আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মহিলা, মহিলা সিট, আমাদের মানষিকতা

বি:দ্র: এই ব্লগারের কোথাও কোন মালটি নিক নেই এবং এই ব্লগার কাহারো মাল্টি নিক নয়। এখন ঢাকায় বেশ অনেকগুলো বাসই সিটিং সার্ভিস শুরু হইছে। বিষয়টা একদিক থেকে ভালই। যাত্রিদের হয়রানি কম হয়। ভাড়া একটু বেশি হলেও মোটামোটি আরামে যাতায়াত করা যায়।

প্রায় সবগুলো বাসেই মহিলা সিট নিদৃষ্ট করে দেওয়া থাকে। এই নিয়ে যে দুনিয়ার ক্যাচাল এইটা যারা এই বাসে যাতায়াত করে তারা সবাই মোটামুটি জানে। আজকে আমার একটা ক্যাচাল অভিজ্ঞতা শেয়ার করব আপনাদের সাথে। তার আগে একটু ভুমিকা দিয়ে আমার দিকটা ক্লিয়ার করি? বেশিরভাগ ক্যাচাল বাধে যখন দেখাযায় মহিলা সিটে কোন পুরুষ বসে আছে আর একটা মহিলা এসে বসার যায়গা পাচ্ছে না তখন। মহিলা টা কাউ কাউ শুরু করে পুরুষটাও মন্ত্রি আমলাদের মত সিটে কামড় দিয়ে বসে থাকে।

বাসের যাত্রিরাও দুই পক্ষে ভাগ হয়ে যায়। কেউ মহিলার সাপোর্টে কেউ পুরুষটার সাপোর্টে কাউ কাউ শুরু করে। যুক্তি গুলা এমন হয় মহিলার উদ্দেশ্যে কেন আপনারা যে পুরুষের ছিটে বইসা যান তখন তো কিছু হয় না এখন কাউ কাউ করেন ক্যে? আর মহিলার কথা এইটা মহিলার সিট মহিলাই বসব আপনে উডেন বাস। আমার কথা হচ্ছে মহিলাসিট গুলো শুধু তাদের জন্যই সংরক্ষিত। সো মহিলা আসলে ওই সিট টা ছেরে দেওয়াই ভদ্রতা।

আর বাকি সিট গুলো যেহেতু কারো জন্য সংরক্ষিত না তাই সেখানে যে কেউই চাইলে বসতে পারে (যে আগে বসবে সিট টা তার)। অনেক ভুমিকা হইছে আসেন এইবার আসল ঘটনায়, আজকে ১০টার দিকে বনানি থেকে বাসে উঠলাম। উঠে দেখি বাস পুরা ভর্তি। একটা সিট খালি সেইটা হইল মহিলা সিট। কন্ডাক্টর বলল মামা বসেন।

আমি দেখলাম এখন এত রাতে আর মহিলা ওঠার সম্ভবনা নেই, বসি প্রব নাই। ওমা বসার সাথে সাথে পাশের মিলা কাআউ করে উটল! কয় ওই কন্ডাক্টর ফাইজলামো পাইছস মহিলা সিটে পুরুশ বসাস কেন? আমি তো-ইয়াল্লা কি মুসিবত। কন্ডাক্টর কয় খালা আর তো মহিলা নাই সিট কি খালি নিয়া যাব? মহিলা কয় লাগলে তাই যাবি। এইবার শুরু হইয়া গেল পুরা বাসে কাউ কাউ। কত রকম কমেন্ট যে আইতে থাকল তা লিখলে ব্লগের আপুরা আমারে নারী বিদ্দেসি ভাইবা বইতে পারে।

