আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইকুয়েডর পারলে বাংলাদেশ পারবে না কেন? শেভ্রন এবং নাইকোর কাছ থেকে পাওনা ৪৫ হাজার কোটি টাকা আদায়ে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে, সরকার নিস্ক্রিয় কেন???????

যদি ঠাঁই দিলে তবে কেন আজ হৃদয়ে দিলে না প্রেমের নৈবদ্য তেল গ্যাস উত্তোলনকারী মার্কিন বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান শেভ্রন ইকুয়েডরে তেল উত্তোলনকালে ১৯৬৪-১৯৯২ সালে আমাজান বন এর ব্যাপক পরিবেশজনিত দূষণ সৃষ্টি করায় কোম্পানির বিরুদ্ধে ২০১১ সালে মামলা ঠুকে দেয় ইকুয়েডর। স্থানীয় আদালতের রায়ে শেভ্রনকে ১৮ বিলিয়ন ডলার জরিমানা করা হয়। শেভ্রন এই রায়ের বিরুদ্ধে পরবর্তীতে রিট করে মার্কিন নিম্ন এবং উচ্চ আদালতে। গত ১০ ই অক্টোবর প্রকাশিত খবরে জানা যায় সেখানেও আইনি লড়াইয়ে হেরে গেল শেভ্রন (আল জাজিরা, ১০ অক্টোবর, ২০১২)। অর্থাৎ শেভ্রন পরিবেশজনিত ক্ষতিপূরণ বাবদ ইকুয়েডরকে ১৮ বিলিয়ন ডলার দিতে বাধ্য থাকবে।

অন্যদিকে বাংলাদেশ মার্কিন কোম্পানি অক্সিডেন্টাল (পরবর্তীতে ইউনোকল এবং বর্তমানে শেভ্রন)এবং কানাডিয়ান কোম্পানি নাইকোর কাছ থেকে মাগুড়ছড়া ও টেংরাটিলা গ্যাসক্ষেত্রে বিস্ফোরণজনিত কারনে পাওনা ৪৫ হাজার কোটি টাকা আদায় করতে পারছে না, এমনকি এই ক্ষতিপূরণ বাবদ জরিমানা আদায়ে এদেশের সরকার ও বিরোধী দলসহ প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর চরম উদাসীনতা সত্যিই হতাশাজনক । ১৯৯৭ সালের ১৪ জুন দিবাগত রাতে মার্কিন তেল কোম্পানি অক্সিডেন্টাল এর ইজারাভুক্ত সিলেটের ১৪ নম্বর ব্লকের মাগুড়ছড়ায় ১নং অনুসন্ধান কূপে খনন চলাকালে ভয়ংকর বিস্ফোরণে পুড়ে যায় ভূগর্ভস্থ উত্তোলনযোগ্য ২৪৫.৮৬ বিসিএফ গ্যাস যার দাম ১৪ হাজার কোটি টাকার উপরে। মাগুরছড়া গ্যাসকূপ বিস্ফোরণের পরপরই দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানের জন্য বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটি তদন্ত রিপোর্টের ৮.৪.৬ ও ৮.৬ অনুচ্ছেদে ভূ-গর্ভস্থ পানি, সম্পদ ও পরিবেশের ক্ষয়-ক্ষতির বিবরণ উল্লেখ করলেও ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করতে সক্ষম হননি। প্রাণ-পরিবেশ-প্রতিবেশের ক্ষয়ক্ষতির হিসাব যোগ করলে সব মিলিয়ে মাগুরছড়ার মোট ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা। তদন্ত রিপোর্টে অক্সিডেন্টালের কাজে ১৫/১৬টি ত্রুটি ধরা পড়ে এবং সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে অক্সিডেন্টালের খনন কাজে আনাড়িপনা, দায়িত্বে অবহেলা এবং অযোগ্যতাই দুর্ঘটনার জন্য দায়ী।

