হৃদয়ে আমার “একাত্তর” স্বপ্নে দেখি রঙিন ভোর! অনেক নাস্তিক একটা যুক্তি দেয় আল্লাহ্ যেহেতু সর্বশক্তিমান, তিনি এমন কিছু কি সৃষ্টি করতে পারবেন যাকে তিনি নিজেই ধ্বংস করতে পারবেন না ? এর উত্তরে যদি হ্যাঁ বলা হয় তবে পাল্টা প্রস্ন করা হয়, তাহলে তিনি সর্বশক্তিমান হলেন কি ভাবে ? আর যদি বলা হয়, না তিনি এমন কিছু বানাতে পারবেন না । তাহলে প্রস্ন করা হয়, যদি না পারেন তাহলে তিনি সর্বশক্তিমান থাকেন কিভাবে ??!! এখন এই প্রশ্নের উত্তর দিতে চেষ্টা করবো । প্রথমেই "সর্বশক্তিমান" শব্দটির ব্যাখ্যা দিতে চেষ্টা করব । আপনি যদি বলেন স্রষ্টা সর্বশক্তিমান, তাহলে এর অর্থ দাঁড়াবে তিনি সব কিছু করতে সক্ষম । অর্থাৎ অক্ষমতা বলতে তাঁর কোন কিছু নেই ।
আর এই গুনটি একমাত্র স্রষ্টার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য, মানুষ বা অন্য কোন সৃষ্টির ক্ষেত্রে মোটেও নয় । যিনি সর্বশক্তিমান তিনি সব কিছু করতে সক্ষম,অক্ষমতা তাঁর আচরণের একেবারেই বিপরীত । এটাই সত্যি । মহান আল্লাহ্ শুন্য থেকে সব কিছু সৃষ্টি করেছেন ! এখন বলেন শুন্য থেকে মানে কিছুই না থেকে, কোন কিছু সৃষ্টি করার ব্যাপারটি মানব জ্ঞানের কাছে একেবারে অভিনব ,দুর্বোধ্য বা অসম্ভব ঠ্যাকে কি না ?! এটি মানব জ্ঞানের কাছে দুর্বোধ্য ,অস্পষ্ট মনে হলেও মহান আল্লাহর পক্ষে সহজ এবং সম্ভব । এখানেই স্রষ্টা এবং সৃষ্টির মধ্যে পার্থক্য প্রমানিত হয় ।
যাই হোক, আপনি ভাবছেন আসলে আপনার মতো করে । আমারা জানি মানুষ শব্দ শুনে কান দিয়ে, মুখ বা অন্য কিছু দিয়ে নয় । আর এটাই স্বাভাবিক, কোন কিছু শ্রবণ করার জন্য কানই আমাদের একমাত্র ভরসা ! আবার সাপ কিন্তু জিহ্বা দিয়ে শোনে ! বাদুর মুখ দিয়ে মল ত্যাগ করে ! এই সব বাতিক্রম ধর্মী উদাহরণ থেকে একটি বিষয় সুনিশ্চিত ভাবে প্রমাণিত হয় । আমরা যেভাবে চিন্তা করি যেমন বলার জন্য মুখ, চলার জন্য পা, শোনার জন্য কান এর অন্যথা যে সম্ভব নয় এই ধারণা কিন্তু একেবারেই ঠিক না । তার অনেক প্রমাণ বিশ্ব চরাচরের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।
সামান্য সৃষ্টির পক্ষেই যদি এমনটি সম্ভব হয় তাহলে স্রষ্টার পক্ষে তো অসম্ভব হওয়ার কোন কারন দেখছি না । মানুষ তার জ্ঞান-বুদ্ধিতে যা ধারণ করতে পারেনা তার কোন ভিত্তি নেই, এরকম দাবির-ই আসলে কোন ভিত্তি নেই । এখন আপনি হয়তো বলতে পারেন, তার মানে স্রষ্টা যেহেতু এমন কিছু সৃষ্টি করতে সক্ষম যা তিনি নিজেই ধ্বংস করতে অক্ষম তাহলে কোন ভাবেই তাঁর পক্ষে "সর্বশক্তিমান" হওয়া সম্ভব না ?! আমি আপনাকে বলবো, তিনি এই ধরনের কর্ম সম্পাদন করতে যাবেনই বা কেন ? গোলাপের ঘ্রান যখন বাতাসে মিশে সুরুভি ছড়ায় তখন কেও আপনাকে বলে দেয় না যে আহা কতই না সুঘ্রাণ ! আপনি নিজে থেকেই অনুভব করেন, নিজে থেকেই বুঝতে পারেন । অবশ্য আপনার ঘ্রাণ ইন্দ্রিয় যদি সুস্থ থাকে ! নিজেকে সাহসী প্রমাণ করার জন্য আপনি কি পাহাড় থেকে লাফ দিয়ে দেখাতে চাইবেন, না সঠিক সময় সঠিক কাজটি সম্পাদন করে নিজেকে বুদ্ধিমান , সাহসী হিসেবে প্রমান করতে চেষ্টা করবেন ? নিতান্ত পাগল বা উন্মাদ না হলে কেউই এমনটি করতে চাইবেনা। মহান স্রষ্টা মানুষকে অনেক ক্ষমতা দিয়েছেন কিন্তু কোন মানুষের পক্ষেই সম্ভব না তার নিজেকে নিজে দর্শন করা, যদি না সে আয়না বা এরকম কোন কিছুর সাহায্য না নেয় ।
আপনি আকাশ-কুসুম অনেক কিছুই আপনার কল্পনায় নিয়ে আসতে পারেন, কিন্তু মনে রাখবেন ঘোড়ার ডিমের অস্তিত্ব আপনার কল্পনায় সম্ভব হলেও বাস্তবে কিন্তু এর অস্তিত্ব একেবারেই হাস্যকর, অযৌক্তিক ! স্রষ্টা কি পারবে না পারবে সেটা ভেবে বৃথা সময় নষ্ট না করে মৃত্যুর কথা ভাবুন । এতো যে জ্ঞান জাহির করেন, কেন এই জগতে এসেছেন আবার কেনোই বা চলে যাবেন এই মহাসত্য নিয়ে গভীর ভাবে চিন্তা করেছেন কি কখনো ? একবার ভাবনার গভীরে প্রবেশ করেই দেখুন না, দেখবেন স্রষ্টার কাছে নিজেকে এমনিতেই আত্মসমর্পণ করে দিতে ইচ্ছে করবে। আপনার বিবেকই খুলে দিবে সকল রহস্যের দ্বার ।
هُوَ اللَّهُ الْخَالِقُ الْبَارِئُ الْمُصَوِّرُ لَهُ الْأَسْمَاء الْحُسْنَى يُسَبِّحُ لَهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ
তিনিই আল্লাহ তা’আলা, স্রষ্টা, উদ্ভাবক, রূপদাতা, উত্তম নাম সমূহ তাঁরই। নভোমন্ডলে ও ভূমন্ডলে যা কিছু আছে, সবই তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করে।
তিনি পরাক্রান্ত প্রজ্ঞাময়।
He is Allâh, the Creator, the Inventor of all things, the Bestower of forms. To Him belong the Best Names . All that is in the heavens and the earth glorify Him. And He is the All-Mighty, the All-Wise.
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।