‘প্রচণ্ড গরমে সারা রাত বিছানায় কেবল এপাশ-ওপাশ করেছি। ঘুম হয়নি। ভোররাতে খানিকটা ঘুমিয়েছি। তাতেই সকালে উঠে দেখি ঘামে ভিজে গেছে বালিশ। ’
আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় অস্বস্তিকর রাত কাটানোর এই অভিজ্ঞতার কথা জানান বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাকিনূর রহমান।
তিনি বলেন, ‘পরীক্ষা চলছে। এভাবে গরম পড়ায় পড়াশোনা করা যাচ্ছে না। ’
বৃষ্টিহীন আষাঢ়ে দুর্বিষহ গরমে হাঁপিয়ে ওঠার কথা জানান গৃহিণী জেসিয়া উম্মে উরাইদার। সাত বছরের মেয়ে সুবহাকে শ্যামলীর প্রিপারেটরি স্কুলে দিয়ে বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। জেসিয়া বলেন, ‘এই গরমের মধ্যে মেয়ের জন্য স্কুলের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা বেশ কষ্টকর।
’
এটা শুধু রাজধানীর চিত্র নয়, সারা দেশের মানুষই প্রচণ্ড গরমে অস্থির। বৈশাখ ও জ্যৈষ্ঠ মাসে বৃষ্টি হলেও বর্ষাকালের শুরুতে এর দেখা নেই। আকাশে নেই মেঘের দেখা। বরং আছে দাবদাহ। ভাপসা গরমে কাবু সবাই।
আজ মঙ্গলবার। আষাঢ় মাসের চার দিন চলে গেছে। অথচ বৃষ্টির দেখা নেই। এ কারণে তাপমাত্রা বাড়ছে। বাড়ছে গরম।
আর গরমে পালিয়েছে আরাম।
গতকাল সোমবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল সৈয়দপুরে, ৩৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজধানী ঢাকায় ছিল ৩৫ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ সকালে ঢাকার তাপমাত্রা কিছুটা কমে ৩২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান আজ সকালে প্রথম আলো ডটকমে জানান, মৌসুমি বায়ু সারা দেশে বইলেও এর প্রভাব তেমন নেই।
তা ছাড়া মেঘশূন্য আকাশ ও দিনের ব্যাপ্তি বেশি হওয়ায় গরম পড়ছে। আর্দ্রতা বেশি থাকায় মানুষের শরীর থেকে ঘাম ঝরছে। তবে আজ বিকেলে অথবা আগামীকাল বুধবার দেশের উত্তরাঞ্চলে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
মহাখালীর উদরাময় গবেষণা কেন্দ্রের (আইসিডিডিআরবি) প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (চিফ ফিজিশিয়ান) আজহারুল ইসলাম খান প্রথম আলো ডটকমকে জানান, গতকাল রাত ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৩৯৭ জন রোগী সেখানে ভর্তি হয়েছে। আরও কয়েক দিন গরম পড়লে রোগীর সংখ্যা বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
মিরপুরে শিশুস্বাস্থ্য ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক এ কে এম শামসুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের এখানে বহির্বিভাগে রোগীর তেমন একটা চাপ নেই। তবে হাসপাতালে যেসব শিশু ভর্তি হচ্ছে, তাদের বেশির ভাগই ডায়রিয়া, শ্বাসজনিত রোগে আক্রান্ত। ’
গরমে সবাইকে প্রচুর পানি ও খাওয়ার স্যালাইন পানের পরামর্শ দিয়ে জাতীয় অধ্যাপক এম আর খান প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, ‘ঘরের পরিবেশ যতটা সম্ভব ঠান্ডা রাখা গেলে ডায়রিয়া ও শ্বাসজনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কম থাকে। ’।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।