব ও ভারতের হাইকমিশনার প্রায় এক ঘণ্টা বৈঠক করেন। তাঁরা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিভিন্ন দিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন বলে জানা গেছে। এখন দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশের সরকার ও প্রশাসন গোবেচারা সাজতে চায়।

এত বড় একটা বিষয় দুই বছর ধরে কুমুদিনী ভারতীয় সরকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করছে আমাদের পররাষ্ট্র দপ্তর ও গোয়েন্দা সংস্থা গুলো কিছুই জানে না এটা অসম্ভব! কুমুদিনী বলছে "উল্লেখ্য, ভারতীয় পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি Container Corporation of India Ltd. (CONCOR) ইতোমধ্যে বাংলাদশের বিভিন্ন সরকারি ও প্রস্তাবিত বেসরকারি টার্মিনাল পরিদর্শন করে। " তারা প্রকাশ্যে এই ভাবে অবকাঠামো দেখে ঘুরে গেছে অথচ কারণ জানে না আমাদের সরকার। দেশের স্বার্থ বিকিয়ে ভারতকে উপকার করা যেহেতু হাসিনা ও আলীগের পুরানা খাসলত তাই দিল্লী কোন তোয়াক্কা না করে এই ভাবে সরকারী বিজ্ঞপ্তি দিছে। মনে হয় বাংলাদেশ ভারতের কোন অঙ্গরাজ্য! কুমুদিনী ট্রাষ্টের সাহস হবে না যে বাংলাদেশ সরকারকে কিছু না জানিয়ে এই ভাবে ভারত সরকারের কাছে ধর্ণা দেওয়া। এখন পঙ্কজ বাবু লোক দেখানো ভাবে বাংলাদেশের জনগণের সাথে ছলচাতুরী করে ৯/৬ বুঝিয়ে দিবে।

আর আমাদের তাবেদার সরকারও সঠিক তথ্য লুকিয়ে গোজামিল দিবে এবং বলবে "ভারত হতে তথ্য চাওয়া মানে অসভ্যতা"!  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.