আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অ্যামেচার ক্যামেরায় নয়নাভিরাম রাতারগুল জলবন (ছবি ব্লগ)।

জীবন আসলে চিল্লাপাল্লা ছাড়া কিছুই না। সেটাই করতে চাই, মনের সুখে, ইচ্ছা মতন। রাতারগুল জলাবন বাংলাদেশের একমাত্র জলাবন বা সোয়াম্প ফরেস্ট এবং পৃথিবীর অল্প কয়েকটা মিষ্টি জলবনের মধ্যে একটি। তথ্য মতে এ বনের আয়তন ৩,৩২৫.৬১ একর, আর এর মধ্যে ৫০৪ একর বনকে ১৯৭৩ সালে বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়। কিন্তু তাঁর পরও এতদিন এই সৌন্দর্য আমাদের সবার জানার বাইরেই থেকে গিয়েছিল।

মাত্র কয়েক মাস হয় এর সৌন্দর্য বিশ্ববাসীর কাছে উন্মুক্ত হতে শুরু করেছে মিডিয়ার কল্যাণে। কি আছে সেখানে? উত্তর এক কথায়ঃ মুখে বলে বুঝানো সম্বভ না। ঠিক এই কারণেই কয়েকটি এমেচার ছবি দিয়ে কিছুটা বুঝানোর চেষ্টা চালালাম। ১. বনে যাওয়ার পূর্বে- পায়ে হাটার রাস্তা। ২. চেঙ্গের খাল চ্যানেল থেকে বন দেখা যায়।

৩. বনে ঢুকার রাস্তা। ৪. সাইড ভিউ। ৫. দেখে যান, শুধু দেখে যান। ৬. স্ক্রল ঘুরান। ৭. বনের গভীর থেকে আকাশ দেখা কষ্ট।

৮. কয়েকটি মামার দেখা পেয়েছিলাম, মাত্র একটাকে ক্যামেরায় ধরতে পেরেছি। ৯. মাঝি মামার অনুপ্রেরণায় মাঝ বনে বান্দর মামাকে অনুকরণের চেষ্টা। ১০. বনের মৌচাক, জীব বৈচিত্রের প্রমাণ বাহক। ১১. শাপলা বন মিস করলে আপনার এতো কষ্টের ভ্রমণের অনেকটা অংশই অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। ১২. আমাদের নৌকা মামা (উনাকে সমস্ত ভ্রমণের দিক নির্দেশক বললে বেশি বলা হবে না)।

১৩. পাহাড়ি বরফ শীতল পানিতে গোসল ভ্রমণের সকল ক্লান্তি যথেষ্ট। বনের উদ্ভিদবৈচিত্র্যঃ এই বন মূলত প্রাকৃতিক বন হলেও পরবর্তিতে বাংলাদেশ বন বিভাগ, বেত, কদম, হিজল, মুর্তাসহ নানা জাতের জলসহিষ্ণু গাছ লাগিয়েছে। এছাড়া জলমগ্ন এই বনে রয়েছে হিজল, করচ আর বরুন গাছ; আছে পিঠালি, অর্জুন, ছাতিয়ান, গুটিজাম, বটগাছও। তবে সব গুলোর মধ্যে করচ গাছই সবচেয়ে বেশি চোখে পরে। জীববৈচিত্র্যঃ জলমগ্ন বলে এই বনে সাঁপের আবাস বেশি, আছে জোঁকও; শুকনো মৌসুমে বেজিও দেখা যায়।

এছাড়া রয়েছে বানর, গুইসাপ; পাখির মধ্যে আছে সাদা বক, কানা বক, মাছরাঙ্গা, টিয়া, বুলবুলি, পানকৌড়ি, ঢুপি, ঘুঘু, চিল এবং বাজপাখি। শীতকালে রাতারগুলে আসে বালিহাঁসসহ প্রচুর পরিযায়ী পাখি, আসে বিশালাকায় শকুনও। মাছের মধ্যে আছে টেংরা, খলিশা, রিঠা, পাবদা, মায়া, আইড়, কালবাউশ, রুইসহ বিভিন্ন জাত। তবে সবচেয়ে বৈচিত্র্যময় যে জিনিসটা আমার চোখে পরেছে, সেটা হচ্ছে করচ গাছের পাতার নাড়াচাড়া। এই বিষয়টা কিছুটা ভৌতিক ঠেকেছে আমার কাছে, অন্য গাছের পাতার মত এরা ডাল সহ নরে না।

শুধু পাতা গুলো স্বতন্ত্র ভাবে বাতাসে দুলে, প্রথম দেখায় ভৌতিক আবহ তৈরির জন্য যা যথেষ্ট। কিভাবে যাবেন? সিলেট শহর থেকে গোয়াইনঘাটের ফতেহপুর ইউনিয়নের দূরত্ব ২৬ কিলো। আম্বরখানা থেকে CNG করে যেতে সময় লাগে ৫০ মিনিটের মত। প্রতি CNG তে ৫ জন করে যাওয়া যায়; ভাড়া ২০০ টাকা। CNG থেকে নেমে ২০০ মিটারের মত হেটে স্থানীয় বাজারে গিয়ে নৌকা ভাড়া করতে হয়।

নৌকার ধারণ ক্ষমতা বেঁধে একবার বনে ঘুরে আসতে ৩০০-৮০০ টাকা ভাড়া গুনতে হবে আপনাকে। প্রস্তুতিঃ • প্রথমেই বলতে হয়, সাথে লবণ অবশ্যই থাকা চাই; কেননা জোঁক ছাড়াতে লবণের কার্যকারিতা পরীক্ষিত। • যেহেতু নৌকায় করে ৪-৫ ঘণ্টা ঘুরতে হয় তাই সাঁতার না জানাদের জন্য লাইফ জ্যাকেট একটু বেশি ভরসা দিতে পারে। • খাবার পানি (অবশ্য এটি খুব বেশি জরুরী না, পথে প্রচুর শাপলা পাওয়া যায়। শাপলার ডগা আপনার খাবার ও বিশুদ্ধ পানির চাহিদা খুব সহজেই মিটাতে পারে।

) • আপনার মোবাইল, মানিব্যাগ, ক্যামেরা নিরাপদের রাখার জন্য পলিথিন সাথে রাখবেন। • যেহেতু সিলেট শহর থেকে দূরত্ব খুব বেশি না তাই রাস্তায় খাওয়ার জন্য অতিরিক্ত খাবার নেয়ার প্রয়োজন নেই। • সাথে অবশ্যই অতিরিক্ত একসেট কাপড় রাখবেন। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।