আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মিনি স্কার্ট রম্যঃ তাহাদের সাদা পা

কলম চালাই ,এইগুলো লেখার পর্যায়ে পরে কি না তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে :) ব্লগের বয়স বছরের উপরে দেখালেও নিয়মিত লিখছি ১৭ আগস্ট ২০১২ থেকে :) বিমানবন্দর দাঁড়াইয়া রহিয়াছি । জীবদ্দশায় পয়লা লুণ্ঠন ( থুক্কু লন্ডন ) যাইতেসি । হামাকে দেখিতে ফুরাই গরুর দালালের মতন লাগিতেসে । ঐ যে , ইন্ডিয়া থেইকা বলদ গরুগুলানরে যাহারা ল্যাঞ্জা তথা লেঙুড় মোচড়াইতে মোচড়াইতে নিয়া আসে , তাহাদের মতন । শখ করিয়া কিনিয়াসিলাম একপাটি ‘’অল স্টার ‘’ জোতা ।

দেশি ভার্সন । পরিয়াছি একখানা চোস ( ফিটিং ) প্যান্টুলুন আর হাফ হাতা টি শার্ট । আমার পিতাজীর আবার উচ্চতা জ্ঞান বড়ই প্রবল । তিনি আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে আমার টি শার্ট প্যান্টুলুনের মধ্যে গুঁজিয়া দিলেন , এবং প্যান্টুলুন কোমর অবধি উঠাইয়া দিলেন । কহিলেন – ইন করিবা বৎস ! ইস্মার্ট দেখাইবে !! মনে অইল কল্লাডা কাটিয়া ব্যাগে পুরিয়া হাটি ।

চেকইন করিয়া , শ্রদ্ধেয় পিতামহ এবং আত্মীয় স্বজনের বকের ন্যায় গলা বাড়িয়া থাকা দৃষ্টির আড়ালে গিয়াই প্রথম কর্ম – প্যান্টুলুনের ভিতর হইতে গোঞ্জি টানিয়া বাহির করা । আচমকা খিল খিক রমণীদের হাসি ! ঘুরিয়া তাকাইলাম । দুইজন সুন্দরী রমণী মুখে হস্ত চাপিয়া হাসিতেছে ! খেয়াল হইতেই দেখিলাম আমার হস্ত সামনের দিকের প্যান্টুলুনের ভিতর হইতে ইন টানিয়া বাহির করিতে গিয়া থামিয়া রহিয়াছে !পাংচার হইয়া গেলাম ! এইবার মনে অইল হাতটাই কাটিয়া ফালাই ! ছিঃনেমার হিরুগো লেহান নিজের পশ্চাদদেশে মনে মনে কষিয়া জোড়া পায়ের কিক মারিলাম । আমার এক ছুডোকালের বন্দুও একই উড়োজাহাজে করিয়া আমার সহিত যাইতেছিল । ল’ উচ্চতার মাপকাঠিতে তিনি আমার মেলা উপরে ! নয়নে মোদের লাল – নীল – বেগুনি স্বপ্ন ! এমনকি মনে মনে এয়ার হোস্টেসরে লইয়া দুইবার দিবাস্বপ্ন দেখিয়া ফেলিয়াছিলাম ! আর আমার বন্দু কুনো এক রহস্যজনক কারনে বারবারই টয়লেটে যাইতেসিল ।

যাহা হউক ! শেষমেশ লন্ডনে আসিয়া ভু-পাতিত হইলাম ! কাস্টমসের বুড়া বেডিরেও মনে অইল হুর পরী ! কি ধলা চামড়া !! লাল – নীল – বেগুনি ! খুশিতে নাচি আমরা ! খাস্টমস থেইকা বাইর অইয়া লাগেজ লইয়া ছ্যাচরাইতে ছ্যাচরাইতে যাইতেসি । আমাগো ঘাড় পুরা আটো অইয়া গেসিল । ৩৬০ ডিগ্রি বরাবর ঘুরিতেসিল তো তাই ! চারিদিকে সাদা সাদা পা ! লাল – নীল – বেগুনি ! কোনটা ছাড়িয়া কোনটা দেখি ! তখনই মনে পরিয়া গেল আমার ফেবারেট গান ‘’ এ মন কি যে চায় বল ......... যারে দেখি লাগে ভালোউউউউউউউউউউ............‘’ বিদেশিনী ললনারা দেহি হামাগো দেইখা খালি ভেটকি মারে ! কিলা ? একজনে কি কইল কিসসুই বুঝিলাম না ( ইংরেজি বেশি বুঝি তো তাই ) তাহার আঙুল লক্ষ্য করিয়া আমার লাগেজের উপরে চক্ষুপাত করিলাম । আমার পিতাজী এইবার আমারে ডিমোশোন দিয়া গরু হইতে ছাগলের দালাল বানাইয়া দিল যেন ! লাগেজের উপরে এ ফোর সাইজের সমান কাগজে বাংলা ইংলিশে আমার নাম ঠিকানা বর্ণনা ছবিসহ সাটাইয়া দিসিলেন ! জিদ্দে মুন চাইসিলো কি ........................ ইন্দুর টেরেনে উঠিলাম ( ঐ যে মাডির নিচ দিয়া যায় ) হালারা কি ফকিরের ফকির ! আমাগো দ্যাশের লেহান উফরে জায়গা নাই ! ফুহ্‌ !! আমরা একসাথে পাতাল টেরেনে সিট পাইলাম না । আমি এককুলে , আমার বন্দু অন্যকুলে ! চারিদিকে লাল – নীল – বেগুনী ! কোনটা রাইখা কোনটা দেখি ! মাঝে মাঝে যেই বলদগুলান ( ব্যাটা ছাওয়াল ) দৃষ্টিসীমা রোধ করিতেসিল , ইসসা করিতেসিল তাহাগো পশ্চাদদেশে লাত্থি দিয়া টেরেন থেইকা ফালাইয়া দেই ! আচানক আমার বন্দুর পাশে এক সিলিম রমণী আইসা খাড়াইল ।

