আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভোক্তা অধিকার কেবল আইন নয়, চাই প্রয়োগ ! আর সবার আগে আমাদেরই সচেতন হতে হবে !

খুব সাধারন এক মানুষ। ভালবাসি সাধারন মানুষের জন্য কিছু করতে। জনকল্যাণে রাষ্ট্র বিভিন্ন আইন প্রণয়ন করে। কিন্তু আমরা সাধারণ মানুষ সেই সব আইন সম্পর্কে সঠিকভাবে জানি না বলে আইনের সুফলগুলো ভোগ করতে পারি না। নাগরিক হিসেবে আইনের সুফল ভোগ করা আমাদের অধিকার।

তাই এমন কিছু আইন আছে যা সম্পর্কে নাগরিক অধিকার ভোগে মোটামুটি ধারণা থাকা প্রয়োজন। “আমাদের দেশে ভোক্তা অধিকার আইন”এর প্রয়োগ নেই বললেই চলে। আইনের যথাযথ প্রয়োগের অভাবে ক্রেতা সাধারণ প্রতারিত হচ্ছে। মূল্য পরিশোধ করার পরেও ক্রোতারা বঞ্চিত হচ্ছেন তাদের প্রয়োজনীয় এবং মানসম্মত সামগ্রী থেকে। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন আইন সম্পর্কে ধারণা থাকলে আমরা আমাদের অধিকার রক্ষায় সচেষ্ট হতে পারবো।

সংসদ কর্তৃক গৃহীত ভোক্তা অধিকার ও সংরক্ষণ ২০০৯ আইনটি ৫ এপ্রিল, ২০০৯ (২২শে চৈত্র, ১৪১৫) তারিখে রাষ্ট্রপতির সম্মতি লাভ করে এবং পরবর্তী কোন নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। ভোক্ত অধিকার ও সুরক্ষা আইন ২০০৯ “ভোক্তা’’ অর্থ এমন কোন ব্যক্তি- (ক) যিনি পুনঃ বিক্রয় ও বানিজ্যিক উদ্দেশ্য ব্যতীত- কোন পন্য ক্রয় করেন । (অ) মূল্য পরিশোধের প্রতিশ্রুতিতে কোন পন্য ক্রয় করে থাকেন। (আ) আংশিক পরিশোধিত ও আংশিক প্রতিশ্র্রতিতে মূল্যের বিনিময়ে কোন পন্য ক্রয় করেন। (খ) যিনি ক্রেতার সম্মতিতে দফা “ক” এর অধীনে ক্রীত পন্য ব্যবহার করেন।

(গ) যিনি পন্য ক্রয় করিয়া উহা, আত্মকর্ম সংস্থানের মাধ্যমে স্বীয় জীবিকা অর্জনের উদ্দেশ্যে বানিজ্যিক ভাবে ব্যবহার করেন। (ঘ) যিনি- (অ) মূল্য পরিশোধে বা মূল্য পরিশোধের প্রতিশ্রুতিতে কোন সেবা ভাড়া বা অন্য ভাবে গ্রহণ করেন। (আ) আংশিক পরিশোধিত ও আংশিক প্রতিশ্রুতি মূল্যের বিনিময়ে কোন সেবা ভাড়া বা অন্য ভাবে গ্রহণ করেন। ২০০৯ সালের ভোক্তা অধিকার ও সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী নিচের কাজগুলো ভোক্তা- অধিকার বিরোধী কাজ হিসেবে বিবেচিতঃ- (সংক্ষিপ্ত রূপে)ঃ- - কোনো আইন বা বিধির অধীনে নির্ধারিত মূল্য অপেক্ষা অধিক মূল্যে কোন পন্য, ঔষধ বা সেবা বিক্রয় করা বা করিতে প্রস্তাব করা। - জ্ঞাতসারে ভেজাল মিশ্রিত পন্য বা ঔষধ বিক্রয় করা বা করিতে প্রস্তাব করা।

- মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ভাবে ক্ষতিকর কোন দ্রব্য, কোন খাদ্য পন্যের সহিত যাহার মিশ্রন কোন আইন ও বিধির অধীন নিষিদ্ধ করা হইয়াছে। উক্তরূপ দ্রব্য মিশ্রিত কোন পন্য বিক্রয় করা বা করিতে প্রস্তাব করা। - কোন পন্য বা সেবা বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে অসত্য বা মিথ্যা বিজ্ঞাপন দ্বারা ক্রেতা সাধারণকে প্রতারিত করা। - প্রদত্ত মূল্যের বিনিময়ে প্রতিশ্র“ত পন্য বা সেবা যথাযথ ভাবে বিক্রয় বা সরবরাহ না করা। - প্রতিশ্র“ত ওজন অপেক্ষা কম ওজনের পন্য বিক্রয় বা সরবরাহ করা।

