আমার মাঝে আমি,নিজেকে বার বার খুজি । জয় হোক স্বপ্নের,সত্যি হোক জীবনের আশা । মানুষের মাঝে মানুষ,উড়ায় হৃদয়ের ফানুশ ।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহ্র যার হাতে আমার প্রাণ। সালাম বর্ষিত হোক প্রিয় নবী হযরত মহাম্মাদ (সঃ) এর প্রতি।
আল্লাহ্র কাছে বিতাড়িত শয়তান হতে আশ্রয় প্রার্থনা করছি যাতে তিনি এই লেখায় আমার নিয়্যতকে পরিশুদ্ধ করেদেন।
সময়টা অনেক আগের। তখন স্কুলে পড়তাম দ্বীনের কোন আন্ডারস্ট্যান্ডিং থাকার কথা না। যান্ত্রিক কায়দায় নামাজটা হয়ত পড়তাম। একটা মসজিদের উদ্বোধন উপলক্ষে একটা আলোচনা সভায় গিয়েছিলাম।
এই ধরনের ব্যাপারগুলোতে সাধারণত যেটা হয় ওয়াজ মাহফিল হয়, লম্বা মুনাজাত হয়, খাওয়া দাওয়া হয় সাথে আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয়াদি থাকে। মুনাজাত হচ্ছিল। আমরা দুষ্টু পুলাপাইন অপেক্ষা করে আছি মুনাজাত শেষ হলেই খাওয়া দাওয়ার জন্য। এর মধ্যে হঠাৎ আমার চোখ গেল আমার পাশের জনের দিকে। বয়স ২৫-৩০ এর কাছাকাছি এক দাড়িওয়ালা যুবক।
অবাক হয়ে দেখলামতার চোখ বেয়ে টপ টপ করে পানি পড়ছে। এক ফোটা দুই ফোটা নয়, যেন চোখ বেয়ে ঝর্ণাধারা বইছে। ইমাম সাহেব এমন আহামরি কিছু বলছেন না, খুবই সাধারণ মুনাজাত যা আমরা সবসময়ই করি। কিন্তু এই মানুষটা...! কি আছে এই মানুষটার অন্তরে যা তার চোখের পানিকে ঝর্ণাধারার মত বয়ে দিল?
আমাদের উপর যখন কোন বিপদ নেমে আসে কিংবা আমরা যখন আল্লাহ্র প্রতিশ্রুত কোন কিছু পাইনা, হতে পারে ইবাদতের কোন ফল পাচ্ছি না কিংবা নামাজ রোজা করেও আল্লাহ্র প্রতিশ্রুত প্রশান্তির নাগাল পাচ্ছিনা। তখন একটা বিষয় অবশ্যই আমাদের মনে আনা উচিত আমরা আমাদের অন্তরকে আল্লাহ্র সাথে এখনো বেঁধে নিতে পারিনি।
অন্তরকে পরিশুদ্ধ করতে পারিনি। ইসলামের স্বর্ণযুগ থেকে ১৪০০ বছর পরের এই আমাদের অন্তরগুলো পাপে ভরে গেছে। নোংরা হয়ে গেছে শয়তানের বিষ্ঠায়। এখান থেকে আমাদের একমাত্র মুক্তি দিতে পারে ঈমান, তাক্বওয়া, আল্লাহ্র কাছে আন্তরিক তাওবা, স্বীয় পাপের জন্য লজ্জিত হয়ে দুই ফোটা চোখের পানি! কেউ বুকে হাত দিয়েও যদি বলে সে কোন পাপ করেনি তারপরও আমি বলব সে মিথ্যে বলছে। হাজারটা ফিতনা চারপাশে নিয়ে অনন্ত জান্নাতের স্বপ্ন দেখা মানুষগুলোর শেষ আশ্রয়স্থল অবশ্যই আল্লাহ্র ভয়ে অন্তরকে বিগলিত করা।
কোন ভুল হয়ে গেলে তার জন্য অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহ্র ভয়ে দুই ফোটা চোখেরপানি ছেড়ে দেওয়া। এ ছাড়া আমাদের কোন মুক্তি নেই, কোন শান্তি নেই, কোন পুরষ্কারের প্রতিশ্রুতি নেই।
আল্লাহ্ কুরআনে তাওবার কথা বলতে গিয়ে তাওবা না করলে নিজে নিজের সাথে অত্যাচার করা হবে বলে উল্লেখ করেছেন। সফলকাম হওয়ার উপায় বলতে গিয়েও আল্লাহ্ তাওবার কথা বলেছেন(নুরঃ৩১)। বান্দা তাওবা করলে আল্লাহ্র খুশির মাত্রা বুঝাতে রাসুল (সঃ) জনমানবশূন্য মরুভূমিতে হারিয়ে যাওয়া উট ফিরে পাওয়ার সাথে তুলনা করেছেন।