দায়িত্ব পালনে অক্সিডেন্টালের অযোগ্যতা ও খনন কাজের নিম্নমানের প্রধান কারণ ছিল টাকা বাঁচানোর উদ্দেশ্যে সস্তায় লোকবল নিয়োগ করা। এছাড়াও অক্সিডেন্টাল কোম্পানীর বিরুদ্ধে ১৯৯৪ সালের পি এস সি চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে পেট্রোবাংলার কাছে তথ্য গোপন করার অভিযোগও রয়েছে। অনুসন্ধান কূপ খনন করার সময় বিস্ফোরণ ঘটানোর কাজে সাধারণত ডিনামাইট জাতীয় বিস্ফোরক ব্যবহার করা হলেও অক্সিডেন্টাল খরচ কমানোর জন্য চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে গ্যাস কূপ খনন কাজে বিস্ফোরক হিসেবে প্রাণঘাতী ও পরিবেশ বিনাশী তেজস্ক্রিয়যুক্ত ‘রেডিও একটিভ সোর্স’ ব্যবহার করে এবং এক্ষেত্রে পেট্রোবাংলাকে কিছুই জানানো হয়নি। পারমাণবিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে খনন কাজ স্বল্পতম সময়ে সম্পন্ন করার পেছনে বহুজাতিক কোম্পানির মাত্রাতিরিক্ত মুনাফা লাভের চেতনাই দায়ী। আর এ ধরনের দায়িত্বহীনতার কারণে গাস বিস্ফোরণ ভয়াবহ আকার ধারন করে।

অন্যদিকে কানাডিয়ান কোম্পানি নাইকোর ইজারাভুক্ত ছাতক-টেংরাটিলায় গ্যাস বিস্ফোরণ হয় ২০০৫ সালের ৭ জানুয়ারি এবং ২৪ জুন। গ্যাসের প্রচণ্ড চাপ সামলাতে ব্যর্থ হয় নাইকোর কর্মীরা। গ্যাসের চাপ কমাতে গ্যাসে আগুন ধরিয়ে দেয় তারা, ফলে পুড়ে যায় উপরের স্তরের ১১৫-৩১০ বিসিএফ গ্যাস। বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির হিসাব মতে টেংরাটিলা গ্যাসফিল্ড বিস্ফোরণে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ছিল ২০০৫ সালের দামস্তরে ৬,৩৫০ থেকে ১৫,২০০ কোটি টাকা। বিস্ফোরণের পর বিভিন্ন তদন্ত কমিটির রিপোর্টে ধরা পড়ে কানাডীয় কোম্পানি নাইকোর অদক্ষতা ও দায়িত্বহীনতার জন্যই এই ভয়ংকর ঘটনা ঘটেছে।

দুই গ্যাসক্ষেত্রের এই তিনটি বিস্ফোরণে বাংলাদেশের প্রায় ৫৫০ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস ধ্বংস হয়ে গেছে। এই পরিমাণ গ্যাস, এখন দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রতি বছর যে পরিমাণ গ্যাস ব্যবহার হয় তার প্রায় দ্বিগুণ। দীর্ঘদিন ধরে দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ সুরক্ষার জন্য আন্দোলনরত তেল গ্যাস বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা কমিটির হিসাব মতে মাগুরছড়া ও টেংরাটিলায় গ্যাস সম্পদের ক্ষতির হিসাবে, গ্যাসের আন্তর্জাতিক দামের গত ১০ বছরের গড় ধরে, মার্কিন ও কানাডার কোম্পানির কাছে আমাদের পাওনা দাঁড়ায় কমপক্ষে ৪৫ হাজার কোটি টাকা। বিভিন্ন তদন্ত রিপোর্টে এটা সুস্পষ্ট যে উভয় কোম্পানির চরম উদাসীনতা, অদক্ষতা ও দায়িত্বহীনতার জন্যই এই ভয়ংকর গ্যাস বিস্ফোরণজনিত ক্ষতির শিকার হতে হয়েছে বাংলাদেশকে। তাই অক্সিডেন্টাল (বর্তমানে শেভ্রন) এবং নাইকো বাংলাদেশকে এই ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য।

