২য় পর্ব
৩য় পর্ব
১৮৩৮ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর ৬৩ বছর বয়সে দিল্লির মসনদে বসেন বাহাদুর শাহ জাফর । তিনি ছিলেন নামেমাত্র সম্রাট। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির থেকে তিনি বার্ষিক ১ লাখ টাকা ভাতা পেতেন। এক সময়ের পরাক্রান্ত মুগল সম্রাটেরা পরিনত হয় কোম্পানির করুনার পাত্রে।
বাংলা জয়ের পর কোম্পানি এক এক করে ভারতীয় রাজ্য গ্রাস করতে থাকে।
১৮০৩ সালে দিল্লিতে ফরাসি ও মারাঠা সৈন্যদের আক্রমন থেকে সম্রাট শাহ আলম(বাহাদুর শাহ জাফরের পিতামহ) কে রক্ষার নামে ব্রিটিশ সৈন্যরা দিল্লিতে প্রবেশ করে। সম্রাটের মাথার উপর ব্রিটিশ রেসিডেন্টকে চাপিয়ে দেওয়া হয়। মূলত তখন থেকেই দিল্লিতে কায়েম হয় কোম্পানির পুতুল সম্রাট। শাহ আলমও ছিলেন কোম্পানির পেনশনভোগী। অথচ ১৭৬৫ সালে তিনিই কোম্পানিকে বার্ষিক ২৬ লক্ষ টাকার বিনিময়ে বাংলা, বিহার,ওড়িষ্যার দেওয়ানি পদ দান করেদ।
ক্ষমতা, প্রতিপত্তি ও সম্পদ সব কিছু হারিয়ে সম্রাট লালকেল্লায় প্রাসাদের চার দেয়ালের অভ্যন্তরে জীবন কাটাতে বাধ্য হলেন। ১৬৪৮ সালে সম্রাট শাহজাহান নির্মত এ কেল্লা হতে দীর্ঘদিন ভারত শাসন করেন মুঘল সম্রাটেরা। সম্রাটের ক্ষমতা ও মর্যাদা খর্ব করতে নানা উদ্যোগ নেয় কোম্পানি।
বাহাদুর শাহ জাফরের পিতা সম্রাট দ্বিতীয় আকবর শাহ রাম মোহন রায়কে ১৮৩০ সালে রাজা উপাধি ভূষিত করে দূত হিসেবে ব্রিটিশ রাজার নিকট প্রেরণ করেন। রাম মোহন রায়ের মিশন ছিল ভারত সম্রাটের পেনশন ও সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধির জন্য ব্রিটিশ রাজের নিকট সুপারিশ করা।
সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফরও কোম্পানির নিকট হতে সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধির চেষ্টা করেন। কোম্পানি পেনশন ও সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধির বিনিময়ে বাদশা উপাধি ত্যাগের প্রস্তাব দিলে তিনি তাতে রাজি হননি। অমর্যাদার মনোবেদনা ভুলে থাকার জন্য সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফর লালকেল্লায় সাহিত্যের আসর বসিয়ে সময় কাটাতেন। এখান থেকেই তৈরি হয় মির্জা গালিব, ইব্রাহিম জাউক, মমিন খান মমিন এবং দাঘের মতো বিখ্যাত উর্দু কবিরা। তিনি নিজেও কবিতা লিখতেন।
যতটা সম্রাট, তার চেয়ে মোটেও কম খ্যাত নন তিনি উর্দু কবি হিসেবে। রচনা করেন "লাগতা নাহি হ্যায় দিল মেরা" মতো জনপ্রিয় অনেক গজল।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।