আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আপনি কী জানেন, নিজের অজান্তেই আপনি বহন করে চলেছেন এইচআইভি ভাইরাস?! পর্ব -৩

মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক যে কোন সমস্যায় মেইল করুন counselingbd@gmail.com ঠিকানায় সখিনার মা একেবারেই সতী-সাধ্বি নারী। কখনও অবৈধ মিলন করেনি,ড্রাগ নেয়নি, এমনকি রক্তও নেয়নি। তারপরেও তিনি এইচআইভি পজেটিভ ! কীভাবে? ভাবছন সখিনার বাপ অজায়গায় যায় বা ড্রাগ নেয়? না, তিনিও অত্যন্ত সৎ, ধার্মিক এবং একটি মসজিদের ইমাম। তাহলে কীভাবে ঘটল এই দূর্ঘটনা? (প্রথমে মডুদের বলছি। লেখাটায় কিঞ্চিত ১৮+ বিষয় থাকতে পারে।

জানবেন, সেটা বিষয়ের প্রয়োজনে। পাঠক, আপনার বয়স যা'ই হোক লেখাটা পড়ুন। কারণ বিষয়টা সবার জন্যই জরূরী। পড়তে শুরু করলেই বুঝবেন, এই বিষয়ে আপনি কিছুই জানেন না। যারা শুধুমাত্র মজা বা টিজ করতে চান তাদের জন্য এই পোস্টটি নিষিদ্ধ!! কেননা একেকজন একেক দৃষ্টিভঙ্গিতে বিবেচনা করে আপনি যদি খারাপ দৃষ্টিতে বিবেচনা করেন তবে সেটা আমার ভালো লাগবেনা।

যদি সম্ভব হয়, জনস্বার্থে লেখাটা শেয়ার করুন। তবে লেখার সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এইখানে ডাক্তারী বিষয় খুব বেশী আলাপ করা হয়নি, বরং এইচআইভি সম্পর্কে মানুষের দৃষ্টিভংগী এবং বিশ্বাসের উপর জোর দিয়েছিআরেকটা কথা, এই লেখার সকল ঘটনা কিঞ্চিৎ অদল বদল করা হয়েছে গোপনীয়তার স্বার্থে । বাস্তবের কারো সথে মেলানো বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। ) সখিনার বাপ থাকে কুয়েতে।

একটি মসজিদের ইমাম তিনি। এখানে অনেক বাংগালী থাকে, অন্যদেশেরও বহু প্রবাসী আছে। সখিনার বাপ এই মুসলিম দেশে এসে অবাক হয়ে দেখেন, দেশ থেকে আরব দেশগুলোকে যা ভাবতেন ধশগুলো ঠিক তেমন নয়। এখানে অন্দরমহলে অবাধে চলে যৌনাচার, এমনকী ব্রথেলও আছে। ব্রথেলে আছে ইজিপশিয়ান, লেবাননি সহ নানা দেশের সুন্দরীরা।

সখিনার বাপ শুনেছেন , বেশীরভাগ নারী সংসর্গ বঞ্চিত বাংলাদেশী তাদের শ্রমের টাকা সেখানেই উড়িয়ে দেয়। সখিনার বাপ রাস্তায় হাঁটেন,মনে মনে এস্তেগফার পড়েন আর আগামী জুমার খুৎবার মুসাবিদা করতে থাকেন মনে মনে । সিদ্ধান্ত নেন, আগামী খুৎবায় অবৈধ যৌনাচারের বিষয়টা ফোকাস করবেন। ভাবতে ভাবতেই কিছউটা অন্যমনষ্ক হয়এ পড়েন তিনি। আর তাতেই ঘটে দূর্ঘটনাটা।

অবশ্য ভাগ্যটা ভালই, গাড়িটা আঘাত করে পলিয়ে যায়নি, তাকে নিয়ে যায় একটা নিকটবর্তি হাসপাতালে। একটা ছোট্ট অপারেশন আর একব্যাগ রক্ত নেয়ার পরেই সেরে ওঠেন তিনি। অবশ্য শরীরটা দুর্বল। এই অবস্থায় ছুটি নিয়ে দেশে আসেন তিনি। সখিনার মা'র সেবা আর ভাল ভাল রান্না খেয়ে শরীরে বল ফিরতে থাকে।

