আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নারায়ণগঞ্জে ওসিকে প্রকাশ্যে ঘুষ

নারায়ণগঞ্জে একাধিক থানার ওসি ও অসাধু পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বেপরোয়া ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। তবে অনেকটা আড়ালে-আবডালে ঘুষ গ্রহণ করেন পুলিশ কর্মকর্তারা। কিন্তু আজ-কাল থানা কার্যালয়ের ভেতর ঢুকে প্রকাশ্যে ওসিকে ঘুষ দেয়ার ঘটনাও ঘটছে। তেমনি একটি ঘটনা ঘটেছে শুক্রবার ফতুল্লা মডেল থানায়। ওই ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যে তোলপাড় শুরু হয়েছে প্রশাসনে।

ঘুষের ঘটনাটি যাতে প্রকাশ না পায় সে জন্য অভিযুক্ত ওসি নানা দেনদরবারও চালিয়েছেন। শুক্রবার সকাল ১১টা। ফতুল্লা মডেল থানায় তখন লোকজনের উপস্থিতি অনেক কম। এ সময় দুই ব্যক্তি ওসি আবদুল মতিনের কক্ষে প্রবেশ করেন। ওই দুই ব্যক্তিকে দেখে আগে থেকে ওসির কক্ষে বসে থাকা লোকজন দ্রুত বেরিয়ে যান।

কিন্তু বিষয়টি আঁচ করতে পেরে থানায় জিডি করতে আসা এক ব্যক্তি কৌতূহলী হয়ে ওঠেন। একটু সাহস নিয়েই তিনি ওসির কক্ষের সামনে গিয়ে আড়াল থেকে ভেতরের দৃশ্য প্রত্যক্ষ করতে থাকেন। তিনি ওসির কক্ষে প্রবেশ করা দুই ব্যক্তির হাতে টাকার বান্ডিল দেখতে পান। ওই সময় ওসি মোবাইল ফোনে ব্যস্ত থাকায় টাকা বহনকারী দুই ব্যক্তিকে ৫ মিনিটেরও বেশি সময় ওসির টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। মোবাইল ফোনে ওসির কথা বলা শেষ হলে দুই ব্যক্তি ওসিকে টাকা দিয়ে হাস্যোজ্জ্বল ভাবে বেরিয়ে যায়।

উৎসুক ওই ব্যক্তি আড়াল থেকে তার মোবাইল ফোন দিয়ে কয়েকটি ছবি তুলে নেয়। এর একটি ছবি মানবজমিনের হাতে পৌঁছায়। পরে খবর নিয়ে জানা যায়, ওসির রুমে টাকা দিতে যাওয়া দুই ব্যক্তির একজন রফিক ও অপরজন জাফর। তারা দু’জনই ফতুল্লার পাগলার চিতাশাল এলাকায় ষড়জ মেলার নামে একটি মেলার আয়োজন করেছে। সরকারদলীয় লোকজন ও প্রশাসনের নাম ভাঙিয়ে তারা গত ৭ দিন ধরে চালাচ্ছে এ মেলা।

মেলার কয়েকটি স্টল থাকলেও সন্ধ্যার পর বসে রমরমা জুয়ার আসর। ৫টি ঘরে বোর্ড বসিয়ে সন্ধ্যার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে জুয়া। মেলার কয়েকটি স্টল মালিক জানান, তাদের বিক্রি সন্ধ্যার পর কিছুটা বাড়ে। তখন সেখানে জুয়ার আসর বসার কারণে লোকজনের কিছুটা উপস্থিতি বেড়ে যায়। তারা আরও জানান, মেলায় পুলিশের সদস্যরা প্রায়ই আসে।

তাদের উপস্থিতিতেই জুয়ার আসর বসছে। ঘটনার সত্যতা জানতে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে শুক্রবার রাত সোয়া ৯টায় ফোন করা হয় ফতুল্লা মডেল থানার ওসি আবদুল মতিনের মোবাইলে। ওসিকে প্রথমে প্রশ্ন করা হয়, সকাল ১১টায় তিনি কোথায় ছিলেন? তিনি জানান, থানায় নিজের কক্ষে। ওই সময় রফিক ও জাফর নামের দুই ব্যক্তি আপনার কক্ষে প্রবেশ করেছিল কিনা? উত্তরে ওসি জানান, হ্যাঁ তারা হয়তো এসেছিল। কেন এসেছিল? প্রশ্নের উত্তরে ওসি বলেন, কোন কাজে হয়তো।

এক পর্যায়ে ওসিকে জানানো হয়, যে দু’জন তার রুমে গিয়েছিল তাদের হাতে টাকা ছিল। এ কথা শুনেই ওসি কিছুটা বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে যান। বলেন, ভাই অনেকেই তো আমার রুমে আসে। সকালে কারা এসেছিল আমার জানা নেই। কোনটা রফিক আর কোনটা জাফর সেটার জন্য আমার মেমোরিটা একটু ঘেঁটে দেখতে হবে।

‘দুই ব্যক্তি হাতে টাকা নিয়ে কেন প্রবেশ করেছিল’ প্রশ্নের উত্তরে ওসি বলেন, ‘এটা সত্য নয়। একজন ওসি কি তার চেয়ারে বসে টাকা নিতে পারে, এটা কি সম্ভব?’ বলে পাল্টা প্রশ্ন ছোড়েন তিনি। ওসিকে জানানো হয়, দুই ব্যক্তির হাত থেকে টাকা নেয়ার দৃশ্য আমাদের কাছে ধারণ করা আছে এবং প্রমাণের ছবি আছে। এ কথা শুনে ওসি বলেন, ভাই টাকা নেয়ার অভিযোগ সত্য নয়। কত লোকই তো আমার রুমে এসেছে।

কার হাতে কি ছিল আমি কিভাবে বলবো? ৩ মিনিট ২৪ সেকেন্ডের কথোপকথনে ওসি ছবির বিষয়টি একেবারেই অস্বীকার করেননি। তবে বলেন, টাকা নেয়ার কথা যা শুনেছেন তা আপনি ভুল শুনেছেন। Click This Link ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৪ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.