আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পাপ

এটা আমার রাজত্ব ১ রাত ১২ টা। চার্চের ঘণ্টা বেজে উঠল ঢং ঢং করে। চারদিক নিস্তব্ধ। শুনশান নিরবতা সবখানে। চার্চের হলরুমে প্রভু যিশুর মূর্তির সামনে অবনত মস্তকে প্রার্থনা করছেন পিটার।

চোখে জল। কান্নারুদ্ধ গলায় ঈশ্বর কে ডাকছেন পিটার। : প্রভু আমায় ক্ষমা কর প্রভু। সবাই জানে আমি নিষ্পাপ, আমি নিষ্কলঙ্ক। আজ পর্যন্ত কোন অপরাধ করিনি।

কারও মনে কষ্ট দেইনি। কারও ক্ষতি করিনি। কিন্তু আমি তো জানি। আমি অপরাধী। যুবক বয়সে এলিজাবেথকে পছন্দ করতাম।

ওকে জানিয়েছিলামও। ও কখনও সাড়া দেয়নি। তবু আমি ওর পিছনে ফেউ এর মত লেগে থেকেছি। শেষ পর্যন্ত অতিষ্ঠ হয়ে অরা এলাকা ছাড়ল। আমিও ছাড়লাম।

এসে হাজির হলাম এই চার্চে। তখন থেকে তোমার দীক্ষায় দীক্ষিত হয়ে ছড়িয়ে দিচ্ছি মানব প্রেমের বানী। তবু কেন ঈশ্বর আমাকে এমন ভয়ঙ্কর স্বপ্ন দেখাচ্ছ। আমি কি ক্ষমা পেতে পারিনা। আমায় কি ক্ষমা করা যায়না।

প্রভু আমায় উত্তর দাও। উত্তর দাও। কাদতে কাদতে মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন পিটার। ২ খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠল পিটার। মাটির উপর শুয়ে ছিল এতক্ষন।

পিট পিট করে তাকিয়ে দেখল এক শুশ্রু মণ্ডিত ব্যাক্তি তার পাশে বসে আছে। চারপাশে তাকিয়ে দেখল পিটার ,একটা বাগান। ও গত রাতের কথা মনে করল। ও কিছুটা অবাক হল ও এই বাগানে কেন? আর এই লোক টিই বা কে? আর শরীরেও কোন ব্যাথা নেই। নিজের দিকে তাকিয়ে আর অবাক হল সে।

মনে মনে ভাবল ‘স্বপ্ন দেখছিনা তো। ’ ‘না। স্বপ্ন না। তুমি আবার যুবক হয়েছ। তুমি ফিরে গেছ সেই দিনগুলোতে যে দিনগুলোর কথা ভেবে তুমি কষ্ট পেতে।

ঈশ্বর মহান তাই তোমাকে আরেকটি সুযোগ দিয়েছেন তোমায়। যাও আর তোমার পাপ মুছে ফেল’। গম্ভীর গলায় বললেন লোকটি। পিটার আনন্দে কেঁদে ফেলল। আর বলল ‘হাল্লেলুয়াহ, প্রভু মহান।

তিনি মানবের ডাক শোনেন’। লোকটি এবার বলল, ‘কাজ শেষ হবার সাথে সাথে তুমি আবার ফিরে যাবে ঐ বয়সে। যখন তুমি ঈশ্বর কে ডেকেছিলে এবং ক্ষমা চেয়েছিলে। নিশ্চয় প্রভু মহান’। ‘জি, অবশ্যই।

কিন্তু আপনি কে?’ ‘গ্যাব্রিয়েল’ জবাব দিয়েই হারিয়ে গেল লোকটি। ৩ গত কিছুক্ষণের সবকিছু কেমন যেন উল্টোপাল্টা লাগছিল পিটারের। কোন কিছু স্বাভাবিক লাগছিলনা। এবার পিটার এর জবানিতেঃ ক্ষুধাও লেগেছে প্রচণ্ড। এখনো ভালভাবে সকাল হয়নি।

চারদিকে দেখলাম। জনমানবশুন্য চারদিক। তবে বুঝলাম, আমি সত্যি ফিরে এসেছি সেই দিনগুলোতে। আমার সেই দুরন্ত যৌবনে। ৩০ বছর আগের সেই মথুগঞ্জে।

তবে সমস্যা হল আমি কি একাই আছি নাকি সেই সময়ের আমিও উপস্থিত এখানে। অবশ্যই দেখতে হবে ব্যাপারটা। সব চেনা লাগছে। মনে হচ্ছে সকালে ঘুম থেকে উথেছি,রাতে এখানেই ছিলাম। ভাবতে ভাবতে আনমনে চলে এলাম বাড়িতে।

উঁকি মারলাম নিজের ঘরের জানালা দিয়ে। না , কেউ নাই সেখানে। উঠানে ঘোরাফেরা করছি। মা উঠলেন কিছুখন পরেই। “পিটার”, আর্তনাদ করে উঠলেন মা আমায় দেখে, “তুই বাড়ি এসেছিস।