ভালবাসাবাসিও বেড়ে যায় শরীরে জোর বাড়ার সাথে সাথে। একসময় সুস্থ হয়ে প্রবাসে ফিরে যান সখিনার বাপ, যাবার সময় সখিনার মায়ের পেটে রেখে যান সখিনার ছোট ভাই কিংবা বোনকে। ডাক্তার সখিনার গর্ভবতী মায়ের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে গিয়েই পয়ে যায় এই মারণ ভাইরাস। কোথা থেকে এল ভাইরাসটা? সখিনার বাপের শরীর থেকে! তিনি পেয়েছেন অ্যক্সিডেন্টের পর যে রক্ত নিয়েছিলেন সেই রক্তদাতার শরীর থেকে। দুজনের কেউই কোন অসামাজিক কর্মকান্ডে না জড়িয়েও দু'জনই হয়ে গেলেন এইচআইভি পজিটিভ।

বাকী জীবন সমাজের বাঁকা দৃষ্টি নিয়ে বাঁচতে হবে তাদেরকে নিজেদের কোন দোষ না থাকা স্বত্বেও। এইরকমই অভাবিত কোনভাবে আপনার রক্তেও এসে পড়তে পারে এইচআইভি ভাইরাস, তাই আজই পরিক্ষা করান আর জেনে নিন কীভাবে ছড়ায় এইচআইভি ভাইরাস। এখন আসি এইচআইভি সংক্রমণের কারণগুলো প্রসঙ্গে.. যে কারণটি সবার প্রথমে মাথায় আসে সেগুলোতে যাবনা, চেষ্টা করব যা অনেকের অজানা সে বিষয়গুলো তুলে ধরতে। @ একই সুঁই সিরিঞ্জ ভাগাবাগি করে ব্যবহারের কারণে---এইখানে যে বিষয়টি সবচেয়ে জরুরী তা হলো বিশেষ করে যারা নেশা করে তাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। কিন্ত কখনো ইনজেকশন নিতে গেলেও নতুন সিরিঞ্জ কিনা তা যাচাই করা জরুরী।

আমি প্রচুর ড্রাগ অ্যাডিক্ট ক্লায়েন্ট দেখেছি যারা অনেকদিন ধরে নেশা করছে কিন্তু তাদের মধ্যে এইচআইভি ধরা পড়েনি কিন্তু হয়তোবা কেউ কয়েকবার ইনজেকশনের নেশা নিয়েছে ভাগাভাগির মাধ্যমে তাদের মধ্যে এইচআইভি পাওয়া গেছে। আসলে বিষয়টি নির্ভর করছে যার সাথে সে শেয়ার করছে তার শরীরের এই ভাইরাইসের উপস্থিতির উপর। বেশিরভাগ সময় দেখা যায় তারা নিজেরাও জানেনা যে তাদের শরীরে এই ভাইরাস আছে যার কারণে যে নিজের জানে জীগর বন্ধু ছাড়া অন্য কারো সাথে সিরিঞ্জ শেয়ার করেনা তাদের ক্ষেত্রে দেখা যায় সংক্রমণ হচ্ছে। @যে বিষয়টি বেশিরভাগ মানুষের অজানা তা হলো মা হতে শিশুর মধ্যে সংক্রমণ; মা হতে শিশুর মধ্যে যায় বাচ্চা গর্ভকালীন সময় থাকা কালীন সময়ে ও বাচ্চা যদি এইচআইভি আক্রান্ত মায়ের বুকের দুধ পান করে। মজার বিষয় হচ্ছে বেশিরভাগ মানুষ জানেনা যে একজন এ্ইচ আইভি আক্রান্ত গর্ভবতী মা একজন সুস্থ শিশু মানে এইচআইভি নেই এমন শিশুর জন্ম দিতে পারে।

