আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একখান টিপিকাল "ফেবু কিয় ইশপ টাইপ" হেফাজতি ছুটো গফ

পেট ও মন যথাক্রমে উত্তম আহার ও অতিউত্তম আনন্দরঙ্গ দ্বারা পূর্তি করে আমরা ভবঘুরে দ্বয় যখন বাড়ির পথ ধরলাম , তখন কি আমরা জানতাম "pix আভি বাকি " ?! ঢাকার বাইরে বিয়ে মানেই কিছু বাড়তি মজা , সাথে ভ্রমন আনন্দ , তার উপর ফেনী এলাকাটা আবার আমার অদেখা ভুবন । তাই নিমন্ত্রণ পেয়ে বেশ খুশি মনেই আমি ও আমার চির ভ্রমন তৃষ্ণার্ত বন্ধু 'লম্বা ' সকল হরতাল শংকা মন থেকে ঝেটিয়ে বিদায় করে বিয়ের একদিন আগে ফেনী শহরে উপস্থিত হলাম । সময়টা আমাদের খারাপ কাটেনি , ফিরতি পথও ছিল চমকে ভরপুর ! ফেনী থেকে সন্ধ্যার বাসে উঠেছিলাম এই ভেবে যে রাত ১২ টার মধ্যে ঢাকা থাকব । কিন্তু বিধি বাম , বাস কুমিল্লা অবধি নির্বিঘ্নে আসার পর শুরু হলো বিঘ্ন -বিপত্তি । ব্যাপার তেমন কিছু না , চির চেনা ট্রাফিক জ্যাম সাথে বোনাস হিসেবে লাঠিসোটা ধারী কিছু মানুষের নৈশ বিচরণ ।

লাঠি ওয়ালারা হঠাত হঠাত মনের সুখে গাড়ি ভাঙ্গছিল , সেই সব বিশেষ গাড়ি যেগুলো 'রং লেনে' ছিল । আমাদের গাড়িটাও ওই বিশেষ দলে ছিল । তাই , শীততাপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের আওতাধীন থেকেও পরিস্থিতির চাপ , তাপে রুপান্তরিত হয়ে হঠাত হঠাত আমার ঘাম ছোটাতে থাকলো । অবস্থা যখন এই , ঠিক তখনই বাসের পিছন দিকের সিট্ থেকে এক জননেতা উঠে আসলেন আমাদের জান মাল হেফাজত করার নিমিত্তে । হেফাজোতি ভাই প্রথমেই বয়স্ক ড্রাইভার চাচাকে হালকা খিস্তি সহযোগে রং লাইনে আসার জন্য দায়ী করলেন এবং নেতাসুলভ ভঙ্গিমায় আমাদের হেফাজতের ঈমানী দায় পালনের জন্য বাস হতে অবতরণ করলেন ।

কিছুটা হাফ ছেড়ে বাচলাম এবং মনে মনে বললাম , "ন্যাচারাল লিডার একেই বলে" । তো যাই হোক ' হেফাজোতি আমির' ভাই পনেরো , বিশ মিনিট পর পর একই কান্ড করতে লাগলেন । অর্থাত , বাসে আরোহন , অবতরণ এবং চালক চাচাকে খিস্তি ও দিক নির্দেশনা দান । বার বার বাসের গেট খোলার ঝক্কি ও আমির সাহেবের বকর বকর হেলপার ,ড্রাইভারকে যেমন বিরক্ত করে তুলছিল তেমনি একই বিষয় বারংবার দেখে পাবলিক কিছুটা বিরক্তি মিশ্রিত সন্ধেহ দৃষ্টি বান আমির সাহেবের দিকে মারলেন । এর মধ্যে আমার বন্ধু 'লম্বা' তার বিখ্যাত শকুনি ক্লাস চোখ দ্বারা বাইরে কিছু একটা দেখে আমাদের সিটের সামনে বসে থাকা হেলপার ভাইকে কি যেন বললো ।

‘ হেফাজোতি আমিরের’ কান্ড কারখানায় বিরক্ত হেলপার ততক্ষনাত দৌড় দিয়ে নিচে নামলেন এবং কিছুক্ষণ পরই হাসি মুখে ফিরে এসে বললেন , " বাইজান হাছা কইছে , হালায় একটা বিড়ির পাগল " । ইতোমধ্যে হঠাত আমাদের বাস খানা আক্রান্ত হলো , লাঠিবাজদের লাঠির বারিতে ঝুনঝুন করে গ্লাস ভাঙ্গতে শুরু হলো , চারদিকে চিত্কার চেচামেচির ভিতর কাকতালীয় ভাবে সামনের জ্যামটা হুট করে কেটে গেল । ড্রাইভার চাচ্চুকে আর পায় কে , নগদে ১০০ তে ১০০ মার্কা টান । আহ কি শান্তি , জানে বাচলাম ! বাসে তখন ঝড় শেষের নিরবতা । এরই মধ্যে হঠাত নিরবতা ভেদ করে একজন নারী কন্ঠের আর্তনাদ কানে বাজলো , " ভাই গাড়ি থামান , উনি তো গাড়িতে ওঠে নাই " ।

প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই যাত্রীদের একজন বলে উঠলেন , " চিন্তা করিয়েন না হ্যাতে বিড়ির ধোয়া ছাইড়তে ছাইড়তে আঙগো আগেই ঢাকাত ছলি আইবো " । হ্যা ঠিকই ধরেছেন , এই 'হ্যাতে' আর কেউ নন , সেই ন্যাচারাল লিডার , মানে সেই "বিড়ি পাগল হেফাজোতি লিডার " । আল্লাহ ওনার- ওনাদের হেফাজত করুন । আর আমাদের জন্য আশা করি ' ইশারা হি কাফি ' | --------------------------------------------------------------------- 'দিদারুল আলম শুভ্র ' ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৭ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।