আমি জেলাস অইয়া গেলাম । বন্দু আমারে চোখ টিপে । আমি হা পিত্যেস করি । সিলিম রমণী পরিয়াসিল মিনি স্কার্ট ! তাহার সাদা পা দেখিয়া আমার বন্দুর লুল জিব্বাখান দেড় হাতখানি পরিমান ধারন করিল । সে মুখ টিপা টিপা হাসে আর আমারে ভ্রু নাচায় ! বন্দুর ভাগ্য দেখিয়া আমার আরেকটা গানের কলি মনে বাজিয়া উঠিল ‘’ অন্তরে তুষেরও আগুন , জ্বলে রইয়া রইয়া আআআআআআআআআআআআআআআআআ.................. ‘’ মনে মনে পিলান করিলাম , হাসুইন্যা ( বন্দুর নাম হাসান ) তোর তিন নাম্বার ডার্লিঙরে ( বর্তমান ) এই কাহিনী রসাইয়া রসাইয়া কইয়া যদি প্যেচগী না লাগাইসি ! তাইলে নিজের নাম মুরগা আকিকা দিয়া পাল্টাইয়া পালাইমু ! আমার অন্তর খান খান করিয়া দিল পরের ঘটনা ।

টেরেন এক ইশটিশনে থাইমা আবার যখন ঘূড ঘুড করিয়া যাইতে আরম্ভ করিল , তাল সামলাইতে না পারিয়া আমার বন্দুর উপরে হুড়মুড়াইয়া হুর পরীডা পরিল । তাহার মিনি স্কার্ট আরও কিঞ্চিৎ উচ্চতা হারাইল । ক্ষোভে , দুক্ষে আর শরমে খোমাখান অন্যদিকে ঘুরাইয়া ফেলিলাম । খানিক বাদে যখন ফিরিলাম , দেখিলাম বন্দু আমার সেইখানে নাইক্কা ! আতিপাতি করিতা খুজিয়া দেখিলাম সে দরজার কাছে যাইয়া রানীক্ষেত মুরগার মতন করিতেসে ! পরের ইশটিশনেই আমারা নামিব । বন্দু দেখিলাম ‘’ মাইন্ড দ্যা গ্যাপ ‘’ না মানিয়াই লাঙ্গুরে আগুন লাগা ডি ও জি সাহেবের মতন দৌড় পারিল ! কিঞ্চিৎ দূরত্ব অতিক্রম করিবার পর দেখি সে ‘’ হক্‌ ‘’ ‘’হক্‌’’ করিয়া পেট উদগীরন করিতেসে ! বিচলিত হইয়া বন্দুর নিকট জানিতে চাহিলাম হেতু কি ? বন্দু যাহা কহিল তাহাতে আমার মস্তক ঘুরাইয়া উঠিল ।

অইডা নাকি বেডি আসিল না । আসিল লেডি বয় ! যাহারা ঊর্ধ্বাংশে বেডি , নিন্মাংশে বেডা ! আমার বন্দু তাহারি খুব ক্লুজ দর্শনলাভ করিয়াসে ! আচমকা পিছন থিকা কেডা জানি কয় ‘’ হাই ! ‘’ চাইয়া দেহি হেই লেডি বয় ! দন্ত বাহির করিয়া হাসিতেছে ! আমি আর হাসুইন্যা হায় হায় করিতে ‘’ এক্সিট ‘’ লেখা দেখিয়া অলিম্পিক স্প্রিন্ট দিলাম । কাছা বান্ধিয়া দৌড় !! উহার পর হইতে আমাদের সাদা পা দর্শন সমাপ্তি ঘটে এবং মিনিস্কার্ট দেখিলে চক্ষু আপনাআপনি আসমানে উঠিয়া যায় । আমরা এহন ভদ্র পুলাপাইন !! শেষ কথাঃ অনেক তো দেখলাম , সত্যি কথা বলতে কি , ওগুলা শুধুই সাদা চামড়া , দেখতে ভালো । কিন্তু মন টানে না ।

আমাদের দেশের মেয়েরা যেরকম আকর্ষণীয়া , ওরা তার ধারে কাছেও নাই  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১০ বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।