সমস্ত প্রশংসা এক আল্লাহর জন্য। নবী (সাঃ) এর প্রতি শান্তি ও রহমত বর্ষিত হোক।
রমযানের শেষে খাদ্যদান করাকে যাকাতুল ফিতর বলা হয়। এর পরিমাণ এক "সা" (সৌদি উচ্চ উলামা পরিষদের নির্ধারণ অনুযায়ী এক "সা" = প্রায় ৩ কিঃগ্রাঃ)। ইবনে উমর (রাঃ) বলেন: রমযান শেষে ফিতর তথা রোযাভাঙ্গার যাকাত হিসেবে এক "সা" খেজুর অথবা এক "সা" যব প্রদান করা রাসূল (সাঃ) ফরয করে দিয়েছেন।
ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন: রোযা রেখে অনর্থক ও অশ্লীল কথাবার্তায় লিপ্ত হওয়ার পাপমোচক হিসেবে এবং মিসকীনদের ভরণ-পোষণস্বরূপ রাসূল (সাঃ) সাদাকাতুল ফিতর (রোযাভাঙ্গার সদকা) ফরয করেছেন । অতএব কোন অঞ্চলের মানুষ প্রধান খাদ্য হিসেবে যা খেয়ে অভ্যস্ত সে খাদ্য থেকে সাদাকাতুল ফিতর বা ফিতরা পরিশোধ করতে হবে। বর্তমান সময়ে প্রচলিত খাদ্যদ্রব্য হচ্ছে- খেজুর, গম ও চাল। কোন অঞ্চলের মানুষ যদি ভুট্টা, কিসমিস অথবা পনির প্রধান খাদ্য হিসেবে খায় তাহলে এগুলো দিয়ে সাদাকাতুল ফিতর আদায় করা যাবে। আবু সাঈদ খুদরী (সাঃ) বলেন: আমরা রাসূল (সাঃ) এর সময়ে এক "সা" খাদ্য প্রদান করে আমাদের সাদাকাতুল ফিতর আদায় করতাম।
সে সময় আমাদের খাদ্য ছিল- খেজুর, যব, কিসমিস ও পনির।
সাদাকাতুল ফিতর আদায় করার সময় হচ্ছে- ঈদের সকালে ঈদের নামাযের আগে। যেহেতু ইবনে উমরের হাদীসে এসেছে- মানুষ ঈদের নামাযে সমবেত হওয়ার পূর্বে সাদাকাতুল ফিতর পরিশোধ করার আদেশ দেয়া হয়েছে। [মারফু হাদীস] ইবনে আব্বাস (রাঃ) এর হাদীসে এসেছে- যিনি নামাযের পূর্বে আদায় করেছেন সেটি মকবুল যাকাত, আর যিনি নামাযের পর আদায় করেছেন সেটা অন্যান্য সাধারণ সদকার ন্যায় একটি সদকা। ঈদের একদিন বা দুইদিন আগে আদায় করলেও জায়েয হবে।
তবে এরচেয়ে বেশী আগে আদায় করলে তা জায়েয হবে না। যেহেতু এর নাম হচ্ছে- যাকাতুল ফিতর (রোযাভাঙ্গার যাকাত)। অতএব রোযাভাঙ্গার দিনের সাথে একে ঘনিষ্ট হতে হবে। যদি আমরা এ ফতোয়া দেই যে, রমযান মাস প্রবেশের সাথে সাথে যাকাতুল ফিতর আদায় করা জায়েয তাহলে তো এটা রোযার যাকাত হয়ে যাচ্ছে, (রোযাভাঙ্গার যাকাত তো হচ্ছে না)। সুতরাং এটি আদায় করার সঠিক সময় হচ্ছে- ঈদের দিন ঈদের নামাযের পূর্বে।
ঈদের এক বা দুইদিন আগে আদায় করার ব্যাপারে অতিরিক্ত সুযোগ দেয়া হয়েছে।
এক "সা" এর চেয়ে বেশী পরিমাণ খাদ্য যদি সাদাকাতুল ফিতর হিসেবে আদায় করা হয় তাহলে এটি বিদআত হিসেবে গণ্য হবে। আর যদি এক "সা" এর অতিরিক্ত অংশটি সাধারণ সদকা হিসেবে আদায় করা হয় তাহলে জায়েয হবে, এতে কোন অসুবিধা নাই। তবে শরীয়ত যে পরিমাণটা নির্ধারণ করে দিয়েছে তথা এক "সা" সে পরিমাণ প্রদান করাটাই শ্রেয়। কেউ যদি অতিরিক্ত কোন সদকা করতে চায় তাহলে সে আলাদাভাবে করতে পারে।
অনেকে বলে থাকেন: আমার কাছে মাপার পাত্র (সা) নাই। আমি এই পরিমাণ খাদ্য পরিশোধ করতে চাই যাতে আমি নিশ্চিত হতে পারি যে আমার উপর যে পরিমান আদায় করা ফরয তা আমি আদায় করেছি অথবা সতর্কতামূলক একটু বেশী আদায় করেছি তাহলে এতে কোন অসুবিধা নাই। আল্লাহ ভাল জানেন। নবী (সাঃ) এর সালাম ও শান্তি বর্ষিত হোক।
সূত্র: http://almoslim.net/node/52167 ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।