আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিশিষ্ট ভারতীয় গজল গায়ক, সুরস্রষ্টা, সংগীত পরিচালক, সমাজকর্মী ও শিল্পোদ্যোগী জগজিৎ সিং এর মুত্যুবার্ষিকী আজঃ গজল সম্রাটের মৃত্যুদিনে শ্রদ্ধাঞ্জলি

আমি সত্য জানতে চাই বিশিষ্ট ভারতীয় গজল গায়ক, সুরস্রষ্টা, সংগীত পরিচালক, সমাজকর্মী ও শিল্পোদ্যোগী জগজিৎ সিং এর আজ মৃত্যু দিবস। ৭০ বছর বয়সে ২০১১ সালের আজকের দিনে মুম্বাইয়ের লীলাবতী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান এই গজল সম্রাট। গজল সম্রাটের মৃত্যুদিনে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি। জগমোহন সিং যিনি জগজিৎ সিং নামে সমাধিক পরিচিত। ১৯৪১ সালের ৮ ফেব্রুয়ারী শ্রীগঙ্গানগর, ব্রিটিশ ভারতের বিকানের রাজ্যের শ্রীগঙ্গানগরে জন্মগ্রহণ করেন গজল সম্রাট জগমোহন সিং।

তাঁর বাবা সর্দার অমর সিং ধিমান ও মাতা সর্দারনী বচ্চন খোর। গজল ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীতের একটি জটিল ধারা। সিং গজলের সঙ্গে "গীত" ধারার মিশ্রণ ঘটিয়ে এই ধারাটিকে সরল করে তোলেন। এরই ফলে গজল পুনরায় জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। প্রেম গীত (১৯৮১), অর্থ ও সাথ সাথ (১৯৮২) চলচ্চিত্রে এবং টিভিসিরিয়াল মির্জা গালিব (১৯৮৮) ও কহকশান (১৯৯১)-এ গজল গেয়ে তিনি জনপ্রিয়তা পান।

বাণিজ্যিক দিক থেকেও তিনি ছিলেন একজন সফল গজল শিল্পী। প্রায় পাঁচ-দশকব্যাপী সংগীতজীবনে তিনি ৮০টি অ্যালবাম প্রকাশ করেন। তাঁর নয়ি দিশা (১৯৯৯) ও সমবেদনা (২০০২) ছিল ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা বিশিষ্ট হিন্দি কবি অটলবিহারী বাজপেয়ীর লেখা গানের সংকলন। তার তাঁর স্ত্রী চিত্রা সিংও একজন বিশিষ্ট ভারতীয় গজল গায়িকা। ১৯৭০ ও ১৯৮০-এর দশকে জগজিৎ এবং চিত্রা সিং ভারতীয় সংগীত জগতে প্রায় একই সঙ্গে খ্যাতনামা হয়ে ওঠেন।

তাঁদের দুজনকে আধুনিক গজল সংগীতের পথপ্রদর্শক মনে করা হয়। ভারতের ফিল্মি গানের ধারার বাইরে থেকেও তাঁরা ছিলেন অত্যন্ত জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী। অর্থ (১৯৮২) ও সাথ সাথ ছবিতে ব্যবহৃত তাঁদের গাওয়া গজলের সংকলন এইচএমভি থেকে প্রকাশিত হয়; এটি ছিল তাঁদের সর্বাধিক বিক্রীত অ্যালবাম। গজল সম্রাট জগজিৎ সিং এর কিছু জনপ্রিয় হিন্দি গজলের তালিকাঃ ১। ইয়ে দৌলত ভি লে লো, ২।

চিটটি না কই সান্দেস, ৩। এক পিয়ার কা নাগমা হ্যাঁয়, ৪। কিসকা চেহরা, ৫। কাহি দূর যাব দিন ঢাল যায়ে, ৬। মুঝে বিছাড়কে ইত্যাদি জগজিৎ সিং এর বাংলা গান খুব বেশি না থাকলেও নিচের গানগুলি এখন জনপ্রিয়।

যেমনঃ ১। বেদনা মধুর হয়ে যায়, ২। বেশি কিছু আশা করা ভুল, ৩। নদীতে তুফান এলে, ইত্যাদি লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গে তিনি প্রকাশ করেন সাজদা (১৯৯১) অ্যালবামটি। তিনি পাঞ্জাবি, হিন্দি, উর্দু, বাংলা, গুজরাটি, সিন্ধি ও নেপালি ভাষাতেও গান গেয়েছিলেন।

২০০৩ সালে সংগীত ও সংস্কৃতি জগতে অবদানের জন্য তাঁকে ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান পদ্মভূষণ দিয়ে সম্মানিত করা হয়। জগজিৎ ও চিত্রা সিং প্রথম ভারতীয় সুরস্রষ্টা যিনি ডিজিটাল মাল্টি-ট্র্যাক রেকর্ডিং পদ্ধতিতে গান রেকর্ড করেন। এই পদ্ধতিতে রেকর্ড করা তাঁদের প্রথম অ্যালবামটি ছিল বিয়ন্ড টাইম (১৯৮৭)। রবিশঙ্কর ও অন্যান্য সংগীতশিল্পী ও সাহিত্যিকদের সঙ্গে তিনি ভারতীয় শিল্প ও সংস্কৃতির রাজনীতিকরণের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সামিল হয়েছিলেন। শাস্ত্রীয় ও লোকশিল্পীদের তিনি নানাভাবে সাহায্য করতেন।

মুম্বইয়ের সেন্ট মেরি স্কুলের লাইব্রেরি নির্মাণ, বম্বে হসপিটাল গঠন এবং ক্রাই, সেভ দ্য চিলড্রেন ও আলমা প্রভৃতি সংগঠনের কাজকর্মেও তিনি প্রত্যক্ষভাবে সাহায্য করেন। বয়সজনিত কারণে জগজিৎ সিং প্রায়ই হৃদরোগের চিকিৎসা নিতেন। এছাড়াও উচ্চ রক্তচাপেরও সমস্যা ছিল তাঁর। মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণজনিত গুরুতর সমস্যায় তাঁকে ভারতের মুম্বাইয়ের লীলাবতী হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র বা আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছিল। ১০ অক্টোবর, ২০১১ইং, সোমবার, সকাল ৮ টা ১০ মিনিটে ঐ হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭০ বছর বয়সে মারা যান এই গজল শিল্পী।

গজল সম্রাটের মৃত্যুদিনে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি। তথ্যসূত্রঃ ১। News Pakistan ২। লিংকঃ Indian Ghazal Singing maestro Jagjit Singh dies at 70 ৩। দৈনিক সমকাল "চলে গেলেন বিখ্যাত গজল শিল্পী জগজিৎ সিং,"২০ অক্টোবর ২০১১ ৪।

ছবিঃ ইণ্টারনেট থেকে সংগৃহীত  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১০ বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.