অথচ বাংলাদেশের এই হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট করার অভিযোগে শেভ্রন এবং নাইকোর কোন শাস্তি, জরিমানা কিংবা ক্ষতিপূরণ আদায়ের কোন ফলপ্রসূ পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি কোন সরকার। উল্টো তেল গ্যাস অনুসন্ধান এবং উত্তোলনে অধিক সাশ্রয়ী রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বাপেক্সকে বঞ্চিত করে এসব বহুজাতিক কোম্পানিকেই দেশের সব গ্যাস ক্ষেত্র ইজারা দেয়া হচ্ছে। নাইকোর কাছে বাংলাদেশ সরকার মাত্র ৭৬৪ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করে এবং দেশের সর্বোচ্চ আদালত সেই দাবির পক্ষে রায় দেন এবং নাইকোকে নির্দেশ দেন অনতিবিলম্বে ক্ষতিপূরণ দিতে। তবে আজ পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ দেয়নি নাইকো। অন্যদিকে ১৯৯৯ সালে মাগুড়ছড়ার ক্ষতিপূরণ না দিয়েই অক্সিডেন্টাল বাংলাদেশের তেল গ্যাসের বিনিয়োগ এবং উত্তোলনের দায়িত্ব ইউনোকল নামে আরেকটি মার্কিন কোম্পানির কাছে হস্তান্তর করে মধ্যপ্রাচ্যে চলে যায়।

রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলার কর্মকর্তারা অক্সিডেন্টালের প্রস্থানের সময়ে তখন ক্ষতিপূরণ বিষয়ে সম্পূর্ণ নীরবতা বজায় রাখেন এবং সংবাদ মাধ্যমে জানান যে, তাদের অজান্তেই এটি ঘটেছে! পরবর্তীতে ইউনোকলের কাছ থেকেও ক্ষতিপূরণ আদায়ের কোন ফলপ্রসূ উদ্যোগ নেয়া হয়নি। ২০০২ সালে পেট্রোবাংলা মাগুড়ছড়ার দুর্ঘটনায় গ্যাসের ক্ষয়ক্ষতি বাবদ ৬৮৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতিপূরণ চেয়ে ইউনোকলকে চিঠি দিলেও ইউনোকল প্রধান ১৯৯৮ সালে সম্পাদিত একটি সম্পূরক চুক্তির রেফারেন্স দিয়ে ক্ষতিপূরণ দিতে তারা বাধ্য নয় বলে জানিয়ে দেয়। এরপর ইউনোকল অন্য আরেকটি মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানি শেভ্রন এর কাছে এদেশের তেল গ্যাসের ব্যবসা কার্যক্রম হস্তান্তর করে। পূর্ববর্তী সরকারের মতই বর্তমান সরকারও শেভ্রন এর কাছে ক্ষতিপূরণ দাবী না করে উল্টো দেশের বিভিন্ন গ্যাসক্ষেত্রের ইজারা দিয়ে বহুজাতিক কোম্পানিকে পুরস্কৃত করেই যাচ্ছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ১৯৯৮ সালের ১০ জানুয়ারী অক্সিডেন্টালের সাথে সম্পাদিত সম্পূরক চুক্তি বাতিল করা ছাড়া মাগুরছড়ার ক্ষতিপূরণ আদায় করা যাবে না।

