চলার পথ অনেক, সত্য পথ একটাই যমযম কূপের পানি হচ্ছে আল্লাহ প্রদত্ত সেই আশ্চর্য পানি যার স্বাদ ও গন্ধ ৫ হাজার বত্সরেও পরিবর্তন হয় নি । একে বেহেশতি পানিও বলা হয় । আর বিভিন্ন রোগের নিরাময় বা প্রতিষেধক এটি হ্যা এটি সেই যমযমের কূপের পানি যা হযরত ইসমাঈল (আঃ) এর (তাঁর উপর শান্তি বর্ষিত হোক) ঘটনার প্রেক্ষিতে সৃষ্টি হয়েছিল। যার জন্য এখনও মানুষকে লাইন ধরে পানি সংগ্রহ করতে হয়
যমযম কূপের সৃষ্টি হয়েছিল প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে। সাফা ও মারওয়া পর্বতের মাঝামাঝিএবং কাবাঘর থেকে সামান্য দূরে এই কূপের অবস্থান।
আল্লাহ তায়ালার নির্দেশে আমাদের জাতির পিতা হযরত ইব্রাহিম (আ.) তাঁর ছোটবিবি মা হাজেরা (আ.)কে তার শিশুপুত্র ইসমাইলসহ (আ.) এই স্থানে নির্বাসন দেন। এই স্থানটি তখন ছিল পর্বতে ঘেরা জনমানব শূন্য পাহাড়ি কিছু গাছে ভরা একটি স্থান।
সঙ্গে আনা খাদ্য ও পানীয় সব শেষ হয়ে গেছে। পানির পিপাসায় মা হাজেরা (আ.) এরবুক ফাটফাট। এদিকে বুকের দুধ শুকিয়ে গেছে।
শিশুকে যে একটু পানি পান করাবেন এমন কোনো উপায় নেই। পিপাসায় কান্ত হয়ে শিশু ঘুমিয়ে পড়লে মা হাজেরা (আ.) সাফা পর্বতের ওপরে ওঠে চারদিকে তাকিয়ে পানি এবং জনমানবের সন্ধান করতে লাগলেন। মরূভূমিতে আল্লাহর মেহেরবাণীতে কোনো কোনো স্থানে পানির ব্যবস্থা থাকে যাকে বলাহয় মরূদ্যান।
মা হাজেরা যখন সাফা পর্বতের ওপরে দেখতে পেলেন দূরে একটি পাহাড়ের কাছে একটি মরূদ্যানের মত দেখতে পেলেন। তিনি দৌড়ে সেখানে চলে গেলেন।
কিন্তু দেখেন সেখানে কিছুই নেই। তিনি মারওয়া পর্বতের ওপরে ওঠে দেখেন যে সাফা পর্বতের নিকটে একটি মরূদ্যান রয়েছে। সাফা পর্বতের ওপরে ওঠেন। এভাবে সাতবার তিনি সাফা থেকে মারওয়া এবং মারওয়া থেকে সাফা পর্বতে দৌড়াদৌড়ি করেন। তিনি মরূদ্যান বলে যাকে মনে করেছেন তা মরীচিকা।
মরুর বালুর ওপর সূর্যের কিরণ পড়ে মরূদ্যানের মতো মনে হয়। এদিকে তিনি যখন এ পাহাড় থেকে ও পাহাড়ে দৌড়াদৌড়ি করছিলেন তার কিছুক্ষণের মধ্যে শিশু জেগে উঠে কান্নাকাটি করছিল। হঠাৎ কান্না থেমে যাওয়ায় মা হাজেরা (আ.) মনেকরলেন তার ছেলে আর বেঁচে নেই। তিনি পাগলপ্রায় সেখানে ছুটে গেছেন। দেখেন আল্লাহর কুদরতে শিশুর পায়ের নিচ থেকেগর্ত হয়ে সেখান থেকে তীব্র বেগে পানি উঠছে।
শিশুটির গায়ে ঠাণ্ডা পানি লাগায় হাত বা ছুঁড়ে চুপচাপ খেলছে। সে গর্তের পানি এত বেগে প্রবাহিত হচ্ছে যে, নিচের দিকের সব এলাকা ভরে গেছে। আর একটু দেরি হলে শিশুটিও পানির মধ্যে ডুবে যেত।
যাম্মা শব্দের অর্থ থেমে যাওয়া, জমে যাওয়া, বাধা দেয়া, আর যমযম অর্থ প্রাচুর্য। কেউ কেউ বলেন, মা হাজেরা গর্তের চারিদেকে বালু দিয়েবাঁধ দেন এবং বলেন, আল্লাহর ওয়াস্তে থেমে যা।
এখান থেকেই এই কূপের নাম হয়েছে যামযাম, আমরা বলি যমযম। কেউ লিখেছেন, মা হাজেরা (আ.) যদি এভাবে চারিধার বেঁধে না দিতেন তবে এই কূপের পানি সারা পৃথিবীকে প্লাবিত করে ফেলতো। এ কথাটা গ্রহণ করতে কারো মনে যদি হয় এটাও কি সম্ভব? তবে আমি বলবো মোটেই অসম্ভব নয়। কারণ আজ প্রায় পাঁচ হাজার বছর যাবত এই কূপ থেকে পানি উঠছে।
প্রতিদিন প্রতি মুহূর্তে লাখ লাখ লোক এই পানি পান করছে।
পৃথিবীর বহু দেশ থেকে আগত হজ্জ ও উমরাকারীগণ বড় বড় গ্যালন ভরে পানি নিয়ে যাচ্ছেন। এত পানি এত বছর যাবত মানুষ নিতে থাকলে হয়ত বা সমুদ্রও এত দিনে শুকিয়ে যেত । কালেক্ট। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।