- কোন নকল পন্য বা ঔষধ উৎপাদন করা। - সেবা গ্রহীতার জীবন বা নিরাপত্তা বিপন্ন হইতে পারে এমন কোন কার্য করা, যাহা কোন আইন বা বিধির অধীনে নিষিদ্ধ করা হইয়াছে; ইত্যাদি ভোক্তা অধিকারে বিরোধী কার্য। এ আইন লঙ্ঘনের দণ্ড- (সংক্ষিপ্ত রূপে) (ক) পন্যের মোড়ক ইত্যাদি না করিবার দণ্ড- মোড়কের গায়ে সংশ্লিষ্ট পন্যের ওজন, পরিমাণ, উৎপাদন, ব্যবহার বিধি, সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য, উৎপাদনের তারিখ, প্যাকেটজাত করনের তারিখ এবং মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ স্পষ্ট ভাবে লিপিবদ্ধ করিবার বাধ্যবাধকতা লঙ্ঘন করিয়া থাকিলে তিনি অনুর্দ্ধ এক বৎসর কারাদণ্ড বা অনাধিক পঞ্চাশ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবেন। (খ) মূল্যের তালিকা প্রদর্শন না করিবার দন্ডঃ- প্রতিষ্ঠানের সহজে দৃশ্যমান কোন স্থানে পন্যের মূল্যের তালিকা লটকাইয়া প্রদর্শন না করিয়া থাকিলে তিনি অনুর্দ্ধ এক বৎসর কারাদন্ড, বা অনাধিক পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবেন। (গ) অধিক মূল্যে পন্য ঔষধ বা সেবা বিক্রয় করিবার দন্ডঃ- নির্ধারিত মূল্য অপেক্ষা অধিক মূল্যে পন্য বা সেবা বিক্রয় বা বিক্রয়ের প্রস্তাব করিলে তিনি অনুর্দ্ধ ০১ বৎসর কারাদন্ড বা অনাধিক ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবেন।

(ঘ) ভেজাল পন্য বা ঔষধ বিক্রয়ের দন্ডঃ- কোন ব্যক্তি জ্ঞাতসারে ভেজাল মিশ্রিত পন্য বা ঔষধ বিক্রয় করিলে বা করিতে প্রস্তাব করিলে তিনি অনুর্দ্ধ তিন বৎসর কারাদন্ড বা অনাধিকার দুই লক্ষ টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবেন। (ঙ) ওজনে কারচুপির দন্ডঃ- পন্য সরবরাহ বা বিক্রয়ের সময় ভোক্তাকে প্রতিশ্র“ত ওজন অপেক্ষা কম ওজনে উক্ত পন্য বিক্রয় বা সরবরাহ করিলে তিনি অনুর্দ্ধ এক বৎসর কারাদন্ড বা অনাধিক ৫০,০০০/- জরিমানা বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবেন। পন্য বা সেবা ক্রয়ে, ক্রেতা ক্ষতিগ্রস্থ্য হইলে অভিযোগ প্রদান করিতে পারিবেঃ- পন্য কিনে প্রতারিত হলে বা অন্য কোন অভিযোগ থাকিলে জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষন অধিকার সংরক্ষন আইনের ২০০৯ এর ৪৬ (৪) ধারায় অভিযোগকারীর অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাঁকে জরিমানার ২৫ শতাংশ অর্থ দেওয়ার বিধান রয়েছে। কারণ উদ্ভব হওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে লিখিত, ফ্যাক্স বা ই-মেইল যেকোন ভাবেই এই অভিযোগ করা যাবে। অভিযোগকারী তার পূর্ণনাম, পিতা ও মাতার নাম, ঠিকানা, ফোন-ফ্যাক্স ও ই-মেইল নম্বর (যদি থাকে) এবং পেশা উল্লেখ করতে হবে।

অভিযোগ জানানোর ঠিকানাঃ- মহাপরিচালক জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তর ১, কাওরান বাজার (টিসিবি ভবন-৮ম তলা) ঢাকা। এছাড়া অথবা , ফোনঃ- ০২-৮১৮৯০৪৫, ৮১৮৯৪২৫ এছাড়াও জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট, বিভাগীয় উপ-পরিচালক, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তরে অভিযোগ করা যাবে। তথ্য সূত্রঃ- ভোক্তা অধিকার ও সংরক্ষন আইন ২০০৯ লেখাটি "নাগরিক অধিকার" বুলেটিন এ প্রকাশিত। ভোক্তা অধিকার নিয়ে আরও জানতে ভিজিট করুন ঃ http://www.nagorikodhikar.org  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.