এ চুক্তির ৩.৩ অনুচ্ছেদ এ বলা হয়েছে,” বিরূপ প্রচার হতে পারে বিধায় অক্সিডেন্টাল ব্যতীত এ চুক্তির কোন কিছু কেউই কোনক্রমেই জনসমক্ষে প্রকাশ করতে পারবে না। যদি প্রকাশ পায়, তাহলে বিরূপ প্রচার মোকাবেলার জন্য সরকার অক্সিডেন্টালকে সমর্থন ও সহযোগিতা দেবে। “ একটা গণতান্ত্রিক দেশের সরকার বিদেশি সংস্থা ও কোম্পানির সাথে সম্পাদিত সকল চুক্তির বিষয়াদি জনগণকে জানাতে বাধ্য। এই একটি চুক্তির উক্ত অনুচ্ছেদই তুলে ধরে আসলে বাহ্যিকভাবে দেশে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্হা কায়েম থাকলেও বর্তমানে শাসকগোষ্ঠী জনগনের কল্যাণকে উপেক্ষা করে মূলত সাম্রাজ্যবাদীদের এবং তাদের মালিকানাধীন বহুজাতিক কোম্পানির স্বার্থরক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত। শুধু এই সম্পূরক চুক্তিই নয়, প্রতিটি বহুজাতিক কোম্পানির সাথে বাংলাদেশ সরকারের তেল গ্যাস উত্তোলন এবং ইজারা দান বিষয়ে পি,এস,সি চুক্তিসহ যেসব চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে তার প্রতিটি চুক্তির বিষয়বস্তু এবং শর্ত গোপন রাখা হয়েছে।

কোন চুক্তি নিয়েই জাতীয় সংসদে আলোচনা হয়নি। দেশপ্রেমিক বিশেষজ্ঞদের মতামত উপেক্ষা করে সংসদ, মিডিয়া এবং জনগণকে সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখে স্বাক্ষরিত এসব অসম চুক্তিতে দেশের স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে বহুজাতিক কোম্পানির স্বার্থ সুরক্ষার নিশ্চয়তা বিধান করা হয়েছে। অক্সিডেন্টাল এবং নাইকোর সাথে সম্পাদিত চুক্তিতে গ্যাস দুর্ঘটনায় গ্যাস, প্রাণ–পরিবেশ-প্রতিবেশ ধ্বংসের জন্য ক্ষতিপূরণ দিতে হবে এই মর্মে সুস্পষ্ট প্রস্তাবনা রাখা হয়নি বলেই বহুজাতিক কোম্পানি ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য নয় বলে অত্যন্ত দম্ভভরে ঘোষণা দিতে পারছে। অক্সিডেন্টালের সাথে সম্পাদিত পি এস সি’৯৪-এর আর্টিক্যাল ১০-এ বলা হয়েছে, “খনিজের সম্পদ দক্ষ ও নিরাপদে উত্তোলন ও আহরণে খনি খনন পরিচালিত হতে হবে প্রযোজ্য আইন, সম্পাদিত চুক্তি এবং আন্তর্জাতিক মানের পরিকল্পনা, বিবেক-বুদ্ধি প্রসূত এবং সুদক্ষ কারিগরী কায়দায়। সেক্ষেত্রে-যেকোন খনিজের সম্পদ, জলাধার এবং আর সব প্রাকৃতিক সম্পদের ক্ষতি প্রতিরোধে সকলপ্রকার যুক্তিযুক্ত সর্তকতা অবলম্বন করতে হয়।

