আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জামদানি শাড়ি, নকশি কাঁথা, ফজলী আম ভারতের?

আমি দলে যাই যত বন্ধন, যত নিয়ম কানুন শৃঙ্খল জামদানি শাড়ির প্যাটেন্ট এখন ইন্ডিয়ার কাছে! জিও-গ্রাফিকাল ইনডিকেটর আইনের (GI act) আওতায় এনে শুধু জামদানি না, ফরিদপুরের নকশি কাঁথাও পৃথিবীর কাছে এখন ভারতীয় পণ্য! রাজশাহীর ফজলী আমও! বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তি আইন ৭ বছর ধইরা খসড়া হইয়া অন্ধকারে পইরা আছে এই দেশে, দিনের আলো দেখে নাই। ওই দিকে গেল সব ভারতের আলোকিত শোকেস’এ। বিশেষ কইরা জামদানি শাড়ির কথা কই; ভারত এই শাড়ীর মূল হিসেবে অন্ধ্রপ্রদেশকে রেজিস্ট্রেশন করেছে, যেখানে ইতিহাসে, সময়ের বিভিন্ন অধ্যায়ে, পর্যটকদের বিবৃতিতে জামদানির উদ্ভব-স্থান অনুসন্ধানে পাওয়া যায় বাংলার নাম। ৩০০ খৃষ্টাব্দে কৌটিল্য তার লেখা বই অর্থশাস্ত্র’এ এই জামদানির কথা উল্লেখ করতে গিয়া বলেছিলেন যে এই বস্ত্র পুণ্ড্রে তৈরি হয়ে থাকে। বাংলাদেশের বগুড়ার প্রাচীন নাম হইল পুণ্ড্র।

আরব, চীনা, ইতালিয় ব্যবসায়ীরা এই শাড়ীর বৃত্তান্ত দিতে গিয়া উল্লেখ করছিলেন বাংলার কথা। আরব ভূগোলবিদ সুলায়মান তার প্রখ্যাত বই স্রিল সিলাত উল তওয়ারিখ'এ লেখেন যে রুমিতে জামদানির নকশার বুনন হয় মসলিন কাপড়ের উপর। তার বর্ণনায় স্পষ্ট যে এই রুমি আসলে বাংলা, আমগো বঙ্গদেশ। চতুর্থ শতাব্দীতে মরক্কো থেকে আসা অভিযাত্রী ইবনে বতুতা বাংলাদেশ পরিভ্রমণ কইরা গিয়া এর বর্ণনায় সোনারগাঁও এলাকায় তৈরি হওয়া জামদানির প্রশংসা করেছেন। অবশ্যই জামদানী জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছে সম্রাট আকবরের শাসনামলে।

ঢাকার আশপাশের এলাকা সোনারগাঁও, বাজিতপুর, ধামরাই ছিল জামদানী কাপড়ের জন্য বিখ্যাত। পল্লি কবি জসিমুদ্দিনের নকশী কাঁথার মাঠ আজ অধিগৃহীত। ঝগড়াঝাঁটির কিছু নাই, আমরাও এরে রেজিস্ট্রেশন কইরা নিতে পারুম। তাই আমাদের আরও এ ধরণের বাংলার পণ্যের চিহ্নিতকরন শুরু করা দরকার এখনই; যেমন, ফরিদপুরের নকশী কাঁথা, কুমিল্লার খাঁদি, সুন্দরবনের মধু, পদ্মার ইলিশ, রাজশাহীর ফজলী আম সহ অন্যান্য সকল আম, বগুড়ার দই ইত্যাদি। কিন্তু তার আগে দরকার বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তি আইণের পাশ।

তয় আবার এই আইনের পাশ একবার হইয়া গেলে ৮০-৯০ টাকায় ৬ টা ছবি আর কিনতে পারা যাইব না বোধ করি! নাম মাত্র মূল্যে গান শুনাও শেষ হইতে পারে; বই কেনাও! এটা কোন মৌলিক লেখা না। পত্রিকায়, ব্লগে আগেও বহুবার লেখা হয়েছে। ওই লেখাগুলা পড়ে, তার উপর ভিত্তি করে নিজেও একখানা পোষ্ট দিয়া, এই আইনের বাস্তবায়ন যে জরুরী সেই বোধের অস্থিরতায় অংশগ্রহণ করলাম। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.