আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ধর্ম বিরোধিতা অপরাধ হইলে গণতান্ত্রিক দেশে সরকার বিরোধিতাও অপরাধ!

ধরেন কোন একটা দল- গোষ্ঠী বিপুল জনসমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করলো, সংসদে আসনের শতকরা হিসেবে ৮০-৮৫ ভাগ ই তাদের দখলে গেল.................. এখন এতো বিপুল জনসমর্থন নিয়ে গঠিত সরকারের সব কাজ ই কি সমর্থনযোগ্য? বিরোধীদল বা সাধারণ নাগরিকের কি অধিকার আছে সরকারের কোন নির্দিষ্ট কাজকর্মের প্রতিবাদ করার বা বিপক্ষে বলার? উত্তর আসবে, স্বাভাবিক ভাবেই অবশ্যই বিরোধিতা করার অধিকার আছে! মানলাম, খুশী ও হইলাম উত্তর শুনে!! .................. তারমানে হোক সংসদীয় আসনের বিচারে ৮৫% জনসমর্থনের সরকার কিন্তু বাকি ১৫% এর সরকারের যেকোন কাজে বিরোধিতা করার ক্ষেত্রে তা কোন আইনগত বা অন্য কোন ধরণের বাঁধার সৃষ্টি করতেছে না, তাইতো? ............ ধরেন, একটা নাম সর্বস্ব রাজনৈতিক দল আছে, এরা নির্বাচনে প্রার্থী দেয়, রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ এর আয়োজন করে, নতুন রাজনৈতিক তত্ত্ব প্রদানের চেষ্টা করে, কিন্তু জনসমর্থন নাই, নির্বাচনে পাশ ও করে না......... আমরা এদের উপর বেশ বিরক্ত, প্রায় ই বলি ২০-২৫ লোক নিয়া ক্যান বাপু তোমরা এতো তামাশা করো? কিন্তু আমরা কি এদের নিজেদের ধারণা প্রদানের অধিকার নাই তা বলি? বরং বলি এদের ধারণা জন বিচ্ছিন্ন, এমনে নিজেরা নিজেরা ফাল পাইড়া গুপ্তকেশ টাও ছিঁড়তে পারবে না এরা, এইটা আমাদের সাধারণ মতামত ......... গেলো, নাম সর্বস্ব দলের প্রসঙ্গ, এইবার আসি প্রধান বিরোধীদল গুলির কথায়, যদিও তারা বিগত নির্বাচনে ব্যাপক চুনা খাইছে, তাতে কি তাদের নিজেদের মত প্রকাশের অধিকার শেষ হয়ে গেছে? না যায় নাই............... আমাদের প্রধান বিরোধী দল সরকারের কর্মকাণ্ডের গঠনমূলক বিরোধিতার সাথে সাথে প্রায় ই হাস্যকর কিছু অভিযোগ করে, ভিত্তিহীন বাগাড়ম্বর করে, হেন করেঙ্গা, তেন করেঙ্গা বলে, তা শুনে আম জনতা বিনোদন পায়, কিন্তু আম জনতা কিন্তু কখনোই বলে না এই ব্যাটারা বাল ছাল বলতেছে এদের ব্যান করা হোক, বলে? ......... ক্ষমতাসীন দল ও কিন্তু বলে না যে যেহেতু আমরা বিপুল ব্যাবধানে ভোটে জিতছি, তো এই ব্যাটা দের এখন কিছুই বলার অধিকার নাই, এদের এখন চুপ থাকতে হবে, নাইলে মুখ খুল্লেই, সরকারের বিরোধিতা করলেই বেদম মাইর হবে......... বলে নাকি এরকম কিছু? বলে স্বাভাবিক গণতন্ত্র না থাকলে বলতে পারে কিন্তু প্রোপার গণতন্ত্রে বলে না, বললেই আম জনতা মেনে নেয় ও না......... এতক্ষনের বকবকানি তে কি প্রতিষ্ঠা করলাম? যে, বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনও, সংখ্যাগরিষ্ঠ দল বা গোষ্ঠী কে স্বেচ্ছাচারী হবার অধিকার বা সুযোগ দেয় না! এইটুকু তে একমত? যদি একমত হন, তবে আসেন আসল কথা টা বলি, যেই কথাটা বলার জন্য এতো কথা বললাম ঐটা একটু বলি.................. একমত না হইলে, গণতন্ত্রে বিশ্বাসী না হইলে, কষ্ট কইরা আর পড়ার দরকার নাই, আপনার সময় নষ্ট করার জন্য দুঃখিত! বাংলাদেশে এখন প্রায় ৯০% মুসলমান......... বাকি ১০% মুসলমান না, এই ১০% এর অতি ক্ষুদ্র অংশ যাদের আবার শতকরা হিসেবে প্রকাশ করা যাইতেছে না, এতোই ক্ষুদ্র হইল গিয়া নাস্তিক.................. এই পর্যন্ত ঠিক আছে? ৯০% মুসলমানের দেশে হিন্দু- বৌদ্ধ- খ্রিষ্টান যেই কয়জন আছে তাদের ধর্ম পালন কি অপরাধ? উত্তর নিশ্চয়ই দিবেন না অবশ্যই অপরাধ না............... হিন্দু- বৌদ্ধ- খ্রিষ্টান যারা আছে এরা যদি এদের ধর্ম বিশ্বাস সম্পর্কে সাধারনের মাঝে প্রচার করে তা কি অপরাধ হবে? পত্র-পত্রিকায় লিখে, ফেসবুকে, ব্লগে লিখে তাইলে কি বিরাট ফৌজদারি অপরাধ হয়ে যাবে? আপনি সুস্থ মানসিকতার লোক হইলে অবশ্যই বলবেন না এদের এই সব কাজ কর্ম অপরাধ না...............তাইলে ভাই আমার প্রশ্ন হইল, নাস্তিকদের নাস্তিকতা প্রচার ক্যান অপরাধ বলে গণ্য করতেছেন? সে তার বিশ্বাস প্রচার করতেছে করুক না, যে বিশ্বাস করে করুক, না করলেই নাই, ধর্ম প্রচার আইনসিদ্ধ হইলে ধর্মবিরোধিতা কোন যুক্তিতে আইন বিরোধী? তাইলে তো ভাই গণতান্ত্রিক দেশে নির্বাচিত সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকারের বিরোধিতা করাও আইন বিরোধী এবং অপরাধ ও বটে, নাকি? .................. ওকে, আপনি একটু বেশি সুশীল, আপনি আমারে বলবেন যে আপনি নাস্তিকতা বিরোধিতা করেন না, বিরোধিতা করেন ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানা কে, ধর্মগুরু র নামে কটূক্তি কে......... তাই কি? আপনার নিজের ধর্ম কি তাই করতেছে না? আপনি যখন আপনার টা বাদে বাকি সব মিথ্যা ঘোষণা দিতেছেন তখন কি বাকিদের অনুভুতিতে আঘাত লাগে না? আপনি যখন বলেন খ্রিস্টান রা বাইবেল নিজের ইচ্ছা মত পরিবর্তন করছে তখন কি তাদের অনুভূতিতে আঘাত লাগে না? আপনি যখন ইহুদি দের অভিশপ্ত বলেন, আর কথায় কথায় তাদের প্রতি বিষেদ্গার করেন, তাদেরকে আপনার ধর্মের সব চেয়ে বড় শত্রু বলে ঘোষণা দেন, তখন তাদের ধর্মানুভূতিতে আঘাত লাগে না? আপনি যখন হিন্দু দের এতো এতো দেব দেবী আছে, এই সব নিয়া তামাশা করেন, হাশি- ঠাট্টা করেন, তখন তাদের ধর্ম গুরু কে অবজ্ঞা করা হয় না? আপনার যদি ইসলাম,হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ধর্ম প্রচারের অধিকার থাকে, তো নাস্তিকদের ও তার বিশ্বাস প্রচারের অধিকার আছে.................. আপনার এইটা মাইনা নিতে কষ্ট হইতেই পারে, আমি তাতে বাঁধ সাধতেছি না, আমি বলতেছি ভাই অন্তত তাইলে নিজেরে মডারেট ধার্মিক বইলা খামখা পরিচয় দিয়া ভণ্ডামি কইরেন না! ............ এতো কথা কইলাম গোঁড়া ধার্মিক দের প্রতি বিদ্বেষ থেকে না, কইলাম আপনার মত তথাকথিত মডারেট মুমিন এর ভণ্ডামি তে বিরক্ত হইয়া............ নাস্তিক শুনলেই, ধর্ম মানে না শুনলেই আপনার জিহাদি জোশ জাইগা উঠে, তো জিহাদ ই করেন, মুখে এক আর অন্তরে আরেক নিয়া খামখা নিজেরে মুনাফিক বানাইতেছেন ক্যান? আমি অধম তাই বলে আপনি ক্যান উত্তম হইতেছেন না? মুনাফিক আর কয় বছর থাকবেন? এলা নাহয় মুমিন হন নাইলে সব কিছুতেই ধর্ম রে টাইনা আনা বাদ দেন!! জানি আপনি কোনটাই করবেন না, কি করবেন তাইলে? ক্যান? আমারে এখন কতক্ষন খিচাইয়া গাইল্লাইবেন .........

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.