সবখানে নারীবাদ পুরুষবাদের হিপোক্রেসিটা না করলে তসলিমা নাসরিনের চলে না। তাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে যে নারীবাদের ভূত সওয়ার হয়েছে তা দেখে নারী হিসেবে নিজেরই লজ্জা লাগে। (Click This Link)হুমায়ূন আহমেদ প্রসঙ্গে তার লেখাটা দেখে কিছু কথা বলতে ইচ্ছা হল,কথাগুলো আউট অফ টপিক,আগেই বলছি।
তসলিমা নাসরিন আমার চেয়ে বয়সে অনেক বড়,পড়ালেখাও অনেক করেছেন। তবু আমার এই অতি স্বল্প জ্ঞানে একটা কথা বলার দুঃসাহস করছি যে তসলিমা নাসরিনের যেখানে শুরু নারীবাদের সেখানেই ইতি।
তার কিছু লেখা পড়েই আমার এ ধারণা হয়েছে। আমার কাছে নারীবাদের সংজ্ঞা আলাদা। পুরুষের জন্য কিছু করাকে তথাকথিত নারীবাদীরা দেখেন নিজেদের অবমাননা হিসেবে,আমি মনে করি এটাই আমাদের শক্তি। আমার বিচারে নারী পুরুষের চেয়ে অনেক অনেক শক্তিশালী। একজন নারীকে ছাড়া তার পুরুষ বন্ধুটি চলতে অপারগ।
পুরুষের দৈনন্দিন জীবনে নারীর ভূমিকা অপরিসীম,সকালে ঘুম থেকে উঠা থেকে শুরু করে রাতে ঘুমাতে যাওয়া পর্যন্ত নারীকে ছাড়া সে কল্পনাও করতে পারে না। আর আমরা নারীরা তাদের ছাড়াই জীবন অতিবাহিত করতে পারি। আমরা নিজেদের চালাতে পারি,নিজেদের অভাব নিজেরাই পূরণ করতে পারি। আমাদের কাছে পুরুষ নিতান্তই অসহায়।
তসলিমা নাসরিন একা নারীবাদী নন,বরং বেগম রোকেয়া,বেগম সুফিয়া কামাল,শহীদ জননী জাহানারা ইমাম তার চেয়ে অনেক বেশি করে গেছেন নারীদের উত্তরণের জন্য,নারীদের শিক্ষার জন্য।
তাদের তো নারীবাদ প্রতিষ্ঠা করার জন্য তসলিমা নাসরিনের মত পুরুষের ভেক ধরতে হয় নি,পুরুষের সাথে সব নোংরা বিষয়ে প্রতিযোগিতা করতে হয় নি। তসলিমা নাসরিনকে দেশছাড়া করা হয়েছে,কিন্তু বাংলাদেশের আনাচে কানাচে অনেক অনেক তসলিমা নাসরিন রয়ে গেছেন যারা নিজেদেরকে পুরুষের জীবনে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় করে তুলতে অক্ষম বরং নারীবাদের নামে বিড়ম্বনা সূচনা করাই তাদের কাজ। যে তিন মহিয়সী নারীর নাম বললাম তাঁরা সবাই অল্প বয়সে স্বামী হারিয়েছেন এবং বাকি জীবনটা একা কাটিয়েছেন। অনেকে হয়তো একে তাঁদের দুর্বলতা বলবেন,কিন্তু আমার মতে এ তাঁদের শক্তি। একা বাঁচার শক্তি নারীর আছে,পুরুষের নেই।
সৃষ্টিকর্তা নারীদের যে নিজস্বতা দিয়েছেন তা নষ্ট করে কেন যে পুরুষের অনুকরণ করতে যায় এটাই নারী হিসেবে আমার বোধগম্য হয় না। তবে শক্তির জোরে কোন পুরুষ যদি নারীকে দাবিয়ে রাখতে চায় তার অবশ্যই শাস্তি হওয়া দরকার। আমরা নারীরা নিজেরাই শিক্ষার জোরে তাদের সে ক্ষেত্র থেকে বেরিয়ে এসে প্রমাণ করব,তোমাকে আমার বিন্দুমাত্র প্রয়োজন নেই,আমাকেই তোমার প্রয়োজন। সেই প্রয়োজনীয়তা প্রমাণ করাটাও আমাদের মেয়েদেরই দায়িত্ব।
পরিশেষে বলতে চাই তসলিমা নাসরিনের দর্শন যেন অন্যকোন নারীকে প্রভাবিত না করে।
আমরা আরেকটু সহজভাবে চিন্তা করে নারী পুরুষ প্রতিযোগিতা বন্ধ করে পাশাপাশি চললে পৃথিবীটা হয়তো আরও সুন্দর হয়ে যাবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।