কারো সাথে কোন অন্যায় করে ফেললে, যার অধিনস্ত তার আদেশ অমান্য করলে আমাদের উপর রাগ ঝাড়তে মানুষজন ভুল করেনা। প্রিয়তমা স্ত্রীও মনমত কিছু না হলে মুখ ব্যাকা করে"অভিমানের" নামে মনের ক্ষোভ ঝেড়ে দেয়। সেই জায়গায় মহান আল্লাহ্ বলছেন তারকাছে ক্ষমা চাইতে গেলে সেখানে কোন রাগ নয়, কোন পার্ট দেখানো নয় বরং তিনি সবচেয়ে বেশী খুশি হন। তিনি বলছেন এতে আমাদের কল্যাণ রয়েছে। তিনি বলছেন ক্ষমা যদি না চাই তাতে তার কিছু আসে যাবেনা বরং যা হওয়ার আমাদেরই হবে।
সুবাহানাল্লাহ!
আমাদের একটা সহজাত প্রবৃত্তি মানুষ হিসেবে আমরা বড্ড বেশী অহংকারী। নিজের ভুলকে স্বীকার করে নেওয়ার বদলে আমরা নিজেদের কাজের justificationখুঁজি। শয়তান যে কয়টা লাড্ডু গিলিয়ে মানুষকে হেদায়াত থেকে ছিটকে ফেলে দেয় তার একটি হল নিজের পাপের জন্য অজুহাত খোঁজা। bydefault দ্বীনের শিক্ষা দীক্ষায় বড় হয়েছে এরকম মানুষ খুবই দুর্লভ। বুকে হাত দিয়েও যদি কেউ বলে সে কোনদিন পাপ করেনি তারপরও আমি বলব সে মিথ্যে বলছে।
আগে পরের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়ার পরও দিনে শতবার তাওবা করা রাসুল (সঃ) এর উত্তরসূরি আমরা বড্ড বেশী রগ ত্যাড়া তাওবা করার বেলায়। ইসলামের শাশ্বত সুন্দরমুহূর্ত থেকে ১৪০০ বছর পরের চরম জাহিলিয়াতে বসবাস করা এই আমাদের জন্য বড্ড বেশী কঠিন হয়ে যায় ঈমানের গুনাগুণ ঠিক রাখা। আল্লাহ্ তার কিতাব দিয়েছেন, সুসংবাদদাতা ও ভীতি প্রদর্শনকারীরুপে নবী রাসুলদের পাঠিয়েছেন (নিসাঃ১৬৫)। তারপরও আমরা ভুলকরি, আল্লাহর অবাধ্য হই। তবুও আল্লাহ্ বলছেন তাওবাকারিই তার নিকট প্রিয়।
অভিশপ্ত শয়তান যখন আল্লাহ্র কাছে অবকাশ চাইল আল্লাহ তাকে কেয়ামত পর্যন্ত অবকাশ দিলেন তখন সে আল্লাহকে বলল, আপনার ইজ্জতের কসম কেয়ামত পর্যন্ত আমি মানুষের অন্তর থেকে বের হব না! তখন আল্লাহ সুবাহানা ওয়া তায়ালা বললেন, আমার ইজ্জতের কসম আমিও কেয়ামত পর্যন্ত তাওবার দরোজা বন্ধ করব না! আল্লাহু আকবর! আল্লাহু আকবর! একবার এক লোক হযরত ইবনে মাসউদ (রাঃ ) কে জিজ্ঞেস করল, আমি একটি পাপ করেছি আমার তাওবা কবুল হবে কি? তিনি প্রথমে তার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন। কিছুক্ষণ পর লোকটিকে অশ্রুসজল দেখে বললেন, বেহেশতের আটটি দরোজা রয়েছে,সবগুলো উন্মুক্ত হয় এবং বন্ধ হয়; কিন্তু তাওবার দ্বার কখনো বন্ধ হয়না। সেখানে একজন ফেরেশতা নিযুক্ত রয়েছেন। তুমি নিরাশ হয়ো না, আমল করতে থাকো! সেই বিখ্যাত হাদিসটা নিশ্চয় আমরা সবাই জানি, এক লোক ১০০ লোককে হত্যা করল। তারপর তাওবার উদ্দেশ্যে একস্থানে রওনা হল আর পথিমধ্যেই তার মৃত্যু হল।
ফেরেশতাগণ যখন তার পাপ আর তাওবার স্থান থেকে তার মৃত্যুর স্থানের দূরত্ব মাপতে গেল আল্লাহ সুবাহানু ওয়া তায়ালা তাওবার স্থান থেকে দূরত্ব কমিয়ে দিলেন আর তাকে কবুল করে নিলেন সুবাহানাল্লাহ!
