আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জীবনের প্রথম সিনেমা হলে সিনেমা দেখার অভিজ্ঞতা

দেশটা আমাদের। এর জন্য ভাল কিছু করতে হলে আমাদেরই করতে হবে। Mail:rabiul@gmail.com আমার জীবনে কিছু প্রতিজ্ঞা ছিল তার মধ্য অন্যতম ছিল জীবনে কোনদিন সিনেমা হলে যাব না। কিন্তু প্রতিজ্ঞাটি আমি রাখতে পারি নাই। তখন সবেমাত্র এস এস সি পরীক্ষা দিয়েছি।

রোজার ঈদের পরে গিয়েছিলাম আমার সবচেয়ে প্রিয় বন্ধুটির বাসায়। তার বাসায় আমি ছোট কাল থেকেই কারণে আকারণে প্রায়ই যেতাম। ওই দিন ওদের বাসায় ওর সম্পর্কে ভাই হন এমন এক আত্নীয় এসেছিলেন। উনি কি প্রসঙ্গে সিনেমার কথা তুলেছিলেন । অমনি বন্ধুর বোন,বন্ধুর খালাতো বোন উনাকে সিনেমা হলে সিনেমা দেখানোর জন্য চেপে ধরল।

উনি সিনেমা দেখাতে রাজ়ি হয়ে গেলেন। তখন উনি আমাকে বল্লেন আমাকেও যেতে হবে। আমি উনাকে বল্লাম আমার দ্বারা সম্ভব না। উনি অনেক ভাবে বুঝিয়ে বল্লেন। কিন্তু আমার মনে ছিল ভয়।

যা জীবনে কোন দিনই করবো না ভেবেছি এই রকম একটা প্রতিজ্ঞা কেন ভাংব। তাছাড়া সিনেমা হল সম্পর্কে ছোটবেলা থেকেই একটা বাজে ধারণা ছিল যে ওইটা খুবই বাজে একটা জায়গা। কোন ভাল মানুষ সেখানে যায় না। আরেকটা ভয় যেটা কাজ করছিল সেটা হল প্রতিজ্ঞা ভেংগে সেখানে গেলে মহান আল্লাহতাআলা আমাকে না আবার কোন গযবের মধ্য ফেলেন। বন্ধু বড় ভাইকে ভয়ের কথা গুলো বলার পর উনি হেসে ফেল্লেন।

বল্লেন যে ছবিটা তোমাদের দেখাব সেটা কোন বাজে ছবি না। ভয় পাবার কোন কারণ নেই। সিনেমা হলটিও অনেক ভাল। অবশেষে অনেক বুঝানোর পরে আমি রাজী হলাম। তাছাড়া আমি যেতে রাজী না হলে বন্ধুর অভিভাবকও বোনদের সিনেমা দেখতে যেতে দিবেন না।

শেষে আমরা সবাই মিলে সিনেমা দেখতে গিয়েছিলাম নয়া পল্টন জোনাকি সিনেমা হলে। সন্ধ্যার পর শো শুরু হয়েছিল। সিনেমা হলে ঢোকার পর থেকেই আমার মনে একটা কেমন জানি অসস্তি কাজ করছিল। সিনেমা হলের ভিতরের পরিবেশ বাজেই মনে হচ্ছিল। তখনতো আর কিছুই করার নেই।

নিজের প্রতিজ্ঞা ভংগার জন্য দুঃখ হচ্ছিল। যাক অবশেষে সব ভুলে সিনেমা দেখতে মনযোগী হলাম। সিনেমাটার নাম ছিল ‘স্বামী কেন আসামী’। নায়ক ছিল প্রয়াত জসিম,শাবান,ভারতীয় চঙ্কীপান্ডে আর ঋতুপর্ণা। সিনেমার কাহিনী তেমন মনে নেই।

তবে নায়ককে দেখে আমার ভীরমি খাওয়ার মতো অবস্থা। বন্ধুদের কাছে শুনেছিলাম কেউ বংলা ছবি দেখে না কারণ বাংলা ছবির নায়িকারা নাকি সব ইয়া মোটা মোটা। তবে নায়করাও যে এত মোটা হতে পারে সেটা জসিমকে না দেখলে আমি বিশ্বাসই করতে পারতাম না। এই মোটা শরীর নিয়ে তার যে কি একশন!!!ভিলেনরা এই মোটুর সামনে আসলেই এমনিতেই মরে যাওয়ার কথা। সেধে সেধে তার ঘুসি খাইতে হইবো কেন?ভিলেনরাও কেন রাজী হইব তার মতো নায়কের বিপরীতে ছবি করার জন্য।

তাদের কি জীবনের মায়া নাই!!!!!নায়ককে দেখতে দেখতে আর তার নড়াচড়া,মারপিট খেয়াল করতে করতেই আমার ছবি দেখা শেষ!!!!!!!ছবি দেখা শেষ হলে হল ছেড়ে বেরিয়ে এলাম। রাতে বাসায় এলে মা জিজ্ঞাসা করল এতক্ষণ কই ছিলাম। বল্লাম আড্ডাতে ছিলাম। মাকে আর বলিনি যে আমি সিনেমা হলে গিয়েছি। জসিমের মারপিট দেখে ঘরে সেটার বাস্তব প্রয়োগ দেখার কোন ইচ্ছা আমার ছিল না।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.