আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এরপরও বেচে থাকতে হয়…

যে বিশ্বাস নিয়ে একটা ছোট্ট শিশু হেসে ওঠে তাকে পরে ছুড়ে দেয়া হলে, তেমনি বিশ্বাস আমি করি তোমাকে। আমি জানি তুমি দুঃখ কখনও দেবেনা আমাকে। সেদিন অনেক অনেক বছর পর স্কুলের এক সহপাঠীর সাথে দেখা। ওর সাথে কথা বলে মনটা ভীষন খারাপ হয়ে গেল। অনেক দিন কাদিনা।

তাই কান্না ভুলে গেছি, নাহলে বোধ করি চোখের পানি আটকাতে পারতাম না। আমরা যখন ক্লাশ নাইনে পড়ি, তখন বাবা মারা যায় মেয়েটার। বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান ও। ওর বাবা মারা যাবার পর উনার যা সঞ্চয় ছিল, তা দিয়ে এক বছরের খরচ চালানো সম্ভব ছিল হয়ত কোন রকমে। চাচারা ওর আর ওর মায়ের দায়িত্ব নিতে অস্বীকৃতি জানায়।

সম্ভবত, খালা, খালুর, (ওর বাবা মায়ের) ভালোবাসার বিয়ে ছিল বলে। খালাম্মাও ছিলেন তার মা-বাবার একমাত্র সন্তান। মেয়েটার নানা ভদ্র লোক ছিলেন স্কুলের শিক্ষক। মেয়েকে দেবার মত গ্রামে একটুকরো জমি ছাড়া আর কিছুই ছিলনা তার। ভাগ্যক্রমে খালাম্মা ছিলেন ইংরেজীতে অনার্স পাশ করা।

বিয়ের পর তাকে কখনও কাজ করতে হয়নি। কিন্তু খালু মরার পর অবস্থার কারনেই তিনি স্কুলের বাচ্চাদের পড়িয়ে নিজের মেয়ের লেখা পড়ার খরচ চালাচ্ছিলেন। হায়ার সেকেন্ডারি পাশের পর বিয়ে হয়ে যায় মেয়েটার। স্বামী ব্যবসায়ী। এক বছরের মাথায় একটা ছেলেও হয়।

সেদিন দেখা হবার পর জানতে চাইলাম খালাম্মা কেমন আছেন। ও যখন বলল, আম্মু তো মারা গেছে, আরও ২ বছর আগে, ভীষন রকম কষ্ট হল। আরও কষ্ট হল জেনে, খালাম্মা মারা যাবার আগে ওর একটা মেয়ে হয়েছিল। সেটাকেও বাচাতে পারেনি ডাক্তাররা। চোখে পানি আসছিল জেনে, স্বামী ভদ্রলোক ও মেয়েটাকে খুব শান্তিতে রাখেনি।

যার হাত ধরে ও জীবনের এই বন্ধুর পথ হেটে যেতে পারত, সেও ওর হাতটা শক্ত করে ধরেনি। আশ-পাশে আজকাল অনেকের মুখেই শুনি এই জীবনটা নাকি আর ভালো লাগেনা। তাদের দুঃখ, হতাশা, একাকিত্ত্ব এত বেশি, যে বেচে থাকার ইচ্ছাই হারিয়ে ফেলছে অনেকে। ওকে দেখে মনে হল, জীবনের প্রতি ওর থেকে বেশি অনিহা আসার কারন আমার আশ-পাশের মৃত্যু প্রত্যাষি মানুষগুলোর থেকে বেশি। কিন্তু ও তো মৃত্যুকে কামনা করছে না।

বরং বেচে থাকার জন্য অহর্নিশ সংঘর্ষ করে যাচ্ছে। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.