আমরা তো সেই নবীর উম্মাত যাকে আল্লাহ আগে পরের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়ার পরও তিনি শতবার আল্লাহ্র কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। হযরত আবু বকর (রাঃ) এর মত মানুষ যাকে পৃথিবীতেই জান্নাতের সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে সেই মানুষটি স্বলাতে দাঁড়িয়ে ঝর ঝর করে কাঁদতেন এবং তার কান্নার মাত্রা এত বেশী হত যে মুসল্লিরা তার কান্নার আওয়াজের কারনে কিরাত বুঝতে পারত না! হযরত উমার (রাঃ) এর মত কঠিন মানুষ আল্লাহ্র ভয়ে কাঁদতেন, কবরেরপাশ দিয়ে যাওয়ার সময় চোখের পানিতে তার দাঁড়ি পর্যন্ত ভিজে যেত। আর আমি আপনি যারা পাপের সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছি তাদের তাওবার মাত্রা কতটুকু হওয়া উচিত? অনুশোচনা আর লজ্জার মাত্রা কত তীব্র হওয়া উচিত?
প্রতিদিন ঘুমানোর আগে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত আমাদের কাজগুলোকে justify করি তো! কয়টা কাজ শুদ্ধ করেছি?কয়টা কাজ আল্লাহ্র জন্য করেছি? হিসেব করলে দেখব প্রায় সব কটা কাজ, কথা, চিন্তা তাওবার দাবি রাখে। আল্লাহর হেদায়াত আমাদের উপর কতটুকু আছে তা পরীক্ষা করার একটা সুযোগ হল আল্লাহ্র কিতাব, রাসুলের (সঃ) এর কথায় আমাদের কতটুকু ভাবাবেগ সৃষ্টি হয় সেটা দেখা। অন্তর কতটুকু সিক্ত হয় সেটা অনুধাবন করা।
আল্লাহ্র ভয়ে অন্তরকে বিগলিত না করে সারা দুনিয়ার মানুষের মাঝে ইসলামের দৈন্যতায় হা হুতাশ করা যান্ত্রিক দ্বীন আমাদেরকে কোনদিনও আল্লাহ্র কাছাকাছি নিয়ে যেতে পারেনা। এই যে রামাদান গেল আমরা নিজেরা নিজেদের প্রশ্ন করি তো কয়জন আল্লাহ্র ভয়ে চোখের পানি ফেলেছি! কয়জন আমাদের অতীতের সমস্ত গুনাহের জন্য মন থেকে অনুতপ্ত হয়েছি! কয়জন আশা করতে পেরেছি যে আল্লাহ আমাদের ক্ষমা করেছেন!! এমন এক মহান রবের ছায়া আমাদের উপর আছে যিনি সবচেয়ে বেশী খুশী হন বান্দা অনুতপ্ত হয়ে তার কাছে ফিরে এলে। আমাদের পাপগুলোকে শুকনো পাতার মত ঝরিয়ে দেওয়ার জন্য তিনি প্রতি কদমে কদমে উপায় বাতলে দিয়েছেন। এর জন্য কোন আনুষ্ঠানিকতার দরকার নেই, কোন পীর সাহেবের উছিলার দরকার নেই, কোন নির্দিষ্ট দিন ক্ষনের দরকার নেই। যখন মনে হবে, যখন অন্তরটাকেঁদে উঠবে, যখনই জীবনের ফেলে আসা সময়গুলোকে অর্থহীন আর ছন্নছাড়া মনে হবে হবে তখনইআল্লাহ বলছেন,
“তোমরা আমাকে ডাক, আমি সাড়া দেব।
“ [সুরা গাফিরঃ ৬০]