তোর কি মনে ভয় নেই। তোর বাবা তোকে মেরেই ফেল্বে। জলদি পালা”। বুঝলাম ফিরে এসেছি সেই দিনেই যেদিন বাবা চরম মেরেছিল আমার একগুঁয়েমির জন্ন। আর মারের প্রতিশোধ নিতে সোজা চলে গিয়েছিলাম এলিজাদের বাড়িতে বন্ধুদের নিয়ে।

শাসিয়েছিলাম ওদের পরিবারের সবাইকে। আর এলিজা আমায় চড় মেরেছিল। তারপর আমি ছাড়লাম এই এলাকা। আর ওরাও আমার ভয়ে রাতে পাড়ি জমাল অন্য কোথাও। আর আমার বাবা সেই সুযোগে ওদের বাড়ি দখল করে নিল।

সব ই জেনেছিলাম এক বন্ধুর কাছে অনেক দিন পর। “পালা” মা বললেন আবারো, সাথে সাথে পিছন থেকে বাবা বলে উঠলেন, “কে উঠানে”? মনে ভয় জেগে উঠল । আজ আবার সেই দিনটার মুখমুখি হচ্ছি। তবু বাবাকে বললাম, “বাবা আমি”। বাবা হুঙ্কার দিয়ে উঠলেন, “তুই এখনো আমার বাড়িতে দাড়িয়ে।

যা চলে যা আমার বাড়ি থেকে। তোর মত কুলাঙ্গারের কোন জায়গা নেই এখানে”। বাবাকে বললাম, “বাবা, আমি আমার ভুল বুঝতে পেরেছি। আমায় ক্ষমা কর। প্রভু যীশুর দোহাই”।

বাবা কোন কথা শুনলেননা। এগিয়ে এলেন আমার দিকে লাঠি নিয়ে। বুঝতে পারলাম সেই ঘটনার পুনঃমঞ্চায়ন হচ্ছে। মন চাইল ছুটে পালাতে। কিন্তু স্থির দাড়িয়ে রইলাম।

বাবা প্রথম আঘাত করলেন। ব্যাথায় চিৎকার করে উথলাম। তবু দাড়িয়ে রইলাম আর বলতে লাগলাম, “বাবা, যা করেছি অন্যায় করেছি। আমায় ক্ষমা কর। আমি ওদের কাছেও ক্ষমা চাইব।

তারপর সবাইকে ছেড়ে চলে যাব। আর কাউকে জালাবনা। আমায় ক্ষমা কর বাবা”। আগেরবার এমন কিছুই বলিনি বরং তর্ক করে বাবাকে রাগিয়ে দিয়েছিলাম। আজকের নমনীয়তায় বাবাও থমকে দাঁড়ালেন।

“কি বললি? চলে যাবি। যা। ক্ষমাই যদি চাইতে পারিস তবে আমি কেন ক্ষমা করতে পারবনা”? মুহূর্তে সব রাগ পানি হয়ে চোখ দিয়ে অশ্রুর ধারা হয়ে ঝরতে লাগল বাবার। অথচ সেইদিন বাবার চোখে ছিল ক্রোধ । এমন বৈপরীত্যে অবাক হলাম।

তবে মুখে অপরাধি ভাব করে লুটিয়ে পড়লাম বাবার পায়ে। বাবা আর কোন কথা বললেননা। আমাকে বুকে নিয়ে কাদতে থাকলেন। মায়ের দিকে তাকিয়ে দেখলাম তিনিও কাঁদছেন। ৪ এরপর পরিস্থিতি শান্ত।

মা নাস্তা বানিয়ে দিলেন। পেট পুরে খেলাম। মা বাবা হা করে দেখছেন আমার খাওয়া। “আস্তে খাও বাবা”মা বললেন আর থাকতে না পেরে। তারা তো আর জানেননা আজ কতদিন পর মায়ের হাতের রান্না খাচ্ছি।

খাওয়া শেষ করা মাত্র বাবা আদেশ করলেন এলিজা দের বাড়িতে যেতে, অবশ্যই তার সঙ্গে। রাজি হয়ে গেলাম। বাড়ি থেকে ওদের বাড়ি অল্প দূর। কিছুক্ষনের মধ্যেই পউছে গেলাম ওখানে। এলিজা উঠানেই ছিল আমায় দেখে দৌড়ে ঘরে চলে গেল।

বাবা এলির বাবাকে ডাকলেন। এলির বাবা এল। আমাকে পাশে দাড় করিয়ে আমার বাবাই তার কাছে মাফ চাইলেন। আমিও মাফ চাইলাম তার কাছে। পাশে গাছের আড়ালে দেখলাম বন্ধুরা দাড়িয়ে আছে।

