আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অমুসলিম ভাইদের উদ্দেশ্যে খোলা চিঠিঃ মুহম্মদ(স) আপনাদের শত্রু নয়(মুসলিমদের জন্যও উন্মুক্ত)

পথিক তুমি বরই ক্লান্ত............... একটু জিরিয়ে নাও। । প্রিয় অমুসলিম ভাইয়েরা, আমার পক্ষ থেকে অনেক অনেক প্রীতি ও শুভেচ্ছা রইল। আমি একজন ধার্মিক মুসলমান হিসেবে নিজেকে পরিচিত করতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। কিন্তু আজকের এই খোলা চিঠিতে আমি কোন ধর্মের প্রতিনিধিত্ব করছি না।

আমি স্রেফ একজন সভ্য মানুষ হিসেবে এই চিঠিটি উপস্থাপন করছি। আপনারা জানেন ইসলাম ধর্মের শেষ নবী মুহম্মদ(স)। তিনি ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দে আরবের মরু প্রান্তরে জন্ম গ্রহণ করেন। ঐতিহাসিকভাবে স্বীকৃত যে, ওই সময়টা ছিল মানব সভ্যতার ইতিহাসে এক চরম বাজে সময়। অন্যান্য ধর্মের প্রচারক মহাপুরুষদের মত তিনিও তখন আলোকবর্তিকা হাতে কাজ করেছিলেন সমগ্র মানব জাতির কল্যাণে।

কিন্তু তিনি মানুষের কল্যাণে কাজ করতে গিয়ে অনেক নির্যাতনের সম্মুখীন হয়েছেন তখন। হয়ত আপনারা বলবেন, তিনি শুধু ইসলামের কল্যাণে কাজ করেছেন। একথা ঠিক নয়, কারণ তিনি ইসলাম ধর্ম প্রচার করেছেন যেমন ইসলামের জন্য, তেমনি মানুষকে অন্ধকার জগত থেকে বের করে আনতে। ইতিহাস সাক্ষী দেয় যে তিনি কাউকে জোর করে ইসলাম চেপে দেননি। বরং তিনি সব ধর্মের মানুষকে নিয়ে একত্রে বসবাস করেছেন।

অমুসলিমদের সাথে সন্ধি স্থাপন করেছেন, যদিও তারা বারবার তাঁর সাথে প্রতারণা করেছে। তথাপি তিনি অন্য ধর্মানুসারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সারাজীবন কাজ করে গেছেন। অসাম্প্রদায়িক চেতনায় গড়ে তুলেছেন তাঁর অনুসারীদের। মক্কা বিজয়ের সময় অমুসলিমদের গায়ে আঁচড়টি পর্যন্ত লাগতে দেননি। বরং তাঁর আপন চাচাকে হত্যা করে যে ব্যক্তি নাক-কান কেটে মালা গেঁথে পড়ে ঘুরেছে, কলিজা কেটে চিবিয়ে খেয়েছে, তাঁকে ক্ষমা করে দিয়েছেন।

শুধু তাই নয় তাঁর ঘরকে সবার জন্য নিরাপদ বলে ঘোষণা দিয়েছেন। সর্বোপরি একজন মহামানব কখনও কারোর শ্ত্রু হতে পারেন না, তিনি শুধু সবার জন্য কল্যাণময়ই হতে পারেন। মহামানবকে বুঝতে না পারাটা তাঁর অপরাধ নয়, বরং আমাদের অক্ষমতা। যাই হোক, এই মহামানবের আগমন সম্পর্কে অমুসলিমরা অনেক বেশি ওয়াকিবহাল ছিলেন। তাঁর আগমনের পূর্বে বিভিন্ন ধর্মের পণ্ডিতেরা ভবিষ্যৎ বাণী করেছিলেন তাঁর আগমন সম্পর্কে।

ইতিহাস বলে পণ্ডিতেরা জানতেন কারণ, তাদের ধর্ম গ্রন্থে এই মহামানবের আগমনী বার্তা ছিল। এতো গেলো ওই সময়ের কথা। এই যুগের বিখ্যাত অমুসলিম মনিষীর গ্রন্থও দাবী করে যে, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ট মহামানব মুহাম্মদ(স)। আমরা আজকে নিজেদের সভ্য বলে প্রমাণ করার চেষ্টায় ব্যস্ত। অথচ একজন মহামানবকে নিয়ে, তাঁর প্রচারিত ধর্মকে নিয়ে, তাঁর উপর নাযিলকৃত ধর্মগ্রন্থকে নিয়ে কুৎসা রটাতে আমাদের শিক্ষিত, সভ্য হৃদয় একটুও ব্যথিত হয় না।

শুধু তাই নয়, এই মহামানব এখন মৃত। একজন মৃত মানুষকে নিয়ে কুৎসা রটাতে অনুমতি দিয়েছে কি কোন ধর্ম, কোন শিক্ষা, কোন সভ্যতা? সভ্য মানুষ হিসেবে কি আমরা একবারও চিন্তা করে দেখেছি, যাকে নিয়ে কুৎসা রটাচ্ছি, অবজ্ঞা করছি সেই ব্যক্তির অনুসারীর সংখ্যা ১৫০ কোটিরও বেশি। যারা তাঁকে মনে প্রাণে ভালোবাসে। একজনের বাজে একটা কটূক্তিতে ১৫০ কোটি মানুষ কতটা কষ্ট পায়, ভেবে দেখেছেন? আপনাদের নিজেদের বেলায় এমনটা ঘটলে কেমন লাগত, একবার ভাবুন? সবাই জানি সমাজের গুটি কয়েক চরম অসভ্য লোকের কাজ এগুলি। কিন্তু বারবার একই রকম চরম অসভ্যতা, উগ্রতা, নিকৃষ্টতা দেখানোর পরও কিন্তু আমরা ওদের থামাতে পারিনি।

কারণ ওদের কোন বিচার আমরা করতে পারিনি। বরং ওদেরকে প্রশ্রয় দিয়ে গিয়েছি। এর ফলে কী হচ্ছে? বিভিন্ন ধর্ম গোষ্ঠীর মাঝে বিভেদ, হানাহানি, অবিশ্বাস শুধুই বাড়ছে। আধুনিক বা সভ্য মানুষ যা কখনোই করতে পারে না। তাই আসুন আমরা আধুনিক, শিক্ষিত, রুচিশীল, সভ্য মানুষজন মিলে সুন্দরভাবে বাঁচতে চেষ্টা করি।

আমাদের পৃথিবীকে আমরা সুন্দর করে গড়ে তুলি। সকল জ্ঞানী-গুণী, বিখ্যাত ব্যক্তি, মহামানব সর্বোপরি সকল মানুষকে শ্রদ্ধা করতে শিখি, ভালবাসতে শিখি। আর পরমতসহিষ্ণুতার চর্চা করি। কৃতজ্ঞতা ভেজা আকাশ ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.