আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নির্বাচন! প্রস্তুত আওয়ামীলীগ, বিএনপি কি প্রস্তুত?

নির্বাচনের দিনক্ষণ এগিয়ে নিয়ে আসার কোনো পরিকল্পনা কারোরই আছে বলে মনে হয় না। বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক ‘বার্তা’ পাওয়া গেছে বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক ব্যক্তিদের মাধ্যমে। তারা বারংবার এ কথাই বলার চেষ্টাচরিত্র করেছেন যে, মেয়াদ পূর্তির আগেভাগে কোনো নির্বাচনেই তারা অংশগ্রহণ করবেন না। হয়তো তাদের মনে এমনতর আশঙ্কা দেখা দিয়েছে যে, আওয়ামী লীগ আত্মরক্ষার তাগিদে আগাম নির্বাচন দেবে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কিন্তু একবারও আগাম নির্বাচন দেয়ার কথা ভদ্রভাবে বলা হয়নি।

কোনোরূপ ইশারা কি তারা দিয়েছে? হয়তো কেউ কেউ উচ্চবাচ্য করেছে। নইলে বিরোধী দলের কোনো কোনো ‘বাজেবক্তাখান’ এমন কথা বলবে কেন? শোনা যাচ্ছে, গুজবই হবে, আওয়ামী লীগের ভেতরেই অন্তর্দ্বন্দ্ব আছে। কেউ কেউ নাকি আগাম নির্বাচনের পক্ষে। কেউ কেউ আবার মেয়াদ পূর্তির পর নির্বাচনের পক্ষে। মেয়াদ পূর্তির আর বাকি কদিন? মেয়াদ পূর্তির একটা হিসাব সব সময়ই থাকে।

এর আগেকার সব সরকারই সদম্ভে এমনতর কথাই বলেছে। মেয়াদ পূর্তির একদিন আগেও নির্বাচন নয়। ঘটনা তাই ঘটেছে। এরশাদ স্বৈরাচারের পতনের সময় এবং খালেদা জিয়ার একদলীয় নির্বাচনের ঘটনা বাদ দিলে সব সরকারই মেয়াদ পূর্তির ঘণ্টা বাজিয়েছে এবং নিজেদের পতন ঘণ্টাও বাজিয়েছে। গেলোবারে শেখ হাসিনার সরকার মেয়াদ পূর্তির উৎসব করেছিলেন এবং পতন ঘণ্টা বাজিয়ে উৎসবে ইতি টেনেছিলেন।

এবারকার চারদলীয় খালেদা জিয়ার সরকারও মেয়াদ পূর্তির উৎসব করেছিলেন জন্মদিনের উৎসব সহযোগে। তার উৎসব তিক্ততায় পর্যবশিত হয়েছিল। তিনি গণতান্ত্রিক অনাচারের শিকার হয়ে জেল-জুলুম সহ্য করলেন এবং পতন ঘণ্টা বাজালেন। এবারকার শেখ হাসিনার মহাজোট সরকার যথেষ্ট ব্যতিক্রমী। এরা অনেক পরমতসহিষ্ণু এবং বাক স্বাধীনতাও দিচ্ছে।

জেল-জুলুম অনেক কম এবং তরুণ প্রজন্মের মানস চাহিদা মেটাচ্ছে। এরা দুটি বড় কাজ করে ধন্য ধন্য হয়েছে। জাতির পিতার হত্যাকারীদের ফাঁসি দিয়েছে এবং যুদ্ধাপরাধীর বিচারকাজও চালাচ্ছে মহাসমারোহে। শহরগুলো অসন্তোষের আখড়া হচ্ছে দিনকে দিন। কিন্তু গ্রামেগঞ্জে শহরের অসন্তোষ কোনো প্রভাব ফেলছে না।

কেবলমাত্র বিদ্যুতের মূল্য ছাড়া গ্রাম এখনো সুস্থির। কিন্তু তারপরও কথা উঠেছে, হাসিনা সরকার পালাবার পথ পাবে না। কেন? জনমত জরিপে দেখা গেছে যে, শেখ হাসিনার পক্ষে যে জনমত আছে তাতে নির্বাচনে উতরে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। জনমত জরিপের পরে অনেক ঘটনা ঘটেছে। মন্ত্রীদের কালো বেড়াল প্রকাশ্য দিবালোকে বেরিয়ে এসেছে।