সবার চোখে বিস্ময়। ক্ষমা চাওয়া শেষে ফিরে এলাম বাড়িতে। বুঝলাম যে কাজে এসেছিলাম তা শেষ হয়েছে। এখন ফিরে যেতে হবে ভবিষ্যতে। মায়ের কাছে গিয়ে বসলাম।

মা আমার কালো মুখটা দেখে আমায় কোলে নিয়ে আদর করে দিলেন। খুব কাদতে মন চাইল । তবু কাদলামনা। ৫ পুরো দিন বাবার সাথে কাজ করলাম। সন্ধ্যা আসন্ন।

বুঝলাম আমার বিদায় ও আসন্ন। পুকুরে গেলাম হাত মুখ ধুতে। হাত মুখ ধুতে ধুতে চোখ পড়ল পুকুরের অন্য দিকে। স্নান সেরে উঠছে এলিজাবেথ। চলে গেল ও ঝোপের আড়ালে।

নিশ্চই কাপড় বদলাচ্ছে। ভাবতে ভাবতে মনের অজান্তেই পুকুরে নামলাম। ডুবসাতারে চলে গেলাম ঐ পারে। আস্তে আস্তে উঠলাম পাড়ে। ধির পায়ে এগিয়ে গেলাম ঝোপ টার কাছে।

আলতো করে ফাকা করলাম। সামনেই এলিজা, আমার এলিজা। অর্ধনগ্ন অবস্থায়। আর থাকতে পারলাম্না। নিজের অজান্তে ওকে জড়িয়ে ধরলাম পিছন থেকে।

ভয়ে চিৎকার করতে গেল ও। হাত দিয়ে মুখ চেপে ধরলাম । আর............... ৬ রাত ১১ টা। স্থানীয় গির্জায় উপস্থিত আমি। আজ আমার বিয়ে।

পাত্রি এলিজা। ওর গোঙ্গানি শুনে আমাদের ধরে ফেলে ওর বোন। ও ঐ পাশে পাহারায় ছিল। প্রথমে ধরতে পারেনি। মুখে চুমু খেতে গিয়ে ওর মুখ ছেড়ে দিয়েছিলাম।

তখনি ওর শব্দ শুনে আমাদের ধরে ফেলে ওর বন। তারপর বিচার বসল। দুই পক্ষই সমঝোতায় আসল আমাদের বিয়ে দেবে। এখন আমাদের বিয়ে। যীশুর মূর্তির সামনে লজ্জাই লাগছে।

কি করতে এসে কি করে ফেললাম। আর ১ ঘন্টা বাকি ১২ টা বাজতে। রাত ১১। ৪০। বাসর ঘরে আমরা।

বিকেলে যে আমার হাত থেকে ছোটার জন্য নড়ছিল, এখন সে শান্ত। যেন সব উপভোগ করছে। সব যেন এগিয়ে দিচ্ছে। সঙ্গম শেষে ঘুমিয়ে পড়লাম। জানিনা কাল সকালে উঠে কি দেখব! ৭ সকাল হয়ে গেছে।

ভোরের রবি জানালার ফাকা দিয়ে চোখে পড়ছে। আড়মড়া দিয়ে ঘুম ভাঙল পিটার এর। পাশের চার্চ এ ঘণ্টা বেজে উঠল। এ ঘণ্টার মানে চার্চ এ কেউ মারা গিয়েছে। যদিও পিটার চার্চ এ যায়না অনেক দিন হল তবু মৃত ব্যাক্তির জন্য প্রার্থনায় আজ যাবে বলে ঠিক করল।

নাস্তার টেবিলে নাস্তা দিতে দিতে মিসেস এলিজাবেথ পিটার বললেন, “এই শোন, পাশের ফ্ল্যাটের ভাবি বললেন চার্চ এর ফাদার নাকি মারা গিয়েছেন”। “ওহহো, সকালে তাহলে উনার মৃত্যু ঘণ্টা শুনেছি। স্যাড । ভেরি স্যাড”- পিটার বললেন। “উনি নাকি দেখতে পুরো তোমার মত ছিলেন।

নামও ছিল পিটার”। পিটার অবাক হলেন। প্রার্থনা শেষে সবাই লাইন ধরে এসে ফাদার পিটার কে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে এল। পিটার ফুল দিতে গিয়ে দেখল সত্যই ফাদারের চেহারা ছিল তার মত। হঠাৎ মৃত ফাদারর চোখ খুলে গেল।

পিটার ভয় পেয়ে গেল। ফাদার বলে উঠলেন, “আমি আর তুমি একই ব্যাক্তি। পার্থক্য আমার মৃত্যু পুন্যের হলেও তোমার জন্য পাপের। তুমি পাপি”। পিটার সব বুঝতে পারলেন।

তিনি আরও বুঝলেন তার জন্য অপেক্ষা করছে ইশ্বরের ক্রোধ। কিন্তু যার জন্য তার এই পাপ সেই এলিজাবেথ পাশে থাকলেও কিছু দেখতেও পারলনা আর জানতেও পারলনা... Moral: Girls are the sources of all sins… খ ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।