আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হাসানুল হক ইনু: যিনি কখনো মন্ত্রী এমপি হতে চান নি

হাসানুল হক ইনু, একজন অতি পরিচিত রাজনিতিবীদ। তিনি দীর্ঘদিন ধরে দেশের রাজনীতির সাথে যুক্ত। দেশের প্রতিটি আন্দোলনে লবন জোগাতে তার ভুমিকা অনস্বীকার্য। জন দরদী এই নেতার জনসমর্থন এতোই বেশী যে তিনি তার সমর্থকদের ছেড়ে কখনো সংসদে আসতে চাননি। নিজেকে পৃথক করতে চাননি তার প্রিয় সহযোদ্ধাদের কাছ থেকে।

তাই বার বার সংসদ নির্বাচনে দাড়ালেও এই মহান রাজনীতিবিদ ইচ্ছে করেই ফেল করতেন। আর কিছু সংখ্যক আবাল জনতা মনে করতো তার বুঝি কোনো জন-সনর্থন নেই, তাই তিনি ফেল কেরেন। আবাল জনতাকে দেখিয়ে দেয়ার জন্য একদা তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন, একবার সংসদ নির্বাচনে পাশ করবেন। আবালদের দেখিয়ে দিতে হবে তিনিও পারেন। এখানে তার ব্যক্তিগত চাওয়া পাওয়ার কিছুই ছিলোনা।

তিনি কখনো ক্ষমাতার লোভী নন। শুধুমাত্র আবালদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়ার জন্যই ছিলো তার এই সিদ্ধান্ত। তার এই মনোভাবের কথা জানতে পেরে আরেক মহান রাজননীতিবিদ 'দেশ প্রেমিক সার্টিফিকেট দাতা' শেখ হাসিনা ছুটে গেলেন তার কাছে। সময়োপযোগী এই সিদ্ধান্তের জন্য তাকে অভিনন্দন জানালেন। তাকে অনুরোধ করলেন তার দলের প্রতীক 'নৌকা' নিয়ে নির্বাচন করার জন্য।

হাসিনা তাকে এটাও বললেন, তিনি যদি নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করেন তবে শুধু তিনি (হাসিনা) নন, তার প্রতীক (নৌকা) ও সম্মানিত বোধ করবে। এর ফলে হয়তো সারা দেশে নৌকার জোয়ার সৃস্টি হবে। মানী লোক কি আর মানী লোকের কথা ফেলতে পারেন? ইচ্ছে না থাকা সত্বেও নৌকা নিয়ে নির্বাচন করতে তিনি রাজী হলে। শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার অনুমানই সত্যে পরিনত হলো। মহান নেতা ইনুর কারনে সারা দেশে সৃস্টি হলো নৌকার জোয়ার।

নির্বাচনে নৌকা নিরন্কুশ সংখ্যা গরিস্টতা অর্জন করলো। ইনুর প্রতি কৃতজ্ঞ শেখ হাসিনা প্রথমে প্রধানমন্ত্রীর পদ নিতে সংকুচ বোধ করছিলেন। পরে ইনু তাকে আশ্বস্থ করায় তিনি (হাসিনা) মন্ত্রি-পরিষদ গঠন করতে সম্মত হন। এবারও শেখ হাসিনা ইনুকে অনুরোধ করেন অন্তত: উপ প্রধানমন্ত্রীর পদ গ্রহন করার জন্য। সাধারন মানুষের কাছের লোক ইনু সে প্রস্তাবও সবিনয়ে ফিরিয়ে দেন।

এর পর কেটে গেছে প্রায় পৌনে চার বছর। এর মাঝে ইনুকে শতাধিকবার তার ইচ্ছে মতো মন্ত্রীসভায় একটি পদ নেয়ার জন্য রাস্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী অনুরোধ করেন যা ইনু সবিনয়ে প্রত্যাখ্যান করেন। অশেষে ২০১৪ সালের নির্বাচনকে সামনে রেখে শেখ হাসিনা মন্ত্রীসভায় যোগদেয়ার জন্য দেশের এই অবিসংবাধিত নেতা হাসানুল হক ইনুকে বিশেষ ভাবে অনুরোধ করেন। শেখ হাসিনা এবারও বিশ্বাস করেন ইনু যদি আবারও নৌকা প্রতীক নিয়ে আগামী সংসদ নির্বাচনে অংশ নেন তবে এবারও সারা দেশে নৌকার জোয়ার সৃস্টি হবে। আর তিনি গঠন করতে পারবে সরকার।

একজন প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধ আর কতবার ফিরিয়ে দেয়া যায়। তাই ইনু শেখ হাসিনাকে এবার সরাসরি না বলতে পেরেননি। মৌনতা অবলম্বন করেছেন। আর শেখ হাসিনাও ইনুর এই মৌনতাকে সম্মতির লক্ষন ধরে নিয়ে তাকে মন্ত্রী বানানোর জন্য তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছেন। দেখা যাক এখন কি হয়।

সারা দেশে ইনু তথা দেশ বিরোধীদের লোকের সংখ্যাও কম নয়। তারা অনেকেই অপপ্রচার চালাচ্ছে গত পৌনে চার বছর ধরে নাকি ইনু মন্ত্রী হওয়ার জন্য যার পর নাই চেষ্টা করেছেন। সম্প্রতি খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে মাইনাস করার ব্যাপারে শেখ হাসিনার সামনে ইনুর বক্তব্যকে তারা উদাহরন হিসেবে দেখাতে চাচ্ছেন যা অপপ্রচার ছাড়া কিছুই নয়। এমনকি কোনো কোনো পত্রিকা এ নিয়ে কার্টুন ও ছেপেছে। অথচ এসব আবালরা জানেই না যে ইনুকে মন্ত্রী বানানোর জন্য শেখ হাসিনা এই পৌনে চার বছর কি না করেছেন।

এখন যদি দয়া পরশ হয়ে ইনু নিজেকে মন্ত্রী সভায় অন্তর্ভুক্ত করেন তবে সেটা হবে শেখ হাসিনার একটি বড় অর্জন, যার জন্য তিনি গত পৌনে চার বছর যাবত চেষ্টা করে যাচ্ছেন। ইনু বিরোধীদের প্রকাশিত কার্টু। void(1); ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.