তো আমি মাঝখানে পুরাই মাইন্কা চিপায়। কি আর করুম সাধারনত আমি কাউ কাউয়ের মইদ্ধে যাইনা কখনও। হেডফুনে সাউন্ডডা বারাইয়া চুপচাপ বইয়া থাকি কিন্তু এইহানে তো আমি ই মেইন কালপ্রিট/ভিক্টিম(কুন্ডা এপ্রোপিয়েট গুবেশুনা কইরা বাইর করেন) সো চুপচাপ বইয়া তো থাকা যায় না। তাই মহিলারে বুঝানোর গুরু দাইত্ব আমিই হাতে তুইলা নিলাম। ভাই আপনারা একটু থামেন প্লিজ বইলা শুরু করলাম।

দেন মহিলার দিকে ঘুইরা কইলাম আপু (আন্টিই কইতাম বাট রিস্ক নিলাম না। আমার হালকা পাতলা শরিল ছুইরা জানলা দিয়া ফালয় দিতারে) শোনেন আমি জানি এইডা মহিলা সিট। এই সিটে বসার কুন ইচ্ছাই আমার নাই। বাট গাড়িতে আর কুন সিট ফাকাও নাই তাই বাইদ্ধ হইয়া এই সিটে বসছি। আর ব্যাচারা কন্ডাক্টরের ও দোষ নাই।

এত রাইতে সে আপনার লাইগা মাহিলা কইথেইকা আইনা দিব না পাইলে। এখন তার হাতে দুইডা অপশন এক রাস্তায় যারেই পাইব উঠাই লওয়া নাইলে ফাকা সিট নিয়ে যাওয়া। বাট ফাকা নিলে তো হের লস। মহিলা দেখি তাও কাউ কইরা উইঠা কইল লাগলে তাই যাইব। লেকিন মহিলা সিটে পুরুষ কাভি নেহি।

এই কথার সাথে সাথে আবার বাসে কাউ কাউ কেউ আমারে কয় খবদ্দার ভাই উঠবেন না আপনে। কেউ কয় উনারে প্রাইভেট কারে যাইতে কন কাউ কাউ কাউ .... আমি আল্লারেএএ(মনে মনে) ওক্কে আপু ঠিক আছে আপনি চান এই সিটে মহিলা ছাড়া কেউ বসবে না। মহিলা কেউ উঠলেই আমি উঠে যাব ওকে? সে কয় কেন কন্ডাক্টর যানে মহিলা সিট খালি তাও পুরুষ উঠাইলো? ওরা সবসময় এই কাম করে কেউ কিছু কয় না দেইখা। আমি (মনডা চাইতাছিল আম্মাআআা বইলা কাইন্দা দি) দু্:খের চোটে দাড়াইয়া গেলাম। কইলাম ঠিক হ্যা আপনি চাইতাছেন এই সিটে যেন কোন ছেলে না বসে তাই তো? আমি দাঁড়াই যাব।

খুশি? মানুষজন কাউ কাউ বসেন আপনি বসেন। আমি কইলাম যেই মানুষ অন্যজনের সুবিধা অসুবিধা দেখেনা তার পাশে বইসা যাওয়ার চাইতে দাড়ায় যাওয়াই ভাল। একটু পর দেখি সে আবার বলে বসেন আপনি। আমি বল্লাম ধইন্যবাদ। ভাই সারাদিন কাজের পর উনিও বাসায় যাচ্ছেন আমি ও যাচ্ছি ১ঘন্টা ধরে দাড়ায় থেকে বাস পাইছি।

গরমে অবস্থা আরো খারাপ। মানুষ কি দিন দিন মনুসত্ব হারায় ফেলতেছে কিনা কে যানে....আমি তো পাশের সিট ফাকা হইলে মানুষকে ডাইকা বসাই। বয়স্ক মহিলা দারানো দেখলে সিট ছাইরা দেই। আমি জানি সবাই এক রকম না তার পরও খারাপ লাগছে আজকে। একটা ছেলে একটা মেয়ের পাশে বসলে এমন কি ক্ষতি হয়ে যায়? মানুষের এই দৃষ্টিভঙ্গি কবে বদলাবে?  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।