হলমার্ক কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটেছে। তারও বহু আগে থেকেই শেয়ারবাজার ভূমিস্মাৎ হয়ে গেছে। এহেন পরিস্থিতিতে কি সরকারের গ্রহণযোগ্যতা বেড়েছে? নতুন মুখ বেশ কয়েকজন এসেছে মন্ত্রিসভায়। তাতে কি সরকারের ভাবমূর্তি অধিকতর উজ্জ্বল হয়েছে? হয়তো খানিকটা সামাল দেয়া যাবে। মিডিয়াকে প্রতিপক্ষ হওয়া থেকে বিরত করাও যাবে হয়তো।

কিন্তু সামনে যে দুর্দিন ধেয়ে আসছে, তাকে সামাল দেয়ার মতো শক্তি কি সরকারের আছে? সরকারকে বেশ কয়েকটি ‘দ্বন্দ্ব’ মোকাবেলা করতে হবে। মৌলবাদীদের ছত্রছায়ায় ধর্মান্ধতা, সাম্রাজ্যবাদের ছত্রছায়ায় পাকিস্তানি অপতৎপরতা, জামাত-বিএনপির ঘনিষ্ঠতায় রাজনৈতিক আন্দোলন এবং বিশ্বব্যাপী খাদ্যাভাবের অশনি। বাইরের উৎস থেকে উন্নয়ন সাহায্য হয়তো একেবারেই কথার কথায় পরিণত হবে। প্রতিটি পক্ষই আওয়ামী লীগের জন্য প্রবল প্রতিপক্ষ। ভারত উন্মাদ হয়ে আওয়ামী লীগকে সহযোগিতা করবে এমন আশা না করলেই ভালো হবে।

এগুলোর সবটাই আসবে আসবে করছে। এক্ষুণি হয়তো আসবে না। তবে আসবেই। যখন ‘দুর্ভাগ্য সঙ্গে মড়ক’ নিয়ে আসবে, ঠিক তখনই নির্বাচনের চাপ কি আওয়ামী লীগ সহ্য করতে পারবে? মেয়াদ পূর্তি একটি বিশেষ ক্ষণ। এই ক্ষণের দিকে সবাই তাকিয়ে থাকে।

‘সরকার’ প্রস্তুতি নেয় ঐ ক্ষণের দিকে তাকিয়ে। বিরোধী দলও প্রস্তুতি নেয় ঐ ক্ষণমুহূর্ত গণনা করে। তারা অস্ত্র শানাতে থাকে ঐ দিনে ব্যবহার করবে বলে। ঐ দিনকেই লক্ষ্য করে জনশক্তি ও সম্পদকে সমন্বিত করা হয়। যতোদূর জানা যায়, বিরোধী দল ধরেই নিয়েছে, মেয়াদ পূর্তি করেই আওয়ামী লীগ নির্বাচন দেবে।

তাই তাদের প্রস্তুতি সেরকম। পরীক্ষার প্রস্তুতির মতো। কবে কোন প্রশ্নটি মুখস্ত করতে হবে সব আগে থেকেই ঠিক করে রাখা হয়। যদি পরীক্ষা এগিয়ে আসে তবে পরীক্ষার্থীরা চোখে অন্ধকার দেখে। নির্বাচনের দিনেও পরীক্ষা হয় দুপক্ষেরই।

নির্বাচনী পরীক্ষায় পাস-ফেলও আছে। নির্বাচনী পরীক্ষার প্রস্তুতিও আছে। সিলেবাস আছে কি? এবারের পরীক্ষা হবে খুব ভালোমতো। দুপক্ষই আশাবাদী। সরকার বিজয়ের আনন্দে এখনই ঘুমাতে যাচ্ছে।

আর বিরোধীরা মনের আনন্দে সরকারের পালিয়ে যাওয়ার খবর রটাচ্ছে। দুপক্ষে দাপাদাপি লাফালাফি দেখে মনে হয়, নির্বাচনে জয়লাভের ব্যাপারটা তাদের নিজেদের ব্যাপার। তাদের হিসেবে জনগণ বলে যেন কেউ নেই। জনগণ ভোটের দিন কাকে কতো নম্বর দেবে সে বিষয়টি তাদের হিসেবেই নেই। জনগণের সম্পৃক্ততাকে হিসেবে নিলে হয়তো তাদের সব সমীকরণই পাল্টে যাবে।

