লেখার মতো কিছু নেই
সকালের ঘুমটা ভাঙ্গার কিছুক্ষনের মাঝেই হৃদয়ের ফোন।
কি খবর, কেমন আছো?
ভোট দিতে কখন যাচ্ছো?
বললামঃ যাবো, দেখি দুপুরের দিকে।
জীবনের প্রথম ভোট দিতে যাবো আজই। প্রথম দিকে লম্বা লাইন থাকতে পারে তাই বেলা বাড়লে যাওয়ার চিন্তা ছিলো। কিন্তু আম্মুর ডাকাডাকিতে আর পারলাম না।
তারাতারি চল..... পরে ঝামেলা হতে পারে, একা একা কিভাবে ভোট দিবি, রোদের ভিতরে সিরিয়ালে থাকতে হবে ইত্যাদিতে আর বসে থাকার উপায় নেই।
হৃদয়ের সাথে কথা বলতে বলতে একটা রুটি গলধঃঘরন করে রেডি হয়ে নিলাম দ্রুত।
চললাম প্রথম ভোট দিতে। বাসা থেকে ১০ মিনিট দূরের স্কুলে ভোট কেন্দ্র। নানু,আম্মু, বড় খালা, কাজিনের বউ মানে আমাদের ভাবী আর আমি সহ আমরা ৫ জন।
পথে পথে বড় খালা করে যাচ্ছেন নারীদের মাঝে পছন্দের প্রার্থীর ক্যাম্পেইন।
অল্প কিছুক্ষন হলো ভোট দেয়া শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই আমরা হাজির। যতটুকু ভীড় মনে করেছিলাম তখনো ভোটারের উপস্থিতি ততটা নাই। কিছুটা প্রশান্তি লাগলো .... নাহ দ্রুতই ভোট দিয়ে ফিরতে পারবো।
ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হতেই বিপত্তি।
লাইনে দাড়াতেই নামলো বৃষ্টি, লাইন ছেড়ে গিয়ে আশ্রয় নিতে হলো পাশের দোকানের ঝাঁপের নিচে। অল্প কিছুক্ষনের মাঝেই বৃষ্টি চলে গিয়ে রোদ ঝলমলে আকাশের দেখা মিললে।
প্রথমে এক সিরিয়ালে দাড়ালে নতুন ভোটারের ভোটারের লাইন ভিন্ন হওয়ায় আম্মুর আর বড় খালার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়লাম। সিরিয়াল শেষে যখন সামনে গেলাম তখন তো মাথায় হাত..... কেন্দ্রে গেলাম ভোট দিতে কিন্তু ভোটার নাম্বার কত তাই তো জানিনা..... আইডি কার্ড নিয়ে গিয়েছি কিন্তু তা দিয়ে তো আর ভোট দেয়া যাবে না, এই কথা কে জানে?
ভোটার নাম্বার জানার স্থান দেখিয়ে দিলেন ভোটকেন্দ্রে নিয়োজিত একজন মুরুব্বী। সেখানেও বিপত্তি…. খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা আমার সিরিয়াল নাম্বার।
অবশেষে পাওয়া গেলো,নাম, বাসার এড্রেস ঠিক আছে কিন্তু আইড কার্ডের সিরিয়ালে মিলছে না। আশে পাশে কেউ নাই পরিচিত। খুবই বিব্রত লাগছিলো। উদ্ধার করলেন এলাকার এক আঙ্কেল……….. আরে ওতো আমাদের রহমান ভাইর মেয়ে। সব ঠিক আছে যেহেতু ভোট দেয়ার ব্যবস্থা করে দাও।
যাক বাবা বাঁচা গেলো।
নির্দিষ্ট রুমে প্রবেশ করে কি করবো ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলাম না। কিছুক্ষন দাঁড়িয়ে থাকলাম। সহযোগিতা করলেন এক আপু। দেখিয়ে দিলেন কি করতে হবে।
তার সহায়তায় আঙ্গুলে অমোচনীয় কালি লাগানো, তিনটি ব্যালটের জন্য টিপসই দেয়া, ব্যালট ও সিল সংগ্রহ করে ভোট দেয়ার প্রস্তুতি সম্পন্ন। কিন্তু ভোট যে দিতে হবে কালো কাপড় দিয়ে ঘেরা “নিজের ভোট নিজে দিন, যাকে খুশি তাকে দিন” লেখা গোপন স্থানে তা কি আর ফাষ্ট টাইম ভোটার হিসেবে আমি জানি??? ভোট বক্সের কাছে দাড়িয়েই ভোট দেয়া শুরু করছিলাম ……….. হাঁক দিলেন সেই আপু…. এই কি করো, কি করো? ভোট তো দিতে হবে ঐ জায়গায় গিয়ে। আবারো বিব্রত হলাম এখানে। রুমে উপস্থিতরা কেউ কেউ একগাল হাসি দিতেও ভুললেন না।
গোপন স্থানে ভোট দিয়ে ফিরে এলাম ব্যালট ভাঁজ না করেই।
সেই আপুর হেল্প নিয়ে ভাঁজ করে তিনটি ব্যালট ফেলে দিলাম ভোট বক্সে। …………………. যাক অবশেষে দিয়ে ফেললাম জীবনের প্রথম ভোট।
বেরিয়ে এসে মা খালা কাউকে আর পেলাম না। রিকশা নিয়ে সোজা চলে আসলাম বাসায়।
বাসায় এসে উল্টো ফাঁপড় দিলাম হৃদয়কে।
আমার আগে ভোটার হয়েও এখনো ভোট দিতে পারলে না, আমি ফাষ্ট। …………
দেখা যাক এবার ভোট কাজে লাগে কিনা????
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।