"আপনি আমার বান্দাদেরকে জানিয়ে দিন যে, আমি অত্যন্ত ক্ষমাশীল দয়ালু। “ [সুরা আল হিজরঃ ৪৯]
“মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহ তায়ালার কাছে তওবা কর-আন্তরিক তওবা। আশা করা যায়,তোমাদের পালনকর্তা তোমাদের মন্দ কর্মসমূহ মোচন করে দেবেন এবং তোমাদেরকে দাখিল করবেন জান্নাতে,যার তলদেশে নদী প্রবাহিত। “ [সুরা আত তাহরিমঃ ৮]
“আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহর রহমত থেকে কাফের সম্প্রদায়, ব্যতীত অন্য কেউ নিরাশ হয় না।
“ [সূরা ইউসুফঃ ৮৭]
আল্লাহ বলছেন তাওবার মধ্যেই কল্যান নিহিত আছে। আর তাওবার মাধ্যমে আল্লাহ্র দিকে প্রত্যাবর্তন না করাটাই মানুষ হিসেবে আমাদের অকল্যাণ। আর কেবল অকল্যানের শিকলে আবদ্ধ থাকা শয়তানের চরিত্র। মূলত অকল্যাণে জড়িয়ে পড়ার পর হিতকর্মের দিকে ফিরে আসা মানুষের স্বভাব। মানুষ যখনই কামনা বাসনার অনুসরণ করে তখনই তার অন্তরে এক ধরনের অন্ধকার পড়ে।
যেমন আয়নাতে মুখের বাষ্প লাগলে আয়না মলিন হয়ে যায়। তেমনি কামনার অনুসরণ একের পর এক অব্যাহত থাকলে অন্তরের অন্ধকার মরীচিকায় পরিবর্তিত হয়ে যায়। আর এই মরীচিকা অত্যধিক হয়ে গেলে অন্তরে মোহর এঁটে যায়। এখান থেকে আমাদের একমাত্র মুক্তি দিতে পারে আন্তরিক তাওবা। তাওবা কি? তাওবা হল বিগত গুনাহের জন্য অনুশোচনার আগুনে অন্তরের বিগলিত হওয়া।
তাওবা একটি আগুন, যা অন্তরে প্রজ্বলিত হয় এবং একটি বেদনা যা অন্তর থেকে আলাদা হয় না! আর তাওবা হল জুলুমের পোশাক খুলে ফেলে সরলতা ও হৃদ্যতার চাদর বিছানো আর আল্লাহ্র কাছে বলা,
“হেআমার পালনকর্তা, আমি তো নিজের উপর জুলুম করে ফেলেছি। অতএব, আমাকেক্ষমা করুন। “ [সূরা কাসাসঃ ১৬]
ভুলকে মেনে ক্ষমা চাওয়ার মাঝে কোন লজ্জা নেই আছে কল্যাণ। মহান রবের বিচারালয়ে যেদিন কঠিন বিচার হবে সেদিন যেন নিজেদের পাপগুলোকে মুছে নিতে পারি। শত ভুল, শত পাপের বোঝা মাথায় নিয়েও আমরা মুসলিমরা বুকে আশা বেঁধে রাখি মহান রব আমাদের ক্ষমা করবেন।
অন্ধকারে একাকি নিভৃতে দু'ফোটা চোখের পানি আপনার পাপগুলোকে ধুয়ে মুছে দিতে পারে। গভীর রাতে যখন মহান রব তার বান্দার মনের আকুলতা কবুল করে নিতে কাছাকাছি চলে আসেন তখন মানুষের দোয়াগুলো হয় নিক্ষিপ্ত তীরের মত যা কখনো লক্ষচ্যুত হয়না! যান্ত্রিকতা আর 'আমিময়' এই স্বার্থপর পৃথিবীতে কঠিন অন্তরগুলোতে আমি জানিনা আল্লাহর কাছে তওবা করার বুঝটুকু আমাদের আছে কিনা। পৃথিবীর বুকে শেষ নিশ্বাস ত্যাগের আগে সেই বুঝটুকু যেন আল্লাহ্ আমাদের অন্তরে দিয়ে দেন। গুনাহগার বান্দাগুলোকে যেন তিনি ক্ষমা করেন।
