আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

লিবিয়ায় মার্কিন রাষ্ট্রদূতসহ নিহত ৪ । ইসলামবিরোধী চলচ্চিত্র নির্মাণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ। এখন বাংলাদেশ কি কোন ভূমিকা পালন করবে ?

চলার পথ অনেক, সত্য পথ একটাই নয়া দিগন্ত অনলাইন ইসলামবিরোধী চলচ্চিত্র নির্মাণের প্রতিবাদে মঙ্গলবার রাতে বিক্ষোভকালে রকেট হামলায় বেনগাজিতে লিবিয়ায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতসহ চারজন নিহত হয়েছেন। লিবীয় কর্মকর্তারা আজ বুধবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। লিবিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরী বেনগাজিতে এক সরকারি কর্মকর্তা বলেন, ‘বন্দুকধারীদের গুলিতে আমেরিকান রাষ্ট্রদূত ক্রিস্টোফার স্টিভেন্স এবং দূতাবাসের তিনজন কর্মী নিহত হয়েছেন। ’ ত্রিপোলিতে মার্কিন দূতাবাস এ ব্যাপারে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু জানায়নি। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর একজন নিহত হওয়ার কথা জানালেও কারো নাম প্রকাশ করেনি।

লিবিয়ার ওই কর্মকর্তা জানান, বেনগাজিতে মার্কিন কনস্যুলে বিক্ষোভকারীদের হামলা শুরু হলে মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিরাপদ কোনো স্থানে যাচ্ছিলেন। তখন তার ওপর গুলিবর্ষণ করা হয়। তবে রাষ্ট্রদূত গুলিবিদ্ধ হয়ে নয়, দম বন্ধ হয়ে মারা গেছেন। তিনি বলেন, মৃতদেহগুলোকে ত্রিপোলি এবং সেখানে থেকে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যাওয়ার জন্য মার্কিন দূতাবাস একটি সামরিক বিমান পাঠিয়েছে। তিনি জানান, মহানবি হজরত মোহাম্মদকে (স.) নিন্দা করে যুক্তরাষ্ট্রে এক ইহুদির চলচ্চিত্র নির্মাণকে কেন্দ্র করে ওই বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়েছিল।

তারা কোনো গ্রুপের সদস্য কি না তা জানা যায়নি। বন্দুকধারীরা মঙ্গলবার রাতে বেনজাগিতে মার্কিন কনস্যুটে হামলা চালায়। তাদের ব্যাপক গোলাবর্ষণের মুখে লিবীয় নিরাপত্তা বাহিনী সরে যেতে বাধ্য হয়। হামলাকারীদের অনেকে ভবনটি লক্ষ করে গুলিবর্ষণ ও গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। তারা কম্পাউন্টটিতে আগুনও ধরিয়ে দেয়।

তবে রাজধানী ত্রিপোলি ছিল শান্ত। ত্রিপলিতে একই ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে সামাজিক সাইটগুলোতে করা পোস্টে আবেদন জানানো হলেও সেখান থেকে সংবাদদাতারা জানাচ্ছেন, সেরকম কোনো প্রতিবাদের ঘটনা এখনো দেখা যায়নি। এ দিকে লিবিয়ার ওই হামলার ঘটনার আগে, কায়রোতে মার্কিন দূতাবাসের সামনে, শত শত মানুষ ওই সিনেমার প্রতিবাদ জানাতে জড়ো হয়। প্রতিবাদকারীরা দূতাবাস ভবনের দেয়ালে উঠে পড়ে এবং মার্কিন পতাকা ছিঁড়ে ফেলে তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়। মিসরের গণমাধ্যমগুলোতে বলা হয়েছে, মুসলিমবিদ্বেষী একটি দল ওই সিনেমাটি তৈরি করে তা সামাজিক মাধ্যমগুলোতে ছড়িয়ে দেয়।

কায়রো থেকে সংবাদদাতারা বলছেন, সেখানে এ প্রতিবাদে মুসলিমদের সাথে খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীরাও অংশ নিয়েছেন। ওয়াশিংটনে দেশটির পররাষ্ট্র দফতরের একজন মুখপাত্র ভিক্টোরিয়া ন্যুল্যান্ড বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তারা মিশরের কর্তৃপক্ষের সাথে কাজ করে চলছেন। যুক্তরাষ্ট্র যখন নাইন ইলেভেন পালন করছিল, তখনই এই ঘটনা ঘটল। চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেছেন ইসরাইলি চলচ্চিত্রকার স্যাম ব্যাসিল। তিনি এখন আত্মগোপনে রয়েছেন।

ক্যালিফোর্নিয়ায় বসবাসরত মুসলিমবিরোধী মিসরীয় খ্রিস্টান মরিস সাদেক ছবিটির পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন। ছবিটি ইংরেজিতে নির্মাণের পর তা আরবি ভাষায় ডাবিং করা হয়। চলচ্চিত্রটির লেখক ও পরিচালক ব্যাসিল তার গোপন অবস্থান থেকে বার্তা সংস্থা এপিকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে ইসলামবিরোধী অবস্থানে অনড় থেকে বলেছেন, তিনি এই ধর্মটিকে ‘ক্যান্সার’ মনে করেন। তিনি বলেন, রাজনৈতিক বক্তব্য উস্কে দিতেই এটি নির্মাণ করেছেন বলেও জানান। তবে তিনি স্বীকার করেন, তার ছবিটিকে নিয়ে এমন ভয়াবহ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবে, তা তিনি অনুমান করতে পারেননি।

৫৬ বছর বয়স্ক ওই চলচ্চিত্রকার বলেন, তিনি মনে করেন তার ছবিটি বিশ্বের কাছে ইসলামের ত্রুটি তুলে ধরবে। তিনি এই বিষয় নিয়ে ২০০ ঘণ্টার একটি সিরিজ নির্মাণের পরিকল্পনার কথাও বলেছেন। ‘ইনোসেন্স অব মুসলিমস’ নামের দুই ঘণ্টার এই মুভিটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৫০ লাখ ডলার। এর তহবিল সংস্থান করেছে শতাধিক ইহুদি। সূত্র : বিবিসি, রয়টার্স, এপি ও আল জাজিরা।

http://dailynayadiganta.com/details/68986 ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।