আগাম নির্বাচন কখনই আহ্লাদ নয় প্রয়োজন। রাজনীতি যদি যুদ্ধ হয় তবে আগাম নির্বাচন একটি বিশেষ ‘রণকৌশল’। শেখ হাসিনার সরকারকে পর্যুদস্ত করার জন্য বেশ কয়েকটি সামাজিক শক্তি অপতৎপরতায় লিপ্ত। এদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে সাম্রাজ্যবাদ। ড. ইউনূসসহ বেশ কয়েকজন এনজিওওয়ালা শেখ হাসিনা সরকারের পতনের জন্য অপতৎপরতা চালাচ্ছেন।

এরাও অপেক্ষা করবে মেয়াদ পূর্তির শেষ দিনটি পর্যন্ত। জামাত তার ‘থলিবুগলি’ বিন্যস্ত করেছে। সেই অপেক্ষায় আছে শেষ ক্ষণটির জন্য। বিএনপি এখনো স্বপ্নের ঘোরে আছে। তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অপেক্ষায় আছে।

কেউ কি তাদের আশা-ভরসা দিয়েছে? তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসার পরপরই তাদেরকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে সরকারে বসাবে? জনমত কি তাদের পক্ষে যে, তারাই সরকার গঠন করবে নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে? জনমত জরিপ তারাইবা নিজ দায়িত্বে করে না কেন? তাদের ধারণা হয়েছে শেখ হাসিনার ভাবমূর্তি যতোটুকু অবশিষ্ট আছে, তা পুরোটাই নিঃশেষ হয়ে যাবে মেয়াদ পূর্তির সময়ে। এবং তারা এও বিশ্বাস করে যে, তাদের নির্বাচনী প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে ঐ সময়েই। আগামী নির্বাচনের জন্য বিরোধী দল প্রস্তুত নয়। জামাত এখনো দিশেহারা। তাদের ‘বড় নেতারা’ ঝুলে যাবে নাকি মুক্তি পাবে সে বিষয়ে তারা একেবারেই নিশ্চিত নয়।

ঝুলে গেলে জামাতের মধ্যম সারির নেতারা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাবে। তখন বিএনপিকে একা একা বিরোধী দল করতে হবে। আর যদি বর্তমান সরকারের আওতায় নির্বাচন হয় তবে খালেদা জিয়া নির্বাচন করবেন না হয়তো। কিন্তু বিএনপির প্রবীণ ও প্রাজ্ঞ নেতারা ঠিকই নির্বাচন করবেন। তারা পাল্টা বিএনপি দাঁড় করাবেন।

তবুও নির্বাচন বয়কট করবেন না। এমনিতেই দলের স্বৈরতন্ত্রী মনোভাবের জন্য প্রবীণ নেতারা হতাশায় ভুগছেন। তারা দলে কোনো নতুন কথা বলে দাঁড়িয়ে থাকতে পারেন না। খালেদা জিয়া আবার তরুণ নেতৃত্বের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করার ঘোষণা দিয়েছেন। তার উদ্দেশ্য সফল হলে দেখা যাবে দলে কোনো প্রবীণ নেতারই ঠাঁই নেই।

কোনো তরুণ নেতার হাতে অপদস্ত হওয়ার চাইতে তারা দলত্যাগ করবেন, নতুবা নতুন দল তৈরি করবেন। তাই সরকার যদি আগাম নির্বাচন দেয় তবে তাতে বিরোধী দলের অংশগ্রহণের জন্য পাবলিকের ঘাটতি পড়বে না। হতে পারে আগাম নির্বাচনে খালেদা জিয়া অংশগ্রহণ করবেন না। কিন্তু তাতে কিছুই যাবে আসবে না। কেননা, সে ক্ষেত্রে এরশাদ বিরোধী দল হিসেবে নিজেকে জাহির করার সুযোগ পাবেন।