মনখারাপের দিনগুলোতে,যখন খুব অস্থির লাগে কিংবা জীবনের অর্থ উদ্ধারে হিমশিম খাই আমার রব কখনো আমাকে একা ফেলে দেননি।
আর কেউ না হোক তিনি তো আমাকে বুঝেন। অফুরন্ত প্রতিশ্রুতির ঢালি সাজিয়ে আকাশের ওপারে আমার রব আছেন। ধেয়ে আসা সময়ের পাণ্ডুলিপি হাতে আমি আপনি আমরা সবাই সেই মহান রবের দিকেই চলেছি। সবকিছুতে অর্থহীনতা খুঁজে পেয়ে দুনিয়ালোভী, দুই পাতা পড়ে আল্লাহকে অস্বীকার করা মানুষগুলো কিংবা একটু উনিশ বিশ হলেই গলায় ফাঁস লাগিয়ে জীবনের সমাধান খুঁজা মানুষগুলোর ভিড়ে আমরা মুসলিমরা জানি একজন আছেন যার কাছে সবকিছু বলা যায়, সবকিছু চাওয়া যায়, সব চোখের পানি দিয়ে দেওয়া যায়। বিনিময়ে তিনি আমাদের ক্ষমা করবেন, আমাদের পাপগুলোকে মুছে দেবেন, অন্তরগুলোকে ঠাণ্ডা করবেন সেই আশাতেই আমরা বাঁচি।
সেই আশাতেই আমরা প্রতিদিন স্বপ্ন দেখি। সেই আশাতেই প্রতিদিন নতুন করে জীবনটা শুরু করি।
“আমি তো আমার দুঃখ ও অস্থিরতা আল্লাহর সমীপেই নিবেদন করছি” [সূরা ইউসুফঃ ৮৬]
আসুন মন খুলে একবার কেঁদে নিই। অন্ধকার ঘরের ছোট্ট কোণটিতে ওই তো জায়নামাজটা। কেউ দেখবেনা, কান্না লুকোতে হবেনা, কেউ চোখের পানিকে ন্যাকামু বলবেনা।
আমার রব সব জানেন। মনের আকুলতা আমার রব বোঝেন। যে ভুলগুলো অনেক বড় বলে ভয়ে কুঁকড়ে যাই তা আমার রবের দয়ার চেয়ে বড় নয়। একটু কৃতজ্ঞতা, একটু বিনয়, একটু ভালবাসা আমার রবের জন্য। তিনি তো খুব বেশী কিছু চাননি।
প্রিয়ার মন ভরাতে এর চেয়ে আরও বেশী কষ্ট করা লাগে রে ভাই! মন ভরে কেঁদে নে। আমার রবের কাছে যাওয়ার সময় এই তো নিকটেই। একদিন সত্যি সত্যি রবের সামনে দাঁড়াব। আমার রবের কাছে সেদিন কি চাইবি এখনই চেয়ে নে। তিনি কাউকে নিরাশ করেন না।
ক্ষমা, দয়া, ভালোবাসা, একটু প্রশান্তি, কি চাই?? অনেক কষ্ট চাপা আছে? অনেক অভিমান জীবনের উপর? অনেক না পাওয়ার আক্ষেপ? অনেক অনেক হতাশা?? কেঁদে নে। একদিন ভালোবাসায়, প্রশান্তিতে, পবিত্রতায় মনটা ভরে যাবে। আমার রবের দয়ার কাছে আমাদের ভুল, পাপ, কষ্টগুলো খুব ঠুনকো! একদিন মহান রব আমাকে ক্ষমা করবেন, আমার চোখের পানিগুলোকে কবুল করে নিবেন,জাহান্নামের কঠিন আগুন থেকে বাচিয়ে জান্নাতে দাখিল করবেন, আমার তাওবাকে কবুল করে নেবেন সে আশায়...
বিনীত
অবুঝ বালক
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।