পাসপোর্ট অফিস এ যে সকল ভুল বা অপূর্ণতার জন্যে মানুষের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় তা খুবই অবাক করার মত। যেমন, এক লোক একটি অপশনে শুধু টিক চিহ্ন দেয়নি। আরেক জন শধু তারিখ বসায়নি। এই কারনে তাদের লাইন থেকে বের হয়ে এটা ঠিক করে লাইন এর একেবারে পিছনে গিয়ে আবার লাইন ধরতে হলো। কিন্তু কেন ? টিক চিহ্ন দিতে বা তারিখ বসাতে কি কয়েক ঘনটা লাগবে? ওখানে দারিয়েই তো এটা ঠিক করা যেতো অথবা ওই অফিসারই তো ঠিক করে দিতে পারত।
হায়রে মানুষের ভোগান্তি!!! ৯০% মানুষ এমন খুব ছোট ভুল বা অপূর্ণতার জন্যে কয়েকবার একেবারে পেছন থেকে আবার লাইন ধরতে হয়। এর মাজে আরো মজার বেপার হল, যে কর্মতৎপর ব্যাক্তিটি ফরম জমা নেন, তিনি প্রতি ঘনটায় একবার করে উধাও হয়ে যান। ফিরে আসেন ঘনটা খানেক পর। অর্থাৎ, ৯.৩০টা থেকে ১.০০ টা পর্যন্ত ফরম জমা নেয়ার যে ৩.৩০ ঘনটা সময়, তার মধ্যে ফরম নেয়া হয় মাত্র ১.৩০ ঘনটা। এমন অনেকেই ছিল যারা ৪-৫ দিন ধরে ফরম জমা দিতে আসছে, তবু তাদের কাজ হচ্ছে না।
কারন তারা নিতান্তই সহজ সরল মানুষ। ফরম জমা গ্রহনকারি অফিসার একটি ভুল বা অপূর্ণতা দেখলেই বাতিল করছে। কিন্তু ভুল তো আরো থাকতে পারে। যাদের একাধিক ভুল আছে তাদের একাধিকবার লাইন ধরতে হয়। আর তাই তাদের ফরম জমা দিতেই ৪-৫ দিন চলে যায়।
কিন্তু ওই অফিসার কি একবারেই তাকে সকল ভুল গুলো ধরিয়ে দিতে পারে না? কর্তব্যরত সাহায্যকারি যারা আছেন তাদের ফরম দেখানো হলে তারা বলেন যে ওই অফিসার কি ভুল ধরবেন তা ওনার হাতে গেলেই বোজা যাবে। এইরূপ আরো অনেক অনেক অনেক গাঁজাখুরি বেপার সেপার আছে যা অসহ্য পর্যায়ের।
ফরম ও দরকারি কাগজপত্র একসাথে গছানোর একটি নিয়ম নাকি আছে, যা ফরম এ উল্লেখ নেই, ব্যাংক রসিদ ফরম এর সাথে ঘাম দিয়ে লাগাতে হবে, ষ্ট্যাপলার করলে হবে না, তাও ফরম এ বিন্দু মাত্র উল্লেখ নেই। এমন আরো অনেক নিয়ম আছে যা ফরম এ উল্লেখ নেই। সাধারন মানুষ তো ভুল করবেই।
ওখানে কারো সময় নেই বিস্তারিত জানানোর।
এবার আসি আমাদের (আমি ও আমার মামা) ভোগান্তিতে। আমরা সব ঠিক ঠাক মতো করেছি ও নিয়েছি। আমরা সকাল ৯.০০ টায় গিয়ে লাইন ধরলাম। আমাদের সামনে ১০-১২ জন ছিল।
আমাদের যখন সময় হল, কর্তব্যরত অফিসার কে ফরম দিলাম। উনি বললেন ব্যাংক রসিদ নং ভুল হয়েছে। আমরা সবাই জানি যে যেকোনো রসিদে “রসিদ নং” থাকে উপরে এবং সিল দেওয়ার মতো করে প্রিন্ট করা। আমার এই অতি সাধারন ধারনা টুকু ওখানে ভুল প্রমানিত হলো। সোনালী ব্যাংক যে রসিদ আমাদের দিয়েছে সেখানে “স্ক্রল নং” নামে একটি ঘর আছে।
ওই ঘরে ব্যাংক থেকে ৩ সংখ্যার একটি নম্বর হাতে লিখে দিইয়েছিল। ওই হাতে লিখা নম্বরটি নাকি রসিদ নং। অবাক হলাম। তাহলে রসিদ এর উপরের নম্বরটি কি ঠিক বুজলাম না আর রসিদ নং যে হাতে লিখা যায় তা আগে যানতাম না। এই বিষয়টিও ফরম এ উল্লেখ থাকা উচিত ছিল।
আমরা ফরম নিয়ে পাশের একটি গলির ভিতরের ফটোকপির দকানে গেলাম সাদা কালির জন্যে যা দিয়ে ফরম থেকে রসিদ নং টি মুছা যায়। ৬ সংখ্যার একটি নম্বর মুছতে ওনাকে ২০৳ করে দিতে হল। এর আগে ফরম এর সাথে রসিদ গাম দিয়ে লাগাতে ৫৳ করে দিতে হয়েছিলো । আমরা ভুল সংশোধন করে এলাম এবং প্রায় ৫০-৬০ জনের পর আবার লাইন এ দারালাম। এরপর জমাগ্রহন কারি অফিসার একবার উঠে কথায় যেন গেলেন, আসলেন ১ ঘনটা পর।
তারপর আবার তার কাজ শুরু, আমাদের ও সামনে মানুষ কমছে... আমরা বিভিন্ন মানুষের হয়রানি দেখছি... সময় গড়িয়ে যাচ্ছে... আমাদের সামনে আর মাত্র ৫ জন। অফিসার আবার উঠে গেলেন। এবার ওনার জন্যে অপেক্ষা..........................................অবশেষে উনি এলেন ১২.৩০ এ। ভাগ্য গুণে আমাদের কাজ হয়ে গেলো। আমাদের যেখানে ভুল ছিল সেখানে উনি ভুলেও তাকাননি।
শুধু আমাদের কাগজপত্র গুলো দেখে জমা নিয়ে নিলেন। এবার আর কোনো ভুল খুজেননি। কারো টাই খুজেননি। এতে বেশ অবাক হলাম। তবে উনি আগে সাবার যে ভুল গুলো ধরেছেন তার মানে কি?
স্বস্তির নিঃশ্বাস নিয়ে আমাদের আবার অপেক্ষা ভিতর থেকে ডাক আসার।
ডাক আসলো। তবে ফরম এ আগামি কালের তারিখ দেখলাম এবং জানলাম আমাদের কাল আবার যেতে হবে। তাই মানসিক প্রস্তুতি নিলাম আগামিকালের হয়রানির জন্যে। আর এই দীর্ঘ লিখাটি যারা পরেছেন, তারাও মানসিক প্রস্তুতি নিন আগামি কালের হয়রানি সংক্রান্ত আরেকটি লিখার এর জন্যে। হে হে হে...... ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।