আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইন্ডিয়ান বাংলা নাটক এবং আমাদের নাটক

বাংলাদেশের নাটকে মান সমাদৃত হলে্ও আজকাল আমরা বাংলাদেশের নাটক কম দেখি। স্যাটেলাইটের কল্যানে ভিনদেশীয় সংস্কৃতি উপভোগ করা খুব সহজ সাধ্য। টিভি খুলে আর দেশি চ্যানেল দেখার সুযোগ কম। বাচ্চারা টিভি খুললে ইন্ডিয়ান কার্টুন আর মহিলারা স্টার জলসা অথব জি টিভি। দেশীয় চ্যানেল দেখার সুযোগ নেই বললেই চলে।

মহিলারা বিশেষ করে স্টার জলসার এত ভক্ত যে প্রয়োজনে স্বামীর সংসার চাড়তে রাজি তবু স্টার জলসার একটা ইপিসোড মিস করতে রাজি নয়। এই হল তাদের অবস্থা। ভারতীয় বাংলা নাটক গুলি কেন এত জনপ্রিয়, তা একটু বিশ্লেষণ করা যাক- আমার ব্যক্তি পর্যালোচনা থেকে দেখতে পাই ভারতীয় নাটকের প্রায় বেশির ভাগ নাটকে কাহিনীর তেমন গভীরতা নেই, সংলাপে তেমন প্রান নেই, গাম্ভীর্যতা নেই। তবে আছে- মানুষের আদিম গোপন বাসনা, পরকীয়া, বহুবিবাহ এই সকল জটিল প্রেম রসাযণ এবং এগুলো ইন্ডিযান বাংলা নাটকের মূল উপজিব্য। পুরুষের চেয়ে মহিলারা পরকীয়ায় বেশি স্বতস্ফূর্ত এবং মহিলারা এগুলো গুগ্রাসে দেখে।

প্রায় প্রত্যেকটি নাটকে বিবাহ প্রসংগ থাকবেই। এবং সেখানে বিবাহ প্রসংগে দেখা যাবে নায়ক আগে একজনকে বিবাহ করে আছেন কেউ জানে না এখন আবার বিয়ের পিড়িতে বসতে যাচ্ছে। আবার দেখা যাবে বিয়ের আগ মুহুর্তে বর অথবা কনে পাল্টে যাচ্ছে। অথবা দেখা যাবে ভাগ্যের জটিলতায় নায়ক দুই বিবাহ করে করেছেন তা কেউ জানে না এবং হতে পারে তারা একে অপরের বোন। হিন্দু ধর্মে বহু বিবাহের কোন বিধান নেই।

সতীদাহ প্রথা একসময় ছিল। রামায়নে সীতা রাবন কর্তৃক অপহৃত হয়। রাম চন্দ্র তার ভাই লক্ষণ এবং বানরের সহায়তায় লংকা থেকে সীতাকে উদ্ধার করে আনেন। আগুনে পরীক্ষিত হয় সীতার সতিত্ব। কিন্তু তার প্রজা সাধারণের মনোরঞ্জনের জন্য রাজা দশরত সেদিন হৃদযের সকল আবেগ ভালবাসা অবদমিত করে সীতাকে বনবাসে পাঠান।

হিন্দু পুরানে বহু বিবাহ এবং নারী চরিত্রের বিশুদ্ধতা কঠোর ভাবে নিয়ন্ত্রিত থাকলেও বর্তমান কালচার তা থেকে অনেক অনেক দুরে। বঙ্কিম চন্দ্র তার 'কৃষ্ণকান্তের উইল' উপন্যাসে রোহিনীকে দিয়ে পরকীয়া করান। এবং পরবর্তীতে রোহিনীকে হত্যা করেন। তখন সমালোচকরা বলেন যে, বঙ্কিম চন্দ্র গোড়া হিন্দু তিনি রক্ষনশীল সাহিত্যিক তাই তিনি রোহিনীকে হত্যা করেছেন। কিন্তু বর্তমান নাট্যকাররা আর গোড়া হিন্দু নন।

বোকার মত তারা রোহিনীকে হত্যা করবেন না। তারা রোহিনীকে বাঁচিয়ে রাখবেন নিজেদের জন্য এবং সমাজের জন্য। তারা আরো রোহিনী তৈরি করবেন। তার থেকে পরকীয়ার রস আস্বাধন করবেন। নাটককে বলা হয় সমাজের দর্পন।

সাধারণত চারিপার্শ্বের সমাজ ব্যবস্থার প্রতিফলন। তাই ভারতীয় নাটকে দেখা যায় যে তারা তাদের নিয়ম পাল্টাতে চাচ্ছে। বহুবিবাহকে এবং পরকীয়াকে তারা সামাজিক রূপ দিতে চাচ্ছে। আমার একথার সাথে অনেকে একমত নাও হতে পারেন। কিন্তু আমাদের দেশের নাটকেও প্রেম ভালবাসা দেখানো হয় কিন্তু তাদের দেশের মত এমন করে নয়।

আর আমাদের দেশের নাটকে পরকীয়াকে প্রাধান্য দেয়া হয় না। যতটা বেশি ভারতীয় নাটকে। এসকল নাটক দেখলে মনে হয় জীবনে বিবাহ এবং পরকীয়া ছাড়া আর জানার কিছু নেই। আর যাই হোক বাংলাদেশী নাটকে হাসির অনেক খোরাক থাকে। যদি তা এখন অতিরিক্ত ভাড়ামিতে পরিনত হচ্ছে।

তবুও নাটকে দর্শকদের হাসানোটাই কঠিন কাজ। বাংলাদেশী নাটকে এই চেষ্টা নাট্যকার এবং পরিচালকদের মধ্যে দেখা যায়। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.