কোন নিয়ম নীতি না মেনে বাড়তি চাহিদার কারণে গুঁড়ো দুধ থেকে কোম্পানিগুলো তৈরি করছে পাস্তুরিত তরল দুধ। বাড়তি জনসংখ্যার অনুপাতে বাড়েনি গবাদি পশু পালন বা দুগ্ধ খামার। ঘাটতি মেটাতে কিছু প্রতিষ্ঠান গুঁড়ো দুধ থেকে তরল দুধ তৈরি করে তা আবার আসল তরল দুধের সঙ্গে মিশিয়ে বিক্রি করছে। কেউ আবার বিক্রি করছে সরাসরি।
মানব স্বাস্থ্যের জন্য স্পর্শকাতর এ পণ্যটি প্রস্তুত করতে নজরদারি বাড়ানোর কথা বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
নিরাপদ স্বাস্থ্যের বিষয় বিবেচনায় নিয়েই এ প্রক্রিয়ায় দুধ উত্পাদনকে অবৈধ বলছে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই)। এ বিষয়ে বিএসটিআইয়ের মহাপরিচালক একে ফজলুল আহাদ বলেন, ‘তরল দুধ তৈরিতে গুঁড়ো দুধ ব্যবহারের কোনো সুযোগ নেই। এটা সম্পূর্ণ অবৈধ। কোনো প্রতিষ্ঠান নিজস্ব প্রক্রিয়ায় এ কাজ করলে তা গ্রহণযোগ্য নয়।
কেননা, প্রাকৃতিক উপাদান থেকে গুঁড়ো দুধ তৈরি করা হয়।
কিন্তু গুঁড়ো দুধ থেকে আবার তরল দুধ তৈরিতে গুণগত মান নিশ্চিত করা সম্ভব হয় না। ’ এভাবে কোনো প্রতিষ্ঠান দুধ উত্পাদন বা প্রক্রিয়াজাতকরণ করলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।
জানা যায়, বাংলাদেশ দুগ্ধ উত্পাদনকারী সমবায় ইউনিয়ন লিমিটেডের (বিএমপিসিইউএল) মিল্ক ভিটা, ব্র্যাক ডেইরি ফুডসের আড়ং, প্রাণ ডেইরি লিমিটেডের প্রাণ, আকিজ ডেইরির ফার্মফ্রেশ, আফতাব ডেইরির অ্যামো ফ্রেশ মিল্ক ও এএইচজেড এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের টাটকা মিল্ক তরল দুধের চাহিদা মেটাচ্ছে। এসব প্রতিষ্ঠানের অনেকেই গুঁড়ো দুধ থেকে তরল দুধ বাজারজাত করছে বলে অভিযোগ করেছেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু এ প্রক্রিয়ায় দুধের গুণগত মান সঠিক আছে কি না, সে বিষয়ে কোনো তদারকি নেই।
ফলে জনস্বাস্থ্যও থাকছে ঝুঁকিতে।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, প্রতিষ্ঠানগুলো তরল দুধের চাহিদা মেটাতে কারখানায় গুঁড়ো দুধ ব্যবহার করছে। দেশের শীর্ষস্থানীয় দুধ উত্পাদনকারী প্রতিষ্ঠান আড়ং, মিল্ক ভিটা, টাটকার কারখানায় গুঁড়ো দুধ থেকে তরল দুধ উত্পাদিত হচ্ছে।
এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট এসব প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলেন, অন্যান্য প্রতিষ্ঠানও এ প্রক্রিয়ায় দুধ প্রস্তুত করছে।
এ বিষয়ে ব্র্যাক ডেইরি অ্যান্ড ফুড প্রোজেক্টের কারখানা ব্যবস্থাপক মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে দুধের চাহিদা আগের তুলনায় দ্বিগুণ।
কিন্তু দুগ্ধ মৌসুম না হওয়ায় গোখামার থেকে তরল দুধের সরবরাহ বাড়েনি। এ কারণে গুঁড়ো দুধ ব্যবহার করে তরল দুধ তৈরি করা হচ্ছে।
প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের বিপণন পরিচালক মো. কামরুজ্জামান কামাল বলেন, বাজারে যে পরিমাণ তরল দুধের চাহিদা রয়েছে, তা সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে এ জন্য পরিকল্পনা রয়েছে বাড়তি বিনিয়োগ করে ডেইরি কেন্দ্র গড়ে তোলার। বর্তমানে তরল দুধের বাড়তি চাহিদা মেটাতে বিভিন্ন কোম্পানি গুঁড়ো দুধ ব্যবহার করছে।
কিন্তু প্রাণের গুঁড়ো দুধ মেশানোর প্রয়োজন পড়ছে না বলে দাবি করেন তিনি। পাস্তুরিত তরল দুধ উত্পাদনের পাশাপাশি ইউএইসটি (আল্ট্রা হিট ট্রিটমেন্ট) পদ্ধতিতে তরল দুধ বাজারে ছাড়ছে প্রাণ। রমজানের বিশেষ চাহিদা মেটাতে আগে থেকেই গুঁড়ো না করে ইউএইচটি পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করা হয়েছে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।