আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভারতীয় সুতায় বাজার সয়লাব হয়ে যাচ্ছেঃ হাসানুল হক ইনু



ভারতীয় সুতায় বাজার সয়লাব হয়ে যাচ্ছেঃ হাসানুল হক ইনু তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে রাষ্ট্রের কোন অঙ্গ আইন ভঙ্গ করলে তা এড়িয়ে যাওয়া উচিত হবে না বলে জানিয়েছেন জাসদ সভাপতি কমরেড হাসানুল হক ইনু এমপি। একই সঙ্গে তিনি ওই সময়ে আইনবহির্ভূত কর্মকাণ্ড তদন্তের জন্য সংসদীয় কমিটি গঠনের দাবি জানান। কমরেড হাসানুল হক ইনু ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দেশীয় বস্ত্র কলগুলো ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। ৩০ হাজার কোটি টাকার দেশীয় সুতা গুদামে মজুদ পড়ে থাকলেও ভারতীয় সুতায় বাজার সয়লাব হয়ে যাচ্ছে। তিনি অবিলম্বে চোরাইপথে ভারতীয় সুতা প্রবেশ বন্ধ করতে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

মঙ্গলবার রাতে জাতীয় সংসদের অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার সময় তিনি এ দাবি জানান। এছাড়াও আলোচনায় অংশ নেন আওয়ামী লীগের অধ্যক্ষ মতিউর রহমান, আবদুল হাই, মুরাদ হাসান, শাহ আলম মকবুল হোসেন, ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল, জাতীয় পার্টির গোলাম কিবরিয়া টিপু, নওয়াব আলী আব্বাস খান প্রমুখ। মহাজোট সরকারের দিনবদলের স্বপ্ন বাস্তবায়নের প্রশ্নে হাসানুল হক ইনু বলেন, দেশের বন্ধ কল-কারখানা চালু করতে হবে। চালু কারখানা রক্ষা ও বড় করতে হবে। সেটা না হয়ে এখন দেখা যাচ্ছে, চালু কারখানা বন্ধও হয়ে যাচ্ছে।

তাতে কর্মসংস্থানের মাধ্যমে দিনবদলের স্বপ্ন পূরণ ভঙ্গ হয়ে যাবে। এ প্রসঙ্গে তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, দেশের বস্ত্র কলগুলোতে লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে। সেই বস্ত্র কলগুলোর গুদামে বর্তমানে ৩০ হাজার কোটি টাকার সুতা আটকে পড়ে জট পাকাচ্ছে। আর বাংলাদেশের বাজার ভারতীয় সুতায় সয়লাব হয়ে যাচ্ছে। এটা চলতে দেয়া যায় না।

তিনি বলেন, অবিলম্বে সরকারের হস্তক্ষেপ করতে হবে এবং সুতা কলগুলোকে বাঁচাতে হবে। জাসদ নেতা কমরেড হাসানুল হক ইনু বলেন, রাষ্ট্রপতি থেকে সেনাপ্রধান, মন্ত্রী থেকে এমপি এবং সচিব সবাইকে জবাবদিহিতার ভেতর রাখা উচিত। সংসদে গত দু’বছরের কর্মকাণ্ড নিয়ে আলোচনা হওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি। ইনু বলেন, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নন। আইন লংঘনকারীরা যতই ক্ষমতাবান হোন না কেন, কাঠগড়ায় দাঁড় করানো উচিত।

সাংসদ কমরেড ইনু বলেন, রাষ্ট্রপতির ভাষণের জন্য তাকে ধন্যবাদ দিতে পারবেন না। কারণ তিনি চারদলীয় জোট সরকারের দুঃশাসন, দুর্নীতিবিরোধী অভিযান, রাজনীতিবিরোধী অভিযানে পরিণত, শেখ হাসিনাসহ নিরপরাধ নেতাকর্মীদের গ্রেফতারসহ এ প্রসঙ্গে তার ভাষণে কোন ব্যাখ্যা দেননি। তিনি সংবিধান লংঘন করে চারদলীয় জোটের কাছে মি· ইয়াজউদ্দিনে পরিণত হয়েছেন। রাষ্ট্রপতি ২৯ অক্টোবর প্রধান উপদেষ্টার শপথ নিয়ে জাতির জন্য কলংকজনক এক কালো অধ্যায়ের সূচনা করেন। তিনি রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদকে চারদলীয় জোটের অসাংবিধানিক কর্মকাণ্ডের সহায়তাকারী ক্রীড়নক আখ্যায়িত করে তার কৈয়ফিয়ত তলব করারও দাবি জানান।

ইনু বলেন, আজ বিএনপি রাষ্ট্রপতিকে ইমপিচমেন্টের দাবি করছে। এটা কি তাদের ভুল স্বীকার করার জন্য কিনা প্রশ্ন রাখেন তিনি। একই সঙ্গে ইনু ১/১১ সৃষ্টির ব্যাপারে সংসদে আলোচনার দাবি জানান। অতীত ভুলে যাওয়া উচিত নয় দাবি করে ইনু বলেন, যুদ্ধাপরাধী, বঙ্গবন্ধু হত্যা, কর্নেল তাহের হত্যা, ২১ আগস্ট শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টার বিচার হতে হবে। তিনি বলেন, মানুষ পরিবর্তন চেয়েছেন।

তাই মহাজোটকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী করেছেন। এখন সংসদকে সফল করতে দুঃশাসন ও সাম্প্রদায়িক রাজনীতির ব্যাপারে কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হবে। প্রয়োজনে সংবিধানের ৭০ ধারা সংশোধন করতে হবে। দিনবদলের জন্য রাজনৈতিক সংস্কার প্রয়োজন। একই সঙ্গে প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক সংস্কার করতে হবে।

শুধু মুক্তবাজার অর্থনীতি নয়- সামাজিক বাজারও প্রয়োজন। নীতিনির্ধারণীতে মানুষকে সামনে নিয়ে আসতে হবে। খাদ্য নিরাপত্তা, কর্মসংস্থান, বিদেশী বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও শিল্পোক্তাদের পৃষ্ঠপোষকতা দেয়ারও দাবি জানান তিনি। জোট সরকারের পাঁচ বছরের শাসনামলের সমালোচনা করে কমরেড হাসানুল হক ইনু বলেন, খালেদা জিয়া মুক্তিযুদ্ধ, প্রশাসন, বুদ্ধিজীবী, শহীদ মিনার, মন্দির সব জায়গায় আক্রমণ করেছেন। তিনি জনগণের প্রতি সংবেদনশীল ছিলেন না।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে নাভিশ্বাস উঠেছে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.