আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সাভার ট্রাজেডির ঘটনায় আমরা গভীরভাবে শোকাহত ও লজ্জিত এই ক্রান্তি লগ্নে দেশের হর্তা-কর্তাদের বিবৃতিতে

স্বাধীন দেশের রোবটিক নাগরিক সৃষ্টিকর্তা শোকার্ত পরিবারের ক্ষতিগ্রস্থ প্রত্যোককে এই শোক বহিবার ক্ষমতা দাও সাভারে ভবন ধসে হতাহতের ঘটনায় বৃহস্পতিবার জাতীয় শোক ঘোষণা করেছে সরকার। বৃহস্পতিবার সব সরকারি-বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনার ব্যবস্থা করা হবে। এহেন বিপদ সন্কুল মুহুর্তে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই মন্তব্য আমরা মর্মাহত , “সাভারের ভবন ধ্বংসের ঘটনায় সরকার সতর্ক হয়ে আগে থেকেই বাসিন্দাদের সরিয়ে এনেছিল। পরে কেউ গিয়ে থাকলে তারা গিয়েছিল মালামাল সরাতে চুরির উদ্দেশ্যে।

” ———-প্রধানমন্ত্রী বিচিত্র এই দেশ!!! দেখুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মন্তব্য “কিছু হরতাল সমর্থক ভবনটির ফাটল ধরা দেয়ালের বিভিন্ন স্তম্ভ এবং গেট ধরে নাড়াচাড়া করেছে… ভবনটি ধসে পড়া পেছনে সেটাও একটি সাম্ভাব্য কারণ হতে পারে”–স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রতিক্রিয়া: যদি সংখ্যালগু হরতাল সমর্থকরা ভবনটির ফাটল ধরা দেয়ালের বিভিন্ন স্তম্ভ এবং গেট ধরে নেড়েচেড়ে ভবনটি ধসাতে পারে, তাহলে অমার্জনীয় ও অমানবিক যেসব কীর্তিকলাপ দলীয় ছত্রছায়ায় ঘটে যাচ্ছে এ্রর বিপরীতে সাধারন জনগনের প্রতিউত্তর দিতে ও সেই সময়টাই লাগবে যে সময়টা লেগেছিল ভবনটির ধ্বসে পড়তে। তখন অন্যায়কারীরা পড়ে থাকবে ধ্বংসযজ্ঞের নীচে, অক্সিজেন নিয়ে তখন কেউ পাশে এসে দাড়াবে না । রাজধানীর মোহাম্মদপুর পুলিশ ফাঁড়ি সংলগ্ন সাত মসজিদ সুপার মার্কেটে ফাটল দেখা গিয়েছে এবং আশুলিয়ায় কয়েকটি গার্মেন্টেসের একই সমস্যার কারনে বন্ধ রাখা হয়েছে। কেউকি পারবেন ক্ষতিগ্রস্থদের অপূরনীয় ক্ষতিপূরন করতে? আমরাতো এখনো বিশ্বজিতের কথা ভুলে যাইনি, কি বিচার, কি ক্ষতিপুরন পেয়েছে তার পরিবার? নতুন করে এইসব ঘটনার কি ব্যাখ্যা দিবেন মাননীয় মন্ত্রী… দয়া করে আপনাদের এ্ই কাদাঁ ছোড়াছুড়ি বন্ধ করুন …… আপনাদের কাদাঁর নীচে পড়ে আমরা সাধারন মানুষ নিঃশ্ব হচ্ছি , এমনকি জীবন বাচানো দায় হয়ে পড়েছে। ফেইসবুক হতে জনাব রাগীব হাসানের পোষ্টটি সবার সাথে শেয়ার করলাম একটা লাশে কয়টা পাজেরো? কিংবা একটা পাজেরো, একটা বারিধারার ফ্ল্যাটের দাম কয়টা লাশ? বাংলাদেশে মানুষের জীবনের, রক্তের দামটা কতো কম, এ বছর যেন বার বার করে সেটা আমাদের স্মরণ করতে হচ্ছে।

তাজরিন গার্মেন্ট্সে ১০৮ জন মানুষকে খুন করার পরে লিখেছিলাম, আমাদের কাছে এসব এতই সামান্য ঘটনা যে লাশ প্রতি ক্ষতিপূরণের আনফিশিয়াল লিস্ট পর্যন্ত রেডি থাকে (লাশপ্রতি একটা ছাগল, কিংবা ২০ হাজার টাকা মাত্র, এরকম)। এবারে এক নিমেষে ৮০ জনের লাশ আর আরো কতো শত শত সম্ভাব্য মৃত্যুর ঘটনায় মনে হচ্ছে, বরং উল্টাটা চিন্তা করা যেতে পারে, অনেকটা এরকম - - গার্মেন্ট্স মালিকের ঝকঝকে পাজেরো - ২০টি লাশ। - ভবন মালিকের প্রাসাদ - ৪০ টি লাশ। - গার্মেন্ট্সের এই হতভাগ্য শ্রমিকদের হাতে তৈরী একেকটি শার্ট - ১টি লাশ। - বিজিএমইএ ভবন - ১৫০০ লাশ।

- মন্ত্রীদের চাঁদা ফান্ড/গদি - ২০০০ লাশ। - দেশের শনৈ শনৈ উন্নতি, চায়ের কাপে আমাদের ঝড় তোলা, ফেইসবুকে ফাটিয়ে ফেলা - ১০ হাজার লাশ। প্রতি ২/৩ মাসে এরকম একটা ঘটনা ঘটবে, আমরা দায়সারাভাবে ফেইসবুকে কালো ব্যাজ লাগিয়ে এই শ্রমিকদের নিয়ে আহাজারি করবো, বলবো, "আর কতো?", কিন্তু পরে সুযোগ পেলেই গার্মেন্ট্সের শ্রমিকদের ভুলে যাবো, কিংবা অর্থহীন বিষয়ে তর্কে-বিতর্কে কাটাবো সারাদিন। আর এই লাশের পাহাড়ে তৈরী হবে প্রাসাদ, কেনা হবে নতুন পাজেরো, গদি, কিংবা উন্নত মধ্য আয়ের একটি দেশের সোনার পাথরবাটি ... কাজেই দোষটা কার সেটা না খুঁজে আসুন নিজেদের দিকেই দেখি, ভেতর থেকে পরিবর্তন আনি। এই ৮০টা পরিবার, কিংবা ৮০০টা পরিবার রাতারাতি পথে বসে গেলো, এদের জন্য পিটিশনে সাইন করি কিংবা এদের বাচ্চাদের জন্য, এদের জীবনযাপনের জন্য একটা ব্যবস্থা করি।

আর এই মুনাফাখোর গার্মেন্ট্স মালিক, ত্রুটিপূর্ণ ভবনের অনুমোদন দেয়া রাজনীতিবিদ, প্রকৌশলী, কিংবা দলীয় নেতাদের বলি, আজ রাতে এই কয়েকশ লাশের মিছিলে পারবেন তো ঘুমাতে? কিংবা কাল, অথবা পরশু? ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।