আসলে এইচআইভি আক্রান্ত একজন মায়ের কাছ থেকে শরীরে যদি এইচআইভি ভাইরাসের পরিমাণ কম একজন এইচআইভি আক্রান্ত মায়ের কাছ থেকে তার গর্ভের সন্তানের মধ্যে এইচআইভি যাওয়ার সম্ভাবনা কিন্তু ১০০% নয় ১৫-৪৫%। তার মানে হলো একজন এইচআইভি আক্রান্ত মা যদি চিকিৎসা না নিয়ে থাকেন কাহলেও বাচ্চার মধ্যে এইচআইভি সংক্রমিত নাও হতে পারে। এবং এই সংক্রমণের হার % আরো কমে ৫% এর কম হয়ে যায় যদি এইচআইভি আক্রান্ত মা যদি চিকিৎসা নিয়ে ও ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে থাকেন। এই তথ্যের মানে কিন্তু এই নয় যে এইচআইভি আক্রান্ত মানুষকে বাচ্চা নিতে উৎসাহিত করা, আমার উদ্দেশ্য হলো সঠিক তথ্য যেন পায় মানুষ। আমি আমার আগের প্রতিষ্ঠানে কাজ করার সময় দেখেছি যেসকল এইচআইভি আকোন্ত মা আমাদের পরামর্শ অনুযায়ী ও পরির্পর্ণ চিকিৎসা নিয়ে বাচ্চা জন্ম দিয়েছেন সকল বাচ্চাই এইচআইভি মুক্ত হয়ে এই পৃথিবীতে জন্ম নিয়েছে।

এ যে একজন মা-বাবার কছে কত বড় প্রাপ্তি এটা যদি নিজের চোখে না দেখতাম তবে বিশ্বাস করতে পারতামনা। @বহুল প্রচলিত কারণ যৌন মিলন এবং যার মাধ্যমে এইচআইভি সবচেয়ে বেশি ছড়ায়। আমি এখানে সে বিষয় তুলে ধরছি যা অন্যের অজানা থাকতে পারে। আমার মনে আছে আমি একদিন অফিসে বসে আছি তখন এক ক্লায়েন্ট এসে অস্থির হয়ে কান্নাকাটি করছে। কাইন্সেলিং এর সময় সে যে বিষয়টি বলল তা হলো সে একটি দেশের বাইরের ভার্সিটিতে পড়ে ও সেখানে একটি মেয়ের সাথে তার গত এক বছর ধরে শারীরিক সম্পর্ক আছে এবং সম্প্রতি মেয়েটির শরীরে এইচআইভি ধরা পড়েছে।

এখানে যে বিষয়টি গুরুত্বর্পর্ণ তা হলো ঝুঁকির্পূর্ণ শারীরিক মিলন হলে এইচআইভি সংক্রমণের সম্ভাবনা বেশি থাকে কিন্তু শারীরিক মিলন হলেই যে এইচআইভি ছড়াবে ব্যাপারটি তা নয়। (কি ব্যাপার খুশি হয়ে গেলেন মনে হচ্ছে বলা হয় যে এইচআইভি আক্রান্ত মানুষের সাথে ১০০ বার প্রতিরোধক ছাড়া যৌন মিলন করলে ১বার সম্ভাবনা থাকে এইচআইভি আক্রান্ত হওয়ার (যদিও এই রেশিওটি আপেক্ষিক, কোন স্ট্যাটান্ডারাইজ কিছু নয়) কিন্তু ভাই ও বোন সকল , এই একবার যে কোনবার সে বিষয়ে কেউ নিশ্চয়তা দিতে পারেনা। এটা হতে পারে প্রথমবার বা হতে পারে ৫০ তম বা ১০০ তম বার!! এটা নির্ভর করে ঐ মানুষটির শরীরে ভাইরাসের পরিমাণ কেমন ও পার্টনারের শারীরিক অবস্থা কেমন তার উপর। তাই কানা মামার থেকে নাই মামা ভালো, কি বলেন আপনারা তো দেখি কিছুই জানেনা আরো জানুন: প্রথম পর্ব : Click This Link দ্বিতীয় পর্ব : Click This Link ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.