“ এই চুক্তিতে ক্ষতিপূরণের বিষয়ে সুস্পষ্ট প্রস্তাবনা থাকলে বাংলাদেশ সহজেই ক্ষতিপূরণ আদায়ে আইনি লড়াই চালিয়ে যেতে পারত। ইকুয়েডরের সাথে শেভ্রনের স্বাক্ষরিত চুক্তিতে কোম্পানির অদক্ষতা এবং অবহেলার কারনে গ্যাস বিস্ফোরণজনিত পরিবেশগত ক্ষতিপূরণের বিধান রাখা ছিল বলেই ইকুয়েডর আইনি লড়াইয়ে জয়ী হয়েছে এবং শেভ্রন ১৮ বিলিয়ন ডলার জরিমানা গুনতে বাধ্য হচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশের সাথে সম্পাদিত চুক্তিতে ক্ষতিপূরণের বিষয়ে সুস্পষ্ট কোন প্রস্তাবনা রাখা হচ্ছে না। এদেশের শাসকশ্রেণী উন্নয়নের নিওলিবারেল পলিসি অনুযায়ী বিনিয়োগ এবং ব্যবসা ক্ষেত্রে বিদেশি বহুজাতিক কোম্পানিকে ঢালাওভাবে সুযোগ সুবিধা দেয়ার অজুহাতে দেশের তেল গ্যাসক্ষেত্র তাদের জন্য উন্মুক্ত করে দিচ্ছেন এবং সে কারনেই চুক্তিগুলোতে দেশীয় সম্পদে জনমালিকানা প্রতিষ্ঠার প্রশ্নে ব্যাপক ছাড় দিয়ে বিদেশি কোম্পানিকে গ্যাস সম্পদ লুণ্ঠনের পথ প্রশস্ত করে দিচ্ছেন। এসব চুক্তি যদি সত্যিকার অর্থে দেশের গণমানুষের জন্য মঙ্গলজনক হতো তাহলে চুক্তির বিষয়াদি জনসমক্ষে প্রকাশ করতে সরকার এবং বহুজাতিক কোম্পানির এতো ভয় কিসের? স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহীতার সবক আর উপদেশ আমরা হরহামেশাই পাই উন্নত দেশগুলোর কাছ থেকে।

কিন্তু তাদেরই মালিকানাধীন বহুজাতিক কর্পোরেশনগুলো আমাদের মত অনুন্নত দেশগুলোর সরকারের সাথে সম্পাদিত চুক্তির ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহীতার বরখেলাপ করে গোপনীয়তার আশ্রয় নেন। বাংলাদেশ সরকারের উচিত নাইকো এবং শেভ্রনের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ বাবদ আমাদের পাওনা ৪৫ হাজার কোটি টাকা আদায়ের জন্য ইকুয়েডরকে অনুসরণ করে আইনি লড়াইয়ে অবতীর্ণ হওয়া। পি এস সি’৯৪ চুক্তিতে বলা আছে যে গ্যাস উত্তোলনের ক্ষেত্রে যে কোন খনিজের সম্পদ, জলাধার এবং আর সব প্রাকৃতিক সম্পদের ক্ষতি প্রতিরোধে সকলপ্রকার যুক্তিযুক্ত সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে। বিভিন্ন তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী যেহেতু নাইকো এবং অক্সিডেন্টালের অবহেলা ও অদক্ষতার কারণেই গ্যাস বিস্ফোরণ ঘটেছে তাই কারিগরী ও আইনগত দিক দিয়ে অক্সিডেন্টাল এবং নাইকোকে অভিযুক্ত করা যায়। শেভ্রনের সাথে আইনি লড়াইয়ে ইকুয়েডরের ন্যায্য বিজয় লাভ আমাদের সরকার এবং কর্মকর্তাদের জন্য প্রেরণাদায়ক হলেই আমাদের জন্য তা হবে মঙ্গলজনক।

এখন শাসকশ্রেণিকেই ঠিক করতে হবে তাঁরা দেশের পাওনা টাকা আদায়ে উদ্যোগী হবেন নাকি রাষ্ট্রীয় স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে জনগনের দুর্ভোগকে আরও তরান্বিত করবেন। অক্সিডেন্টালের সাথে সম্পাদিত সম্পূরক চুক্তি বাতিল করে শেভ্রন এবং নাইকোর বিপক্ষে আইনি লড়াইয়ে অবতীর্ণ হওয়া ছাড়া ক্ষতিপূরণ আদায়ের আর কোন উপায় নেই। ইকুয়েডর মার্কিন জায়ান্ট কোম্পানি শেভ্রনের বিপক্ষে জয়ী হলে আমরা পারব না কেন? ইকুয়েডরকে অনুসরণ করে শেভ্রন ও নাইকোর কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়ের জন্য আমরা সরকারের জোরালো উদ্যোগ প্রত্যাশা করছি। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।