আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নেতারা এখন দিল্লিমুখী

সোজা কথা.. তথ্যসূত্র জাস্ট নিউজ -রেজাউল করিম প্লাবন, ২০ সেপ্টেম্বর (জাস্ট নিউজ): দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশের রাজনীতিবিদরা এখন ভারত সফরে ব্যস্ত। দেশের প্রধান তিনটি রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ, বিএনপি এবং জাতীয় পার্টি ভারত সফরকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছে। বিভিন্ন জাতীয় ইস্যুর চেয়ে এ সফরে নেতারা নির্বাচনকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছেন এমনটি মনে করছেন দেশের রাজনীতি বিশ্লেষকরা। ইতিমধ্যে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, অর্থ উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান ভারত সফর করেছেন। মঙ্গলবার ৫ দিনের ভারত সফরে গেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।

দলটির উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী অক্টোবরের শুরুতে ভারত সফরে যাচ্ছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিংয়ের আমন্ত্রণে দিল্লি যাবেন বিরোধী দলীয় নেতা ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। সেপ্টেম্বরের শেষদিকে এ সফর অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে দলের একাধিক নেতা নিশ্চিত করেছেন। বিরোধী দলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়ার ভারত সফর প্রসঙ্গে বিএনপি’র উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য সাবিহউদ্দিন আহমেদ বলেন, সে দেশের সরকারের আমন্ত্রণে বিরোধী দলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া ভারত সফরে যাচ্ছেন। প্রতিবেশি দেশ হিসেবে বাংলাদেশের রাজনীতির নানা বিষয়ে ভারতের আগ্রহ থাকতেই পারে।

তবে নেত্রীর এ সফরে দেশের আর্থ-সামাজিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে। গত ১৪ থেকে ১৮ আগস্ট পর্যন্ত ভারত সফর করেন সাবেক প্রেসিডেন্ট এরশাদ। সফরকালে তিনি ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জী, প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং, কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী ও ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিবশংকর মেননের সঙ্গে বৈঠক করেন। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের এই সফর নিয়ে আড়ালে আবডালে অনেক কথা শোনা গেলেও তার সফরের রাজনৈতিক তাৎপর্যের ব্যাখ্যা তিনি নিজেই দিয়েছেন। ভারত সফর শেষে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে নেমে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রতি ভারত সরকারের রাজনৈতিক সমর্থন আছে।

ভারত সরকার আমাকে এককভাবে নির্বাচন করার পরামর্শ দিয়েছে। তবে প্রবীণ রাজনীতিবিদরা মনে করছেন, আগামী নির্বাচনে মহাজোট থেকে জাতীয় পার্টির বেরিয়ে যাওয়ার আশংকা থেকে ভারত সরকার এরশাদকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল এবং সফরকালে তাকে মহাজোটের শরীক হিসাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। গত ৪ সেপ্টম্বর চারদিনের দিল্লি সফরে যান প্রধানমন্ত্রীর দুই হেভিওয়েট উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী ও মশিউর রহমান। পদ্মা সেতুর দুর্নীতির সাথে প্রধানমন্ত্রীর অর্থ বিষয়ক উপদেষ্টা মশিউর রহমানের সম্পৃক্ততার কথা বিশ্বব্যাংক বারবার বলে আসলেও তিনি তা অস্বীকার করছেন। পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংকের ঋণ সহায়তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়ায় প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী ও মশিউর রহমান দিল্লিতে ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জীর সাথে দেখা করেন।

ভারতের রাষ্ট্রপতির সাথে তাদের আলোচনাকে ফলপ্রসূ হিসেবে আখ্যায়িত করে মশিউর রহমান পদত্যাগ না করার ঘোষণা করেছিলেন। আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে রাজনীতিবিদদের দিল্লি সফরের উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ জাস্ট নিউজকে বলেন, ভারত শুধু আমাদের বন্ধুপ্রতিম পার্শ্ববর্তী দেশই নয় তারা বিশ্বায়ন, সামরিক শক্তি এবং টেকনোলোজিতে অনেক এগিয়ে। এজন্য বাংলাদেশের প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলই চায় ভারতের সাথে সুসম্পর্ক স্থাপন করতে। আওয়ামী লীগের রাজনীতিবিদরা ভারত সফরে দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়কে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয় বলেও তিনি জানান। আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর এই সদস্য আরো বলেন, বিরোধী দল শুধু বিরোধিতার জন্য মুখে মুখে ভারত বিরোধিতা করে।

কিন্তু অন্তরে তাদের ভারতপ্রীতি। আর এই সম্পর্ক থেকেই বিরোধী দলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ভারত সফর করতে যাচ্ছেন। বিএনপি ভারতকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করার চেষ্টা করছে বলে তিনি দাবি করেন। এব্যাপারে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর আরেক সদস্য সতীশ চন্দ্র রায় জাস্ট নিউজকে বলেন, সামনে যেহেতু নির্বাচন তাই নেতাদের এ সফরে নির্বাচনী স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় থাকতেই পারে। আগামী নির্বাচন নিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের নানা মতামতের কথা রাজনীতিবিদদের অবহিত করতে তাদের ডাকা হতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বর্তমানে দিল্লি সফররত আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ভারতের পল্লী উন্নয়ন, পানীয় জল ও পয়ঃনিষ্কাষণমন্ত্রী জয়রাম রমেশের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তিনি ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জীসহ অন্য রাজনীতিবিদদের সাথেও বৈঠকে মিলিত হতে পারেন বলে আশা করা যাচ্ছে। অক্টোবরের শুরুতে ভারত সফরে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী। উড়িষ্যায় কৃষিবিষয়ক একটি অনুষ্ঠানে তার যোগদানের কথা রয়েছে। তবে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ দূত হিসেবে ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জীসহ সে দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এবং সরকারি ও বিরোধী দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

এ বৈঠকে দেশের চলমান রাজনীতির পাশাপাশি আগামী নির্বাচনে মহাজোটের জয়ের অন্তরায় নিয়ে আলোচনা করা হতে পারে। আরকেপি/এসএইচকে/১৯.০০ ঘ. ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।