ভালো হতো, যদি এরশাদ গৃহপালিত বিরোধী দলের নেতা হতেন। কিন্তু সেটি হবার নয়। এরশাদের কথায় কথায় পাখা গজায়। কেউ মনে হয় তাকে আশা দিয়েছে এই মর্মে যে, তাকে প্রেসিডেন্ট করবে, নাকি প্রধানমন্ত্রী করবে। আর কিছু না করা সম্ভব হলে, রাজা করবে।

আশায় আশায় বিভোর হয়ে রাজনৈতিক ভুল ভুলানিতে ভুলে সম্ভবত ভুল বকতে শুরু করেছেন এরশাদ। তার জন্য যথাসময়ে নির্বাচনের কোনো গুরুত্ব নেই। আগাম নির্বাচন হলেও যা, মেয়াদ পূর্তির পর নির্বাচন হলেও তা। তাকে অন্য কোনো একটি বড় দলের সঙ্গে মিলে নির্বাচন করতেই হবে। সে হিসেবে ঐ দলের প্রস্তুতিতেই তার প্রস্তুতি হয়ে যাবে।

তার নিজের রাজনৈতিক দলের গতি কিংবা লয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ক্রিয়া-প্রক্রিয়ার গতি কিংবা লয়ের সম্পর্ক নেই। তার অভিলাষও পূর্ণ হবে না। তিনি ভবিষ্যতে কোনোদিনই প্রেসিডেন্ট কিংবা প্রধানমন্ত্রী হবেন না। বড়জোর বিরোধী দলের সংসদীয় নেতা হতে পারেন। তাও যদি আওয়ামী লীগ দয়াপরবশ হয়ে তাকে ঐ পদে মনোনয়ন দেয় মনে মনে।

এরশাদের ভাগ্য নির্ভর করছে আওয়ামী লীগের রাজনীতির অর্জনের সঙ্গে। আওয়ামী লীগ ব্যর্থ হলে এরশাদ ধূলিসাৎ হয়ে যাবেন। যা বোঝার ক্ষমতা এরশাদের নেই। এমনকি আওয়ামী লীগেরও নেই। সে কারণে এরশাদ আওয়ামী লীগের জন্য হুমকি নয় কিন্তু সম্পদ।

এরশাদকে মহাজোটে রাখা মানেই আওয়ামী লীগের ঔদার্যের সামাজিক স্বীকৃতি পাওয়া। কিন্তু বিএনপির সঙ্গে এরশাদের জোট বাঁধা মানেই হালুয়া-রুটি কামড়াকামড়ি করা। জনসাধারণ সবকিছুই সাধারণভাবেই বোঝে। আগাম নির্বাচনে এরশাদের প্রস্তুতি কিংবা অপ্রস্তুতি সমীকরণের ক্ষেত্রে মূল্যহীন হলে, বিএনপির পূর্ব প্রস্তুতির মূল্য আছে। বিএনপির প্রস্তুতির সঙ্গে জামাতের প্রস্তুতির মূল্য আছে।

জামাত এখন নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত নয়। কারণ যুদ্ধাপরাধীর বিচার। তারা নেতাদের জীবনরক্ষার জন্য খুবই ব্যগ্রতার সঙ্গে ব্যস্তসমস্ত সময় কাটাচ্ছে। আগাম নির্বাচনে অংশ নেয়ার কিংবা চিন্তা করারও সময় নেই তার। যদি বিএনপি জোরাজুরি করে তবে মাঠকর্মীদেরকে বিএনপির মিছিলে পাঠাবে।

কিন্তু কোনো নেতাকে রাস্তায় নামাবে না। কারণ আগাম নির্বাচন নয়। প্রকৃত কারণ আওয়ামী লীগ এবং জামাত উভয়েই জানে। আগামী দিনের রাজনীতির নির্ধারক হবে ‘রাস্তা’। রাস্তা কার? তাই নির্ধারণ করবে রাজনীতি কার।

তাই জামাত নেতা হারানোর ঝুঁকি নেবে না। জামাত নেতা হারিয়ে বিএনপিকে ক্ষমতায় বসিয়ে ভিক্ষে করে খাবে এমনটা মনে করার কোনো কারণ নেই। জামাত ভালোভাবেই জানে যে, বিএনপি আর একবার ক্ষমতায় যাওয়া মাত্র জামাতকে আঁস্তাকুড়ে ফেলে দেবে। কোনো কোনো জামাতী নেতা এটি বোঝেন। তবে সব নেতাই যে একইরকম বুঝবেন এমন কোনো কথা নেই।

আগাম নির্বাচনের প্রস্তুতি কিংবা যোগ্যতা জামাতের নেই। তাহলে কে আগাম নির্বাচন চায়? একমাত্র যে আগাম নির্বাচনের ক্ষমতা রাখে সে-ই আগাম নির্বাচন চাইতে পারে। অন্য কেউ নয়। আওয়ামী লীগ হিসেবে নয়, সরকার তার এই হিসেবে মহাজোটই একমাত্র আগাম নির্বাচন করতে পারে। পার্টি হিসেবে এক ধরনের সাধারণ প্রস্তুতি সরকারি দলের সব সময়ই থাকে।

সেটিকে বিশেষ উপায়ে কাজে লাগানো যায়। দ্বিতীয়ত, প্রয়োজনই বড় বালাই বলে একটা কথা আছে বাঙালি সমাজে। এটি কাউকে বোঝানোর দরকার আছে বলে মনে হয় না। মহাজোটের শরিক দলগুলো নিজেদের মধ্যে অবিশ্বাস তৈরি করছে। মহাজোট থেকে কাউকে কাউকে টেনে নেয়ার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে বিএনপি-জামাত।

বিএনপি-জামাত তাদের সরকারের সময়ের পাচারকৃত টাকা দেশে আনবে এবং কতিপয়কে কিনবে। এখনো পাচারকৃত টাকা তারা বাংলাদেশে আনেনি। তাদেরকে টাকা এনে নির্বাচন করার জন্য যথেষ্ট সুযোগ দেয়া হলে কৌশলগত বিপর্যয় ডেকে আনা হবে। আওয়ামী লীগ কি সাধ করে বিপর্যয় ডেকে আনবে? মহাজোটের সদস্য সংখ্যা বাড়াতে হবে। যারা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা তাদেরকে মহাজোটে টেনে আনা খুবই সম্ভব।

যদি বিএনপি নির্বাচন নাও করে তবুও ‘জোটের ভোট’ করতেই হবে। কেননা, জোটের ভোট এখন সামাজিক মনস্তত্ত্বে পরিণত হয়েছে। বাঙালি সমাজের বিশ্বাস, দশ যেখানে খোদা সেখানে। এই বিশ্বাসটাকেই জোটের ভোটে কাজে লাগানো খুবই সম্ভব। কিন্তু হিসেব-নিকেশ করতে করতে যদি জোটই ভেঙে যায় তবে আওয়ামী লীগ একা হয়ে যেতে পারে।

কালক্ষেপণ তাই ভুল কৌশল হবে। এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আগাম নির্বাচন এখন আওয়ামী লীগেরই প্রয়োজন। যদিও যারা মন্ত্রী হয়েছেন, তারা আরো কিছুদিন চব্য চোষ্য লেহ্য পেয় খেতে চান, তবুও মহাজোটের উচিত হবে তাদেরকে বাধ্য করে আগাম নির্বাচনে যাওয়া। প্রসূতির জীবন বাঁচাতে মাঝেমধ্যেই আগাম সন্তানের জন্ম দেয়া হয় সিজার পদ্ধতিতে। মানবদেহের জন্য যা সত্যি হতে পারে তা সমাজদেহের জন্যও সত্য হতে পারে।

সামাজিক বিজ্ঞানে বাইওলজিক্যাল স্কুল জাতীয় একপ্রকার পাঠ আছে। অনেকেই ঐ পাঠ মন দিয়ে পড়েছেন। তারা সম্ভবত আমার ইঙ্গিত বুঝতে পারবেন। আর যারা না বুঝবেন তাদেরকে ধন্যবাদ। দেশ তো চলছে একভাবে, একভাবে চলবেই।

কারোর মুখাপেক্ষী হয়ে দেশ বসে থাকবে না। তবে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ভুলে সাধারণ মানুষ কষ্ট পায় এই যা সমস্যা। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.